হ্যালো! হ্যালো!! হ্যালো!!! by আব্দুল কাইয়ুম
প্রাণবন্ত সুন্দরী তরুণী। অফিসে কাজ করছেন। তাঁর কাছে বারবার ফোন আসছে। বিরক্ত করছে কোনো বখাটে সন্ত্রাসী। তরুণীর মেজাজ তেতে আছে। পঞ্চমবার ফোন ধরেই সাংঘাতিক উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে শুরু করলেন, ‘সাবধান, আরেকবার যদি বদমায়েশি করেন, পুলিশে...।
’ কথা শেষ হওয়ার আগেই অপর প্রান্ত থেকে যাঁর কণ্ঠ ভেসে এল, তিনি আর কেউ নন, সেই তরুণী কর্মকর্তার বস! তরুণীর মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা। সেই ফোনকল যে বখাটের নয়, তা কে জানে! প্রথমে সুন্দর করে ‘হ্যালো’ বলে শুরু করলে হয়তো এমন বিপদে পড়তে হতো না! অবশ্য ‘হ্যালো’ সম্ভাষণের রীতিটি এ কারণে প্রচলিত হয়নি। টেলিফোনের আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল প্রথমে টেলিফোন সম্ভাষণ হিসেবে ‘আহোয়’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন, যা সাধারণত নাবিকেরা সম্ভাষণ হিসেবে ব্যবহার করতেন। পরে হ্যালো চালু হয়ে যায়। এই শব্দটি এসেছে পুরোনো জার্মান শব্দ ‘হ্যালা, হলা’ থেকে। ফেরিনৌকার মাঝিকে ডাকার জন্য ওই শব্দ ব্যবহার করা হতো। মার্কিন বিজ্ঞানী টমাস এডিসন প্রথম টেলিফোনে ওই সম্ভাষণ ব্যবহার করেছিলেন। সেটা ১৮৭৭ সালের কথা। এর পর থেকে দেশে দেশে ওটাই প্রচলিত হয়ে গেছে। ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি, ফরাসি, রুশসহ সব ভাষাতেই টেলিফোনে প্রথম উচ্চারিত শব্দটি ওই হ্যালো বা তার কাছাকাছি হ্যাল্লো, আ’লো, অ্যালো প্রভৃতি। ১৮৮৯ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের কর্মীরা ‘হ্যালো-গার্লস’ নামে পরিচিতি পায়। সম্ভাষণসূচক কিছু বলা একটি প্রচলিত রীতি। সে জন্যই ওই হ্যালো। তার মানে আমি যে টেলিফোন ধরে কথা বলতে প্রস্তুত, সেটা জানিয়ে দেওয়া। একই সঙ্গে আমি কে সেটাও জানানোর প্রথা রয়েছে। যেমন, ‘হ্যালো? আমি কখগ বলছি!’ প্রথম সম্ভাষণটা প্রশ্নবোধক, মানে জানতে আগ্রহী আপনি কে। একই সঙ্গে অবশ্য জানিয়ে দিচ্ছি আমার পরিচয়।
No comments