বিনিয়োগকারী ও এসইসিকে দিশেহারা হলে চলবে না-বেপরোয়া শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক হালচাল এককথায় বেপরোয়া। দরের ওঠানামা বেপরোয়া, বেপরোয়া দ্রুত মুনাফার বাসনা। একেই ষাঁড়ের দৌড়ের সঙ্গে তুলনা করেছে গতকালের প্রথম আলো। মুনাফা ও দরের ঊর্ধ্বগতির পরে গত এক মাসজুড়ে দেখা যাচ্ছে, ভালুকের মতো ঝিমুচ্ছে শেয়ারবাজার।
এই চরমভাবাপন্ন অবস্থারই প্রতীক যেন সংবাদটির সঙ্গে প্রকাশিত ছবিটি। সেখানে ভাঙচুরের অভিযোগে আটক এক বিনিয়োগকারীকে দেখা যাচ্ছে প্রিজন ভ্যানের গরাদের ভেতর থেকে বিক্ষুব্ধ ও হতাশ চোখে তাকিয়ে থাকতে। হঠাৎ করে পুঁজি হারিয়ে ফেলা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অবস্থার প্রতীক যেন এই ছবি।
দেশের শেয়ারবাজার কিছুদিন ধরেই বেশ টালমাটাল। কিছুদিন আগেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্যসূচকের স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কর্মদিবসের শেষ ঘণ্টায় হঠাৎ করে বিরাট দরপতন ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় পুঁজি হারিয়ে হতাশ কিছু বিনিয়োগকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করেন। আগেরবারের দরপতনের পর বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করে ফেললেও তা কাজে দিচ্ছে না। বিনিয়োগকারীরাও দ্রুত লাভের লোভে ছুটে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছেন না। শেয়ারবাজারে শুধু দাম বাড়বেই, কখনো কমতে পারবে না—এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবতাবর্জিত এবং পুঁজিবাজারকে সত্যিকারভাবে শক্তিশালী করার অন্তরায়।
শেয়ারবাজার যেভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছিল, তা ছিল বহুলাংশে কৃত্রিম ও যৌক্তিকতাহীন। ফাটকাবাজির বাজারে ক্রমাগত অর্থের জোগান নির্বিচারে বিভিন্ন শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আর এতে প্রলুব্ধ হয়ে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় না নিয়ে অনেকেই সহজে টাকা বানানোর দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম ভেঙে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছিল। আরও দাম বাড়ার ও নিরন্তর মুনাফা করার কল্পিত প্রত্যাশায় প্রায় সবাই যেন বুঁদ হয়ে গিয়েছিল। অদক্ষ এসইসিও ঘন ঘন নীতি-নির্দেশনা পরিবর্তন করে বাজারের অস্থিরতাকে উসকে দিচ্ছিল। সর্বোপরি পুঁজিবাজারের বড় বড় ক্রীড়নক সরকারসহ নীতিনির্ধারকদের বিভিন্নভাবে চাপের মুখে রাখার কৌশল নিয়েছিল, যেন বাজারের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে রাশ টানতে না পারে। এসবের অনিবার্য পরিণতি যে একপর্যায়ে বাজারের বড় পতন—তা এখন প্রমাণিত হচ্ছে।
যাঁরা কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন, দাম বাড়ার একটা পর্যায়ে তাঁরা শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নেবেন—এটাই স্বাভাবিক এবং এটাই বড় দরপতনকে ত্বরান্বিত করেছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ প্রশমনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারে তারল্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের দিকে জোর দিয়েছে। শিল্পঋণের টাকা শেয়ারবাজারে খাটানোর প্রবণতা রোধেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নজরদারি কঠোর করতে হয়েছে। এসবের কিছুটা প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। কিন্তু সার্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার স্বার্থে এ ধরনের কঠোরতার কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের বড় দরপতন হওয়াটাও বাজার সংশোধনের প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে, যতটা লাভের প্রত্যাশা তাঁরা করেন, ততটা লোকসানের ঝুঁকিও রয়েছে। এটাই কঠিন সত্য। পুঁজিবাজারে ফাটকাবাজি ও অনিশ্চয়তা থাকবেই। সর্বোপরি এসইসিকে সুপরিকল্পিতভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে হবে, যা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি। সব পক্ষেরই উচিত, ভুলের শিক্ষা নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ বাজার-ব্যবস্থাপনার দিকে অগ্রসর হওয়া।
দেশের শেয়ারবাজার কিছুদিন ধরেই বেশ টালমাটাল। কিছুদিন আগেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্যসূচকের স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কর্মদিবসের শেষ ঘণ্টায় হঠাৎ করে বিরাট দরপতন ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় পুঁজি হারিয়ে হতাশ কিছু বিনিয়োগকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করেন। আগেরবারের দরপতনের পর বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করে ফেললেও তা কাজে দিচ্ছে না। বিনিয়োগকারীরাও দ্রুত লাভের লোভে ছুটে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছেন না। শেয়ারবাজারে শুধু দাম বাড়বেই, কখনো কমতে পারবে না—এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবতাবর্জিত এবং পুঁজিবাজারকে সত্যিকারভাবে শক্তিশালী করার অন্তরায়।
শেয়ারবাজার যেভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছিল, তা ছিল বহুলাংশে কৃত্রিম ও যৌক্তিকতাহীন। ফাটকাবাজির বাজারে ক্রমাগত অর্থের জোগান নির্বিচারে বিভিন্ন শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আর এতে প্রলুব্ধ হয়ে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় না নিয়ে অনেকেই সহজে টাকা বানানোর দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম ভেঙে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছিল। আরও দাম বাড়ার ও নিরন্তর মুনাফা করার কল্পিত প্রত্যাশায় প্রায় সবাই যেন বুঁদ হয়ে গিয়েছিল। অদক্ষ এসইসিও ঘন ঘন নীতি-নির্দেশনা পরিবর্তন করে বাজারের অস্থিরতাকে উসকে দিচ্ছিল। সর্বোপরি পুঁজিবাজারের বড় বড় ক্রীড়নক সরকারসহ নীতিনির্ধারকদের বিভিন্নভাবে চাপের মুখে রাখার কৌশল নিয়েছিল, যেন বাজারের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে রাশ টানতে না পারে। এসবের অনিবার্য পরিণতি যে একপর্যায়ে বাজারের বড় পতন—তা এখন প্রমাণিত হচ্ছে।
যাঁরা কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন, দাম বাড়ার একটা পর্যায়ে তাঁরা শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নেবেন—এটাই স্বাভাবিক এবং এটাই বড় দরপতনকে ত্বরান্বিত করেছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ প্রশমনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারে তারল্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের দিকে জোর দিয়েছে। শিল্পঋণের টাকা শেয়ারবাজারে খাটানোর প্রবণতা রোধেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নজরদারি কঠোর করতে হয়েছে। এসবের কিছুটা প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। কিন্তু সার্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার স্বার্থে এ ধরনের কঠোরতার কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের বড় দরপতন হওয়াটাও বাজার সংশোধনের প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে, যতটা লাভের প্রত্যাশা তাঁরা করেন, ততটা লোকসানের ঝুঁকিও রয়েছে। এটাই কঠিন সত্য। পুঁজিবাজারে ফাটকাবাজি ও অনিশ্চয়তা থাকবেই। সর্বোপরি এসইসিকে সুপরিকল্পিতভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে হবে, যা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি। সব পক্ষেরই উচিত, ভুলের শিক্ষা নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ বাজার-ব্যবস্থাপনার দিকে অগ্রসর হওয়া।
No comments