তিন বাহিনীকে আধুনিক করতে সবই করবে সরকার -প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে সরকার কার্যকরী
পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিন বাহিনীকে আধুনিক করতে যথাসম্ভব সবই করবে সরকার।
গতকাল বিকালে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা,
উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি আগামী জানুয়ারি মাস থেকে
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যেককে
ভাতা প্রদানের ঘোষণা দেন। বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০১৮ সালের
জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ,
আনসার-ভিডিপি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর (তৎকালীন ইপিআর) সদস্য যারা
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ভাতা প্রদান করার। ঢাকা সেনানিবাসের
মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য
যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারা সে সময় বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বলে
তাদের ভাতা প্রদান করা হয়নি।
তারা সকলেই প্রায় এখন অবসরে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় রয়েছেন আমরা এদের সকলকেই আগামী জানুয়ারি থেকে ভাতা প্রদান করবো। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের আমরা মর্যাদা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সম্মানী চেক এবং মোবাইল ট্যাবসহ বিভিন্ন উপহার ৭ বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধে সম্মাননা পদকপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করেন। ‘শান্তিকালীন’ পদক ২০১৬ বিজয়ী ১২ জন এবং ‘অসামান্য সেবা’ পদক বিজয়ী ১৪ জনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্যের মাঝে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পদক বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সুমহান দায়িত্ব সশস্ত্র বাহিনীর ওপর ন্যস্ত। এ পবিত্র দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বশীল অংশগ্রহণ বজায় রাখছে। আমি এজন্য সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, আমাদের সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সব ধরনের কল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। দেশের সকল বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে এবং বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা আজ বিশ্বদরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছি। আমরা সেই সক্ষমতা এবং সামর্থ্য অর্জন করেছি এবং আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি বিজয়ী জাতি এবং এ জাতি কখনও মাথা নত করে থাকবে না। স্বাধীনতার এই গৌরবকে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর। কিন্তু, সেই হারানো গৌরব আমরা আবার ফিরিয়ে এনেছি এবং বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার লক্ষ্যই ছিল দেশের জনগণকে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্ত করার, মানুষ উন্নত জীবন পাবে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবে, শিক্ষা পাবে এবং তারা মাথা উঁচু করে চলবে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণ হয়েছে যে, ইতিহাসকে কখনো মুছে ফেলা যায় না এবং ইতিহাস তার স্থান একদিন ঠিকই করে নেবে। এটা এখন প্রমাণিত।
তিনি বলেন, জাতির পিতা তার ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং গেরিলা যুদ্ধের চূড়ান্ত নির্দেশনা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতালিপ্সুরা ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে এবং জাতির পিতার নাম ও তার সকল অর্জনকে মুছে ফেলে দিতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কাজেই যারা ১৯৭৫-এর পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে পতিত হয়েছে, তারা কূপমণ্ডূকতায় ভুগছে।
শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ: ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এদিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
এদিকে বিকালে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘুরে ঘুরে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অন্যান্য কর্মসূচি: এদিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান ২৬শে নভেম্বর, নৌবাহিনী প্রধান ২১শে নভেম্বর এবং বিমান বাহিনী প্রধান ২২শে নভেম্বর নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে পৃথক পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করবেন। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় এবং অপরাহ্ণ/সন্ধ্যায় বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর, খুলনা ও রাজেন্দ্রপুর (গাজীপুরসহ) সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুরে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১শে নভেম্বর বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
তারা সকলেই প্রায় এখন অবসরে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় রয়েছেন আমরা এদের সকলকেই আগামী জানুয়ারি থেকে ভাতা প্রদান করবো। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের আমরা মর্যাদা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সম্মানী চেক এবং মোবাইল ট্যাবসহ বিভিন্ন উপহার ৭ বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধে সম্মাননা পদকপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করেন। ‘শান্তিকালীন’ পদক ২০১৬ বিজয়ী ১২ জন এবং ‘অসামান্য সেবা’ পদক বিজয়ী ১৪ জনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্যের মাঝে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পদক বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সুমহান দায়িত্ব সশস্ত্র বাহিনীর ওপর ন্যস্ত। এ পবিত্র দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বশীল অংশগ্রহণ বজায় রাখছে। আমি এজন্য সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, আমাদের সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সব ধরনের কল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। দেশের সকল বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে এবং বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা আজ বিশ্বদরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছি। আমরা সেই সক্ষমতা এবং সামর্থ্য অর্জন করেছি এবং আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি বিজয়ী জাতি এবং এ জাতি কখনও মাথা নত করে থাকবে না। স্বাধীনতার এই গৌরবকে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর। কিন্তু, সেই হারানো গৌরব আমরা আবার ফিরিয়ে এনেছি এবং বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার লক্ষ্যই ছিল দেশের জনগণকে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্ত করার, মানুষ উন্নত জীবন পাবে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবে, শিক্ষা পাবে এবং তারা মাথা উঁচু করে চলবে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণ হয়েছে যে, ইতিহাসকে কখনো মুছে ফেলা যায় না এবং ইতিহাস তার স্থান একদিন ঠিকই করে নেবে। এটা এখন প্রমাণিত।
তিনি বলেন, জাতির পিতা তার ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং গেরিলা যুদ্ধের চূড়ান্ত নির্দেশনা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতালিপ্সুরা ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে এবং জাতির পিতার নাম ও তার সকল অর্জনকে মুছে ফেলে দিতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কাজেই যারা ১৯৭৫-এর পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে পতিত হয়েছে, তারা কূপমণ্ডূকতায় ভুগছে।
শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ: ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এদিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
এদিকে বিকালে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘুরে ঘুরে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অন্যান্য কর্মসূচি: এদিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান ২৬শে নভেম্বর, নৌবাহিনী প্রধান ২১শে নভেম্বর এবং বিমান বাহিনী প্রধান ২২শে নভেম্বর নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে পৃথক পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করবেন। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় এবং অপরাহ্ণ/সন্ধ্যায় বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর, খুলনা ও রাজেন্দ্রপুর (গাজীপুরসহ) সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুরে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১শে নভেম্বর বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
No comments