আফ্রিকার স্বৈরাচারদের মেরুদণ্ডে শিহরণ
রবার্ট
মুগাবে অধ্যায়ের শেষ। নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে জিম্বাবুয়ে। মঙ্গলবার
রাতে ৩৭ বছর ক্ষমতায় থাকা মুগাবে পদত্যাগের পর মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে গেছে
দেশটির চিত্র। এক সময়ের বিপ্লবী যেন পরিণত হয়েছেন খড়কুটোয়। সেনাবাহিনীর
রোষ আর জনগণের অশ্রদ্ধায় ভেসে গেছেন তিনি। তার এই ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ায়
আফ্রিকায় অন্যান্য স্বৈরশাসকদের মেরুদণ্ডে হিম শীতল শিহরণ দিয়ে যাচ্ছে।
তাদেরও একই পরিণতি হতে পারে এমন আতঙ্কে ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্তান্তিনো চিওয়েঙ্গা গত সপ্তাহে মুগাবের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারপর থেকে ক্রমাগত সমর্থন হারাতে থাকেন মুগাবে। রাজধানী হারারে, বুলাওয়ে ও অন্যান্য শহরে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়তে থাকে মানুষ। নিজের জানু-পিএফ দল বিদ্রোহ করে বসে। মঙ্গলবার তার দলই তাকে পদত্যাগের জন্য অভিসংশন প্রক্রিয়া শুরু করে। এরপর বাধ্য হন ৯৩ বছর বয়সী মুগাবে পদ ছাড়তে। তার এই পরিণতিতে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর অবস্থানে আছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইয়োয়েরি মুসেভেনি। কারণ, রবার্ট মুগাবের মতো তিনিও গেরিলা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। ১৯৮৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতার রশি ধরে ঝুলে আছেন তিনি। ক্ষমতায় এসেই প্রেসিডেন্টের সময়সীমার যে বিধান আছে তা বাতিল করেছেন। মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে যাতে না পারে সেজন্য তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্জীব করে রেখেছেন। কেড়ে নিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা। ব্যাপক অনিয়ম ও ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি পঞ্চম বারের মতো ‘বিজয়’ অর্জন করেন। এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে। কিন্তু এতে তার কর্ণকুহরে কোনো সুড়সুড়ি জাগাতে পারে নি। উগান্ডা প্রায় ৪ কোটি মানুসের দেশ। সেখানে যাদের গড় বয়স ১৫ বছর, তাদের বেশির ভাগেরই জন্ম হয় নি মুসেভেনির ক্ষমতা গ্রহণের সময়। মুসেভেনির বয়স এখন ৭৩ বছর। রবার্ট মুগাবের চেয়ে তিনি ২০ বছরের ছোট। কিন্তু এখনকার যুগ হচ্ছে ফেসবুক যুগ। এ সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে তার স্বাধীনতা যুগের দৃষ্টিভঙ্গি আবেদন জাগাতে পারে না। সম্প্রতি তিনি ক্ষমতা গ্রহণের ৩১ বছর পূর্তি উদযাপন করেছেন। এ উপলক্ষ্যে তিনি বক্তব্য রেখেছেন। তাতে আধুনিক গণতন্ত্রে যে জবাবদিহিতার বিষয় থাকে তার লেশমাত্র ছিল না। জিম্বাবুয়েন অবজার্ভারের মতে, মুসেভেনি দর্শক শ্রোতাদের বলেছেন, আমি শুনতে পেয়েছি কিছু লোক বলছে, আমি তাদের চাকর। আমি সবার চাকর নই। আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমি আমার নিজের জন্য এবং আমার বিশ্বাসের জন্য লড়াই করছি।
উগান্ডার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ম্যাগাজিনে অ্যানড্রু ময়েন্ডা লিখেছেন, মুগাবে যেসব ভুল করেছেন তার কিছুটা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন মুসেভেনি। তার ভাষায় ‘ উগান্ডায় জানু-পিএফ দলের সমকক্ষ অতি পুরনো গার্ড বলে পরিচিত ন্যাশনাল রেজিসট্যান্স মুভমেন্ট ও উগান্ডা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সকে বিযুক্ত করেছেন মুসেভেনি। জিম্বাবুয়েতে সেনা নেতৃত্বের সবই নেয়া হয়েছে পুরনো গার্ড থেকে, যারা আফ্রিকায় ‘বুশ ওয়ার’-এ লড়াই করেছিলেন। সেক্ষেত্রে এসব গার্ডকে এড়িয়ে গেছেন মুসেভেনি। মওয়েন্ডা বলেছেন, জিম্বাবুয়েতে এমারসন মনাঙ্গাগওয়ার মতো অবস্থানে ছিলেন উগান্ডার বর্ষীয়ান রাজনীতিক আমামা মবাবাজি। তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্ষমতায় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন এমন একটি আশঙ্কা দেখেছিলেন মুসেভেনি। তাই তিনি তাকে বরখাস্ত করেছেন। তবে কি পরিণতি এখন একই হবে?
সাব সাহারান আফ্রিকার আরো কমপক্ষে তিনটি দেশের সরকার প্রধান এখন একই প্রশ্নের মুখে রয়েছেন। তারা হলেন রোয়ান্ডার পল কাগামে, বুরুন্ডির পিয়েরে নকুরুনজিজা ও কঙ্গের জোসেফ কাবিলা। রবার্ট মুগাবের হঠাৎ পতনে হয়তো তাদেরও মুখে হাত পড়েছে। এর মধ্যে কাগামে ১৯৯৪ সাল থেকে রোয়ান্ডার ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছেন। আগস্টে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। তাতে তিনি আরো সাত বছরের অনুমোদন পেয়েছেন। ওই ভোটে শতকরা ৯৮.৭৯ ভাগ ভোট পড়েছে বলে বলা হয়। তবে সংবিধান সংশোধন করে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ব্যবস্থা পাকা করেছেন। সেখানে তার চেয়ে উত্তম যোগ্যতাসম্পন্ন বিরোধী দলীয় তিনজন প্রার্থীকে করা হয়েছে অযোগ্য। তাই নির্বাচনের আগে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মুথোনি ওয়ানেকি বলেছেন, ২৩ বছর আগে রোয়ান্ডার ক্ষমতা দখল করেছে রোয়ান্ডা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট। কিন্তু সেই রোয়ান্ডাবাসী এখনও সরকারি নীতির সমালোচনা অথবা স্বাভাবিক জীবনযাপরে বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে যে পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে তা আতঙ্কজনক ও নিষ্পেষণমুলক।
তবে কাগামে যে মুগাবের ভাগ্য বরণ করতে যাবেন এমন সম্ভাবনা খুবই কম। এমন ঝুঁকিতে আপাতত নেই প্রতিবেশী বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট পিয়েরে নকুরানজিয়াও। তিনিও ২০১৫ সালে একই রাজনৈতিক গেম খেলেছেন। সাংবিধানিক বিধান থাকা সত্ত্বেও তিনিও তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেছেন। ব্যাপক জনপ্রিয় বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন তিনিও। তাদেরকে তিনি সহিংস উপায়ে চাপিয়ে রেখেছেন। তাকে প্রেসিডেন্ট পদে অনুমোদন দেয় নি আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। তাতে কি! তিনি থোড়াই কেয়ার করেন এসব। তাই তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন। এ মাসে তার বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই তদন্তে কি বেরিয়ে আসে, তার ওপর নির্ভর করছে তার ভাগ্য। অন্তত তখন পরিবর্তন আসতে পারে বুরুন্ডিতে।
ওদিকে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ ২০১৬ সালে শেষ হয়ে যায় জোসেফ কাবিলার। তবে তিনিও মুগাবের মতো ক্ষমতার রশি টেনে ধরে থাকেন। এ বছর বিলম্বিত নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত বানচাল হয়ে যায়। কারণ, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে রাজধানী কিনসাসাতে যে সহিংসতা দেখা দেয়, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় তা বাতিল করা হয়।
আফ্রিকায় স্বৈরাচারদের এমন সব অন্যায় শাসনের ফলে প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। মূল্য দিতে হচ্ছে তাদেরকে। কঙ্গোর রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে ‘বিকলাঙ্গতা’। এতে সেখানে জরুরি মানবাধিকারের প্রতি দৃষ্টি থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে যাদের ভীষণ সহায়তা প্রয়োজন তারা কোনো সহায়তা পাচ্ছে না। এ মাসে এসব বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। তারা বলেছে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কাসাই অঞ্চলে সহিয়সতায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। নিহত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। আফ্রিকার অন্য কোনো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা কঙ্গোতে বেশি। এ বিষয়ে তোয়াক্কা করেন না কাবিলা।
তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান
তাদেরও একই পরিণতি হতে পারে এমন আতঙ্কে ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্তান্তিনো চিওয়েঙ্গা গত সপ্তাহে মুগাবের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারপর থেকে ক্রমাগত সমর্থন হারাতে থাকেন মুগাবে। রাজধানী হারারে, বুলাওয়ে ও অন্যান্য শহরে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়তে থাকে মানুষ। নিজের জানু-পিএফ দল বিদ্রোহ করে বসে। মঙ্গলবার তার দলই তাকে পদত্যাগের জন্য অভিসংশন প্রক্রিয়া শুরু করে। এরপর বাধ্য হন ৯৩ বছর বয়সী মুগাবে পদ ছাড়তে। তার এই পরিণতিতে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর অবস্থানে আছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইয়োয়েরি মুসেভেনি। কারণ, রবার্ট মুগাবের মতো তিনিও গেরিলা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। ১৯৮৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতার রশি ধরে ঝুলে আছেন তিনি। ক্ষমতায় এসেই প্রেসিডেন্টের সময়সীমার যে বিধান আছে তা বাতিল করেছেন। মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে যাতে না পারে সেজন্য তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্জীব করে রেখেছেন। কেড়ে নিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা। ব্যাপক অনিয়ম ও ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি পঞ্চম বারের মতো ‘বিজয়’ অর্জন করেন। এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে। কিন্তু এতে তার কর্ণকুহরে কোনো সুড়সুড়ি জাগাতে পারে নি। উগান্ডা প্রায় ৪ কোটি মানুসের দেশ। সেখানে যাদের গড় বয়স ১৫ বছর, তাদের বেশির ভাগেরই জন্ম হয় নি মুসেভেনির ক্ষমতা গ্রহণের সময়। মুসেভেনির বয়স এখন ৭৩ বছর। রবার্ট মুগাবের চেয়ে তিনি ২০ বছরের ছোট। কিন্তু এখনকার যুগ হচ্ছে ফেসবুক যুগ। এ সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে তার স্বাধীনতা যুগের দৃষ্টিভঙ্গি আবেদন জাগাতে পারে না। সম্প্রতি তিনি ক্ষমতা গ্রহণের ৩১ বছর পূর্তি উদযাপন করেছেন। এ উপলক্ষ্যে তিনি বক্তব্য রেখেছেন। তাতে আধুনিক গণতন্ত্রে যে জবাবদিহিতার বিষয় থাকে তার লেশমাত্র ছিল না। জিম্বাবুয়েন অবজার্ভারের মতে, মুসেভেনি দর্শক শ্রোতাদের বলেছেন, আমি শুনতে পেয়েছি কিছু লোক বলছে, আমি তাদের চাকর। আমি সবার চাকর নই। আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমি আমার নিজের জন্য এবং আমার বিশ্বাসের জন্য লড়াই করছি।
উগান্ডার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ম্যাগাজিনে অ্যানড্রু ময়েন্ডা লিখেছেন, মুগাবে যেসব ভুল করেছেন তার কিছুটা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন মুসেভেনি। তার ভাষায় ‘ উগান্ডায় জানু-পিএফ দলের সমকক্ষ অতি পুরনো গার্ড বলে পরিচিত ন্যাশনাল রেজিসট্যান্স মুভমেন্ট ও উগান্ডা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সকে বিযুক্ত করেছেন মুসেভেনি। জিম্বাবুয়েতে সেনা নেতৃত্বের সবই নেয়া হয়েছে পুরনো গার্ড থেকে, যারা আফ্রিকায় ‘বুশ ওয়ার’-এ লড়াই করেছিলেন। সেক্ষেত্রে এসব গার্ডকে এড়িয়ে গেছেন মুসেভেনি। মওয়েন্ডা বলেছেন, জিম্বাবুয়েতে এমারসন মনাঙ্গাগওয়ার মতো অবস্থানে ছিলেন উগান্ডার বর্ষীয়ান রাজনীতিক আমামা মবাবাজি। তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্ষমতায় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন এমন একটি আশঙ্কা দেখেছিলেন মুসেভেনি। তাই তিনি তাকে বরখাস্ত করেছেন। তবে কি পরিণতি এখন একই হবে?
সাব সাহারান আফ্রিকার আরো কমপক্ষে তিনটি দেশের সরকার প্রধান এখন একই প্রশ্নের মুখে রয়েছেন। তারা হলেন রোয়ান্ডার পল কাগামে, বুরুন্ডির পিয়েরে নকুরুনজিজা ও কঙ্গের জোসেফ কাবিলা। রবার্ট মুগাবের হঠাৎ পতনে হয়তো তাদেরও মুখে হাত পড়েছে। এর মধ্যে কাগামে ১৯৯৪ সাল থেকে রোয়ান্ডার ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছেন। আগস্টে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। তাতে তিনি আরো সাত বছরের অনুমোদন পেয়েছেন। ওই ভোটে শতকরা ৯৮.৭৯ ভাগ ভোট পড়েছে বলে বলা হয়। তবে সংবিধান সংশোধন করে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ব্যবস্থা পাকা করেছেন। সেখানে তার চেয়ে উত্তম যোগ্যতাসম্পন্ন বিরোধী দলীয় তিনজন প্রার্থীকে করা হয়েছে অযোগ্য। তাই নির্বাচনের আগে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মুথোনি ওয়ানেকি বলেছেন, ২৩ বছর আগে রোয়ান্ডার ক্ষমতা দখল করেছে রোয়ান্ডা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট। কিন্তু সেই রোয়ান্ডাবাসী এখনও সরকারি নীতির সমালোচনা অথবা স্বাভাবিক জীবনযাপরে বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে যে পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে তা আতঙ্কজনক ও নিষ্পেষণমুলক।
তবে কাগামে যে মুগাবের ভাগ্য বরণ করতে যাবেন এমন সম্ভাবনা খুবই কম। এমন ঝুঁকিতে আপাতত নেই প্রতিবেশী বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট পিয়েরে নকুরানজিয়াও। তিনিও ২০১৫ সালে একই রাজনৈতিক গেম খেলেছেন। সাংবিধানিক বিধান থাকা সত্ত্বেও তিনিও তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেছেন। ব্যাপক জনপ্রিয় বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন তিনিও। তাদেরকে তিনি সহিংস উপায়ে চাপিয়ে রেখেছেন। তাকে প্রেসিডেন্ট পদে অনুমোদন দেয় নি আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। তাতে কি! তিনি থোড়াই কেয়ার করেন এসব। তাই তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন। এ মাসে তার বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই তদন্তে কি বেরিয়ে আসে, তার ওপর নির্ভর করছে তার ভাগ্য। অন্তত তখন পরিবর্তন আসতে পারে বুরুন্ডিতে।
ওদিকে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ ২০১৬ সালে শেষ হয়ে যায় জোসেফ কাবিলার। তবে তিনিও মুগাবের মতো ক্ষমতার রশি টেনে ধরে থাকেন। এ বছর বিলম্বিত নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত বানচাল হয়ে যায়। কারণ, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে রাজধানী কিনসাসাতে যে সহিংসতা দেখা দেয়, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় তা বাতিল করা হয়।
আফ্রিকায় স্বৈরাচারদের এমন সব অন্যায় শাসনের ফলে প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। মূল্য দিতে হচ্ছে তাদেরকে। কঙ্গোর রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে ‘বিকলাঙ্গতা’। এতে সেখানে জরুরি মানবাধিকারের প্রতি দৃষ্টি থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে যাদের ভীষণ সহায়তা প্রয়োজন তারা কোনো সহায়তা পাচ্ছে না। এ মাসে এসব বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। তারা বলেছে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কাসাই অঞ্চলে সহিয়সতায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। নিহত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। আফ্রিকার অন্য কোনো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা কঙ্গোতে বেশি। এ বিষয়ে তোয়াক্কা করেন না কাবিলা।
তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান
No comments