প্রতিবন্ধক সিন্ডিকেট ॥ কৃষকের ভাগ্য বদল- স্থানীয় দালাল, সরকার দলীয় লোক ব্যাংক ম্যানেজার সিকিউরিটি গার্ড জড়িত by খায়রুল হোসেন রাজু
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন করাসহ সামগ্রিক সুযোগসুবিধা দিতে এগিয়ে এলেও স্থানীয় পর্যায়ের ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দালালরা এতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক।
মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইউনিয়নের তেগুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোঃ ফেলুউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ১০ হাজার টাকা তুলতে হলে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক থেকে দেড় হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া টাকা তুলতে সরকারদলীয় স্থানীয় নেতাকর্মী ও দালালদের শরণাপন্ন হতে হয়। মোটকথা টাকা না দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তোলা যায় না।বরগুনা পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের পূর্ব কালমেঘার কৃষক নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাথরঘাটার ব্যাংকগুলোর ব্রাঞ্চ থেকে টাকা তুলতে হলে আমাদের হাজারে ১০ টাকা করে দিতে হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের। এটি এখন ওপেন সিক্রেট। এছাড়া ১০ হাজারের উপরে লোন তুললে এককালীন ২ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এ ঘুষের সঙ্গে স্থানীয় দালাল, সরকারদলীয় লোক এবং ব্যাংকের ম্যানেজার থেকে সিকিউরিটি গার্ড জড়িত। এরা সিন্ডিকেট করেই কৃষকের থেকে ঘুষ নিচ্ছে। অথচ এটি প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা নির্যাতিত, অবহেলিত এবং সুবিধাবঞ্চিত বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাপক উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও কৃষি ঋণ গ্রহণের ৰেত্রে কৃষক একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি ব্যাংকসহ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিকিউরিটি গার্ড, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় দালালরা এ সিন্ডিকেটের সদস্য। কোন ধরনের হয়রানি, ঝামেলা এবং অনিয়ম ছাড়াই কৃষক যাতে ঋণ পেতে পারেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এধরনের নির্দেশ থাকলেও এটি বাসত্মবে কার্যকর হচ্ছে না বলে মাঠপর্যায়ের কৃষকের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণ নিয়ে কিছু কিছু জায়গা থেকে অনিয়মের খবর শোনা যাচ্ছে। তবে এটি রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষক যাতে ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারেন এবং ঋণ গ্রহণে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হন এ জন্য খুব শীঘ্রই ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি সাকর্ুলারও জারি করা হয়। এর পাশাপাশি যেসব কৃষককে ঋণ দেয়া হচ্ছে, ওই কৃষকের মোবাইল নম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে বলা হয়েছে। কারণ কৃষক যথাযথভাবে ঋণ পাচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে আমি নিজেই কৃষকের সঙ্গে কথা বলব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, দেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের একাধিক শাখায় কৃষি ঋণ বিতরণ হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশ শাখার ম্যানেজারসহ সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্নভাবে কৃষকের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন। ব্যাংকের এসব কর্মকর্তার সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এদের পাশাপাশি রয়েছে স্থানীয় দালাল। এরা সকলে মিলে একটি সিন্ডিকেট করে কৃষিঋণ পাইয়ে দিতে কৃষককে বিভিন্নভাবে জিম্মি করছেন।
ব্যাংকগুলোর যেসব শাখায় কৃষি ঋণ দেয়া হয়, সেগুলোর অধিকাংশ ম্যানেজারসহ সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিবিধান অমান্য করেই ঋণ রিসিডিউল করার জন্য যে বিধি রয়েছে, তা অমান্য করে পুনর্তফসিলকরণ করছে। একই সঙ্গে ব্যাংক সরকারী পলিসি ঠিক মতো পালন করছে না। ম্যানেজার পকেট ব্যাংকিং বা ভুয়া ঋণ দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি কৃষি ঋণের ২০০৯-১০ অর্থবছরের কৃষি/পলস্নী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচীর ২-এর (৫) নং ধারা অমান্য করছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ২.৫ (আড়াই) একর
পর্যনত্ম জমিতে চাষাবাদের জন্য ফসল ঋণের ৰেত্রে শুধু সংশিস্নষ্ট ফসল দায়বদ্ধর বিপরীতে ঋণ প্রদান করা যাবে। অথচ কৃষকদের ঋণ দেয়ার ৰেত্রে জমির দলিল জামানত নেয়া হয়। ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণের টার্গেট অনুযায়ী বিতরণ করছে না। ঋণ বিতরণের টার্গেট ২৫ শতাংশ থাকলেও দেখা গেছে ৮ থেকে ১০ অথবা ১৪ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কৃষক যাতে তাদের সুযোগসুবিধা অনুযায়ী ঋণ পেতে পারেন এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই বিআরপিডি থেকে ৪নং সাকর্ুলার জারি করা হয়। ওই সাকর্ুলারে বলা হয়, অঞ্চলভিত্তিক ফসল উৎপাদন, ফসলের ধরন অর্থাৎ যে এলাকায় যে ফসল ভাল জন্মে সেগুলোকে গুরম্নত্ব দিয়ে এরিয়া এ্যাপ্রোচ পদ্ধতিতে বাসত্মবভিত্তিক কৃষি ঋণ বিতরণ করতে হবে। অপেৰাকৃত অনগ্রসর এবং উপেৰিত চর, হাওর, উপকূলীয় এলাকায় ঋণ প্রদানের ৰেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রকৃত কৃষক ও বর্গাচাষীদের সহজ পদ্ধতিতে ঋণ দিতে হবে। কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গুদামজাতকৃত কৃষিপণ্যের বিপরীতে শস্য গুদামজাত ও বাজারজাতকরণ খাতে প্রকৃত কৃষকদের ঋণ প্রদান করতে হবে। কৃষি ঋণ বিতরণে আরও স্বচ্ছতা আনতে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকাশ্যে কৃষি ঋণ বিতরণের ওপর গুরম্নত্ব দিতে হবে। কৃষির সহায়ক খাত হিসেবে সেচ যন্ত্রপাতি ও কৃষি যন্ত্রপাতিতেও প্রয়োজনীয় ঋণ সরবরাহ করতে হবে। প্রকৃত কৃষক যাতে সময়মতো প্রয়োজনীয় পরিমাণ কৃষি ঋণ পেতে পারেন, হয়রানির শিকার না হন এবং কৃষি ঋণের লৰ্যমাত্রা যাতে পুরোপুরি অর্জন করা সম্ভব হয় সে ব্যাপারে সংশিস্নষ্ট ব্যাংকসমূহকে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কৃষি ঋণ বিতরণের ৰেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর পাশাপাশি এরিয়া এ্যাপ্রোচভিত্তিতে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাংক শাখাসমূহকে লবণ চাষের জন্য চাষীদের প্রয়োজনীয় পরিমাণ কৃষি ঋণ বিতরণ করতে হবে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাকর্ুলার জারির প্রায় ৮ মাস পার হলেও এটি যথাযথভাবে বাসত্মবায়িত হচ্ছে না। ফলে কৃষকদের দুর্ভোগ কমছে না। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগ ব্যাহত করছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা গাজীপুর থেকে জানিয়েছেন, কৃষকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন সুযোগসুবিধার নির্দেশনা এখনও স্থানীয় ব্যাংকের কাছে আসে পেঁৗছায়নি বলে ব্যাংকাররা জানান। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষি ঋণ গ্রহণের ফলে ঘুষ প্রদান করাসহ তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-বারোবাজারের বাসিন্দা চাঁন মিয়া (আকাশ) জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, কৃষি ঋণ নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের কিছু কিছু ব্যবসায়ী, স্কুলশিৰক এবং সরকারদলীয় নেতারা কৃষক সেজে ঋণ নিচ্ছেন। এতে প্রকৃৃত কৃষক ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও জানান, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়া ছাড়া কোনভাবেই ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। কোন কৃষক ঘুষ না দিলে তিনি ঋণ পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-২-এর একাধিক উর্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা সকলেই প্রায় একই সুরে বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণ নিয়ে অনিয়ম রোধে বিভিন্ন পদৰেপ নেয়া হচ্ছে। কিছু সমস্যা তো থাকবেই। তবে আগের বছরগুলোর চেয়ে এ বছর কৃষি ঋণ বিতরণে অনিয়ম অনেকাংশে কমে গেছে। তারা আরও জানান, লোকবলের অভাবের কারণেই বছরে সকল ব্যাংকের ব্রাঞ্চ পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। ফলে কিছু কিছু ব্যাংকের ম্যানেজার ও কর্মকর্তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ঋণ আদান-প্রদান করছেন। এটি নিয়ে রিপোর্টও হচ্ছে। তবে ঘুষ, দুর্নীতি এবং অনিয়ম বরিশালে বেশি হচ্ছে। কিন্তু যেসব কৃষক ঘুষ দিচ্ছেন তাঁরা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে কোন শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এসব বিষয় রোধ করতে হলে পরিদর্শন ও মনিটরিং বিভাগকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। একই সঙ্গে বাসত্মবায়ন বিভাগও প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কৃষি ঋণ বিতরণে কিছুটা অনিয়মের কথা স্বীকার করে জনকণ্ঠকে বলেন, অনিয়ম রোধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি গাজীপুরে অনিয়ম খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে, যা কঠোর হাতে দমন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণ নিয়ে কোন ধরনের অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশিস্নষ্টদের বিরম্নদ্ধে কঠোর শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ব্রাঞ্চগুলোর মধ্যে বছরে প্রায় ২০ শতাংশ পরিদর্শন করা হয়। বাকি ৮০ শতাংশ ব্রাঞ্চ পরিদর্শন করা হচ্ছে না। গত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রায় ১৪শ' ব্রাঞ্চের মধ্যে ২৪০ ব্রাঞ্চ পরিদর্শন করেছে। ২০০৯-১০ সালের জন্য পরিদর্শনের টার্গেট ধরা হয়েছে ২৩৯ ব্রাঞ্চ। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৩৬৪ ব্রাঞ্চের মধ্যে ২০০৮-০৯ সালে ৯৯টি পরিদর্শন করা হয়। আর ২০০৯-১০ সালের জন্য ৯৮ ব্রাঞ্চকে পরিদর্শনের জন্য টার্গেট করা হয়। ব্যাংকগুলোর সকল শাখা একবার পরিদর্শন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তাদের প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগে। অথচ সকল ব্রাঞ্চে বছরে একবার পরিদর্শন করার জন্য ব্যাংকিং আইন রয়েছে। কিন্তু এটি হচ্ছে না। ফলে স্থানীয় ব্যাংকের ম্যানেজাররা নিজেদের ইচ্ছেমতো ঋণ আদান-প্রদান করেন। ফলে ব্যাংকগুলোতে সরকারের ঘোষিত আইন বাসত্মবায়ন হয় না। এতে সরকার লোকসান দিচ্ছে। আর লাভবান হচ্ছে সংশিস্নষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এসব বিষয় ওপেনসিক্রেট হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা তেমন কোন শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু অসৎ কর্মকর্তা বিষয়টি জেনেও চূড়ানত্ম প্রতিবেদনে তা উলেস্নখ করছেন না। কারণ তাঁরাও ওই সব ম্যানেজার ঘুষের একটি অংশ পাচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান।
কৃষি খাতের অনিয়ম রোধে কৃষিবিদ ও ব্যাংকাররা বলেছেন, কৃষি ঋণ বিতরণে সকল অনিয়ম প্রতিরোধ করতে হলে ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলোর সকল ব্রাঞ্চ একবার পরিদর্শন করা উচিত। একই সঙ্গে আকস্মিক পরিদর্শক দলকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। এর পাশাপাশি পরিদর্শনের সঙ্গে পরিপালনের জন্য আলাদা বিভাগও থাকা দরকার। পরিপালন বিভাগ না থাকার কারণে অপরাধীরা যথাযথভাবে শাসত্মি পাচ্ছে না।
No comments