সময়ের প্রতিধ্বনি-মহাজোট সরকারের দুই বছর সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান by মোস্তফা কামাল

আজ ৫ জানুয়ারি ২০১১। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠন করে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিগত দুই বছরে সরকারের বেশ কিছু সফলতা আছে, আবার ব্যর্থতাও আছে। এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, এখন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বড় ধরনের কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। কোনো কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অদক্ষতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও সামগ্রিক বিচারে মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্যের ভাবমূর্তি ইতিবাচক। কৃষিমন্ত্রীর মতো শিক্ষামন্ত্রীর সফলতার পাল্লাও বেশ ভারী। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী, পানিসম্পদমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর মতো কয়েকজন মন্ত্রীর ব্যর্থতার দায়ও সরকারকে বহন করতে হচ্ছে। আমরা সরকারের দুই বছরের সফলতা ও ব্যর্থতার কিছু খতিয়ান এখানে তুলে ধরছি।
আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, শুরুতেই সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়েছিল। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি (২০০৯) বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ কর্মকর্তা নিহত হন। তখন ধারণা করা হয়েছিল, বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা ছিল। পরে তদন্তে বেরিয়ে এল অন্য তথ্য। সিআইডির দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিডিআর জওয়ানদের সিদ্ধান্ত ছিল দাবি আদায়ে সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করবে, প্রয়োজনে গুলি করবে। এ পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় পিলখানায় জঘন্য হত্যাসহ অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বুদ্ধিমত্তায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। তিনি তখন সমস্যার সামরিক সমাধানে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেন। যদিও আমাদের হারাতে হয়েছে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে। এটা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কোনো দিনও সম্ভব নয়। ওই কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। ইতিমধ্যে বিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, সেই পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের সুষ্ঠু বিচার হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের ফাঁসি নিশ্চিত করে বর্তমান সরকার জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে। এখন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যেই জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিগগিরই বিচারও শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে পারলে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় না এলেও দুঃখ থাকবে না। অবশ্য এ জন্য দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে। আরো স্পষ্ট করে বললে বলা যায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আওয়ামী লীগ গণরায় পেয়েছে। তাদের বিচারে এখন আর কোনো বাধা নেই, যদিও সৌদি আবর, পাকিস্তানসহ কিছু দেশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করার জন্য সরকারকে চাপ দিয়ে আসছে। আমরা আশা করব, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ যা-ই থাকুক, জনগণের রায়ের প্রতি সরকার সম্মান দেখাবে।
জঙ্গি দমনেও বর্তমান সরকার বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এ কাজে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ও সমর্থন পাচ্ছে সরকার। বিগত দুই বছরে সারা দেশে জঙ্গি তৎপরতা অনেকটাই কমে গেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে জঙ্গিদের মূলোৎপাটনে বেশি সময় লাগবে না।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দেশের সম্মান বয়ে আনছে।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বর্তমান সরকার অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এশিয়ার দুই শক্তিধর দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গে সমান্তরাল সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে। দুই দেশকেই আস্থায় রেখে চমৎকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই তিন দেশেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রকে আস্থায় রেখে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে বর্তমান সরকার। একসময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্যোগের দেশ হিসেবে তুলে ধরা হতো। আর এখন আমাদের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বলা হচ্ছে, অচিরেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের শক্ত অবস্থান তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আশঙ্কা করা হয়েছিল, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো। সেই আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এখন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান উদীয়মান বাঘের মতো। ইউরোপের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয় স্থান দখল করেছে। এ ক্ষেত্রে কোনো দেশের করুণা ছিল না। প্রতিযোগিতা করেই আমেরিকা ও ইউরোপের বাজারে অবস্থান নিচ্ছে বাংলাদেশ। এখন বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের বেশি সময় লাগবে না।
সরকারের উচিত বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া। বিদেশি দূতাবাসগুলোকে এ ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রেও সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাব পরিহার করতে হবে। রেমিট্যান্স আয় এখনো ঠিক থাকলেও জনশক্তি রপ্তানির হার নিম্নগামী। জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে দেশে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। এখন সারা বিশ্বেই দক্ষ জনশক্তির খুবই প্রয়োজন। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ। সরকার ঘোষিত শিক্ষানীতি সর্বমহলে বহুল প্রশংসিত। ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
গতিহীন প্রশাসন : দুই বছরেও গতি পায়নি জনপ্রশাসন। এখনো প্রশাসনে বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে। অসংখ্য কর্মকর্তা ওএসডি। অনেকে পদোন্নতি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা বিএনপি সরকারের সুবিধাভোগী। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দলীয় প্রলেপ লাগিয়ে কেন সুবিধা ভোগ করবেন? কেন এ ধরনের প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে? কেন যোগ্যতা-দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না?
সবাই আশা করেছিল, দলীয় প্রভাবমুক্ত দক্ষ একটি প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো দল নেই। তাঁরা প্রজাতন্ত্রের সেবক। যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তাঁরা দেশের স্বার্থে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে আমরা সেই চিত্রই দেখতে পাই। কিন্তু বাংলাদেশে তার বিপরীত চিত্র। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দলীয় প্রলেপ লাগিয়ে সুবিধা ভোগ করেন। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। এ প্রবণতা ১৯৯১ সাল থেকে দেখে আসছি। এর থেকে বেরোতে না পারলে প্রশাসনিক কাঠামো বলতে কিছু থাকবে না।
দেশের প্রশাসনিক কাঠামো নড়বড়ে হলে দেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো সম্ভব হয় না। বিষয়টি বর্তমান সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে। দলীয় প্রভাবমুক্ত মেধাসম্পন্ন প্রশাসনই পারে দেশকে এগিয়ে নিতে। সরকার আসবে, সরকার যাবে, প্রশাসন থাকবে। সেই প্রশাসন সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। আমরা একটি দক্ষ, দেশপ্রেমিক মেধাসম্পন্ন প্রশাসন দেখার অপেক্ষায় আছি।
অকার্যকর সংসদ : বিরোধী দল অব্যাহতভাবে বর্জন করায় জাতীয় সংসদ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রে সব সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সংসদ। অথচ সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দুই দশক পূর্ণ হলেও সংসদকে কার্যকর করার কোনো উদ্যোগ, পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সংসদকে কার্যকর করতে সরকারকেই উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। বিরোধী দলকে সংসদে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। আবার বিরোধী দলকেও একগুঁয়ে মনোভাব পরিত্যাগ করতে হবে। সংসদ বর্জন করে তারা কী অর্জন করছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। বরং রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি : দুই বছরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল আইনশৃঙ্খলা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গুম, গুপ্তহত্যা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা-পাল্টাহামলা, ইভ টিজিং, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। আমাদের দেশের মানুষের চাহিদা খুবই সামান্য। মোটা ভাত আর নিরাপদে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেই মানুষ খুশি। মানুষের সেই নিরাপত্তাটুকু নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সরকারের সর্বশক্তি নিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ২০১১ সাল হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের বছর। এ জন্য যত ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া দরকার তা নেবে এবং বাস্তবায়ন করবে।
নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য : সরকার সবচেয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, বাণিজ্যমন্ত্রী কথা বললেই দাম বাড়ে। তিনি শুরুতে বাজার পরিদর্শনেও গেছেন। অনেক বড় বড় বুলি শুনেছি তাঁর মুখে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দাম বাড়া নিয়ে মিডিয়ায় প্রতিবেদন হলে বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের ডেকে ধমক-ধামক দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন। ব্যবসায়ীদের আস্থায় নিয়ে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তিনি নিতে পারছেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়, মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে তিনি জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে যা দরকার তা হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া। বাজার তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। শুধু হুকুম দিয়ে ঘরে বসে থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এটাও ঠিক, আন্তর্জাতিক বাজারেও দ্রব্যমূল্য অস্থিতিশীল। এটা মাথায় রেখেই সরকারকে অগ্রসর হতে হবে।
বিদ্যুৎ খাতে হতাশার চিত্র : আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ক্ষমতায় যেতে পারলে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন ঘটাবে। এ ক্ষেত্রে তারা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেবে। সেই প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ইতিমধ্যে কিছু সফলতা এসেছে। কিন্তু আশানুরূপ ফল এখনো আসেনি। দেশে শিল্পায়নের জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সামনে সেচ মৌসুম। সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দরকার। সরকারের হাতে আর তিন বছর সময় আছে। এ তিন বছরে সরকারকে তার প্রতিশ্রুতি পূরণে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি থমকে দাঁড়াবে।
বেপরোয়া ছাত্রলীগ : বিগত দুই বছরই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ছিল বেপরোয়া। ছাত্রলীগের কারণে ক্ষমতাসীন সরকারের সব অর্জন ম্লান হয়ে গেছে। বিগত দুই বছরে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। কিন্তু তার পরও ছাত্রলীগের লাগাম টানা যাচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রলীগকে সামলাতে না পারলে সরকারের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এখন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রিয় পাঠক, শুরুতে আমরা সরকারের কিছু সফলতার চিত্র তুলে ধরেছি। পরে সরকারের ব্যর্থতার চিত্রও তুলে ধরলাম। এ ক্ষেত্রে সরকার যে কিছুই করেনি তা নয়। সরকার চেষ্টা করছেন কিন্তু এখনো সফলতা আসেনি। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। তিনি দেশকে সত্যিকার অর্থেই তাঁর বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এ কাজে দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং গণপ্রশাসনের সহযোগিতা দরকার। আমরা আশা করি, শেখ হাসিনার সদিচ্ছাকে সংশ্লিষ্ট সবাই মূল্য দেবেন এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবেন।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
mkamalbd@hotmail.com

No comments

Powered by Blogger.