আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার by মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন
আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন
জিয়াউর রহমান। ঘোষণা করেন সুস্পষ্ট দূরদর্শন; কৃষি, শিল্প ও জনশক্তিকে
প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যান তার দূরদর্শন নিয়ে।
যোগ্যতা,
শ্রম ও একাগ্রতা আর অধ্যবসায়ের মেলবন্ধনে তিনি সব বিঘেœর প্রাচীরকে চূর্ণ
করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন সাফল্যের শীর্ষতম বিন্দুতে। অনৈক্য ও
বিভাজনের কঠিন বৃত্ত থেকে তিনি রাজনীতি ও অর্থনীতিকে বের করে এনে প্রায়
প্রতিটি েেত্রই অঙ্কন করেছেন নিজের সাফল্যচিহ্ন। দর্শন চিন্তা, সাংগঠনিক
চিন্তা, রাজনৈতিক চিন্তা, কৃষি, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির মাধ্যমে তিনি
জানিয়ে গেছেন তার বহুমাত্রিক দ্যুতিময় প্রতিভা ও কৃতিত্বের জগৎ সম্পর্কে।
শহীদ জিয়া বাংলাদেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে পালন করেন দিকনির্দশকের ভূমিকা। ফলে বাংলাদেশ ব্যবসায়-বাণিজ্য ও উৎপাদন-উন্নয়নের মূলস্রোতে প্রবেশ করে। তার রাষ্ট্রনায়কোচিত পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হয় ইউরোপ-আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজার। এই বাজারের সূত্র ধরেই বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প ও জনশক্তি রফতানির বাজার এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি; স্বপ্ন দেখছে মধ্যে আয়ের দেশ হওয়ার।
স্বনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে এবং মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে জিয়াউর রহমান ঘোষণা করেন ‘১৯ দফা’ কর্মসূচি। এটিও বিএনপির রাজনীতির আরেকটি অন্যতম স্তম্ভ। জিয়া বিএনপির মাধ্যমে এই কর্মসূচিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন মাঠে-ঘাটে ও পথে-প্রান্তরে। আমাদের কৃষিভিত্তিক সভ্যতার স্বকীয় রূপ ফুটে উঠেছিল তার ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে। তিনি গ্রামের পর গ্রাম, মাইলের পর মাইল হেঁটেছেন। হাতে কোদাল তুলে নিয়েছেন, খনন করেছেন খাল; তার দুই হাতের ছোঁয়ায় ফসলে ফসলে মাঠ ভরে উঠেছিল, ঘটেছিল কৃষি বিপ্লব। তলাবিহীন ঝুড়ির উপাধি পাওয়া দেশ পরিণত হয়েছিল ফুল, ফল ও ফসলে ভরপুর এক দেশে, মানুষ পরিণত হয়েছিল কর্মমুখী মানুষে; গ্রামে-গ্রামে সৃষ্টি হয়েছিল সামাজিক নেতৃত্ব। স্বনির্ভর গ্রাম ও স্বনির্ভর দেশ গড়তে তার ১৯ দফা কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অনিবার্য দিকনির্দেশনা হয়ে আছে এবং থাকবে।
জিয়াউর রহমান বিএনপির জন্য রেখে গেছেন এক স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। তার আদর্শ, সততা, কর্মোদ্যোগ ও চিন্তাচেতনা মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে আমাদের জাতীয় জীবনে। জাতিকে বড় করার সব গুণ তার মধ্যে ছিল। তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন বড় কিছু করতে। তার চিন্তা ছিল সুদূরপ্রসারী। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির গতিপথ পরিবর্তন করেন। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্প, জনশক্তি রফতানি, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে তার সুস্পষ্ট অবদান রয়েছে। তিনিই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম থেকে মুক্ত করেন; এটি ঐতিহাসিক সত্য।
জিয়ার কর্মতৎপরতায়ই গ্রামে-গ্রামে, পাড়ায়-পাড়ায় গড়ে ওঠে সমষ্টিগত শক্তি, সামাজিক শক্তি ও সামাজিক নেতৃত্ব। ফলে বিচ্ছিন্ন, দ্বিধাবিভক্ত ও শক্তিহীন মানুষ সমষ্টিগত শক্তিকে পরিণত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন যার যার কাজে। বেড়ে যায় তে-খামারে ও কল-কারখানায় উৎপাদন, খাদ্য সঙ্কটের দেশ পরিণত হয় খাদ্য রফতানির দেশে। বাংলাদেশ রূপান্তরিত হয় উন্নয়নশীল ও সম্ভাবনাময় দেশে। শক্তিশালী ও সৎ সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমেই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও নেতৃত্বশূন্য বাংলাদেশকে অল্প সময়েই কাঠামোগত রাষ্ট্রে পরিণত করেন তিনি। এর বাস্তবচিত্রই আজ প্রতিফলিত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি, জনশক্তি রফতানি ও তৈরী পোশাক শিল্পে। এই তিনটি খাত নিয়েই তার স্বপ্ন ছিল, ছিল পরিকল্পনা ও ভিশন; ভিশন ছিল বলেই এই তিনটি খাত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে, বাংলাদেশ স্বনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে।
শহীদ জিয়া সুস্পষ্ট দর্শনের ভিত্তিতে একটি প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। তাই তাদের বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আজকের প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়েছে। ব্যাপক ও পরিকল্পিত অপপ্রচার চালিয়ে আজকের প্রজন্মের মধ্যে বিএনপির প্রতি নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এ থেকে বেড় করে আনতে হবে, লেখালেখির মাধ্যমে তাদের মধ্যে শহিদ জিয়ার রাজনৈতিক ও আদর্শিক দিক বেশি করে তুলে ধরতে হবে। ঘনায়মান অন্ধকার পেরিয়ে সুন্দর ও নান্দনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে তার কর্মস্পৃহা অনুসরণীয়।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা এখন খুবই জোরালো। এক কথায় বললে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখন রাজনীতির গতিপথ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। দুঃখজনক হলেও সত্য গণমাধ্যম খাতে জাতীয়তাবাদী ঘরানার উদ্যোক্তাদের তেমন এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। ২৫টি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বেশির ভাগই আওয়ামী ঘরানার লোকজন দ্বারা পরিচালিত। চারটি টিভি চ্যানেলে ২৪ ঘণ্টা নিউজ প্রচারিত হয়। এর সব ক’টি আওয়ামী লীগের লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। সংবাদপত্রেও একই অবস্থা। সুতরাং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মন-মনসিকতা আছে এমন সব মানুষ চিহ্নিত করে, তাদের পৃষ্টপোষকতা দিতে বিএনপিকে এগিয়ে আসতে হবে।
নেতিবাচক রাজনীতির পেছনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে টাকা খরচ করে, সে টাকা দিয়ে প্রশিণ ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে দলীয় নেতাকর্মীরা লেখালেখি, গবেষণা ও সৃজনশীল কাজের ওপর প্রশিণ নিতে পারে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোতে কাক্সিত লেখক, গবেষক ও সৃজনশীল মানুষ তৈরি হবে। রিসার্চ করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক কর্মকৌশল তৈরি করলে, তা দলের জন্য যেমন ভালো ফল বয়ে আনবে; তেমনি দেশের জন্যও ভালো হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত অপপ্রচার সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেশের মানুষ জানতে পারবে। ফলে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারক-বাহক দল বিএনপির জনপ্রিয়তাও উত্তরোত্তর বাড়বে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রকৃতি হতে হবে উদারনৈতিক, সঙ্কীর্ণমনা নয়। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিত্ব হতে হবে সৃজনমুখী; হতে হবে সংবেদনশীল, কঠোরমনা নয়। রাষ্ট্রীয় মতাকে জনগণের আমানত হিসেবে গণ্য করতে হবে। রাষ্ট্রীয় মতা নিজেদের প্রভাব, বৈভব বা প্রতিপত্তি অর্জনের মাধ্যম হতে পারে না; শহীদ জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন স্বর্ণোজ্জ্বল আদর্শই রেখে গেছেন।
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি উৎকৃষ্ট সৃষ্টিশীলতার সংমিশ্রণ তার প্রধানতম কৃতিত্ব। ইতিহাস জিয়াউর রহমানকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছে, ব্যক্তির অস্তিত্ব অতিক্রমী শহীদ জিয়াও তেমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। দারিদ্র্য, রাজনৈতিক সঙ্কট, আর্থসামাজিক ঝড় পেরিয়ে তিনি যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছেন সেটা বিশ্বজয়ের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়।
মৃত্যুকে পরাজিত করে জীবনই জেগে থাক তার চার পাশ ঘিরে। এমনকি ব্যক্তিক মৃত্যুতে অতিক্রমী তার কর্ম-কীর্তি ও চিরঞ্জীব সত্তা ক্রমেই স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হোক সবার সামনে, ভুবনজুড়ে। যে স্বীকৃতির প্রতিধ্বনি তিনি পেয়েছেন জগৎ থেকে তা এখন স্থায়ীভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে ইতিহাসের সোনালি পাতায়।
শহীদ জিয়া বাংলাদেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে পালন করেন দিকনির্দশকের ভূমিকা। ফলে বাংলাদেশ ব্যবসায়-বাণিজ্য ও উৎপাদন-উন্নয়নের মূলস্রোতে প্রবেশ করে। তার রাষ্ট্রনায়কোচিত পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হয় ইউরোপ-আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজার। এই বাজারের সূত্র ধরেই বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প ও জনশক্তি রফতানির বাজার এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি; স্বপ্ন দেখছে মধ্যে আয়ের দেশ হওয়ার।
স্বনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে এবং মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে জিয়াউর রহমান ঘোষণা করেন ‘১৯ দফা’ কর্মসূচি। এটিও বিএনপির রাজনীতির আরেকটি অন্যতম স্তম্ভ। জিয়া বিএনপির মাধ্যমে এই কর্মসূচিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন মাঠে-ঘাটে ও পথে-প্রান্তরে। আমাদের কৃষিভিত্তিক সভ্যতার স্বকীয় রূপ ফুটে উঠেছিল তার ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে। তিনি গ্রামের পর গ্রাম, মাইলের পর মাইল হেঁটেছেন। হাতে কোদাল তুলে নিয়েছেন, খনন করেছেন খাল; তার দুই হাতের ছোঁয়ায় ফসলে ফসলে মাঠ ভরে উঠেছিল, ঘটেছিল কৃষি বিপ্লব। তলাবিহীন ঝুড়ির উপাধি পাওয়া দেশ পরিণত হয়েছিল ফুল, ফল ও ফসলে ভরপুর এক দেশে, মানুষ পরিণত হয়েছিল কর্মমুখী মানুষে; গ্রামে-গ্রামে সৃষ্টি হয়েছিল সামাজিক নেতৃত্ব। স্বনির্ভর গ্রাম ও স্বনির্ভর দেশ গড়তে তার ১৯ দফা কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অনিবার্য দিকনির্দেশনা হয়ে আছে এবং থাকবে।
জিয়াউর রহমান বিএনপির জন্য রেখে গেছেন এক স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। তার আদর্শ, সততা, কর্মোদ্যোগ ও চিন্তাচেতনা মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে আমাদের জাতীয় জীবনে। জাতিকে বড় করার সব গুণ তার মধ্যে ছিল। তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন বড় কিছু করতে। তার চিন্তা ছিল সুদূরপ্রসারী। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির গতিপথ পরিবর্তন করেন। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্প, জনশক্তি রফতানি, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে তার সুস্পষ্ট অবদান রয়েছে। তিনিই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম থেকে মুক্ত করেন; এটি ঐতিহাসিক সত্য।
জিয়ার কর্মতৎপরতায়ই গ্রামে-গ্রামে, পাড়ায়-পাড়ায় গড়ে ওঠে সমষ্টিগত শক্তি, সামাজিক শক্তি ও সামাজিক নেতৃত্ব। ফলে বিচ্ছিন্ন, দ্বিধাবিভক্ত ও শক্তিহীন মানুষ সমষ্টিগত শক্তিকে পরিণত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন যার যার কাজে। বেড়ে যায় তে-খামারে ও কল-কারখানায় উৎপাদন, খাদ্য সঙ্কটের দেশ পরিণত হয় খাদ্য রফতানির দেশে। বাংলাদেশ রূপান্তরিত হয় উন্নয়নশীল ও সম্ভাবনাময় দেশে। শক্তিশালী ও সৎ সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমেই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও নেতৃত্বশূন্য বাংলাদেশকে অল্প সময়েই কাঠামোগত রাষ্ট্রে পরিণত করেন তিনি। এর বাস্তবচিত্রই আজ প্রতিফলিত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি, জনশক্তি রফতানি ও তৈরী পোশাক শিল্পে। এই তিনটি খাত নিয়েই তার স্বপ্ন ছিল, ছিল পরিকল্পনা ও ভিশন; ভিশন ছিল বলেই এই তিনটি খাত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে, বাংলাদেশ স্বনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে।
শহীদ জিয়া সুস্পষ্ট দর্শনের ভিত্তিতে একটি প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। তাই তাদের বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আজকের প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়েছে। ব্যাপক ও পরিকল্পিত অপপ্রচার চালিয়ে আজকের প্রজন্মের মধ্যে বিএনপির প্রতি নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এ থেকে বেড় করে আনতে হবে, লেখালেখির মাধ্যমে তাদের মধ্যে শহিদ জিয়ার রাজনৈতিক ও আদর্শিক দিক বেশি করে তুলে ধরতে হবে। ঘনায়মান অন্ধকার পেরিয়ে সুন্দর ও নান্দনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে তার কর্মস্পৃহা অনুসরণীয়।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা এখন খুবই জোরালো। এক কথায় বললে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখন রাজনীতির গতিপথ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। দুঃখজনক হলেও সত্য গণমাধ্যম খাতে জাতীয়তাবাদী ঘরানার উদ্যোক্তাদের তেমন এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। ২৫টি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বেশির ভাগই আওয়ামী ঘরানার লোকজন দ্বারা পরিচালিত। চারটি টিভি চ্যানেলে ২৪ ঘণ্টা নিউজ প্রচারিত হয়। এর সব ক’টি আওয়ামী লীগের লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। সংবাদপত্রেও একই অবস্থা। সুতরাং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মন-মনসিকতা আছে এমন সব মানুষ চিহ্নিত করে, তাদের পৃষ্টপোষকতা দিতে বিএনপিকে এগিয়ে আসতে হবে।
নেতিবাচক রাজনীতির পেছনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে টাকা খরচ করে, সে টাকা দিয়ে প্রশিণ ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে দলীয় নেতাকর্মীরা লেখালেখি, গবেষণা ও সৃজনশীল কাজের ওপর প্রশিণ নিতে পারে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোতে কাক্সিত লেখক, গবেষক ও সৃজনশীল মানুষ তৈরি হবে। রিসার্চ করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক কর্মকৌশল তৈরি করলে, তা দলের জন্য যেমন ভালো ফল বয়ে আনবে; তেমনি দেশের জন্যও ভালো হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত অপপ্রচার সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেশের মানুষ জানতে পারবে। ফলে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারক-বাহক দল বিএনপির জনপ্রিয়তাও উত্তরোত্তর বাড়বে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রকৃতি হতে হবে উদারনৈতিক, সঙ্কীর্ণমনা নয়। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিত্ব হতে হবে সৃজনমুখী; হতে হবে সংবেদনশীল, কঠোরমনা নয়। রাষ্ট্রীয় মতাকে জনগণের আমানত হিসেবে গণ্য করতে হবে। রাষ্ট্রীয় মতা নিজেদের প্রভাব, বৈভব বা প্রতিপত্তি অর্জনের মাধ্যম হতে পারে না; শহীদ জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন স্বর্ণোজ্জ্বল আদর্শই রেখে গেছেন।
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি উৎকৃষ্ট সৃষ্টিশীলতার সংমিশ্রণ তার প্রধানতম কৃতিত্ব। ইতিহাস জিয়াউর রহমানকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছে, ব্যক্তির অস্তিত্ব অতিক্রমী শহীদ জিয়াও তেমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। দারিদ্র্য, রাজনৈতিক সঙ্কট, আর্থসামাজিক ঝড় পেরিয়ে তিনি যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছেন সেটা বিশ্বজয়ের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়।
মৃত্যুকে পরাজিত করে জীবনই জেগে থাক তার চার পাশ ঘিরে। এমনকি ব্যক্তিক মৃত্যুতে অতিক্রমী তার কর্ম-কীর্তি ও চিরঞ্জীব সত্তা ক্রমেই স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হোক সবার সামনে, ভুবনজুড়ে। যে স্বীকৃতির প্রতিধ্বনি তিনি পেয়েছেন জগৎ থেকে তা এখন স্থায়ীভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে ইতিহাসের সোনালি পাতায়।
No comments