ভারপ্রাপ্ত এমডির মুচলেকা-বিমান পরিচালনা পর্ষদ দায় নেবে না by আশরাফুল হক রাজীব
মামলা প্রত্যাহারের মুচলেকা দিয়ে বিমানবন্দর চালু করা হয়েছে। কিন্তু বিমানের ভারপ্রাপ্ত এমডির সেই মুচলেকার দায় নেবে না পরিচালনা পর্ষদ। সরকারের নির্দেশে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তাই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সরকারকেই নিতে হবে- মঙ্গলবার রাতে বৈঠক করে পরিচালনা পর্ষদ বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানিয়ে দেয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান কোনো কথা বলতে রাজি হননি। বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি। মুচলেকায় কী বলা হয়েছে সেটা মুখ্য নয়। সমস্যার সমাধানই মুখ্য বিষয়।'
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সিবিএ ও শ্রমিক লীগ সভাপতি মশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার অল্প সময়ের নোটিশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অচল করে দেওয়া হয়। পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক এবং বিমান ও পর্যটনসচিব খোরশেদ আলম শ্রমিক লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক লীগ নেতারা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিমানের এমডি এ এম মোসাদ্দিক আহমদের মুচলেকা আদায় করে নেন।
প্রসঙ্গত, ওই মামলায় মশিকুর রহমানের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহারের মুচলেকা আদায়ের পর শ্রমিক লীগ নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। এরপর বিমানবন্দর স্বাভাবিক হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ঘটনা পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসে বিমান পরিচালনা পর্ষদ। বৈঠকে মুচলেকার দায় না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি সরকারের, অতএব বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এর দায় বহন করতে হবে বলে পর্ষদ উল্লেখ করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ মে তৎকালীন বিমান ও পর্যটনসচিব মো. আতাহারুল ইসলাম বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবন পরিদর্শনে যান। তাঁর উপস্থিতিতে মশিকুরের নেতৃত্বে শ্রমিক লীগ নেতারা বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফজলুর রহমানকে লাঞ্ছিত করেন। সচিব নিজ কার্যালয়ে ফিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যানকে বলেন, অফিস চলাকালে এ ধরনের আচরণ বিধিসম্মত নয়। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নগ্ন পদক্ষেপ। প্রকৃত ঘটনা জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামালউদ্দিনকে নির্দেশ দেন তিনি।
সচিবের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হয়। তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে মশিকুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এরপর মশিকুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার চার্জ গঠন করা হয়। চার্জশিটের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন মশিকুর। হাইকোর্ট তাঁর পক্ষে রায় দিলে বিমান সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। আপিলে হাইকোর্টের রায়ের আদেশ স্থগিত করা হয়। এ অবস্থায় চার্জশিট প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সিবিএ ও শ্রমিক লীগ নেতারা।
বিমান পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য গতকাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, এভাবে জিম্মি করে দাবি আদায়ের ঘটনা বিমানে নজিরবিহীন। বিমানবন্দর অচলের ঘটনায় সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। মশিকুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি বিচারাধীন। এ মামলার চার্জশিট প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। এভাবে চলতে দেওয়া হলে কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থা লাভ করতে পারবে না। তিনি বলেন, কোনো দাবি-দাওয়া নয়; শ্রমিক লীগ নেতার চাকরি বাঁচাতে এ লঙ্কাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। নেপথ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা রয়েছেন। ঢাকার দুজন সংসদ সদস্যও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আতাহারুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যেভাবে বিমানের সিবিএর কাছে সরকারকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে, সেটা অপ্রত্যাশিত। এর প্রভাব সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে পড়বে। সরকারি সেক্টরে নৈরাজ্য কঠোর হাতে দমন করা উচিত। তাদের দমনের জন্য সব ধরনের বিধিবিধান রয়েছে। শুধু সদিচ্ছা ও সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলেই হয়। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার লোকই কম। যেখানে বিমানের আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য সবার সমবেত প্রচেষ্টা দরকার সেখানে গুটিকয় লোকের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বিমানের প্রশাসনিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান কোনো কথা বলতে রাজি হননি। বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি। মুচলেকায় কী বলা হয়েছে সেটা মুখ্য নয়। সমস্যার সমাধানই মুখ্য বিষয়।'
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সিবিএ ও শ্রমিক লীগ সভাপতি মশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার অল্প সময়ের নোটিশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অচল করে দেওয়া হয়। পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক এবং বিমান ও পর্যটনসচিব খোরশেদ আলম শ্রমিক লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক লীগ নেতারা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিমানের এমডি এ এম মোসাদ্দিক আহমদের মুচলেকা আদায় করে নেন।
প্রসঙ্গত, ওই মামলায় মশিকুর রহমানের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহারের মুচলেকা আদায়ের পর শ্রমিক লীগ নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। এরপর বিমানবন্দর স্বাভাবিক হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ঘটনা পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসে বিমান পরিচালনা পর্ষদ। বৈঠকে মুচলেকার দায় না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি সরকারের, অতএব বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এর দায় বহন করতে হবে বলে পর্ষদ উল্লেখ করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ মে তৎকালীন বিমান ও পর্যটনসচিব মো. আতাহারুল ইসলাম বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবন পরিদর্শনে যান। তাঁর উপস্থিতিতে মশিকুরের নেতৃত্বে শ্রমিক লীগ নেতারা বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফজলুর রহমানকে লাঞ্ছিত করেন। সচিব নিজ কার্যালয়ে ফিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যানকে বলেন, অফিস চলাকালে এ ধরনের আচরণ বিধিসম্মত নয়। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নগ্ন পদক্ষেপ। প্রকৃত ঘটনা জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামালউদ্দিনকে নির্দেশ দেন তিনি।
সচিবের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হয়। তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে মশিকুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এরপর মশিকুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার চার্জ গঠন করা হয়। চার্জশিটের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন মশিকুর। হাইকোর্ট তাঁর পক্ষে রায় দিলে বিমান সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। আপিলে হাইকোর্টের রায়ের আদেশ স্থগিত করা হয়। এ অবস্থায় চার্জশিট প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সিবিএ ও শ্রমিক লীগ নেতারা।
বিমান পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য গতকাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, এভাবে জিম্মি করে দাবি আদায়ের ঘটনা বিমানে নজিরবিহীন। বিমানবন্দর অচলের ঘটনায় সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। মশিকুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি বিচারাধীন। এ মামলার চার্জশিট প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। এভাবে চলতে দেওয়া হলে কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থা লাভ করতে পারবে না। তিনি বলেন, কোনো দাবি-দাওয়া নয়; শ্রমিক লীগ নেতার চাকরি বাঁচাতে এ লঙ্কাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। নেপথ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা রয়েছেন। ঢাকার দুজন সংসদ সদস্যও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আতাহারুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যেভাবে বিমানের সিবিএর কাছে সরকারকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে, সেটা অপ্রত্যাশিত। এর প্রভাব সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে পড়বে। সরকারি সেক্টরে নৈরাজ্য কঠোর হাতে দমন করা উচিত। তাদের দমনের জন্য সব ধরনের বিধিবিধান রয়েছে। শুধু সদিচ্ছা ও সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলেই হয়। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার লোকই কম। যেখানে বিমানের আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য সবার সমবেত প্রচেষ্টা দরকার সেখানে গুটিকয় লোকের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বিমানের প্রশাসনিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।
No comments