মাদ্রিদে তিন বাঙাল by মুনতাসীর মামুন
শওকত এবার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের অভিধান প্রকাশ করবেন। 'দি ট্যুরিস্ট' বা 'লা ট্যুরিস্টা' নামে। মাদ্রিদে অনেকে আছে যারা স্প্যানিশ জানে না।
বাঙালিরা আসছে। তাদের স্প্যানিশ শিখতে হবে। সুতরাং এ ধরনের শব্দ কোষের চাহিদা আছে। এ সিরিজে তিনি সাতটি অভিধান প্রকাশ করবেন। যেমন, ইংরেজী-স্প্যানিশ বা বাংলা-স্প্যানিশ। কম্পিউটারের দিকে চোখ পড়তে বুঝলাম, যিনি কম্পোজ করছেন তার সামনে একটি স্প্যানিশ-ইংরেজী অভিধান। সেখানে শওকত শব্দ বাছাই করে দিয়েছেন। সেটি কম্পোজ হবে। সাময়িক অর্থে তা অভিধান হবে না। তবে নবাগত যিনি স্প্যানিশ জানেন না, তিনি কাজ চালাতে পারবেন। আমার সন্দেহ তবুও দূর হয় না। জিজ্ঞেস করি, 'ছাপার খরচ পোষাবেন কি ভাবে?''আমি এখান থেকে পা-ুলিপি তৈরি করে কম্পিউটারের মাধ্যমে ঢাকা পাঠাব। সেখান থেকে বই ছেপে চলে আসবে। তাতেও এখান থেকে প্রকাশ করার খরচ থেকে কম পড়বে।'
'বিক্রি হবে?' জিজ্ঞেস করি আবারও।
'দেদার।' শওকত খুব কনফিডেন্ট।
ব্যবসাপাতির কথা রেখে আমি বাঙালিদের কথা জানতে চাই। মাসুম বলেছিল, শওকত বাঙালিদের খবরাখবর রাখে। তিনিই প্রবাসী বাঙালিদের খবরাখবর জানাতে পারবেন। শওকতের মতে, স্পেনে বসবাস করার জন্য বাঙালিরা কম এসেছে। তিনি শুনেছেন, প্রথম বাঙালি যিনি এসেছিলেন তার নাম চাকলাদার। তার সঙ্গে অবশ্য কোন বাঙালির যোগাযোগ নেই। এরপর আসেন শিল্পী মনিরম্নল ইসলাম ১৯৬৯-এর দিকে।
'এখন বাঙালির সংখ্যা কেমন?' জানতে চান হাশেম ভাই।
'হাজার পাঁচেক', জানালেন শওকত, 'বেশিরভাগ বাঙালি এসেছেন ২০০০ ও ২০০৫ সালে। সাম্প্রতিককালে আরও অনেকে আসছেন।'
'এরা কি সবাই তরম্নণ?' জিজ্ঞেস করি আমি।
'বেশিরভাগই তরম্নণ,' জানালেন শওকত, 'আমার তো মনে হয় না, ৪৫-এর ওপর ৩০/৪০ জনের বেশি হবে।'
এদিকে খিদেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কিন্তু খাওয়ার ব্যাপারে কারও তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বলেই ফেলি, 'মাসুম, আমাদের উঠতে হয়। আরও কয়েক জায়গায় যাওয়ার আছে।'
'না, না। আমরা এখনই খেয়ে নেব,' জানায় মাসুম, 'শওকত ভাইয়ের রেস্টুরেন্টেই খাব।'
এবার বুঝি। মাসুম আগেই শওকতকে জানিয়ে রেখেছে, আলাপের পর তার রেসত্মরাঁয়ই খাওয়াটা হবে। শওকতও ব্যসত্ম হয়ে উঠল। ফোন করল রেসত্মরাঁয়। মিনিট পাঁচেক পর আমরা বেরম্নলাম। কয়েক গজ এগুলে চৌরাসত্মার মতো জায়গা, সেখানেই রেসত্মরাঁ। বেশ বড়সড়। শওকতের বউ এসে আমাদের অভ্যর্থনা জানাল। তিনিই রেসত্মরাঁর দেখাশোনা করেন। খদ্দের খুব একটা বেশি নেই। কয়েকজন ইউরোপীয় এক টেবিলে খাচ্ছে। শওকতের বউ আমাদের আলাদা একটি টেবিলে নিয়ে বসালেন। বললাম,
'আমরা নিজেরাই খাবার নিয়ে নেব। আমাদের জন্য ব্যসত্ম হওয়ার দরকার নেই।'
'না, না', ব্যসত্ম হয়ে জানান, 'আমরা বুফে নেব না। আপনাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
এরপর বাঙালি কায়দায় অ্যাপায়ন শুরম্ন হলো। বাঙালি সব রকমের খাবার, সঙ্গে বুফের মেনু হিসেবে উত্তর প্রদেশীয় দু'এক পদ। বোঝা গেল সবারই খিদে লেগেছিল কিন্তু মুখফুটে কেউ বলেনি। উত্তম আহার যাকে বলে।
এরকম আহারের পর সিয়েসত্মাই উত্তম। শওকত দম্পতির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাসত্মায় নেমে দেখি খাঁ খাঁ রোদ। রাসত্মাঘাট প্রায় শূন্য। এলাকাটা লন্ডনের পুরনো সোহোর মতো। বাঙালিদের ছোট ছোট দোকান। বেশিরভাগই টেলিফোন সংক্রানত্ম। পাইকারি দরে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করার দোকানও আছে।
সারাদিনের ঘোরাঘুরি, উত্তম আহারের পর আবার ঝিম ধরা রোদে বেরিয়ে দেখি বেজায় কানত্ম লাগছে। রাসত্মাঘাট প্রায় বিরল। কোন বইয়ে একবার পড়েছিলাম, ভারতবর্ষের গরমের দুপুরে রাসত্মায় ঘুরে বেড়াতে পারে একমাত্র নেড়িকুত্তা আর ইংরেজরা। মাদ্রিদের সিয়েসত্মা টাইমে ঘুরে বেড়ানো নিজেদের তেমনই লাগছে। রাসত্মায় অবশ্য নেড়িকুত্তা নেই। তবে, এদিক সেদিক যে মাঝে মাঝে আমাদের মতো দু'একজন টু্যরিস্ট চোখে পড়ছে না তা নয়। ঢাকার দখল হয়ে যাওয়া পার্কের মতো অতি ছোট এক পার্কে দেখলাম আলজিরিয়া বা মরক্কোর কিছু যুবক জটলা বেঁধে উচ্চস্বরে কথা বলছে। এরকম জটলা দেখলে মাঝে মাঝে যে ভয় করে না তা'নয়। এ ভয়ের জন্ম বোধ হয় গত শতকের আশির দশকে। সে সময় লন্ডন গেছি। প্রথম যাওয়া, সব কিছুই কৌতূহলের সৃষ্টি করে। প্রবল আগ্রহে সময় পেলেই রাসত্মায় রাসত্মায় ঘুরে বেড়াই। কিন্তু এর পরপর কয়েকদিন কয়েকটি ঘটনা ঘটল। বিকেলে এক মাঠের পাশ দিয়ে আসছি, দেখি কয়েকটি কিশোর ঢিল ছুড়ে মারছে আর ককনিতে গাল দিচ্ছে। আরেকদিন নির্জন এক রাসত্মায় কয়েক যুবক 'পাকি' 'পাকি' বলে বিয়ারের টিন ছুড়ে মারল। একদিন রাতে টিউবে ফিরছি, কামরায় আমিই একমাত্র বাঙালি। যাত্রী কম। ন্যাড়া মাথা কিছু যুবক উঠে আমাকে লৰ্য করে অঙ্গভঙ্গি করে গালিগালাজ শুরম্ন করল। টিউবের অন্য যাত্রীরা নিশ্চুপ। তারপর থেকে ভয় ধরে গেল। সন্ধ্যার আগে ঘরে ফিরি। নির্জন রাসত্মা এড়িয়ে চলি। একদিন টয়েনবি হলে গেছি কবি শহীদ কাদরীর সঙ্গে দেখা করতে। অনেকৰণ খোশ গল্পের পর উঠেছি, খেয়াল করিনি যে রাত আটটা বেজে গেছে। কবি জিজ্ঞেস করলেন, 'যাবে কীভাবে?'
'টিউবে।'
'টিউবে টিউবে, 'কী যেন মনে করার চেষ্টা করলেন, তারপর বললেন, 'না, না, টিউবে না, টিউবে না, আজ ফুটবল খেলা, অসম্ভব। বসো তোমাকে ক্যাব ডেকে দিই।' এরপর আমাকে জানালেন, সন্ধ্যার পর তিনিও ভয়ে ঘর ছেড়ে বেরোন না।
'হাশেম ভাই ফিরে যাবেন নাকি? জিজ্ঞেস করি আমি।
'যাব যাব, এত তাড়া কীসের, আরেকটু ঘুরে দেখি।' তাঁর কৌতূহল ও উদ্যমের শেষ নেই।
'আমার দুলাভাইয়ের দোকানেও নিয়ে যেতে চাই' জানালো মাসুম, তা' ছাড়া আরেকজনকেও আসতে বলেছি' বলে, মোবাইল বের করে কার সঙ্গে যেন কথা বলল। 'আসছে, আরেকটিু।'
মাসুম তার এক বন্ধুকে আসতে বলেছে। বাংলাদেশ থেকে এসে এখানে সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা প্রবাসীদের অভিজ্ঞতা জানতে চাই, আর সে আমাদের দেখতে চায়।
দেয়ালের ছায়ায় দাঁড়াই। মাসুম আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে। খানিকপর মাসুমেরই বয়সী স্বাস্থ্যবান এক যুবক এগিয়ে আছে। আমাদের সালাম জানায়। মাসুম পরিচয় করিয়ে দেয় তার বন্ধু হিসেবে। নাম শাহীন। কোথাও বসতে হয়। শাহীন প্রসত্মাব দেয়, কোন বারে বসা যাক, যদি খোলা থাকে। মিনিট পাঁচেক এদিক সেদিক ঘোরার পর এক রেসত্মরাঁ পাওয়া গেল, সামনের দিকে যার ছায়া। জায়গাটা পছন্দ হলো। শাহীন ভেতরে গিয়ে মালিকের সঙ্গে কথা বলল। কয়েক মিনিট পর, রাসত্মার পাশে ছায়ায় আমাদের জন্য টেবিল চেয়ার বিছিয়ে দেয়া হলো। এতৰণে বসে আরাম পেলাম। শাহীন জিজ্ঞেস করে, 'চা, কফি, বিয়ার কিছু।'
'না, দরকার নেই।' জানান হাশেম ভাই।
'কী বলেন, তা কেমনে হয়,' শহীন উত্তর দেয়। 'কমলার জুস খাই,' প্রসত্মাব করে মাসুম। ঘণ্টা কয়েক আগে কমলার রসের প্রতি আমার প্রীতি লৰ্য করে বোধহয় সে প্রসত্মাবটি করে। 'চলতে পারে,' ঘাড় নেড়ে সায় দিই, 'বরফটরফ যেন দেয়।' সায় জানান হাশেম ভাই। খুশি হয়ে শাহীন ভেতরে যায়। একটু পরে মাসুমও। দশ মিনিট পর চারটে সমান সাইজের গস্নাস ভর্তি করে নিয়ে আসে। প্রথম চুমুকেই বুক জুড়িয়ে যায়। গরমটাও যেন কম লাগে। শাহীন মাসুমের সঙ্গে কথা বলে খবরা খবর জানতে চায়। আমি আর হাশেম ভাই কমলার রসে চুমুক দিতে দিতে চারদিক দেখি। ঘড়ির কাঁটা চারটে ছুঁয়েছে। রোদে এখনও চারদিকে ঝলসাচ্ছে। টু্যরিস্টের সংখ্যা দু'একজন বেড়েছে। তারাও আমাদের মতো রেসত্মরাঁর সামনে চেয়ার নিয়ে বসছে।
'শাহীনকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।' বলে মাসুম। 'না না জিজ্ঞাসাবাদের কিছু নেই', শাহীনকে আশ্বসত্ম করি, 'আমার আসলে জানার ইচ্ছা, আপনারা কেন কীভাবে এখানে এলেন। আসলে অনেক দিনের ইচ্ছে, প্রথম জেনারেশনের যারা দেশ ছেড়ে এসেছে তাদের নিয়ে ওরাল হিস্ট্রির একটি প্রজেক্ট করা। সম্ভব হবে কিনা জানি না, তবে, করতে চাই।'
'কাজটা করতে পারলে কিন্তু ভাল হতো মামুন,' বলেন হাশেম ভাই।
'তা' হতো। এরকম অনেক কাজ তো করতে চেয়েছি। আপনি আমি মিলেও তো অনেক কাজ করেছি, কিন্তু এখন কানত্ম লাগে। 'ফান্ড পাই না, সুবিধা নাই। আর কত' বলি আমি।
' শাহীন, তোমার বয়স তো এত কম।' কখন, তুমি এলে এখানে জিজ্ঞেস করেন হাশেম ভাই।
'অনেক কম বয়সে, জানায় শাহীন।
'এক কাজ করা যাক,' বলি আমি শাহীনকে, 'তুমি তোমার মতো একটানা এখানে আসার গল্পটা বলে যাও। আমরা বরং শুনি।'
শাহীনকে এরকম প্রসত্মাব হয়ত কেউ দেয়নি। তা ছাড়া, আমাদের সে মসত্মো মানুষ ঠাউরেছে। বিলৰণ খুশি হয় সে। কমলার রসে চুমুক দিয়ে শাহীন শুরম্ন করে তার দেশ ছেড়ে আসার কাহিনী।
১৩
শাহীনের বাড়ি নোয়াখালীর ছাগলনাইয়ায়। দরিদ্র কৃষক পরিবারের সনত্মান। আশপাশের অনেক দরিদ্র পরিবারের কেউ না কেউ চেষ্টা করছে বিদেশ যাওয়ার। ভাগ্য ফেরাতে হলে এটিই সহজ রাসত্মা, অধিকাংশই সামান্য জমিজমা যা আছে তা বিক্রি করে দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে। কেউ কেউ যেতে পারছে, অনেকে প্রতারিত হচ্ছে।
১৯৯৯ সালে শাহীন এসএসসি পাস করে। বয়স তখন তার ষোল। পড়াশোনা চালাবার সামর্থ্য নেই। ইচ্ছাও তেমনি ছিল না। পরিবারেরও সবার ইচ্ছা কিছু একটা করম্নক। সোজা রাসত্মা বিদেশ যাওয়া।
দালালদের সঙ্গে আলাপ শুরম্ন হলো। বিশ্বাস করা যায এমন এক দালাল পাওয়া গেল। তখন অনেকে ইতালি আসছে। শাহীনও ঠিক করল ইতালি যাবে। দালাল চাইল সাত লাখ টাকা। জমিজমা যা ছিল বিক্রি করে টাকা যোগাড় হলো।
এখন ইতালি যাব বললেই তো যাওয়া হয় না, ভিসা পাওয়া যায় না সহজে। দালাল বলল অন্য দেশের ভিসা নিয়ে দেশ ছাড়তে হবে। শাহীন তাতেই রাজি। ভিসা পাওয়া গেল সিরিয়ার। উদ্দেশ্যে, মাজার জিয়ারত। কীভাবে সিরিয়ার ভিসা পাওয়া গেল শাহিন তা জানে না। দালালরাই তাদের চক্রের সাহায্যে বন্দোবসত্ম করল।
দালালদের এজেন্ট তাদের সিরিয়া বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাল। গ্রম্নপে শাহীন একা নয়, আরও কয়েকজন ছিল। এক রাতে দামেস্ক রাখল তারা। পরদিন দুই সিরিয়াল এক মাইক্রোবাসে করে তাদের নিয়ে রওনা হলো। প্রায় ষোলঘণ্টা একটানা জার্নি বিশ্রাম ছাড়া।
শাহীন জানে না কত ঘণ্টা পর তারা কোথায় পৌঁছাল। আর তখন রাতও হয়ে গেছে। তার মনে আছে এক পার্বত্য এলাকায় তারা পেঁৗছেছিল। সেখান থেকে হাঁটা শুরম্ন হলো। সাত আট ঘণ্টা একটানা হাঁটার পর শাহীনরা পেঁৗছুলে তুরস্ক সীমানত্মে।
তুরস্ক সীমানত্মে আবার পাচারকারীদের এজেন্ট ছিল। সে তাদের সাদরেই গ্রহণ করল। তাদের খাইয়ে দাইয়ে দুদিন রাখল। তারপর ৪ জন করে গ্রম্নপ করে নিয়ে এল ইসত্মাম্বুল। সেই এজেন্ট দু'মাস রাখল তাদের ইসত্মাম্বুল। সাবধানে থাকতে হয়েছে এ দু'মাস, প্রায় বন্দী অবস্থায়।
একদিন রাতে তাদের সবাইকে এজেন্ট তুলে দিল এক রম্নশ জাহাজে। প্রায় ১৩০০ যাত্রী। বাঙালি ছিল ৭৩ জন। শাহীনের কথা শুনে মনে হলো, পাচারকারী চক্র বিভিন্ন সীমানত্ম দিয়ে বিভিন্ন দেশের লোক নিয়ে আসত ইসত্মাম্বুলে। ভাগ ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় তাদের রাখা হতো। তারপর জাহাজ ঠিক হলে গাদাগাদি করে তুলে দেয়া হতো।
এক জাহাজে ১৩০০ জন যাত্রী উঠলে কী অবস্থা হয় অনুমেয়। গাদাগাদি করে থাকা। খাবার দাবারের কোন বন্দোবসত্ম নেই। সে এক ভয়াবহ অবস্থা। শাহীন এক প্যাকেট বিস্কিট নিয়ে উঠেছিল। বলা হয়েছিল তিন দিনের মধ্যে তারা ইতালি পেঁৗছে যাবে।
তিনদিন পেরিয়ে গেল। ইতালির দেখা নেই। জাহাজ চলছে তো চলছেই। চার-পাঁচ দিন কেটে গেল। জাহাজেও খাবার নেই। সাতদিনের মাথায় তুর্কি ও কুর্দি যাত্রীরা ৰেপে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে পেটাল। ক্যাপ্টেনের মনে কি ছিল তা যাত্রীরা জানে না তবে আটদিনের মাথায় তারা ইতালির জলসীমায় পেঁৗছল।
শাহীনরা যখন উত্তেজিত স্বপ্নের ইতালিতে পেঁৗছেছে বলে তখনই দেখল ইতালীয় পুলিশ জাহাজ ঘিরে ফেলেছে। সবাইকে আটক করে সোজা জেলে নিয়ে গেল। এক মাস ছিল জেলে। সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থা। কেউ নেই যে কিছু বলে। এ সময় তারা শুনল, পোপ-ইতালি সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে তাদের ছেড়ে দিতে। তবে, পোপের অনুরোধ নাকি জেলখানা ভরে উঠছে অবৈধ অভিবাসীতে তা সামলাবার জন্য সরকার কিছু অভিবাসীকে মুক্তি দেয়। শাহীন এ ব্যাপারটা সঠিক বলতে পারেনি। সে জানিয়েছে, পোপ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, অবৈধ অভিবাসীদের রোম দেখার অনুমতি দিতে। সরকার অনুমতি দিয়েছিল। শাহীন সটকে পড়েছিল।
No comments