কুড়িয়ে পাওয়া সংলাপ-খাওয়ার শব্দ ও গায়ে জড়াবার শব্দ by রণজিৎ বিশ্বাস
গণ-অভ্যুত্থান শব্দটির সঙ্গে আপনি কি পরিচিত? : কী যে বলেন না-বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে কেন পরিচিত হব না আমি! এর সঙ্গে থাকবই না কেন পরিচিত আমি। আমরা তো গণ-অভ্যুত্থানের দেশের মানুষ। গণ-অভ্যুত্থানের সোপান পেরিয়ে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়া একটি দেশের মানুষ।
অভ্যুত্থান থেকে মর্মতেজ নিয়ে অসামান্য মুক্তিযুদ্ধ করে জগৎসংসারের সবচেয়ে সুন্দর, স্বপ্নময় ও সম্ভাবনাময় দেশের মানুষ। আমি কেন গণ-অভ্যুত্থান চিনব না! এর নাম 'ম্যাস আপসার্জ' (mass upsurge), 'ম্যাস আপহিভ্যাল' (mass upheaval) ইত্যাদি হতে পারে।
: সম্প্রতি এই শব্দটি কিন্তু বেশ উচ্চারিত।
: বেশ উচ্চারিত!
: আপনার শ্রমজীবন অবিশ্বাস্য ব্যস্ততার বলেই জানি। তার পরও এসব আপনি খেয়াল করেন? পারেন খেয়াল করতে!
: পারি। কোনো কোনো বক্তব্য, কারো কারো বক্তব্য-বিবৃতি ও বচনকথন আমি গভীর আগ্রহ ও কৌতুকের সঙ্গে খেয়াল করি। আমার ভালো লাগে। আমি আনন্দ পাই। আমি শিখতে পারি।
: যেমন- কিছু কিছু শব্দ আছে, যার অর্থ আমাদের বুঝতে হয় না। বোঝার চেষ্টাও করতে হয় না। মুখে বিনি্নধানের খই ফোটাবার মতো করে অথবা বিশেষ বিশেষ আসরে তালি ফাটাবার মতো করে ব্যবহার করে যেতে পারলেই হলো। অর্থ জানবার ও জানাবার প্রয়োজন নেই, মাহাত্ম্য জানবার প্রয়োজন নেই, প্রসঙ্গ জানবার প্রয়োজন নেই। শুধু উচ্চারণ করবেন আর নিজের জ্ঞানগম্যির যন্ত্রণায় মানুষকে মুগ্ধবিমুগ্ধ করবেন।
আমার মতো যারা অতিশয় ক্ষুদ্র, খর্ব ও অতিসীমাবদ্ধ মরণশীল, তারাও তা-ই করে। আমি নিজে তো করিই।
: সেই শব্দগুলো কী?
: যেমন- ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিজম, ফ্যাসিবাদী, ভ্যানগার্ড, আর্থসামাজিক অবস্থা ইত্যাদি। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে 'বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই' জাতীয় শব্দাবলি। সর্বসাম্প্রতিক হচ্ছে যেটি দিয়ে আপনি কথা শুরু করেছেন- গণ-অভ্যুত্থান।
: এগুলো নিয়ে আপনার অতি আপত্তি কেন?!
আপনার অন্তরে অত জ্বালা কেন?!
: আপনি আমাকে ভুল বুঝলেন। ভালো মানুষের মতো কথা শুরু করে আপনি আমাকে বেকায়দায় ফেলে দিতে চাচ্ছেন। আমার কোনো আপত্তি নেই, অন্তরেও আমার কোনো জ্বালা নেই। আমি খুব সিম্পল একটা কথা বলতে চাচ্ছি। খুব সিম্পলি।
: আপনার সেই সিম্পল কথাটি কী?!
: সিম্পল কথাটি হচ্ছে, কথার জোরেতোড়ে আমরা যারা করতালি বাঞ্ছনা করি এবং কথার ঘোরে পড়ে আমরা যারা করতল রক্তিম করি, তারা অনেকেই জানি না কিছু কিছু ভারী ভারী ও ছাঁকা ছাঁকা শব্দ খাওয়ার, না গায়ে জড়াবার।
লেখক : শ্রমজীবী কথাসাহিত্যিক
: সম্প্রতি এই শব্দটি কিন্তু বেশ উচ্চারিত।
: বেশ উচ্চারিত!
: আপনার শ্রমজীবন অবিশ্বাস্য ব্যস্ততার বলেই জানি। তার পরও এসব আপনি খেয়াল করেন? পারেন খেয়াল করতে!
: পারি। কোনো কোনো বক্তব্য, কারো কারো বক্তব্য-বিবৃতি ও বচনকথন আমি গভীর আগ্রহ ও কৌতুকের সঙ্গে খেয়াল করি। আমার ভালো লাগে। আমি আনন্দ পাই। আমি শিখতে পারি।
: যেমন- কিছু কিছু শব্দ আছে, যার অর্থ আমাদের বুঝতে হয় না। বোঝার চেষ্টাও করতে হয় না। মুখে বিনি্নধানের খই ফোটাবার মতো করে অথবা বিশেষ বিশেষ আসরে তালি ফাটাবার মতো করে ব্যবহার করে যেতে পারলেই হলো। অর্থ জানবার ও জানাবার প্রয়োজন নেই, মাহাত্ম্য জানবার প্রয়োজন নেই, প্রসঙ্গ জানবার প্রয়োজন নেই। শুধু উচ্চারণ করবেন আর নিজের জ্ঞানগম্যির যন্ত্রণায় মানুষকে মুগ্ধবিমুগ্ধ করবেন।
আমার মতো যারা অতিশয় ক্ষুদ্র, খর্ব ও অতিসীমাবদ্ধ মরণশীল, তারাও তা-ই করে। আমি নিজে তো করিই।
: সেই শব্দগুলো কী?
: যেমন- ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিজম, ফ্যাসিবাদী, ভ্যানগার্ড, আর্থসামাজিক অবস্থা ইত্যাদি। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে 'বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই' জাতীয় শব্দাবলি। সর্বসাম্প্রতিক হচ্ছে যেটি দিয়ে আপনি কথা শুরু করেছেন- গণ-অভ্যুত্থান।
: এগুলো নিয়ে আপনার অতি আপত্তি কেন?!
আপনার অন্তরে অত জ্বালা কেন?!
: আপনি আমাকে ভুল বুঝলেন। ভালো মানুষের মতো কথা শুরু করে আপনি আমাকে বেকায়দায় ফেলে দিতে চাচ্ছেন। আমার কোনো আপত্তি নেই, অন্তরেও আমার কোনো জ্বালা নেই। আমি খুব সিম্পল একটা কথা বলতে চাচ্ছি। খুব সিম্পলি।
: আপনার সেই সিম্পল কথাটি কী?!
: সিম্পল কথাটি হচ্ছে, কথার জোরেতোড়ে আমরা যারা করতালি বাঞ্ছনা করি এবং কথার ঘোরে পড়ে আমরা যারা করতল রক্তিম করি, তারা অনেকেই জানি না কিছু কিছু ভারী ভারী ও ছাঁকা ছাঁকা শব্দ খাওয়ার, না গায়ে জড়াবার।
লেখক : শ্রমজীবী কথাসাহিত্যিক
No comments