'পাঁচ লাখ টাকা খেয়েছে ডিবি'-১০ দিন পর আসামি!
ডিবি পরিচয়ে পুরান ঢাকার আদালতপাড়া থেকে গত ১৭ জানুয়ারি আরিফুজ্জামান খান শরীফ (৩৫) নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। শরীফ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি ঢাকার সাভারের রেডিও কলোনিতে সপরিবারে থাকতেন। বিভিন্ন পোশাক কারখানায় মালামাল সরবরাহের ব্যবসা করতেন তিনি।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি বাড়িতে চলে এসেছিলেন। এখানেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। চিকিৎসার প্রয়োজনেই তিনি আবার ঢাকায় গিয়েছিলেন। ঢাকা যাওয়ার পরই ডিবির সোয়াত টিম তাঁকে ধরে নিয়ে যায় বলে পরিবারিক সূত্র দাবি করেছে।
ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাঁকে উঠিয়ে নেওয়া হয় মর্মে ডিএমপির কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার এসআই গোলাম রসুল বলেন, ১৯ জানুয়ারি ডিবিকে বিষয়টি জানালে তারা আটকের কথা অস্বীকার করে।
ডিবির এডিসি (নর্থ) আশিকুর রহমান পলাশের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল শনিবার শরীফকে আশুলিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোপর্দ করা হয়েছে। শরীফের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
আশুলিয়া থানার ওসি শেখ বদরুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকায় এক কোটি টাকা ছিনতাইয়ের একটি মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে শরীফকে গ্রেপ্তার করে গতকাল ডিবি পুলিশ তাদের কাছে সোপর্দ করেছে।
শরীফের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ সবই মিথ্যা অভিযোগ। তারা জানায়, ১৭ জানুয়ারি কোনো অভিযোগ ছাড়াই গোয়েন্দারা (ডিবি) শরীফকে আটক করে।
খোঁজ নিতে গেলে, গত বৃহস্পতিবার ডিবির কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, এ নামের কাউকে আটক করা হয়নি।
শরীফের মা আলেয়া আক্তার খান ও পরিবারের দাবি, শরীফকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপপুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম এবং আরো কয়েকজন ডিবি কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডিবির ৮-১০ সদস্যের একটি দল আরিফুজ্জামান শরীফকে হাতকড়া পরিয়ে তাড়াইলের রাউতি গ্রামের বাড়িতে যায়। সেখানে শরীফের মা ও ভাবির সামনে এসআই রফিক বারবার শরীফের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়ে বলেন, 'তোর মাকে বল ১০ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে তোকে ক্রসফায়ারে দেব। ২০-২৫টা মামলা দেব। তোর বড় ভাইকেও সাত দিনের মধ্যে খাব। যদি না খাইতে পারি আমার নাম এসআই রফিক না।'
তাঁরা জানান, এক পর্যায়ে ডিবি সদস্যরা স্কচটেপ দিয়ে পেচানো তিনটি পোঁটলা বের করে টেবিলের ওপর রেখে শরীফের দুই চাচাতো ভাই এবং চাচাতো বোনজামাইকে ঘরে ডেকে নিয়ে বলেন, 'এই দেখেন এই পোঁটলার টাকাগুলো এখানে পাওয়া গেছে। আপনারা সাক্ষী রইলেন।'
শরীফের পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, ডিবির দলটি একটি সাদা কাগজে তাঁদের স্বাক্ষর নেয় এবং ঘর-দোয়ার তছনছ করে একটি বিদেশি টর্চলাইট, সিগারেটদানি, চাবিসহ একটি কিকো তালা ও একটি গ্যাসলাইটার নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় শরীফ মায়ের হাতের এক গ্লাস পানি খেতে চাইলে এসআই রফিক লাথি মেরে তাঁর হাত থেকে পানির গ্লাস ফেলে দেন। টেনে-হিঁচড়ে শরীফকে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় এসআই রফিক বুধবারের মধ্যে এসএ পরিবহনের কাকরাইল শাখায় ০১৭৭৮০৭৯৮৬৮ নম্বরের বিপরীতে পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে বলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শরীফের জীবন রক্ষার জন্য এসআই রফিকের কথা মতো বুধবার তাঁর ভাবি রেশমা আক্তার এসএ পরিবহন কিশোরগঞ্জ শাখা থেকে ২৩ জানুয়ারি দুই লাখ ৯৭ হাজার (মেমো নাম্বার: ২৬৭৯৩০) এবং তাঁর মামি এসএ পরিবহনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা থেকে দুই লাখ (মেমো নাম্বার : ৮২৯১১৫)- মোট চার লাখ ৯৭ হাজার টাকা ০১৭৭৮০৭৯৮৬৮ নাম্বারের বিপরীতে পাঠান।
আটক আরিফুজ্জামান খান শরীফের পরিবারের লোকজন বুধবার রাতে এ প্রতিনিধির কাছে এসব কথা জানান। তাঁরা বলেন, টাকা পাঠানোর পর আরিফের স্ত্রী সুমী আক্তারকে মোবাইলে ফোন করে টাকা পাওয়ার কথা জানিয়ে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, 'তোর ভাসুর পত্রিকায় সংবাদ দিল কেন? কোতোয়ালি থানায় জিডি করল কেন? তোর ভাসুরকেও (আরিফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান খান) আজকের মধ্যে শেষ করব। তোর ভাসুরের বউকেও মামলা দিয়ে জেল খাটাব। তোর জামাইকেও (আটক আরিফুজ্জামান খান) আজকের মধ্যে শেষ করব।' বলেই তাঁরা আরিফুজ্জামানের জীবন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঢাকার কোতোয়ালি থানা এবং শরীফের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় ঢাকা জজ কোর্টের সামনে থেকে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের মরহুম আফতাব উদ্দিন খানের দ্বিতীয় ছেলে আরিফুজ্জামান খান শরীফকে তাঁর বড় ভাই আনিসুজ্জামানের উপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লোক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শরীফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান ১৮ জানুয়ারি ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ৭৩২) করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। শরীফের পরিবারের অভিযোগ, আরিফুজ্জামান অপহৃত হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে তাঁদের মোবাইল ফোনে কল করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়া হলে শরীফকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোসহ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শরীফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান খান মুরাদ জানান, ছোট ভাই শরীফকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় যান তিনি। তাঁরা পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় তাঁদের পরিচিত অ্যাডভোকেট খন্দকার মহিবুল হাসান আপেলের কাছে যাচ্ছিলেন। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস তাঁদের সামনে এসে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে শরীফকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, 'আমার ছোট ভাই খুব অসুস্থ। তাদের বারবার অনুরোধ করার পরও তারা শরীফকে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি (০১৭৭৮২৮২০৬৭) বন্ধ রয়েছে।'
ঘটনার পর আট দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ শরীফের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। অন্যদিকে অপহরণের তিন দিন পর সোমবার বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে তাঁদের কাছে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। ১০ লাখ টাকা নিয়ে মিন্টু রোডের ডিবি অফিসের গেটে দ্রুত যেতে বলা হয়। কিন্তু তখন ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ টাকা না দিলে শরীফের নামে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হবে বলে; কখনো কখনো মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। শরীফের পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, গত ২ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত পুরনো ব্যথার জন্য চিকিৎসা নেন তিনি। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৬ জানুয়ারি রোববার থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জে অবস্থান করে চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন শরীফ। উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় যান। ঢাকায় গিয়েই অপহরণের শিকার হন তিনি। তাঁর অপহরণের বিষয়টি ২২ জানুয়ারি একটি অনলাইন পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি বাড়িতে চলে এসেছিলেন। এখানেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। চিকিৎসার প্রয়োজনেই তিনি আবার ঢাকায় গিয়েছিলেন। ঢাকা যাওয়ার পরই ডিবির সোয়াত টিম তাঁকে ধরে নিয়ে যায় বলে পরিবারিক সূত্র দাবি করেছে।
ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাঁকে উঠিয়ে নেওয়া হয় মর্মে ডিএমপির কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার এসআই গোলাম রসুল বলেন, ১৯ জানুয়ারি ডিবিকে বিষয়টি জানালে তারা আটকের কথা অস্বীকার করে।
ডিবির এডিসি (নর্থ) আশিকুর রহমান পলাশের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল শনিবার শরীফকে আশুলিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোপর্দ করা হয়েছে। শরীফের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
আশুলিয়া থানার ওসি শেখ বদরুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকায় এক কোটি টাকা ছিনতাইয়ের একটি মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে শরীফকে গ্রেপ্তার করে গতকাল ডিবি পুলিশ তাদের কাছে সোপর্দ করেছে।
শরীফের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ সবই মিথ্যা অভিযোগ। তারা জানায়, ১৭ জানুয়ারি কোনো অভিযোগ ছাড়াই গোয়েন্দারা (ডিবি) শরীফকে আটক করে।
খোঁজ নিতে গেলে, গত বৃহস্পতিবার ডিবির কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, এ নামের কাউকে আটক করা হয়নি।
শরীফের মা আলেয়া আক্তার খান ও পরিবারের দাবি, শরীফকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপপুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম এবং আরো কয়েকজন ডিবি কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডিবির ৮-১০ সদস্যের একটি দল আরিফুজ্জামান শরীফকে হাতকড়া পরিয়ে তাড়াইলের রাউতি গ্রামের বাড়িতে যায়। সেখানে শরীফের মা ও ভাবির সামনে এসআই রফিক বারবার শরীফের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়ে বলেন, 'তোর মাকে বল ১০ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে তোকে ক্রসফায়ারে দেব। ২০-২৫টা মামলা দেব। তোর বড় ভাইকেও সাত দিনের মধ্যে খাব। যদি না খাইতে পারি আমার নাম এসআই রফিক না।'
তাঁরা জানান, এক পর্যায়ে ডিবি সদস্যরা স্কচটেপ দিয়ে পেচানো তিনটি পোঁটলা বের করে টেবিলের ওপর রেখে শরীফের দুই চাচাতো ভাই এবং চাচাতো বোনজামাইকে ঘরে ডেকে নিয়ে বলেন, 'এই দেখেন এই পোঁটলার টাকাগুলো এখানে পাওয়া গেছে। আপনারা সাক্ষী রইলেন।'
শরীফের পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, ডিবির দলটি একটি সাদা কাগজে তাঁদের স্বাক্ষর নেয় এবং ঘর-দোয়ার তছনছ করে একটি বিদেশি টর্চলাইট, সিগারেটদানি, চাবিসহ একটি কিকো তালা ও একটি গ্যাসলাইটার নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় শরীফ মায়ের হাতের এক গ্লাস পানি খেতে চাইলে এসআই রফিক লাথি মেরে তাঁর হাত থেকে পানির গ্লাস ফেলে দেন। টেনে-হিঁচড়ে শরীফকে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় এসআই রফিক বুধবারের মধ্যে এসএ পরিবহনের কাকরাইল শাখায় ০১৭৭৮০৭৯৮৬৮ নম্বরের বিপরীতে পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে বলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শরীফের জীবন রক্ষার জন্য এসআই রফিকের কথা মতো বুধবার তাঁর ভাবি রেশমা আক্তার এসএ পরিবহন কিশোরগঞ্জ শাখা থেকে ২৩ জানুয়ারি দুই লাখ ৯৭ হাজার (মেমো নাম্বার: ২৬৭৯৩০) এবং তাঁর মামি এসএ পরিবহনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা থেকে দুই লাখ (মেমো নাম্বার : ৮২৯১১৫)- মোট চার লাখ ৯৭ হাজার টাকা ০১৭৭৮০৭৯৮৬৮ নাম্বারের বিপরীতে পাঠান।
আটক আরিফুজ্জামান খান শরীফের পরিবারের লোকজন বুধবার রাতে এ প্রতিনিধির কাছে এসব কথা জানান। তাঁরা বলেন, টাকা পাঠানোর পর আরিফের স্ত্রী সুমী আক্তারকে মোবাইলে ফোন করে টাকা পাওয়ার কথা জানিয়ে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, 'তোর ভাসুর পত্রিকায় সংবাদ দিল কেন? কোতোয়ালি থানায় জিডি করল কেন? তোর ভাসুরকেও (আরিফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান খান) আজকের মধ্যে শেষ করব। তোর ভাসুরের বউকেও মামলা দিয়ে জেল খাটাব। তোর জামাইকেও (আটক আরিফুজ্জামান খান) আজকের মধ্যে শেষ করব।' বলেই তাঁরা আরিফুজ্জামানের জীবন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঢাকার কোতোয়ালি থানা এবং শরীফের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় ঢাকা জজ কোর্টের সামনে থেকে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের মরহুম আফতাব উদ্দিন খানের দ্বিতীয় ছেলে আরিফুজ্জামান খান শরীফকে তাঁর বড় ভাই আনিসুজ্জামানের উপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লোক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শরীফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান ১৮ জানুয়ারি ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ৭৩২) করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। শরীফের পরিবারের অভিযোগ, আরিফুজ্জামান অপহৃত হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে তাঁদের মোবাইল ফোনে কল করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়া হলে শরীফকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোসহ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শরীফের বড় ভাই আনিসুজ্জামান খান মুরাদ জানান, ছোট ভাই শরীফকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় যান তিনি। তাঁরা পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় তাঁদের পরিচিত অ্যাডভোকেট খন্দকার মহিবুল হাসান আপেলের কাছে যাচ্ছিলেন। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস তাঁদের সামনে এসে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে শরীফকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, 'আমার ছোট ভাই খুব অসুস্থ। তাদের বারবার অনুরোধ করার পরও তারা শরীফকে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি (০১৭৭৮২৮২০৬৭) বন্ধ রয়েছে।'
ঘটনার পর আট দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ শরীফের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। অন্যদিকে অপহরণের তিন দিন পর সোমবার বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে তাঁদের কাছে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। ১০ লাখ টাকা নিয়ে মিন্টু রোডের ডিবি অফিসের গেটে দ্রুত যেতে বলা হয়। কিন্তু তখন ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ টাকা না দিলে শরীফের নামে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হবে বলে; কখনো কখনো মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। শরীফের পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, গত ২ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত পুরনো ব্যথার জন্য চিকিৎসা নেন তিনি। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৬ জানুয়ারি রোববার থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জে অবস্থান করে চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন শরীফ। উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় যান। ঢাকায় গিয়েই অপহরণের শিকার হন তিনি। তাঁর অপহরণের বিষয়টি ২২ জানুয়ারি একটি অনলাইন পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে।
No comments