কৃষি-ফলন ও দাম ভালো পেয়ে স্বস্তিতে টমেটোচাষিরা টমেটোর রাজধানী গোদাগাড়ীতে উৎসব by আশরাফ আলী
দেশে এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে টমেটোর প্রচুর সরবরাহ থাকলেও
দাম কিন্তু চড়া। ভরা মওসুমেও বাজারে এখন ৫০ টাকার ওপরে টমেটো বিক্রি
হচ্ছে, যা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।
কয়েক দিন
আগেও ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বাজারে চাহিদা
অনুযায়ী টমেটোর সরবরাহও রয়েছে স্বাভাবিক। গত বছরের তুলনায় এবার টমেটোর
আবাদি জমির পরিমাণ কমলেও এবার ফলন বেড়েছে। ফলে কৃষকেরা কম জমিতে টমেটো চাষ
করেও এবার ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে কৃষকের
মধ্যে। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকের মধ্যে বিশেষ করে টমেটোর রাজধানী
গোদাগাড়ীর চাষিদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এমনকি টমেটো আবাদের
প্রতি নতুন করে তাদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো
জানায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এ বছর সারা দেশে টমেটোর
উৎপাদন ল্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ১৩৭ হেক্টর জমিতে ১০ লাখ ৭২ হাজার
৭৪৮ টন। যদিও এবার টমেটোর উৎপাদন ল্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশা
করছেন। ফলন ভালো হওয়ার কারণ হিসেবে কৃষকেরা জানান, এ বছর দেশে টমেটো
উৎপাদনে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বিরাজমান ছিল। ফলে গত বছরের তুলনায় টমেটোর
ফলন অন্ততপে ১০ শতাংশ বাড়বে। এর ফলে বিগত বছরগুলোয় ভালো দাম না পেয়ে
কৃষকের মধ্যে যে হতাশা বিরাজ করছিলÑ তার অনেকটাই এবার কেটে গেছে।
এ প্রসঙ্গে এক সময় গোদাগাড়ীতে একচেটিয়া বীজ সরবরাহকারী কৃষি খাতের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি সিনজেনটার পরিচালক ড. মইনুল ইসলাম গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, নানা কারণে এ বছর টমেটো আবাদের এরিয়া প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। তবে জমির পরিমাণ কমলেও টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে। তা ছাড়া বাজারে দামও পেয়েছে ভালো। ফলে টমেটোচাষিরা এবার বেজায় খুশি। কারণ এ বছর অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। তারা আরো লাভ করতে পারত যদি তারা আগাম জাতের টমেটোর চাষ করতেন। গত কয়েক বছরে সিনজেনটা আগাম জাতের উচ্চফলনশীল হাইব্রিড টমেটো ‘সবল’ গোদাগাড়ী ও আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। এবারো সিনজেনটা নতুন ভ্যারাইটি বিপুল, সফল, হাইটনসহ পাঁচটি জাতের টমেটোর বীজ সরবরাহ করেছে। এর ফলনও বেশ ভালো। তিনি জানান, এ বছর টমেটোর ফলন গত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ উপজেলায় এক যুগ আগে থেকে শীতকালীন হাইব্রিড টমেটো চাষ শুরু হয়েছে। এ এলাকায় টমেটো চাষ শুরু হওয়ার পর থেকেই কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে থাকেন। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে গত দুই বছর টমেটো চাষ করে তিগ্রস্ত হন কৃষক। এ কারণে গত দুই মওসুমের তুলনায় চলতি মওসুমে টমেটো চাষ হয়েছে কম। তবে বাজারে টমেটোর দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এটি অর্থকরী ফসল হওয়ায় কৃষকের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ বর্তমানে গোদাগাড়ী থেকে উৎপাদিত টমেটো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নাটোর, বগুড়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। মান ও গুণে এ এলাকার টমেটো ভালো হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সবজি ব্যবসায়ীদের সমাগম ঘটে।
রাজশাহী থেকে নয়া দিগন্ত সংবাদদাতা মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মওসুমে টমেটো চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক। এবার উপজেলার ১৫-১৬ হাজার কৃষক প্রত্য ও পরোভাবে টমেটো চাষের সাথে জড়িত এবং তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন। টমেটো জমি থেকে তুলে চাষিরা অনেক আগে থেকেই বিক্রি শুরু করেছেন এবং বর্তমানে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী টমেটোর সরবরাহও রয়েছে স্বাভাবিক। তা ছাড়া টমেটোর দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ায় চাষাবাদের প্রতি কৃষকের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন উৎসাহ।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মওসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় টমেটো চাষ হয়েছে দুই হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরে প্রায় ৩০ টন হারে টমেটো উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। সে হিসেবে এবার গোদাগাড়ীতে প্রায় আড়াই লাখ টন টমেটো উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় চার হাজার হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছিল। এবার শেষ সময়ে এসে টানা বর্ষণের কারণে টমেটো চাষের পরিমাণ কম হয়েছে। তবে গতবারের চেয়ে এবার টমেটো চাষের পরিমাণ কম হলেও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।
চাষিরা জানান, মানসম্মত বীজ না পাওয়ার কারণে টমেটোর জমিতে ভিন্ন জাতের মিশ্রণ ঘটায় উৎপাদন কম হচ্ছে। চলতি বছর বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলোর সালামত, রকি, মিন্টু সুপার, বিগল, লাইকো, সফল, সুশান, লাভলী, বিপুল, ভাগ্য, হাইটম, সবল, মিন্টু, ভিবিএল, ভিবিএল-৬৪২, নাভেল্টি এবং বিএডিসির বারী-৫ হাইব্রিড এফ-১ টমেটোর বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তাদের দাবি, সরকারিভাবে মানসম্মত বীজ সরবরাহ করা হলে এ অঞ্চলে টমেটো চাষের পরিমাণ আরো বাড়বে।
কৃষক সুমন হোসেন চলতি বছর ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড এফ-১ জাতের টমেটো চাষ করেছেন। এ পরিমাণ জমিতে উৎপাদন ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু ইতোমধ্যেই তিনি টমেটো বিক্রি করেছেন চার লাখ টাকার। আরো তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন তিনি।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গোদাগাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন শীতকালীন হাইব্রিড টমেটো ওঠা শুরু করবে সে সময় ভারত থেকে টমেটো আমদানি করা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া উচিত। এর ফলে দেশের টমেটোচাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন।
স্থানীয়রা বলছেন, টমেটো চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের কৃষি বিভাগকে চাষিদের সহায়তায় এগিয়ে আসা দরকার। এ দিকে গোদাগাড়ীর টমেটোর বাজার নষ্ট করতে দেশী-বিদেশী কিছু কোম্পানি ষড়যন্ত্র করছে বলেও তারা জানান।
গোদাগাড়ী উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাধন বাবু জানান, গতবারের চেয়ে এবার কম জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। তবে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার ১৫-১৬ হাজার কৃষক প্রত্য ও পরোভাবে টমেটো চাষের সাথে জড়িত। তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
এ প্রসঙ্গে এক সময় গোদাগাড়ীতে একচেটিয়া বীজ সরবরাহকারী কৃষি খাতের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি সিনজেনটার পরিচালক ড. মইনুল ইসলাম গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, নানা কারণে এ বছর টমেটো আবাদের এরিয়া প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। তবে জমির পরিমাণ কমলেও টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে। তা ছাড়া বাজারে দামও পেয়েছে ভালো। ফলে টমেটোচাষিরা এবার বেজায় খুশি। কারণ এ বছর অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। তারা আরো লাভ করতে পারত যদি তারা আগাম জাতের টমেটোর চাষ করতেন। গত কয়েক বছরে সিনজেনটা আগাম জাতের উচ্চফলনশীল হাইব্রিড টমেটো ‘সবল’ গোদাগাড়ী ও আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। এবারো সিনজেনটা নতুন ভ্যারাইটি বিপুল, সফল, হাইটনসহ পাঁচটি জাতের টমেটোর বীজ সরবরাহ করেছে। এর ফলনও বেশ ভালো। তিনি জানান, এ বছর টমেটোর ফলন গত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ উপজেলায় এক যুগ আগে থেকে শীতকালীন হাইব্রিড টমেটো চাষ শুরু হয়েছে। এ এলাকায় টমেটো চাষ শুরু হওয়ার পর থেকেই কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে থাকেন। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে গত দুই বছর টমেটো চাষ করে তিগ্রস্ত হন কৃষক। এ কারণে গত দুই মওসুমের তুলনায় চলতি মওসুমে টমেটো চাষ হয়েছে কম। তবে বাজারে টমেটোর দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এটি অর্থকরী ফসল হওয়ায় কৃষকের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ বর্তমানে গোদাগাড়ী থেকে উৎপাদিত টমেটো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নাটোর, বগুড়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। মান ও গুণে এ এলাকার টমেটো ভালো হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সবজি ব্যবসায়ীদের সমাগম ঘটে।
রাজশাহী থেকে নয়া দিগন্ত সংবাদদাতা মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মওসুমে টমেটো চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক। এবার উপজেলার ১৫-১৬ হাজার কৃষক প্রত্য ও পরোভাবে টমেটো চাষের সাথে জড়িত এবং তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন। টমেটো জমি থেকে তুলে চাষিরা অনেক আগে থেকেই বিক্রি শুরু করেছেন এবং বর্তমানে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী টমেটোর সরবরাহও রয়েছে স্বাভাবিক। তা ছাড়া টমেটোর দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ায় চাষাবাদের প্রতি কৃষকের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন উৎসাহ।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মওসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় টমেটো চাষ হয়েছে দুই হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরে প্রায় ৩০ টন হারে টমেটো উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। সে হিসেবে এবার গোদাগাড়ীতে প্রায় আড়াই লাখ টন টমেটো উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় চার হাজার হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছিল। এবার শেষ সময়ে এসে টানা বর্ষণের কারণে টমেটো চাষের পরিমাণ কম হয়েছে। তবে গতবারের চেয়ে এবার টমেটো চাষের পরিমাণ কম হলেও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।
চাষিরা জানান, মানসম্মত বীজ না পাওয়ার কারণে টমেটোর জমিতে ভিন্ন জাতের মিশ্রণ ঘটায় উৎপাদন কম হচ্ছে। চলতি বছর বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলোর সালামত, রকি, মিন্টু সুপার, বিগল, লাইকো, সফল, সুশান, লাভলী, বিপুল, ভাগ্য, হাইটম, সবল, মিন্টু, ভিবিএল, ভিবিএল-৬৪২, নাভেল্টি এবং বিএডিসির বারী-৫ হাইব্রিড এফ-১ টমেটোর বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তাদের দাবি, সরকারিভাবে মানসম্মত বীজ সরবরাহ করা হলে এ অঞ্চলে টমেটো চাষের পরিমাণ আরো বাড়বে।
কৃষক সুমন হোসেন চলতি বছর ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড এফ-১ জাতের টমেটো চাষ করেছেন। এ পরিমাণ জমিতে উৎপাদন ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু ইতোমধ্যেই তিনি টমেটো বিক্রি করেছেন চার লাখ টাকার। আরো তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন তিনি।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গোদাগাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন শীতকালীন হাইব্রিড টমেটো ওঠা শুরু করবে সে সময় ভারত থেকে টমেটো আমদানি করা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া উচিত। এর ফলে দেশের টমেটোচাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন।
স্থানীয়রা বলছেন, টমেটো চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের কৃষি বিভাগকে চাষিদের সহায়তায় এগিয়ে আসা দরকার। এ দিকে গোদাগাড়ীর টমেটোর বাজার নষ্ট করতে দেশী-বিদেশী কিছু কোম্পানি ষড়যন্ত্র করছে বলেও তারা জানান।
গোদাগাড়ী উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাধন বাবু জানান, গতবারের চেয়ে এবার কম জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। তবে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার ১৫-১৬ হাজার কৃষক প্রত্য ও পরোভাবে টমেটো চাষের সাথে জড়িত। তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
No comments