রাজকীয় আপ্যায়ন নিয়ে বরিশালে বিএনপির দু'গ্রুপে সংঘর্ষ- তৃণমূল ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা
যে কোন আন্দোলন-সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থাকব_ এমন অঙ্গীকারের পর মাত্র ৩০ ঘণ্টা যেতে না যেতেই বরিশালে বিএনপির দু'টি বিবদমান গ্রুপ ঢাকা থেকে আগত নেতাদের আপ্যায়ন নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটিয়ে বসে বৃহস্পতিবার দুপুরে।
এতে কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আব্বাসসহ কয়েকজন অবরম্নদ্ধ হয়ে পড়েন। আহত হন তিন জন্। শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আহত ১ জন।বিএনপির তৃণমূল ইউনিয়ন প্রতিনিধি মূল্যায়ন সভা শেষে স্থানীয় সরোয়ার_ কামাল গ্রম্নপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। ফলে প্রতিনিধি সভার আমেজ নষ্ট হয়ে যায়। এতে হতবাক হয়ে যান খোদ মির্জা আব্বাস।
এর আগে, সকাল ১০টায় স্থানীয় বান্দ রোডের একটি রেসত্মরাঁয় শুরম্ন হয় সভার কার্যক্রম, চলে প্রায় ৪ ঘণ্টা। বিএনপি'র কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও তা কার্যত বাংলাদেশের স্থপতি এবং মহাজোট নেত্রী ও আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা সভায় পরিণত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ভারতকে ইঙ্গিত করে বলেন, বাংলাদেশের প্রতি শকুনদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। তারা এদেশকে জিম্মি করে রাখতে চাচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্বের সময় আওয়ামী লীগ ভারতে পালিয়ে যায়। স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার কেউ ছিল না। জিয়াউর রহমান 'স্বাধীনতার ঘোষণা' দেন। শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার হত্যাকারী এবং জিয়াউর রহমান ছিলেন রাকারী। মির্জা আব্বাস বলেন, শেখ হাসিনা তারেক রহমানকে ভয় পায়। এ কারণে সে যাতে দেশে আসতে না পারে এ জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ ওয়ান ইলেভেন স্টাইলে জিয়া পরিবারের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । কোন ষড়যন্ত্র ধোপে টিকবে না। একদিন জনগণ এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে। তিনি বলেন, আগামী দিনে তারেক রহমান দেশের নেতৃত্ব দেবে। তারেক রহমান বিএনপি'র আমলে যে তৃণমূল ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেছেন তা শতভাগ সফল ও স্বার্থক ছিল। সভায় সভাপতিত্ব করেন মজিবর রহমান সরোয়ার এমপি। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়ক বিএনপি কেন্দ্রীয় সহসভাপতি বেগম সেলিমা রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর ড. ইউসুফ হায়দার, ড. রেদোয়ান সিদ্দিকী, প্রফেসর গোলাম হোসাইন, শওকত মাহমুদ, আবদুল হাই সিকদার, প্রফেসর আজিজ রহিম।
সম্মেলনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর কারণে পটুয়াখালী জেলার তৃণমূল কমর্ীরা সম্মেলন বর্জনকরেছে।
দুপুরে সভাশেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের সৌজন্যে রাজকীয় আপ্যায়ন নিয়ে তৃণমূল সভার সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার গ্রম্নপের সঙ্গে সম্মেলন আয়োজক সমন্বয়কারী আহসান হাবীব কামাল গ্রম্নপের দফায় দফায় সংঘর্ষ আর হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পরে অনত্মত তিনজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে কামাল গ্রম্নপের টলনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই সময় আহসান হাবীব কামালকে মারধর করার বারংবার চেষ্টা করেও সরোয়ার পন্থীরা ব্যর্থ হয়। ঘটনার প্রায় ২০মিনিট পর্যনত্ম কেন্দ্রীয় বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সভার প্রধান অতিথি মির্জর্া আব্বাসসহ ঢাকা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ অবরম্নদ্ধ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে সরোয়ারের হসত্মেেপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। নগরীর পুলিশ লাইন রোডস্থ বিএফজি রেসত্মরাঁর সম্মুখে দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। নগরীতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে পরবতর্ীতে সার্কিট হাউজে গোপন বৈঠকে মিলিত হয় বিএনপি'র কেন্দ্রীয় ও বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি'র নেতৃবৃন্দ। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যনত্ম গোপন বৈঠক চলছিল।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ৪০ জন অতিথি ও বরিশালের স্থানীয় সাংবাদিকদের সম্মানে নগরীর পুলিশ লাইন রোডস্থ বিএফজি রেসত্মোরায় রাজকীয় আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুর সোয়া দু'টার দিকে অতিথিদের মাঝে খাবার পরিবেশন করা হয়। ওই রেসত্মরাঁর নিজ তলায় আহসান হাবীব কামালের সমর্থকরা অবস্থান করছিল। সোয়া দু'টার পর সরোয়ার সমর্থক জেলা ছাত্রদল নেতা হাফিজ আহম্মেদ বাবলু ওই রেসত্মরাঁয় প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন কামালের শ্যালক মাসুদের সাথে বাবলুর তর্ক বাধে। এক পর্যায়ে মাসুদ বাবলুকে মারধর করে। বাবলুকে মারধরের সংবাদ সরোয়ার পন্থীদের কাছে চলে যায়। তখন সরোয়ার পন্থী সৈয়দ আকবর, জিয়া উদ্দিন সিকদার, বাবলু, সম্রাটসহ শতাধিক নেতাকমী বিএফজি রেসত্মরাঁর সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে রেসত্মরাঁর প্রবেশ মুখের গেট ভেঙ্গে ঢোকার চেষ্টা করে। ওই সময় টলন নামের একজনকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। প্রায় ১০মিনিট পর্যনত্ম রেসত্মোরার দ্বিতল ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে আহসাব হাবীব কামালকে এ্যাটাক করার জন্য। তখন উভয় পরে মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
No comments