পুলিশ-শিবির ব্যাপক সংঘর্ষ- কিছু প্রশ্নের জবাব পাওয়া জরুরি
আবার রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের সাথে
পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ এবং ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা
ঘটেছে।
গত সোমবার সকালে ঢাকায় মতিঝিল থেকে সচিবালয়
পর্যন্ত সড়ক দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টাহামলায় রণক্ষেত্রে পরিণত
হয়। ঘণ্টাব্যাপী এসব ঘটনা চলাকালে পুলিশ শুধু বেপরোয়া লাঠিচার্জই করেনি,
টিয়ার শেল নিক্ষেপ, এমনকি বহু রাউন্ড গুলিও বর্ষণ করেছে। ছাত্রশিবির
বলেছে, পুলিশের গুলিতে ৭৭ জন আহত হয়েছে এবং এ নিয়ে তাদের মোট আহতের
সংখ্যা প্রায় আড়াই শ’। গণহারে গ্রেফতারে আটক হয়েছে ৫৫ জন। ছাত্রশিবিরের
পূর্বনির্ধারিত মিছিলে পুলিশের বাধা ও হামলার জের ধরে এসব ঘটনা ঘটেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে বেশ কিছু সময়ের জন্য জনজীবন অচল
হয়ে পড়ে। সচিবালয়ের পাশে সংঘর্ষ শুরুর মাত্র ৫ মিনিট আগে প্রধানমন্ত্রী
সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। ভাঙচুর করা যানবাহনের মধ্যে অর্থমন্ত্রীর টোক
গাড়ি এবং তিনজন সচিবের গাড়িও রয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবিতে দেখা
যায়, রাজধানীতে আটক শিবিরকর্মীদের মাটিতে ফেলে পুলিশ নির্যাতন করছে।
রাজশাহী নগরীতে একজন শিবিরকর্মীকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। ফরিদপুর শহরে
একজন সাংবাদিককে পুলিশ পেটাচ্ছে। দিনাজপুরে শিবিরের মিছিলে পুলিশ গাড়ি
নিয়ে চড়াও হয়েছে। আরো দেখা যায়, মতিঝিলে একটি মাইক্রোবাস জ্বলছে, পাশেই
দাঙ্গা পুলিশের অত্যাধুনিক গাড়ি, যা দেখতে অনেকটা যুদ্ধের ট্যাঙ্কের মতো,
মতিঝিলে কিছু যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ঢিল ছুড়ছে ইত্যাদি।
যা হোক, এ ধরনের ঘটনা জনমনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কতটা অস্থির ও উদ্বেগজনক, সেটাই তুলে ধরছে। গত পরশুর এসব ঘটনার খবর ও ছবি পত্রপত্রিকায় বিস্তারিত এসেছে। দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের সামনে এবং প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র মতিঝিলের মতো এলাকায় আকস্মিক হামলা-সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, এটা সরকারের গোয়েন্দা পুলিশের ব্যর্থতার প্রমাণ। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন এর উল্টো কথা। তার মতে, এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই।
এ সব কিছু ছাপিয়ে কিছু প্রশ্ন শান্তিকামী জনগণের মনে বড় হয়ে উঠেছে। যেমনÑ সোমবারের ঘটনায় মতিঝিল থানার সামনেই পুলিশের দু’টি গাড়িতে আগুন দেয়া হলো। আবার পত্রিকার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ঘটনার সময় মতিঝিলে পুলিশ ফোর্সের মাঝে তাদের একজন কর্মকর্তার হাতে পেট্রল ও ম্যাচের কাঠি। এখানেই শেষ নয়, আরেক ছবিতে দেখা গেছে, এক যুবকের হাতে সেই পেট্রল ও ম্যাচের কাঠি পুলিশ তুলে দিচ্ছে। অন্য একটি ছবিতে দেখা যায়, এক যুবক পেট্রলের হুবহু ওই ধরনের বোতল নিয়ে ছুটে যাচ্ছে গাড়িতে আগুন দিতে। নয়া দিগন্তসহ কোনো কোনো পত্রিকার খবর, ছাত্রশিবির কর্মীদের আটকের পর পুলিশ তাদের হাতে পেট্রলের বোতল ও ম্যাচ ধরিয়ে দিয়েছে। এমনকি অভিযোগ পাওয়া গেছে, ছদ্মবেশধারী পুলিশ মিছিলে যোগ দিয়ে একপর্যায়ে গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানানো হয়, মিছিল থেকে সাদা পোশাকের এই লোকজন হঠাৎ হামলা করে বসে। এ সময়ে ভাঙচুর শুরু হয়ে যায় এবং মতিঝিল প্রধান সড়কে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও উত্তরা ব্যাংকের সামনে দু’টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পূর্বোক্ত লোকগুলোর কেউ কেউ বোতল থেকে পেট্রল ছিটাচ্ছিল গাড়িতে। এই অভূতপূর্ব আচরণের সাথে যোগ হয়েছে ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদের নজিরবিহীন একটি উক্তি। দুপুরে পুলিশ হাসপাতালে স্বয়ং আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের সামনে বেনজির পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘অস্ত্র ছিল না? গুলি করতে পারোনি? এখন থেকে শিবির দেখামাত্র গুলি করবা।’ তিনি শিবিরের নেতাকর্মীদের পা ভেঙে দিতেও বলেছেন। অপর দিকে আইজিপি বলেছেন, পুলিশের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল। তাই তাদের বেশি ক্ষতি হয়নি। প্রশ্ন হলো, ডিএমপি কমিশনার আইনের কোন ধারা বলে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিলেন? তিনি কি এই কথাটি বলে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসই উসকে দেননি?
আমরা যেকোনো ধরনের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরোধী। সবাই যদি সংযম-সহিষ্ণুতা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় না দেন, তাহলে দেশে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এটা কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়। এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই সরকার বা প্রশাসনের দায় বেশি। তাদের অবাঞ্ছিত বা উসকানিমূলক আচরণও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে। আমরা মনে করি, বৈধ ও স্বীকৃত সব সংগঠনের শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং-মিছিল, তথা মত প্রকাশ ও তৎপরতার সুযোগ থাকা উচিত। কারণ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে তা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য।
যা হোক, এ ধরনের ঘটনা জনমনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কতটা অস্থির ও উদ্বেগজনক, সেটাই তুলে ধরছে। গত পরশুর এসব ঘটনার খবর ও ছবি পত্রপত্রিকায় বিস্তারিত এসেছে। দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের সামনে এবং প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র মতিঝিলের মতো এলাকায় আকস্মিক হামলা-সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, এটা সরকারের গোয়েন্দা পুলিশের ব্যর্থতার প্রমাণ। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন এর উল্টো কথা। তার মতে, এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই।
এ সব কিছু ছাপিয়ে কিছু প্রশ্ন শান্তিকামী জনগণের মনে বড় হয়ে উঠেছে। যেমনÑ সোমবারের ঘটনায় মতিঝিল থানার সামনেই পুলিশের দু’টি গাড়িতে আগুন দেয়া হলো। আবার পত্রিকার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ঘটনার সময় মতিঝিলে পুলিশ ফোর্সের মাঝে তাদের একজন কর্মকর্তার হাতে পেট্রল ও ম্যাচের কাঠি। এখানেই শেষ নয়, আরেক ছবিতে দেখা গেছে, এক যুবকের হাতে সেই পেট্রল ও ম্যাচের কাঠি পুলিশ তুলে দিচ্ছে। অন্য একটি ছবিতে দেখা যায়, এক যুবক পেট্রলের হুবহু ওই ধরনের বোতল নিয়ে ছুটে যাচ্ছে গাড়িতে আগুন দিতে। নয়া দিগন্তসহ কোনো কোনো পত্রিকার খবর, ছাত্রশিবির কর্মীদের আটকের পর পুলিশ তাদের হাতে পেট্রলের বোতল ও ম্যাচ ধরিয়ে দিয়েছে। এমনকি অভিযোগ পাওয়া গেছে, ছদ্মবেশধারী পুলিশ মিছিলে যোগ দিয়ে একপর্যায়ে গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানানো হয়, মিছিল থেকে সাদা পোশাকের এই লোকজন হঠাৎ হামলা করে বসে। এ সময়ে ভাঙচুর শুরু হয়ে যায় এবং মতিঝিল প্রধান সড়কে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও উত্তরা ব্যাংকের সামনে দু’টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পূর্বোক্ত লোকগুলোর কেউ কেউ বোতল থেকে পেট্রল ছিটাচ্ছিল গাড়িতে। এই অভূতপূর্ব আচরণের সাথে যোগ হয়েছে ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদের নজিরবিহীন একটি উক্তি। দুপুরে পুলিশ হাসপাতালে স্বয়ং আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের সামনে বেনজির পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘অস্ত্র ছিল না? গুলি করতে পারোনি? এখন থেকে শিবির দেখামাত্র গুলি করবা।’ তিনি শিবিরের নেতাকর্মীদের পা ভেঙে দিতেও বলেছেন। অপর দিকে আইজিপি বলেছেন, পুলিশের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল। তাই তাদের বেশি ক্ষতি হয়নি। প্রশ্ন হলো, ডিএমপি কমিশনার আইনের কোন ধারা বলে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিলেন? তিনি কি এই কথাটি বলে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসই উসকে দেননি?
আমরা যেকোনো ধরনের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরোধী। সবাই যদি সংযম-সহিষ্ণুতা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় না দেন, তাহলে দেশে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এটা কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়। এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই সরকার বা প্রশাসনের দায় বেশি। তাদের অবাঞ্ছিত বা উসকানিমূলক আচরণও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে। আমরা মনে করি, বৈধ ও স্বীকৃত সব সংগঠনের শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং-মিছিল, তথা মত প্রকাশ ও তৎপরতার সুযোগ থাকা উচিত। কারণ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে তা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য।
No comments