হাইকোর্টের রুল- হিজাব পরতে বাধা দেয়া কেন বেআইনি নয়
দেশের মহিলা নাগরিকদের গ্রেফতার, আদালতে উপস্থাপন, রিমান্ডে নেয়া এবং
আদালতে আনানেয়ার পথে সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ স্বীকৃত মৌলিক অধিকার বঞ্চিত
করে এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতি অনুযায়ী পোশাক পরিধানে বাধা প্রদান এবং
পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অমানবিক, বেআইনি ও অনাকাক্সিত
ব্যবহারকে কেন সংবিধান পরিপন্থী, আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা
হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ
বিষয়ে এক রিট আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেইন
হায়দার ও বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজি, রমনা থানার ওসি এবং রমনা থানার জিডি নং ১০৯৩/২০১২-এর বাদি এসআই মশিউর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী ফাহিমা নাসরিন মুন্নি নিজেই শুনানি করেন। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারা শিখা, অ্যাডভোকেট চেমন আক্তার, অ্যাডভোকেট মাহমুদা বেগম, অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার, অ্যাডভোকেট মোরশেদা বেগম, অ্যাডভোকেট আরিফা পারভীন তাপসী প্রমুখ।
গত ১৭ ডিসেম্বর মগবাজারের একটি বাসা থেকে ২১ নারীকে ধরে নিয়ে যায় রমনা থানা পুলিশ। পরে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের বোরকা ও মুখের নেকাব খুলতে বাধ্য করে তাদের বেপর্দা করে আদালতে হাজির করে। লিফট থাকা সত্ত্বেও এক অন্তঃসত্ত্বাসহ ২১ নারীকে আটতলায় হেঁটে উঠতে বাধ্য করা হয়। পরে তাদের ৫৪ ধারায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। আদালত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে দিয়ে দেন। পুলিশের এসব কাজের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি জমা দেন মানবাধিকার কর্মী ও সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি। গতকাল আবেদনের ওপর তিনি নিজেই শুনানি করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর ৪৯২ বড় মগবাজারের গ্রিনভ্যালি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পুলিশ ও র্যাবের পুলিশ সদস্যরা ২১ জন মহিলাকে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করে রমনা থানায় নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় পুলিশের পুরুষ সদস্যরা এসব মহিলাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং তাদের সাথে শালীনতাবর্জিত আচরণ করে। গ্রেফতারের পর আদালতে উপস্থানকালে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হাবিবা নাছরিন কান্তাসহ সব মহিলাকে আট তলা বিল্ডিংয়ে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে উঠতে বাধ্য করা হয় ভবনটিতে লিফট থাকা সত্ত্বেও। পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে মহিলাদের বিভিন্ন রকম অমানবিক নির্যাতন করা হয় এবং পুলিশ তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ৭ জানুয়ারি ওই পর্দানশিন মহিলাদের জোর করে তাদের পরনের বোরকা খুলে ফেলতে বাধ্য করে আদালতে নেয়া হয় এবং পর্দাবিহীনভাবে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা হয়।
শুনানিতে ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবাধিকার রক্ষা ও মানবসত্তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সংবিধান ও আইনের শাসন বহাল থাকার পরও নারীদের সাথে পুলিশ যে আচরণ করেছে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নাগরিকদের যেকোনো ধর্ম পালন এবং ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পোশাক পরিধান করার অধিকার সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকার। পুলিশ প্রকাশ্য দিবালোকে মহিলাদের বোরকা খুলে নিয়ে এই অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
ফাহিমা নাসরিন আরো বলেন, নারীদের হিজাব পরিধান একটি ধর্মীয় রীতি। একজন মানুষকে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অধিকার দিয়েছে সংবিধান। কিন্তু পর্দানশিন ২০ নারীর হিজাব খুলে আদালতে হাজির করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ ছাড়াই তাদের গ্রেফতারের সময় অশোভন আচরণ করেছে পুলিশ। এতে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে। এ সময় তিনি কানাডায় এক পর্দানশিন মহিলার হিজাব ধরে টান দেয়ার অপরাধে আরেক মহিলার সাজা পাওয়ার উদাহরণ দেখান। পুলিশের এমন আচরণে ধর্মীয় স্বাধীনতা চরমভাবে ক্ষুণœ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ফাহিমা নাসরিন জানান, এই ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল আদালতে। বিষয়টি মামলার চূড়ান্ত শুনানিকালে বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজি, রমনা থানার ওসি এবং রমনা থানার জিডি নং ১০৯৩/২০১২-এর বাদি এসআই মশিউর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী ফাহিমা নাসরিন মুন্নি নিজেই শুনানি করেন। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারা শিখা, অ্যাডভোকেট চেমন আক্তার, অ্যাডভোকেট মাহমুদা বেগম, অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার, অ্যাডভোকেট মোরশেদা বেগম, অ্যাডভোকেট আরিফা পারভীন তাপসী প্রমুখ।
গত ১৭ ডিসেম্বর মগবাজারের একটি বাসা থেকে ২১ নারীকে ধরে নিয়ে যায় রমনা থানা পুলিশ। পরে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের বোরকা ও মুখের নেকাব খুলতে বাধ্য করে তাদের বেপর্দা করে আদালতে হাজির করে। লিফট থাকা সত্ত্বেও এক অন্তঃসত্ত্বাসহ ২১ নারীকে আটতলায় হেঁটে উঠতে বাধ্য করা হয়। পরে তাদের ৫৪ ধারায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। আদালত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে দিয়ে দেন। পুলিশের এসব কাজের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি জমা দেন মানবাধিকার কর্মী ও সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি। গতকাল আবেদনের ওপর তিনি নিজেই শুনানি করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর ৪৯২ বড় মগবাজারের গ্রিনভ্যালি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পুলিশ ও র্যাবের পুলিশ সদস্যরা ২১ জন মহিলাকে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করে রমনা থানায় নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় পুলিশের পুরুষ সদস্যরা এসব মহিলাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং তাদের সাথে শালীনতাবর্জিত আচরণ করে। গ্রেফতারের পর আদালতে উপস্থানকালে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হাবিবা নাছরিন কান্তাসহ সব মহিলাকে আট তলা বিল্ডিংয়ে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে উঠতে বাধ্য করা হয় ভবনটিতে লিফট থাকা সত্ত্বেও। পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে মহিলাদের বিভিন্ন রকম অমানবিক নির্যাতন করা হয় এবং পুলিশ তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ৭ জানুয়ারি ওই পর্দানশিন মহিলাদের জোর করে তাদের পরনের বোরকা খুলে ফেলতে বাধ্য করে আদালতে নেয়া হয় এবং পর্দাবিহীনভাবে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা হয়।
শুনানিতে ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবাধিকার রক্ষা ও মানবসত্তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সংবিধান ও আইনের শাসন বহাল থাকার পরও নারীদের সাথে পুলিশ যে আচরণ করেছে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নাগরিকদের যেকোনো ধর্ম পালন এবং ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পোশাক পরিধান করার অধিকার সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকার। পুলিশ প্রকাশ্য দিবালোকে মহিলাদের বোরকা খুলে নিয়ে এই অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
ফাহিমা নাসরিন আরো বলেন, নারীদের হিজাব পরিধান একটি ধর্মীয় রীতি। একজন মানুষকে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অধিকার দিয়েছে সংবিধান। কিন্তু পর্দানশিন ২০ নারীর হিজাব খুলে আদালতে হাজির করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ ছাড়াই তাদের গ্রেফতারের সময় অশোভন আচরণ করেছে পুলিশ। এতে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে। এ সময় তিনি কানাডায় এক পর্দানশিন মহিলার হিজাব ধরে টান দেয়ার অপরাধে আরেক মহিলার সাজা পাওয়ার উদাহরণ দেখান। পুলিশের এমন আচরণে ধর্মীয় স্বাধীনতা চরমভাবে ক্ষুণœ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ফাহিমা নাসরিন জানান, এই ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল আদালতে। বিষয়টি মামলার চূড়ান্ত শুনানিকালে বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
No comments