আইন অধিকারঅগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিককে পেতে হবে শাস্তি by তানজিম আল ইসলাম
আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের লাশের গন্ধ না মিলিয়ে যেতেই আবারও ঘটল পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, এবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে হলো মৃত্যুর মিছিল। ২০০৬ সালের শ্রম আইনে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বিধিবিধান করা হয়েছে।
প্রতিটি পোশাক কারখানার মালিকদের এ বিধান মেনে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে।
শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিধান
আইনে কারখানার প্রতিটি কক্ষে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করার উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। প্রতিতলার সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী অন্তত একটি বিকল্প সিঁড়িসহ বাইরে বের হওয়ার পর্যাপ্ত উপায় এবং প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। কারখানায় কাজ চলাকালে কোনো অবস্থাতেই বহির্গমনের পথ তালাবদ্ধ কিংবা আটকে রাখা যাবে না এবং শ্রমিকেরা যাতে দ্রুত বের হতে পারেন, সে জন্য এই পথগুলোকে স্পষ্টভাবে লাল কালি দ্বারা বাংলা অক্ষর দিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে চিহ্নিত করে রাখতে হবে, যাতে শ্রমিকেরা সহজেই তা চিনে নিতে পারেন। কারখানায় আগুন লাগলে বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি সংকেত বাজাতে হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের নিচতলায় গুদামঘর থাকে এবং ওপরের তলায় ১০ জন বা ততধিক শ্রমিক কাজে নিয়োজিত থাকেন, তবে আগে থেকেই আগুন লাগলে কীভাবে তাঁরা বাইবে বের হবেন, সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
কারখানায় প্রতিবছর অন্তত একবার অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন করতে হবে।
শ্রমিকেরা কীভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন
কোনো দুর্ঘটনার কারণে শ্রমিকের ক্ষতি হলে মালিক ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। দুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁর পরিবার পাবেন এক লাখ টাকা। কোনো শ্রমিক স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করলে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা পাবে এবং অস্থায়ী অক্ষমতা ঘটলে মাসিক হিসেবে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে, যার মেয়াদ হবে সুস্থ হওয়ার সময় পর্যন্ত বা এক বছর। মালিক তা না দিলে আহত শ্রমিক বা নিহত শ্রমিকের উত্তরাধিকারীরা শ্রম আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। আদালত সেই মালিকের কাছে একটি নোটিশ দেবেন এবং ৩০ দিনের মধ্যে মালিককে শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ,পরিস্থিতি আদালতের কাছে জমা দেবেন। যদি তিনি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকেন, তবে নোটিশ জারির ৩০ দিনের মধ্যে তা আদালতে জমা দেবেন।
কর্তৃপক্ষের যে শাস্তি হতে
শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রম আইন লঙ্ঘনের কারণে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে মালিককে শাস্তি হিসেবে চার বছরের কারাদণ্ড কিংবা এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। এ ছাড়া দণ্ডবিধির ৩০৪(ক) ধারা অনুসারে, অবহেলায় মৃত্যুর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর নির্ধারিত আছে। দণ্ডবিধি আইনে, কোনো ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যের
কারণে কোনো ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটালে শাস্তি ন্যূনতম ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবনের বিধান রয়েছে।
আইনের আশ্রয় কীভাবে
কর্তৃপক্ষের কর্তব্যের অবহেলার অভিযোগে কোনো আহত শ্রমিক বা মৃত শ্রমিকের আত্মীয়স্বজন যে কেউ থানায় এজাহার হিসেবে মামলা রুজু করতে পারেন। থানায় মামলা না নিলে আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করতে পারেন। এ ছাড়া শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য শ্রম আদালতে প্রতিকার চাইতে পারবেন যেকোনো শ্রমিক।
লেখক: আইনজীবী
শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিধান
আইনে কারখানার প্রতিটি কক্ষে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করার উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। প্রতিতলার সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী অন্তত একটি বিকল্প সিঁড়িসহ বাইরে বের হওয়ার পর্যাপ্ত উপায় এবং প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। কারখানায় কাজ চলাকালে কোনো অবস্থাতেই বহির্গমনের পথ তালাবদ্ধ কিংবা আটকে রাখা যাবে না এবং শ্রমিকেরা যাতে দ্রুত বের হতে পারেন, সে জন্য এই পথগুলোকে স্পষ্টভাবে লাল কালি দ্বারা বাংলা অক্ষর দিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে চিহ্নিত করে রাখতে হবে, যাতে শ্রমিকেরা সহজেই তা চিনে নিতে পারেন। কারখানায় আগুন লাগলে বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি সংকেত বাজাতে হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের নিচতলায় গুদামঘর থাকে এবং ওপরের তলায় ১০ জন বা ততধিক শ্রমিক কাজে নিয়োজিত থাকেন, তবে আগে থেকেই আগুন লাগলে কীভাবে তাঁরা বাইবে বের হবেন, সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
কারখানায় প্রতিবছর অন্তত একবার অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন করতে হবে।
শ্রমিকেরা কীভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন
কোনো দুর্ঘটনার কারণে শ্রমিকের ক্ষতি হলে মালিক ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। দুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁর পরিবার পাবেন এক লাখ টাকা। কোনো শ্রমিক স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করলে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা পাবে এবং অস্থায়ী অক্ষমতা ঘটলে মাসিক হিসেবে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে, যার মেয়াদ হবে সুস্থ হওয়ার সময় পর্যন্ত বা এক বছর। মালিক তা না দিলে আহত শ্রমিক বা নিহত শ্রমিকের উত্তরাধিকারীরা শ্রম আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। আদালত সেই মালিকের কাছে একটি নোটিশ দেবেন এবং ৩০ দিনের মধ্যে মালিককে শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ,পরিস্থিতি আদালতের কাছে জমা দেবেন। যদি তিনি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকেন, তবে নোটিশ জারির ৩০ দিনের মধ্যে তা আদালতে জমা দেবেন।
কর্তৃপক্ষের যে শাস্তি হতে
শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রম আইন লঙ্ঘনের কারণে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে মালিককে শাস্তি হিসেবে চার বছরের কারাদণ্ড কিংবা এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। এ ছাড়া দণ্ডবিধির ৩০৪(ক) ধারা অনুসারে, অবহেলায় মৃত্যুর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর নির্ধারিত আছে। দণ্ডবিধি আইনে, কোনো ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যের
কারণে কোনো ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটালে শাস্তি ন্যূনতম ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবনের বিধান রয়েছে।
আইনের আশ্রয় কীভাবে
কর্তৃপক্ষের কর্তব্যের অবহেলার অভিযোগে কোনো আহত শ্রমিক বা মৃত শ্রমিকের আত্মীয়স্বজন যে কেউ থানায় এজাহার হিসেবে মামলা রুজু করতে পারেন। থানায় মামলা না নিলে আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করতে পারেন। এ ছাড়া শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য শ্রম আদালতে প্রতিকার চাইতে পারবেন যেকোনো শ্রমিক।
লেখক: আইনজীবী
No comments