বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি
বসনত্ম সমাগত। প্রকৃতিতে কড়া নাড়ছে। আজ বাদে কালই শুরম্ন হচ্ছে ঋতুরাজ বসনত্ম। গাছে গাছে নতুন পাতা, শিমুল-পলাশের শাখায় শাখায় রঙের আভাস, কোকিলের উদাস করা গান, শীত নেই তবুও শীতকালের শেষ প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগাতে এসেছে ঋতুরাজ বসনত্ম।
মহাসাড়ম্বরে নগরবাসী আবাহন জানাবে তাকে। বাসনত্মী রং আর গাঁদা ফুলের ঘ্রাণে ভরে উঠবে নগরী। চারম্নকলার বকুলতলা, রমনা, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরসহ নরগীর সর্বত্রই থাকবে প্রাণের জোয়ার। বসনত্মের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসবে তরম্নণ-তরম্নণী, শিশু-বুড়ো সবাই। বাঙালী সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক এই উৎসবে মিলিত হবে একে অন্যের সঙ্গে। গেয়ে উঠবে 'আজি এ বসনত্মে, কত ফুল ফোটে...' গানটি। এরপরের দিনই (রবিবার) প্রেমময় দিন "ভ্যালেন্টাইন ডে' পালন করবে নগরবাসী। প্রেম-প্রীতি, স্নেহ-মমতার মাঝে নিজেকে খুঁজে নেবে এদিন সবাই। বসনত্মের রঙে ও ভালবাসায় এ দু'দিন প্রাণে প্রাণে বয়ে যাবে আনন্দের ফল্গুধারা।ঋতুর পরিবর্তন ইতোমধ্যেই ধরা দিয়েছে প্রকৃতিতে। পথে-ঘাটে চলাচলের সময় ডানে-বামে তাকালেই চোখে পড়ে এই পরিবর্তন। গাছে গাছে নতুন নানা রঙের বাহারি ফুল, ফলবতী আম গাছে মুকুল_ গুঁড়িগুঁড়ি আম, আর শীতের রম্নৰতা ধুয়ে মুছে নিয়ে যেতে নতুন সাজে সাজছে প্রকৃতি। পরিবর্তন সে শুধু প্রকৃতিতে লেগেছে তা নয়, নগরবাসিন্দাদের মনে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। তাই তাঁরা ছুটে যযচ্ছে ফ্যাশন হাউজের শোরম্নমগুলোতে। ঋতুরাজের সঙ্গে নিজেকে সাজাতে কিনে নিচ্ছে পছন্দের পোশাক, ফুলের গহনা আরও কত কি।
নগরী থেকে শীত মোটামুটি বিদায় নিয়েছে। শেষ রাতে সামান্য ঠা-া মনে হয়, তখন অনেকে কাঁথা গায়ে জড়ায়। তবে শীত নিবারণের বনেদী বস্ত্রগুলো অনেকেই তুলে ফেলেছে ইতোমধ্যে। তবে শীত সবে যাই যাই করছে। এরই মধ্যে নগরীতে শুরম্ন হয়ে গেছে লোডশেডিং। রাজধানীর প্রায় সব এলাকাতেই প্রতিদিনই গড়ে এক ঘণ্টা, কোথাও কোথাও আরও বেশি লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। আর রান্নার গ্যাসের সমস্যা তো রয়েছেই। নগরীর অধিকাংশ এলাকাতেই দিনের বেলা গ্যাস পাওয়া যায় না।
তাই বাধ্য হয়ে অবস্থাপন্ন পরিবারগুলো সিলিন্ডার গ্যাস লাগিয়ে নিয়েছে। আর যাদের পৰে তা সম্ভব হয়নি তারা লাকড়ির চুলায়, অথবা রাতে যে সামান্য গ্যাস পাওয়া যায় তাতেই কোন রকমে কাজ সারছে। এদিকটিতে বর্তমান সরকারের কোনরকম তদারকী নেই। বরং জানিয়ে দেয়া হয়েছে_ এক দেড় বছরের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আর যানজট তো এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে।
নগরীর কোন সড়কে যানজট নেই, তা কেউ বলতে পারবে না। দিন দিন এর যন্ত্রণা বেড়েই চলেছে। রাসত্মা দিয়ে এখন গাড়ি চলে গায়ে গা লাগিয়ে ধীরলয়ে। আর যখন দাঁড়িয়ে থাকে তো, আধা ঘণ্টা পার। এভাবেই এখন চলতে হচ্ছে নগর বাসিন্দাদের। আধা ঘণ্টার পথ পার হতে হচ্ছে দু'ঘণ্টায়।
No comments