বিদায়বেলায় ভিসির নিয়োগ উৎসব by এমরান হাসান সোহেল
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ তিন দিনে উপাচার্য ড. সাখাওয়াত হোসেন ১১৯ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে ১০৫ জনকেই অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, গত ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর দিনরাত কাজ করে তিনি অবৈধভাবে এ নিয়োগের পাশাপাশি অনেককে পদোন্নতিও (পর্যায়োন্নয়ন) দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি। সময়ের আগেই এই পদোন্নতি পাওয়াদের মধ্যে উপাচার্যের ভাগ্নেও রয়েছেন। এ ছাড়া ১৪ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৩৩ জনকে।
সূত্র বলছে, বিদায়বেলায় তড়িঘড়ি করে এসব নিয়োগপত্রে উপাচার্যের স্বাক্ষর করার পেছনে ছিল অর্থের খেলা। উচ্চ পর্যায়ের প্রতিটি পদে চার থেকে পাঁচ লাখ এবং নিম্ন পর্যায়ের পদে দুই থেকে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে এসব নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এই নিয়োগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, মেয়াদ শেষে উপাচার্যের যাওয়ার সময় এতগুলো নিয়োগ কেন দিলেন, তা প্রশ্নবোধক। এ জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটিই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।
কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি অস্বাভাবিক। শেষ অবস্থায় কেন তিনি এত বেশি নিয়োগ দিলেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মকে নিয়ম বানানো একটি সংক্রমক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এগুলো পরিবর্তন করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁদের আদর্শ হারাবেন।
ভিসি পদে সাখাওয়াত হোসেনের ২০ ডিসেম্বর শেষ কর্মদিবস থাকলেও নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিনি এক দিন আগেই গত বুধবার রাতে ঢাকার পথে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। আগের দিন তিনি তাঁর বছরের মেয়াদকাল নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেন। সেখানে 'অবৈধ নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে কি না'- এ প্রশ্ন করে তাঁর লোকজনের হাতে লাঞ্ছিত হন পটুয়াখালীর তিন সাংবাদিক। যারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় তাদের বেশির ভাগই ছিল নতুন নিয়োগ পেতে যাওয়া লোকজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাখাওয়াত হোসেন তিন বছর এক মাস আগে তাঁর ভাগ্নে মনিরুজ্জামান খানকে নিরীক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তা পদে চাকরি দেন। সর্বশেষ তিন দিনে তিনি মনিরুজ্জামানকে পর্যায়োন্নয়ন দিয়ে গেছেন সহকারী পরিচালক (নিরীক্ষা) পদে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী পর্যায়োন্নয়নের জন্য একই প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন থাকলেও এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম উপেক্ষা করা হয়েছে।
গত ২ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে (সমকাল) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় জনবল নিয়োগের। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে একজন নিয়োগের কথা থাকলেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দুজনকে। সেকশন অফিসার পদে ছয়জনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে অস্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হিসাবরক্ষক পদে একজনের কথা বলে দুজনকে, উপসহকারী প্রকৌশলী সিভিল পদে একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে, সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) পদে একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে, সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের জন্য একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চারজনকে এবং সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের (বাজেট) জন্য একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে একজনের বিজ্ঞপ্তিতে একজনকেই এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক পদেও একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৪ জনের বিপরীতে ৩৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ৮৬ জন নিয়োগ পেয়েছেন এমএলএসএস, মৌসুমি ও খণ্ডকালীন হিসেবে; যাঁদের ক্ষেত্রে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। মৌসুমি ও খণ্ডকালীন নিয়োগ পাওয়াদের পরবর্তী সময়ে যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে পদায়ন করার নিয়ম রয়েছে। সূত্র জানায়, এসব নিয়োগ এবং পর্যায়োন্নয়নের আগে ভিসি সাখাওয়াত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো ৪২৭ জনকে নিয়োগ ও পর্যায়োন্নয়ন করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমার ভাগ্নের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ভাগ্নের পদোন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই অভিজ্ঞতার শর্ত পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে তিন বছর করা হয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের ২৭তম সভায় ভাগ্নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।'
অন্যান্য পদের নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ''নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীরা 'মাস্টার রোলে' বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই কর্মরত ছিলেন। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুধু তাঁদের চাকরি স্থায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল কাঠামোতেই ছিল। এই জনবল কাঠামো সরকারই তৈরি করে দিয়েছে। আমি শুধু নিয়োগ দিয়েছি। আর এ ক্ষেত্রে কোনো অন্যায়ও করিনি। নিয়োগ সম্পর্কে আমার বিরদ্ধে যেকোনো তদন্ত কমিটি কাজ করলে আমার অনিয়ম প্রমাণ করতে পারবে না। কারণ নিয়োগে আমি কোনো দুর্নীতি ও অনিয়ম করিনি। আমি শতভাগ সৎ।'' যাওয়ার সময় কেন এতগুলো পদে নিয়োগ দিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, 'এটা আমার রুটিন দায়িত্ব। আর স্বচ্ছতার সঙ্গেই আমি এ দায়িত্ব পালন করেছি।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, 'পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যেই সংখ্যক লোকবল চাওয়া হয়েছে এর চেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী পাওয়ার কারণে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিধিতে থাকলেও ওই বিধি সংশোধন করে তিন বছর করে ভিসির ভাগ্নে মনিরুজ্জামানকে সহকারী পরিচালক পদে পর্যায়োন্নয়ন দেওয়া হয়েছে। এমএলএসএস, মৌসুমি ও খণ্ডকালীন নিয়োগগুলো রিজেন্ট বোর্ডের কাছে থাকে না, এসব নিয়োগ ভিসির একক ক্ষমতাতেই সম্ভব। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।' নিয়োগ বাণিজ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এ সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। থাকলেও কম।'
গত মঙ্গলবার ভিসি সাখাওয়াত চার বছরে তাঁর সাফল্যের দিক তুলে ধরতে পটুয়াখালীর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়ামে। এ সময় সাংবাদিক নিখিল চ্যাটার্জী নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললে অবৈধ নিয়োগ ও পর্যায়োন্নয়ন পেতে যাওয়া লোকজন তাঁকে লাঞ্ছিত করে। অন্য দুই সাংবাদিক মো. সোহরাব হোসেন ও আমিরুল ইসলাম হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেরাও লাঞ্ছিত হন। ওই সময় ভিসি সাখাওয়াত নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা নেই দাবি করে বলেন, 'ওই সাংবাদিক (নিখিল চ্যাটার্জী) নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন।'
সূত্র বলছে, বিদায়বেলায় তড়িঘড়ি করে এসব নিয়োগপত্রে উপাচার্যের স্বাক্ষর করার পেছনে ছিল অর্থের খেলা। উচ্চ পর্যায়ের প্রতিটি পদে চার থেকে পাঁচ লাখ এবং নিম্ন পর্যায়ের পদে দুই থেকে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে এসব নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এই নিয়োগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, মেয়াদ শেষে উপাচার্যের যাওয়ার সময় এতগুলো নিয়োগ কেন দিলেন, তা প্রশ্নবোধক। এ জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটিই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।
কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি অস্বাভাবিক। শেষ অবস্থায় কেন তিনি এত বেশি নিয়োগ দিলেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মকে নিয়ম বানানো একটি সংক্রমক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এগুলো পরিবর্তন করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁদের আদর্শ হারাবেন।
ভিসি পদে সাখাওয়াত হোসেনের ২০ ডিসেম্বর শেষ কর্মদিবস থাকলেও নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিনি এক দিন আগেই গত বুধবার রাতে ঢাকার পথে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। আগের দিন তিনি তাঁর বছরের মেয়াদকাল নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেন। সেখানে 'অবৈধ নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে কি না'- এ প্রশ্ন করে তাঁর লোকজনের হাতে লাঞ্ছিত হন পটুয়াখালীর তিন সাংবাদিক। যারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় তাদের বেশির ভাগই ছিল নতুন নিয়োগ পেতে যাওয়া লোকজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাখাওয়াত হোসেন তিন বছর এক মাস আগে তাঁর ভাগ্নে মনিরুজ্জামান খানকে নিরীক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তা পদে চাকরি দেন। সর্বশেষ তিন দিনে তিনি মনিরুজ্জামানকে পর্যায়োন্নয়ন দিয়ে গেছেন সহকারী পরিচালক (নিরীক্ষা) পদে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী পর্যায়োন্নয়নের জন্য একই প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন থাকলেও এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম উপেক্ষা করা হয়েছে।
গত ২ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে (সমকাল) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় জনবল নিয়োগের। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে একজন নিয়োগের কথা থাকলেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দুজনকে। সেকশন অফিসার পদে ছয়জনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে অস্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হিসাবরক্ষক পদে একজনের কথা বলে দুজনকে, উপসহকারী প্রকৌশলী সিভিল পদে একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে, সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) পদে একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে, সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের জন্য একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চারজনকে এবং সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের (বাজেট) জন্য একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে একজনের বিজ্ঞপ্তিতে একজনকেই এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক পদেও একজনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৪ জনের বিপরীতে ৩৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ৮৬ জন নিয়োগ পেয়েছেন এমএলএসএস, মৌসুমি ও খণ্ডকালীন হিসেবে; যাঁদের ক্ষেত্রে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। মৌসুমি ও খণ্ডকালীন নিয়োগ পাওয়াদের পরবর্তী সময়ে যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে পদায়ন করার নিয়ম রয়েছে। সূত্র জানায়, এসব নিয়োগ এবং পর্যায়োন্নয়নের আগে ভিসি সাখাওয়াত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো ৪২৭ জনকে নিয়োগ ও পর্যায়োন্নয়ন করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমার ভাগ্নের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ভাগ্নের পদোন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই অভিজ্ঞতার শর্ত পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে তিন বছর করা হয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের ২৭তম সভায় ভাগ্নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।'
অন্যান্য পদের নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ''নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীরা 'মাস্টার রোলে' বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই কর্মরত ছিলেন। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুধু তাঁদের চাকরি স্থায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল কাঠামোতেই ছিল। এই জনবল কাঠামো সরকারই তৈরি করে দিয়েছে। আমি শুধু নিয়োগ দিয়েছি। আর এ ক্ষেত্রে কোনো অন্যায়ও করিনি। নিয়োগ সম্পর্কে আমার বিরদ্ধে যেকোনো তদন্ত কমিটি কাজ করলে আমার অনিয়ম প্রমাণ করতে পারবে না। কারণ নিয়োগে আমি কোনো দুর্নীতি ও অনিয়ম করিনি। আমি শতভাগ সৎ।'' যাওয়ার সময় কেন এতগুলো পদে নিয়োগ দিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, 'এটা আমার রুটিন দায়িত্ব। আর স্বচ্ছতার সঙ্গেই আমি এ দায়িত্ব পালন করেছি।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, 'পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যেই সংখ্যক লোকবল চাওয়া হয়েছে এর চেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী পাওয়ার কারণে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিধিতে থাকলেও ওই বিধি সংশোধন করে তিন বছর করে ভিসির ভাগ্নে মনিরুজ্জামানকে সহকারী পরিচালক পদে পর্যায়োন্নয়ন দেওয়া হয়েছে। এমএলএসএস, মৌসুমি ও খণ্ডকালীন নিয়োগগুলো রিজেন্ট বোর্ডের কাছে থাকে না, এসব নিয়োগ ভিসির একক ক্ষমতাতেই সম্ভব। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।' নিয়োগ বাণিজ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এ সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। থাকলেও কম।'
গত মঙ্গলবার ভিসি সাখাওয়াত চার বছরে তাঁর সাফল্যের দিক তুলে ধরতে পটুয়াখালীর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়ামে। এ সময় সাংবাদিক নিখিল চ্যাটার্জী নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললে অবৈধ নিয়োগ ও পর্যায়োন্নয়ন পেতে যাওয়া লোকজন তাঁকে লাঞ্ছিত করে। অন্য দুই সাংবাদিক মো. সোহরাব হোসেন ও আমিরুল ইসলাম হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেরাও লাঞ্ছিত হন। ওই সময় ভিসি সাখাওয়াত নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা নেই দাবি করে বলেন, 'ওই সাংবাদিক (নিখিল চ্যাটার্জী) নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন।'
No comments