বিজয় আল্লাহর নিয়ামত by মুফতি মাহফূযুল হক
বনি ইসরাইলদের প্রতি মিসরিদের নির্যাতন ও শোষণ যখন চূড়ান্তে পেঁৗছে, তখন আল্লাহতায়ালা ফেরাউনের জাতিকে নীল নদে ডুবিয়ে শেষ করেন। শোষকের কবল থেকে উদ্ধার করেন অসহায় বনি ইসরাইলকে। বিজয় দান করেন শোষিত জনতাকে।
অস্ত্র সম্ভারে সুসজ্জিত বিশাল জালুত বাহিনীর অত্যাচারে বিপন্ন মানবতাকে স্বাধীনতাদানের জন্য আল্লাহতায়ালা প্রেরণ করেন দাউদকে (আ.)। তারই হাত থেকে ছোড়া পাথরের আঘাতে জালুত নিহত হয় ও তার পতন ঘটে। কাঙ্ক্ষিত বিজয় পদ চুম্বন করে শোষিত জনতা। এভাবে কোনো শাসকই যখন ন্যায়ের শাসন ছেড়ে শোষণের পথে হেঁটেছে এবং শোষিত জনতা যার যা আছে তা-ই নিয়ে প্রতিরোধে নেমেছে, তখনই রাজাধিরাজ আল্লাহতায়ালা পটপরিবর্তন করেছেন সে জাতির।
পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ন্যায়ের শাসন ছেড়ে দিয়েছিল। শুরু করেছিল শোষণ ও বৈষম্য। তারা আমাদের মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। চেয়েছিল তাদের ভাষা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে। সর্বত্র ছিল তাদের প্রাধান্য। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল ৯০%, বাকি ১০% প্রতিনিধিত্ব ছিল আমাদের। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ দেওয়া ২৬ হাজার চাকরির মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের চাকরি ছিল ৮ হাজার; কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের চাকরি ছিল ১৮ হাজার।
১৯৭০ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা মোট উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে দুই হাজার ৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় হয় পূর্ব পাকিস্তানে। পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয় করা হয় তিন হাজার ৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বৈদেশিক ঋণের ৩৩% ব্যয় করা হয় পূর্ব পাকিস্তানে। ৭৭% ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে। এমনকি নির্বাচনে বিজয়ী পূর্ব পাকিস্তানি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরেও তারা অস্বীকৃতি জানায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিদের নিপীড়ন ও নির্যাতনের হিংস্ররূপ প্রকাশ পায়। এভাবে তাদের নির্যাতন যখন চরমে পৌঁছে, তখন এ দেশের নিরীহ জনতা ঘুরে দাঁড়ায়। সূরায়ে শূরার ৪১ ও ৪২নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, 'নির্যাতিত হওয়ার কারণে যারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে তারা দোষী নয়। সব দোষ তাদের যারা মানবতার ওপর নির্যাতন করে, অবৈধভাবে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব খাটায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।'
সব ধরনের সমরাস্ত্রে সজ্জিত প্রশিক্ষিত একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের জনতা যুদ্ধে নেমে পড়ে। যদিও এ দেশবাসীর অস্ত্র নেই, প্রশিক্ষণ নেই, রসদ নেই, কিন্তু তাদের আছে আল্লাহতায়ালার ওপর পূর্ণ আস্থা ও অগাধ বিশ্বাস। তারা সুদৃঢ়ভাবে সেদিন বিশ্বাস করেছিল, মহান সৃষ্টিকর্তা কখনও জালেমদের পক্ষে যাবেন না।
তাঁর সাহায্য আমাদের সঙ্গেই থাকবে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের নির্যাতনের কারণেই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। মহানবী (সা.) যখন প্রিয় সাহাবি মুয়াজকে গভর্নরের দায়িত্ব দিয়ে ইয়ামান পাঠান তখন তাকে বলেছিলেন, 'নির্যাতিতদের বদদোয়া থেকে দূরে থাকবে। কেননা, আল্লাহ ও নির্যাতিতের মাঝে কোনো আড়াল থাকে না।' দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ চলার পরে নির্যাতন, শোষণ ও বৈষম্যের চূড়ান্ত পরিণতিতে হানাদার বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। সবুজ বাংলার অধিবাসীদের বিজয়ের নিয়ামত দানে ধন্য করেন আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন।
পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ন্যায়ের শাসন ছেড়ে দিয়েছিল। শুরু করেছিল শোষণ ও বৈষম্য। তারা আমাদের মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। চেয়েছিল তাদের ভাষা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে। সর্বত্র ছিল তাদের প্রাধান্য। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল ৯০%, বাকি ১০% প্রতিনিধিত্ব ছিল আমাদের। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ দেওয়া ২৬ হাজার চাকরির মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের চাকরি ছিল ৮ হাজার; কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের চাকরি ছিল ১৮ হাজার।
১৯৭০ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা মোট উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে দুই হাজার ৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় হয় পূর্ব পাকিস্তানে। পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয় করা হয় তিন হাজার ৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বৈদেশিক ঋণের ৩৩% ব্যয় করা হয় পূর্ব পাকিস্তানে। ৭৭% ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে। এমনকি নির্বাচনে বিজয়ী পূর্ব পাকিস্তানি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরেও তারা অস্বীকৃতি জানায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিদের নিপীড়ন ও নির্যাতনের হিংস্ররূপ প্রকাশ পায়। এভাবে তাদের নির্যাতন যখন চরমে পৌঁছে, তখন এ দেশের নিরীহ জনতা ঘুরে দাঁড়ায়। সূরায়ে শূরার ৪১ ও ৪২নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, 'নির্যাতিত হওয়ার কারণে যারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে তারা দোষী নয়। সব দোষ তাদের যারা মানবতার ওপর নির্যাতন করে, অবৈধভাবে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব খাটায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।'
সব ধরনের সমরাস্ত্রে সজ্জিত প্রশিক্ষিত একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের জনতা যুদ্ধে নেমে পড়ে। যদিও এ দেশবাসীর অস্ত্র নেই, প্রশিক্ষণ নেই, রসদ নেই, কিন্তু তাদের আছে আল্লাহতায়ালার ওপর পূর্ণ আস্থা ও অগাধ বিশ্বাস। তারা সুদৃঢ়ভাবে সেদিন বিশ্বাস করেছিল, মহান সৃষ্টিকর্তা কখনও জালেমদের পক্ষে যাবেন না।
তাঁর সাহায্য আমাদের সঙ্গেই থাকবে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের নির্যাতনের কারণেই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। মহানবী (সা.) যখন প্রিয় সাহাবি মুয়াজকে গভর্নরের দায়িত্ব দিয়ে ইয়ামান পাঠান তখন তাকে বলেছিলেন, 'নির্যাতিতদের বদদোয়া থেকে দূরে থাকবে। কেননা, আল্লাহ ও নির্যাতিতের মাঝে কোনো আড়াল থাকে না।' দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ চলার পরে নির্যাতন, শোষণ ও বৈষম্যের চূড়ান্ত পরিণতিতে হানাদার বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। সবুজ বাংলার অধিবাসীদের বিজয়ের নিয়ামত দানে ধন্য করেন আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন।
No comments