চরাচর-শিরায় শিরায় বহিছে অনল by ম. হাবিব
'বিস্মৃতির জলে ডুবাইতে মনে/আঁকা যে মূর্তি হৃদয়ের তলে/মুছিতে লো তাহা যতন করি! দেখ লো এখন আবারি হৃদয়/মরম-আঁধার হুতাশনময়/শিরায় শিরায় বহিছে অনল/জ্বলন্ত জ্বালায় হৃদয় ভরি!' পুরান ঢাকার স্বজন হারানো অসংখ্য মানুষ এই জ্বলন্ত জ্বালায় দিনাতিপাত করছে। আজ থেকে ঠিক দুই বছর এক দিন আগের ঘটনা।
দিনটি ছিল ২০১০ সালের ৩ জুন। প্রথমে টেলিভিশনের স্ক্রলে সংবাদটি এলো। রাজধানীর পুরান ঢাকার নিমতলী এলাকায় হঠাৎ করেই ভয়াবহ অগি্নকাণ্ড। কিছুক্ষণের মধ্যেই এক বীভৎস ছবি প্রচারিত হতে থাকল টেলিভিশনের পর্দায়। সেই দানবীয় আগুনের লেলিহান শিখা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেড়ে নিল ১৪৭ জনের প্রাণ। ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকায় এমন কোনো বাড়ি ছিল না, যেখানে কেউ না কেউ স্বজন হারায়নি। ৪৩/এ নবাব কাটরার যে বাড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল, সেই বাড়িতেই ১১ জন আগুনে পুড়ে নিহত হলো। কোনো কোনো বাড়িতে এখন সংসারের অর্ধেক মানুষ আছে, বাকি অর্ধেক স্মৃতি হয়ে গেছে, যে স্মৃতি অন্যদের আজীবন বইতে হবে। সেদিন এই অগি্নকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে গোটা দেশের মানুষের হৃদয়ে পোড়া এক যন্ত্রণা ছুঁয়ে গিয়েছিল। নিমতলী এলাকার ইট-কাঠের অবকাঠামোতে এখন আর বিশেষ চিহ্ন নেই। কিন্তু মানুষের হৃদয়ের ক্ষত মুছে যাওয়ার নয়। আজও নিঃশব্দ কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে থাকে। সে ওই রবীন্দ্রনাথের বনফুলের পঙ্ক্তিগুলোর মতোই।
জগতে এমন নিষ্ঠুর মৃত্যু আমরা দেখে থাকি। এমন ঘটনায় প্রতিবেশী, সমাজ ও রাষ্ট্র স্বজন হারানো মানুষকে মমত্ব ও সহানুভূতি দিয়ে শোকের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে। একদিন মানুষের শোক শুধু দুঃখের স্মৃতিতে পরিণত হয়; কিন্তু সরকার তথা রাষ্ট্র যখন এ শোকের সান্ত্বনাকে সঠিক মূল্যায়ন করতে পারে না, তখন তা আরেকটি জ্বালাতন হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। ১৯টি সুপারিশ ছিল। এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। সে কথাই তুলে ধরেছেন আদি ঢাকাবাসী ফোরাম এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা নিমতলীর ঘটনার দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে। তাঁরাও উল্লেখ করেছেন, নিমতলী এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দাহ্য পদার্থ সরিয়ে নেওয়ার একটি জোরালো দাবি রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসনের বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি। নিমতলী এলাকায় দুঃখজনকভাবে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলোর শোক যেন প্রশমিত হয়, সে চেষ্টাই হৃদয়বান মানুষদের করে যেতে হবে।
ম. হাবিব
জগতে এমন নিষ্ঠুর মৃত্যু আমরা দেখে থাকি। এমন ঘটনায় প্রতিবেশী, সমাজ ও রাষ্ট্র স্বজন হারানো মানুষকে মমত্ব ও সহানুভূতি দিয়ে শোকের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে। একদিন মানুষের শোক শুধু দুঃখের স্মৃতিতে পরিণত হয়; কিন্তু সরকার তথা রাষ্ট্র যখন এ শোকের সান্ত্বনাকে সঠিক মূল্যায়ন করতে পারে না, তখন তা আরেকটি জ্বালাতন হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। ১৯টি সুপারিশ ছিল। এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। সে কথাই তুলে ধরেছেন আদি ঢাকাবাসী ফোরাম এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা নিমতলীর ঘটনার দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে। তাঁরাও উল্লেখ করেছেন, নিমতলী এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দাহ্য পদার্থ সরিয়ে নেওয়ার একটি জোরালো দাবি রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসনের বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি। নিমতলী এলাকায় দুঃখজনকভাবে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলোর শোক যেন প্রশমিত হয়, সে চেষ্টাই হৃদয়বান মানুষদের করে যেতে হবে।
ম. হাবিব
No comments