সহযোগিতা ও সমন্বয়ের বিকল্প নেই-স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ
গত ২৫ থেকে ২৭ জুলাই, তিন দিন ধরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলন চলাকালে অনেক বিষয়ের মধ্যে বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের পারস্পরিক অভিযোগ। সম্মেলনের প্রথম দিনেই জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অনেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
পরের দিন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা প্রশাসকদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তোলা হয়; যথা: থানায় ৬০ শতাংশ মামলা হয় জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারণে, জমিজমার বিরোধের পেছনে আছে প্রশাসনের লোকজন, তাঁদের অনিয়মের কারণেই ৬০ শতাংশ মামলা হয়। জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়, জেলাগুলোর আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সব আদেশ জেলা পুলিশ সুপাররা মানেন না। সব মিলিয়ে এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে যে দ্বন্দ্বমূলক মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে, তা উদ্বেগের বিষয়।
প্রজাতন্ত্রের শাসন-প্রক্রিয়া সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য এর সব অঙ্গের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অপরিহার্য। প্রশাসন বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু মাঠপর্যায়ে এ দুই বিভাগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব পরস্ফুিট হয়েছে, তার আশু নিরসন না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ শাসনকার্য পরিচালনায় বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন ও প্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্য লক্ষ করার মতো। তিনি বলেছেন, ‘ডিসি-এসপিদের মধ্যকার সম্পর্কের বা সমন্বয়ের সমস্যাটি পুরোনো। কিন্তু যেভাবে পোশাক পরে পুলিশের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে সরকারের আরেকটি অংশের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তা অনভিপ্রেত।...এর পেছনে কোনো মহলের উসকানি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে এ রকম ঢালাও মন্তব্য করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা অনভিপ্রেত। কারও কারও মধ্যে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার মতো অবস্থা সৃষ্টির মনোভাব থাকতে পারে। অর্থাৎ, উসকানিদাতা ষড়যন্ত্রকারী খোঁজা হচ্ছে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু এসব কথার মধ্য দিয়ে প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-বিরোধ নিরসনের তাগিদ যেন লঘু হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা উচিত।
প্রথমত, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসন করা দরকার। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র; এ প্রজাতন্ত্রের শাসনকার্য কীভাবে পরিচালিত হবে, তার নির্দেশনা সংবিধানে রয়েছে। জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারদের ক্ষমতার কমবেশি নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়ার, পরস্পরকে সহযোগিতা না করার কোনো সুযোগ নেই। ক্ষমতা কেবল তাঁদের হাতেই নেই; বরং সংবিধান অনুযায়ী, প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠা বাধ্যতামূলক। আমাদের মনে হয়, সংবিধানে নির্দেশনা অনুযায়ী ‘নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার’ যথাযথভাবে কার্যকর হলে ডিসি-এসপিদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপলাভের সুযোগ থাকত না।
ডিসি ও এসপিদের ঔপনিবেশিক ভাবধারার ‘শাসক’ থেকে হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, অর্থাৎ জনগণের সেবক। তবেই কেবল এ ধরনের সংকীর্ণ ও ক্ষতিকর দ্বন্দ্বের নিরসন হতে পারে।
প্রজাতন্ত্রের শাসন-প্রক্রিয়া সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য এর সব অঙ্গের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অপরিহার্য। প্রশাসন বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু মাঠপর্যায়ে এ দুই বিভাগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব পরস্ফুিট হয়েছে, তার আশু নিরসন না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ শাসনকার্য পরিচালনায় বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন ও প্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্য লক্ষ করার মতো। তিনি বলেছেন, ‘ডিসি-এসপিদের মধ্যকার সম্পর্কের বা সমন্বয়ের সমস্যাটি পুরোনো। কিন্তু যেভাবে পোশাক পরে পুলিশের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে সরকারের আরেকটি অংশের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তা অনভিপ্রেত।...এর পেছনে কোনো মহলের উসকানি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে এ রকম ঢালাও মন্তব্য করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা অনভিপ্রেত। কারও কারও মধ্যে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার মতো অবস্থা সৃষ্টির মনোভাব থাকতে পারে। অর্থাৎ, উসকানিদাতা ষড়যন্ত্রকারী খোঁজা হচ্ছে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু এসব কথার মধ্য দিয়ে প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-বিরোধ নিরসনের তাগিদ যেন লঘু হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা উচিত।
প্রথমত, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসন করা দরকার। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র; এ প্রজাতন্ত্রের শাসনকার্য কীভাবে পরিচালিত হবে, তার নির্দেশনা সংবিধানে রয়েছে। জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারদের ক্ষমতার কমবেশি নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়ার, পরস্পরকে সহযোগিতা না করার কোনো সুযোগ নেই। ক্ষমতা কেবল তাঁদের হাতেই নেই; বরং সংবিধান অনুযায়ী, প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠা বাধ্যতামূলক। আমাদের মনে হয়, সংবিধানে নির্দেশনা অনুযায়ী ‘নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার’ যথাযথভাবে কার্যকর হলে ডিসি-এসপিদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপলাভের সুযোগ থাকত না।
ডিসি ও এসপিদের ঔপনিবেশিক ভাবধারার ‘শাসক’ থেকে হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, অর্থাৎ জনগণের সেবক। তবেই কেবল এ ধরনের সংকীর্ণ ও ক্ষতিকর দ্বন্দ্বের নিরসন হতে পারে।
No comments