চরাচর-বিশ্ব পানি দিবস : বিশুদ্ধ পানি আর কত দূর by ধরিত্রী সরকার সবুজ
আজ ২২ মার্চ_বিশ্ব পানি দিবস। সবার কাছে সুপেয় পানি পেঁৗছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে দিবসটি। পানিই এখন সারা বিশ্বের প্রধানতম সমস্যা। বিশ্বে এক শ কোটিরও বেশি মানুষ এখনো সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে মিঠা পানির উৎস।
আমরা যদি নিজেদের দিকে তাকাই, তাহলে কী দেখি? উপরোক্ত দুটি বিপর্যয়ের মুখেই রয়েছে বাংলাদেশ। গরম আসার আগেই পানির কলসি হাতে অপেক্ষমাণ মানুষের দীর্ঘ সারিই বলে দেয় রাজধানীতে খাবার পানির সংকট কতটা তীব্র। আর বাংলাদেশের বিশাল উপকূলীয় অঞ্চল সমুদ্রের নোনা পানিতে তলিয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন।
রাজধানীতে বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে পানির চাহিদা। বর্তমানে এই চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ২২০ কোটি লিটার। ওয়াসা তার চারটি পানি শোধনাগার এবং প্রায় ৫০০ গভীর নলকূপের সাহায্যে প্রতিদিন সরবরাহ করে ১৮০ কোটি লিটারের মতো। দৈনিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি লিটার। এর পরও নলকূপ অকেজো হয়ে পড়া, লোডশেডিংসহ নানা কারণে প্রায়ই এ সংকট আরো তীব্র হয়ে ওঠে।
সায়েদাবাদে সাড়ে ২২ কোটি লিটার পানি উৎপাদনক্ষম শোধনাগারের কাজ শেষ হয়েছিল ২০০১ সালে। ফেজ-২ ও ফেজ-৩-এর কাজ শেষ করলে এখান থেকেই পাওয়া যেত সাড়ে ৬৭ কোটি লিটার। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছরেও তা হয়নি। ওয়াসা এখন ঢাকার অদূরে সিংগাইরে বেশ কিছু গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা করছে। এসব নলকূপ থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি আনা হবে ঢাকায়। ওয়াসা কর্তৃপক্ষই বলছে, গভীর নলকূপের সাহায্যে অত্যধিক পরিমাণে পানি উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এতটাই নিচে নেমে গেছে যে অনেক পাম্পে ক্ষমতার এক-তৃতীয়াংশ পানি উত্তোলনও কঠিন হয়ে পড়েছে। তবু চাহিদা বিবেচনায় নতুন করে গভীর নলকূপ বসাতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
ঢাকার চারপাশে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি অত্যধিক দূষণের কারণে পানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নারায়ণগঞ্জের ডায়িং ও রাসায়নিক কারখানা, হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প, টঙ্গী ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এবং সাভারের বস্ত্র কারখানাগুলো থেকে হাজার হাজার টন বর্জ্য গিয়ে পড়ছে এসব নদীতে। নদীগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হলেও দূষণ বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানীর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করা এবং পরিশোধনের মাধ্যমে পানি সরবরাহের কোনো বিকল্প নেই। আরো বেশি গভীর নলকূপ স্থাপন কোনোভাবেই কাম্য নয়। কয়েক বছর ধরেই মেঘনা বা যমুনার পানি পাইপলাইনে ঢাকায় আনার চিন্তাভাবনা করা হলেও দীর্ঘ মেয়াদে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। বরং নদীগুলো দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়াটাই বেশি জরুরি। নদীতীরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বর্জ্যশোধন যন্ত্র বা ইটিপি ব্যবহারে বাধ্য করা গেলেই নদীগুলো দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব।
আজকের এই বিশ্ব পানি দিবসে শুধু রাজধানী ঢাকা বা চট্টগ্রামের কথাই নয়, মনে রাখা দরকার সারা দেশেই একসময় খাবার পানির সংকট দেখা দিতে পারে। দেশের ২৩০টি নদীর মধ্যে অনেকই এখন স্রোতহীন এবং বেশ কিছু নদী শীতকালে শুকিয়ে যায়। খননের মাধ্যমে সেগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য সতর্ক হওয়া উচিত অনেক আগে থেকেই।
ধরিত্রী সরকার সবুজ
রাজধানীতে বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে পানির চাহিদা। বর্তমানে এই চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ২২০ কোটি লিটার। ওয়াসা তার চারটি পানি শোধনাগার এবং প্রায় ৫০০ গভীর নলকূপের সাহায্যে প্রতিদিন সরবরাহ করে ১৮০ কোটি লিটারের মতো। দৈনিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি লিটার। এর পরও নলকূপ অকেজো হয়ে পড়া, লোডশেডিংসহ নানা কারণে প্রায়ই এ সংকট আরো তীব্র হয়ে ওঠে।
সায়েদাবাদে সাড়ে ২২ কোটি লিটার পানি উৎপাদনক্ষম শোধনাগারের কাজ শেষ হয়েছিল ২০০১ সালে। ফেজ-২ ও ফেজ-৩-এর কাজ শেষ করলে এখান থেকেই পাওয়া যেত সাড়ে ৬৭ কোটি লিটার। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছরেও তা হয়নি। ওয়াসা এখন ঢাকার অদূরে সিংগাইরে বেশ কিছু গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা করছে। এসব নলকূপ থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি আনা হবে ঢাকায়। ওয়াসা কর্তৃপক্ষই বলছে, গভীর নলকূপের সাহায্যে অত্যধিক পরিমাণে পানি উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এতটাই নিচে নেমে গেছে যে অনেক পাম্পে ক্ষমতার এক-তৃতীয়াংশ পানি উত্তোলনও কঠিন হয়ে পড়েছে। তবু চাহিদা বিবেচনায় নতুন করে গভীর নলকূপ বসাতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
ঢাকার চারপাশে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি অত্যধিক দূষণের কারণে পানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নারায়ণগঞ্জের ডায়িং ও রাসায়নিক কারখানা, হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প, টঙ্গী ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এবং সাভারের বস্ত্র কারখানাগুলো থেকে হাজার হাজার টন বর্জ্য গিয়ে পড়ছে এসব নদীতে। নদীগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হলেও দূষণ বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানীর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করা এবং পরিশোধনের মাধ্যমে পানি সরবরাহের কোনো বিকল্প নেই। আরো বেশি গভীর নলকূপ স্থাপন কোনোভাবেই কাম্য নয়। কয়েক বছর ধরেই মেঘনা বা যমুনার পানি পাইপলাইনে ঢাকায় আনার চিন্তাভাবনা করা হলেও দীর্ঘ মেয়াদে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। বরং নদীগুলো দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়াটাই বেশি জরুরি। নদীতীরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বর্জ্যশোধন যন্ত্র বা ইটিপি ব্যবহারে বাধ্য করা গেলেই নদীগুলো দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব।
আজকের এই বিশ্ব পানি দিবসে শুধু রাজধানী ঢাকা বা চট্টগ্রামের কথাই নয়, মনে রাখা দরকার সারা দেশেই একসময় খাবার পানির সংকট দেখা দিতে পারে। দেশের ২৩০টি নদীর মধ্যে অনেকই এখন স্রোতহীন এবং বেশ কিছু নদী শীতকালে শুকিয়ে যায়। খননের মাধ্যমে সেগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য সতর্ক হওয়া উচিত অনেক আগে থেকেই।
ধরিত্রী সরকার সবুজ
No comments