সবার উত্কণ্ঠার অবসান ঘটাতে দ্রুত সমাধান প্রয়োজন-বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অসংগতি

আগে বেশ কয়েকবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল, এবার উঠল প্রশ্নপত্রে বিপুল পরিমাণে ভুল থাকার অভিযোগ। বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক যা ঘটে চলেছে, তা শুধু অ্যাবসার্ড নাটকের ঘটনাবলির সঙ্গে তুলনীয়।


অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কর্তৃপক্ষ বলে যেন কিছু নেই অথবা থাকলেও এসব পরীক্ষা তাদের কাছে কোনো গুরুত্ব বহন করে না। এই পরীক্ষাকে ঘিরে প্রতিবার যে লক্ষাধিক প্রতিযোগী স্বপ্ন বোনেন, তাঁদের সেই স্বপ্নের অপমৃত্যু এমন অযৌক্তিক ও উদ্ভটভাবে ঘটবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাঁরা তো একটি অর্থপূর্ণ ও ন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা পাওয়ার দাবি রাখেন। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বিপিএসসি) সেই ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হলে এর ওপর জনগণের আস্থা ভেঙে পড়বে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে অনেকটাই প্রমাণিত যে এবারের পরীক্ষায় একটি সেটের প্রশ্নপত্রে বিরাট অসংগতি ছিল। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভয়াবহ অযত্ন, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ভুলের দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে এড়াতে পারে না।
প্রশ্নপত্রে অসংগতি নজরে আসার পর তাত্ক্ষণিকভাবে তা সমাধানেও কর্তৃপক্ষ তত্পর ছিল না। আশ্চর্যের বিষয় হলো, কর্তৃপক্ষ এখনো কী পরিমাণ ভুল হয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি। বিপিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানিয়েছেন, যে বিপুল ভুলের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো আসলে ভুল ছিল কি না, তা রোববার কমিশনে জানানো হবে। কিন্তু এত সময় লাগার কী কারণ থাকতে পারে? এ ব্যাপারে বিপিএসসির আচরণ খুবই দুঃখজনক।
যোগ্য প্রার্থী যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বিপিএসসির ভুলের মাশুল যেন পরীক্ষার্থীদের দিতে না হয়। এমনিতে বারবার নানা অসংগতি দেখতে দেখতে মেধাবী প্রতিযোগীদের মধ্যে হতাশা বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে অর্থহীনতার বোধ তীব্রতর হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা এখন পরীক্ষাটির ব্যাপারে অত্যন্ত উত্কণ্ঠায় আছেন। প্রশ্নপত্রে অসংগতির কারণে পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ বাকিদের থেকে পিছিয়ে পড়েছেন। তাঁরা যেন কোনো বৈষম্যের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করে তাঁদের জন্য দ্রুততম সময়ে সমাধান বের করে আনা জরুরি। এই সমাধানের জন্য সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছেন। সবার উত্কণ্ঠার অবসান ঘটাতে দ্রুত সমাধান দেওয়া প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.