মধ্যপ্রাচ্য-গাছের কারণে যুদ্ধ! by রবার্ট ফিস্ক
একটি গাছকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে কি কোন যুদ্ধ বেধে যেতে পারে? গত মঙ্গলবার সেটিই ঘটতে যাচ্ছিল।
এমন প্রশ্ন যে উত্থাপন করা যায়, সেটি আসলে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তপ্ততা, আরব ও ইসরায়েলিদের পারস্পরিক অবিশ্বাস আর দক্ষিণ লেবাননের ভয়ানক সীমান্তেরই প্রতীক।
এমন প্রশ্ন যে উত্থাপন করা যায়, সেটি আসলে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তপ্ততা, আরব ও ইসরায়েলিদের পারস্পরিক অবিশ্বাস আর দক্ষিণ লেবাননের ভয়ানক সীমান্তেরই প্রতীক।
প্রায়ই সীমান্ত এলাকাটি যেমন রক্তস্নাত হয়, তেমনই গত মঙ্গলবারও এখানে প্রাণ দিতে হলো তিনজন লেবাননি সেনা, এক ইসরায়েলি লেফটেন্যান্ট কর্নেল আর এক লেবাননি সাংবাদিককে। ঘটনাটি ঘটেছে আদায়সেহ নামের একটি গ্রামের বাইরের অংশে।
ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণ, উড়োজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আর লেবাননি মেশিনগান ও রকেটচালিত গ্রেনেড হামলার পর জাতিসংঘ দুই পক্ষকেই সংযম প্রদর্শন করতে আহ্বান জানাল। তারপর যুদ্ধের উত্তাপ ক্রমে নির্বাপিত হয় জাতিসংঘের এক স্প্যানিশ ব্যাটালিয়ন ও মালয়েশিয়ার কিছু সেনার চোখের সামনে।
এ ঘটনার আগে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে—বৈরুতে ত্রিপক্ষীয় আরব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে; মাত্র দুদিন আগে জর্ডান, ইসরায়েল ও মিসরের সীমান্তে রহস্যজনক রকেট হামলা হয়েছে; লেবাননি হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত ছিল একটি ‘ইসরায়েলি প্রকল্প’; আর সোমবার লেবাননি টেলিফোন নেটওয়ার্কে আরও একজন ইসরায়েলি গুপ্তচরের খোঁজ মিলেছে।
আবার গাছের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। গাছটি হয়তো ফার্ন জাতীয় ছিল। লেবাননের ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার দাবদাহ পার হওয়ার কারণেই হয়তো গাছটির দশা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল, একেবারে হাড্ডিসার। কিন্তু আদায়সেহ গ্রামের কাছাকাছি ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যামেরাগুলোর পথে বাধা সৃষ্টি করছিল এ গাছের পত্ররাজি। ইসরায়েলিরা সিদ্ধান্ত নেয় গাছের সেই অংশটি তারা কেটে ফেলবে। আর এ কাজে ব্যবহার করবে ক্রেন। কিন্তু সমস্যা একটা রয়ে গিয়েছিল। কেউ আসলে সঠিকভাবে জানত না, ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তরেখাটি কোনখানে।
অনেক দিন আগে বেলফোর-উত্তর সময়ে ফ্রান্স-নিয়ন্ত্রিত লেবানন ও ব্রিটিশ-নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের মধ্যে যে সীমান্ত ছিল, ওই স্থান বরাবর জাতিসংঘ ২০০০ সালে একটি ‘নীল রেখা’ টানে। লেবাননিদের ভাষ্য অনুসারে, এই রেখার একটু পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে ইসরায়েলি ‘কৌশলগত বেড়া’, কাঁটাতার দিয়ে বাঁধানো, বিদ্যুতায়িত তার এবং বালুময় পথ (পায়ের ছাপ দেখার জন্য)। তাই লেবাননি সেনারা যখন দেখলেন, ইসরায়েলিরা মঙ্গলবার সকালে বেড়ার কাছে একটি ক্রেন নিয়ে আসছেন, তখন তাঁরা চিৎকার করে ইসরায়েলিদের পিছিয়ে যেতে বলতে লাগলেন।
যে মুহূর্তে ক্রেনের বাহু ‘কৌশলগত বেড়া’র বাইরে বেরিয়ে এল, তখনই লেবাননি সেনারা আকাশের দিকে ফাঁকাগুলি ছুড়তে শুরু করলেন। আর তখন পাল্টা ইসরায়েলিরা। লেবাননিদের ভাষ্যমতে, ‘ফাঁকাগুলি করেনি, তারা লেবাননি সেনাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে।’
লেবাননি সেনাবাহিনীর পক্ষে ইসরায়েলি সেনাদের পরাজিত করতে যাওয়া অসম্ভব কাজ। ইসরায়েলের তো ২৬৪টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র আছে। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষে বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর টুঁটি চেপে ধরতে যাওয়া নিশ্চয় যৌক্তিক নয়।
সেই সময় এ ঘটনাটি কভার করার জন্য আল-আকবর পত্রিকার স্থানীয় সংবাদদাতা আসাফ আবু রাহাল আদায়সেহতে আসেন। অল্পকাল পরেই একটি ইসরায়েলি উড়োজাহাজ গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে। উড়োজাহাজটি থেকে একটি লেবাননি সামরিক যানে রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে তিনজন সেনা ও একজন সাংবাদিক মারা যান।
লেবাননি সেনারা বৈরুতের নির্দেশে পাল্টা গুলি ছোড়ে এবং ইসরায়েলি এক লেফলেন্যান্ট কর্নেলকে হত্যা করে। ইরানের পৃষ্ঠপোষকতায় চালিত শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এ লড়াইয়ে কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও তারা নিহত হওয়ার খবরটি ঘোষণা করে ইসরায়েলিরা নিশ্চিত করার পাঁচ ঘণ্টা আগেই। কোনো এক ইসরায়েলি সেনা মুঠোফোন ব্যবহার করে তাঁদের এ খবরটি জানান বলে মনে হয়। এ খবরটি হিজবুল্লাহর আল-মানার টেলিভিশন স্টেশনের শীর্ষ শিরোনাম ছিল।
বিকেলজুড়ে ইসরায়েলি এবং লেবাননিরা পরস্পরকে দোষারোপ করেছে আগ্রাসনকারী হিসেবে। ইসরায়েল বলেছে, ভুল বোঝাবুঝির কারণে পুরো ব্যাপারটি ঘটেছে। রফিক হারিরির ছেলে এবং লেবাননের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সঙ্গে টেলি-আলাপে এ ঘটনাকে ‘ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, তারা এ বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এই গুরুতর ঘটনার জন্য ইসরায়েল মনে করে লেবাননের সরকার দায়ী এবং এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলে কঠিন পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিচ্ছে।’ একটি গাছের কারণে এত কিছু! পরবর্তী হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের আগে ইসরায়েল নিশ্চয় নানা ‘ঘটনা’র সারি পছন্দ করবে। তারা তো ইতিমধ্যে অঙ্গীকারই করেছে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে তারা ৩২ বছরে ষষ্ঠ বারের মতো লেবাননি অবকাঠামো ধ্বংস করে দেবে। এবার তাদের অজুহাত, লেবাননি মন্ত্রিসভায় হিজবুল্লাহর প্রতিনিধিত্ব।
আর সবকিছু ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন হিজবুল্লাহর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা চান। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের নতুন প্রতিবেদনে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে, পরবর্তী ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধ হবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক সহিংস।
মঙ্গলবার ইসরায়েলিরা ট্যাংক ও উড়োজাহাজ থেকে গুলি ছুড়েছে। আর লেবাননি সেনাবাহিনী রকেটচালিত গ্রেনেড ও হেভি মেশিনগানের গুলিতে পাল্টা জবাব দিয়েছে। সেদিন কিছু সময়ের জন্য লেবাননের মুঠোফোন-ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল। এ বিপর্যয় সন্দেহভাজন গুপ্তচর ওগেরো স্যান্ডলাইন কমিউনিকেশনস কোম্পানির কর্মী মিলাদ এইনের কারণে হয়নি। আসলে কারণটি ছিল, সবাই জানতে চাচ্ছিল, আবার কোনো যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে কি না, সেটা একটি গাছের কারণে।
দি ইনডিপেনডেন্ট থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক।
ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণ, উড়োজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আর লেবাননি মেশিনগান ও রকেটচালিত গ্রেনেড হামলার পর জাতিসংঘ দুই পক্ষকেই সংযম প্রদর্শন করতে আহ্বান জানাল। তারপর যুদ্ধের উত্তাপ ক্রমে নির্বাপিত হয় জাতিসংঘের এক স্প্যানিশ ব্যাটালিয়ন ও মালয়েশিয়ার কিছু সেনার চোখের সামনে।
এ ঘটনার আগে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে—বৈরুতে ত্রিপক্ষীয় আরব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে; মাত্র দুদিন আগে জর্ডান, ইসরায়েল ও মিসরের সীমান্তে রহস্যজনক রকেট হামলা হয়েছে; লেবাননি হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত ছিল একটি ‘ইসরায়েলি প্রকল্প’; আর সোমবার লেবাননি টেলিফোন নেটওয়ার্কে আরও একজন ইসরায়েলি গুপ্তচরের খোঁজ মিলেছে।
আবার গাছের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। গাছটি হয়তো ফার্ন জাতীয় ছিল। লেবাননের ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার দাবদাহ পার হওয়ার কারণেই হয়তো গাছটির দশা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল, একেবারে হাড্ডিসার। কিন্তু আদায়সেহ গ্রামের কাছাকাছি ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যামেরাগুলোর পথে বাধা সৃষ্টি করছিল এ গাছের পত্ররাজি। ইসরায়েলিরা সিদ্ধান্ত নেয় গাছের সেই অংশটি তারা কেটে ফেলবে। আর এ কাজে ব্যবহার করবে ক্রেন। কিন্তু সমস্যা একটা রয়ে গিয়েছিল। কেউ আসলে সঠিকভাবে জানত না, ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তরেখাটি কোনখানে।
অনেক দিন আগে বেলফোর-উত্তর সময়ে ফ্রান্স-নিয়ন্ত্রিত লেবানন ও ব্রিটিশ-নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের মধ্যে যে সীমান্ত ছিল, ওই স্থান বরাবর জাতিসংঘ ২০০০ সালে একটি ‘নীল রেখা’ টানে। লেবাননিদের ভাষ্য অনুসারে, এই রেখার একটু পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে ইসরায়েলি ‘কৌশলগত বেড়া’, কাঁটাতার দিয়ে বাঁধানো, বিদ্যুতায়িত তার এবং বালুময় পথ (পায়ের ছাপ দেখার জন্য)। তাই লেবাননি সেনারা যখন দেখলেন, ইসরায়েলিরা মঙ্গলবার সকালে বেড়ার কাছে একটি ক্রেন নিয়ে আসছেন, তখন তাঁরা চিৎকার করে ইসরায়েলিদের পিছিয়ে যেতে বলতে লাগলেন।
যে মুহূর্তে ক্রেনের বাহু ‘কৌশলগত বেড়া’র বাইরে বেরিয়ে এল, তখনই লেবাননি সেনারা আকাশের দিকে ফাঁকাগুলি ছুড়তে শুরু করলেন। আর তখন পাল্টা ইসরায়েলিরা। লেবাননিদের ভাষ্যমতে, ‘ফাঁকাগুলি করেনি, তারা লেবাননি সেনাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে।’
লেবাননি সেনাবাহিনীর পক্ষে ইসরায়েলি সেনাদের পরাজিত করতে যাওয়া অসম্ভব কাজ। ইসরায়েলের তো ২৬৪টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র আছে। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষে বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর টুঁটি চেপে ধরতে যাওয়া নিশ্চয় যৌক্তিক নয়।
সেই সময় এ ঘটনাটি কভার করার জন্য আল-আকবর পত্রিকার স্থানীয় সংবাদদাতা আসাফ আবু রাহাল আদায়সেহতে আসেন। অল্পকাল পরেই একটি ইসরায়েলি উড়োজাহাজ গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে। উড়োজাহাজটি থেকে একটি লেবাননি সামরিক যানে রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে তিনজন সেনা ও একজন সাংবাদিক মারা যান।
লেবাননি সেনারা বৈরুতের নির্দেশে পাল্টা গুলি ছোড়ে এবং ইসরায়েলি এক লেফলেন্যান্ট কর্নেলকে হত্যা করে। ইরানের পৃষ্ঠপোষকতায় চালিত শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এ লড়াইয়ে কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও তারা নিহত হওয়ার খবরটি ঘোষণা করে ইসরায়েলিরা নিশ্চিত করার পাঁচ ঘণ্টা আগেই। কোনো এক ইসরায়েলি সেনা মুঠোফোন ব্যবহার করে তাঁদের এ খবরটি জানান বলে মনে হয়। এ খবরটি হিজবুল্লাহর আল-মানার টেলিভিশন স্টেশনের শীর্ষ শিরোনাম ছিল।
বিকেলজুড়ে ইসরায়েলি এবং লেবাননিরা পরস্পরকে দোষারোপ করেছে আগ্রাসনকারী হিসেবে। ইসরায়েল বলেছে, ভুল বোঝাবুঝির কারণে পুরো ব্যাপারটি ঘটেছে। রফিক হারিরির ছেলে এবং লেবাননের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সঙ্গে টেলি-আলাপে এ ঘটনাকে ‘ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, তারা এ বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এই গুরুতর ঘটনার জন্য ইসরায়েল মনে করে লেবাননের সরকার দায়ী এবং এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলে কঠিন পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিচ্ছে।’ একটি গাছের কারণে এত কিছু! পরবর্তী হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের আগে ইসরায়েল নিশ্চয় নানা ‘ঘটনা’র সারি পছন্দ করবে। তারা তো ইতিমধ্যে অঙ্গীকারই করেছে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে তারা ৩২ বছরে ষষ্ঠ বারের মতো লেবাননি অবকাঠামো ধ্বংস করে দেবে। এবার তাদের অজুহাত, লেবাননি মন্ত্রিসভায় হিজবুল্লাহর প্রতিনিধিত্ব।
আর সবকিছু ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন হিজবুল্লাহর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা চান। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের নতুন প্রতিবেদনে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে, পরবর্তী ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধ হবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক সহিংস।
মঙ্গলবার ইসরায়েলিরা ট্যাংক ও উড়োজাহাজ থেকে গুলি ছুড়েছে। আর লেবাননি সেনাবাহিনী রকেটচালিত গ্রেনেড ও হেভি মেশিনগানের গুলিতে পাল্টা জবাব দিয়েছে। সেদিন কিছু সময়ের জন্য লেবাননের মুঠোফোন-ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল। এ বিপর্যয় সন্দেহভাজন গুপ্তচর ওগেরো স্যান্ডলাইন কমিউনিকেশনস কোম্পানির কর্মী মিলাদ এইনের কারণে হয়নি। আসলে কারণটি ছিল, সবাই জানতে চাচ্ছিল, আবার কোনো যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে কি না, সেটা একটি গাছের কারণে।
দি ইনডিপেনডেন্ট থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক।
No comments