এরই নাম কি সংসদীয় রাজনীতি? by ড. তারেক শামসুর রেহমান
গত ৩ মার্চ জাতীয় সংসদে নজিরবিহীন যে ঘটনা ঘটেছে তাকে কি আমরা সংসদীয় রাজনীতি বলব? সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের একে-অপরের বিরুদ্ধে গালিগালাজের রেশ ধরে উভয় দলের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়েছিল।
ওইদিন সরকারি দলের একজন সংসদ সদস্য যখন বিরোধী দলের সদস্যদের দিকে তেড়ে যান, যখন ‘চুপ শালারা’ বলে বিরোধী দলের সদস্যদের ধমক দেন তখন ভাবতে অবাক লাগে এটা কি সংসদ, নাকি পল্টন ময়দান? আজকে বিরোধী দলের কোনো সদস্য যদি নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন, তাহলে এর মাঝে আমি কোনো অন্যায় দেখি না। গত ৩ মার্চ সংসদের ভেতরে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে তো একজন সংসদ সদস্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারত। হয়নি সত্য; কিন্তু আগামীতে যে হবে না তার গ্যারান্টি আমাদের কে দেবে? এই সংসদে দু’জন মহান নেতা—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘খুনি’ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছিল। ‘ফেরাউন’-এর প্রসঙ্গটি এসেছিল পরে। জাতীয় নেতাদের যদি আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সম্মান করতে না জানেন, তাহলে এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। ওইদিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর নির্ধারিত এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে এক ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় ব্যয় হয়েছে একে-অপরকে গালিগালাজ করার মধ্য দিয়ে। আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা নিশ্চয়ই জানেন সংসদ চালাতে হলে কী পরিমাণ খরচ আমাদের হয়। এক্ষেত্রে এক ঘণ্টা ২০ মিনিট অপচয় হওয়ার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আমাদের অপচয় হলো কত? পাঠক, এখানে টিআইবি’র একটি রিপোর্ট স্মরণ করতে চেষ্টা করুন। টিআইবি আমাদের জানিয়েছিল, ৮ম সংসদে ২২৭ ঘণ্টা অপচয় হয়েছিল কোরাম সঙ্কটের কারণে, যা ছিল সংসদের মোট কার্যকালের এক-পঞ্চমাংশ। এজন্য আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল ২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও পরদিন, অর্থাত্ ৪ মার্চ স্পিকার বেশ কঠোর হয়েছেন। আগের দিনের ঘটনাকে দুঃখজনক ও অপ্রীতিকর হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি হুমকি দিয়েছেন, ‘প্রয়োজনে যা যা করার, তা তিনি করবেন।’ সংসদকে একটি ‘কুস্তি প্রতিযোগিতার’ জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করতেও তিনি দ্বিধা করেননি। আমার বিশ্বাস, স্পিকারের এই মনোভাবের সঙ্গে অনেকেই একমত হবেন যে সংসদ ‘কোনো কুস্তি প্রতিযোগিতার’ জায়গা নয়। অর্থাত্ এটি জোর বা ক্ষমতা দেখানোর কোনো জায়গা নয়। এখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে। এক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সমালোচনা হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিরোধী দলের প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। এরই নাম সংসদীয় রাজনীতি। এরই নাম সংসদ। পাঠক, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে—বর্তমান নবম জাতীয় সংসদ শুরু হওয়ার পর সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ইউএনডিপি ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছিল। প্রশিক্ষণ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের লোকসভার সাবেক স্পিকার সোমনাথ চ্যাটার্জি। সংবাদপত্রে সোমনাথ বাবুর বক্তব্যও খুব গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিক জনসভায় দেয়া ভাষণ আর সংসদে দেয়া ভাষণ এক নয়। সংসদে উচ্চস্বরে কথা বলা যাবে না। দীর্ঘ বক্তৃতা দেয়ারও সুযোগ নেই; কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ কোনো কাজে কি এসেছে? এমপি সাহেবরা কি কিছু শিখতে পেরেছেন? আমার তো মনে হয় তারা আদৌ কিছু শেখেননি। আসলে এখানে সমস্যা মানসিকতা পরিবর্তনের। সেই মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি। সবকিছুতেই ‘আমিত্ব’ ও ‘দলতন্ত্র’। নেতা ও নেত্রীকে খুশি করাই যেন একমাত্র কাজ (?) হয়ে দাঁড়িয়েছে মাননীয় সংসদ সদস্যদের। এটা তো সংসদে বসে করার কাজ নয়? এসব বিষয় তো দলীয় ফোরামে কিংবা সংসদীয় দলের সভায় আলোচনা করলে শোভন হয়। সংসদ এসব কথা বলার জন্য নয়, সংসদ হচ্ছে ভিন্ন জায়গা। এখানে দলীয় আনুগত্য প্রকাশ পাবে না। প্রকাশ পাবে জাতীয় রাজনীতি। গুরুত্ব পাবে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি; কিন্তু তা পাচ্ছে না। আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা ‘কবরে কার লাশ আছে’, তা নিয়ে বিতর্ক করতে ও ব্যক্তিবিশেষকে খুশি করতে পছন্দ করেন বেশি। কিংবা বলা যেতে পারে, তাদের কাছে এসব বিষয়ই বেশি অগ্রাধিকার পায়; কিন্তু তাদের কাছে গুরুত্ব পায় না জনগুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু বিষয়। আমি বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্ত এখানে উল্লেখ করব, যা সংসদে আলোচিত হওয়া উচিত ছিল। এক. সাম্প্রতিক সময়ে গ্রিসের অর্থনৈতিক বিপর্যয়। যেখানে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা করছেন গ্রিস দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে বিশ্ব মন্দার প্রভাব আমাদের দেশে কতটুকু পড়তে পারে, কিংবা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু—এসব বিষয়ে জাতিকে জানানো প্রয়োজন। দুই. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ দিশেহারা। চালসহ প্রতিটি পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তথাকথিত ‘সিন্ডিকেট’-এর কথা বলা হলেও, তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। মোটা ইরি চালের দাম ২৫ ফেব্রুয়ারির বাজার দর অনুযায়ী ছিল ২৬ থেকে ২৮ টাকা। অথচ এক বছর আগে একই সময়সীমায় ওই চালের দাম ছিল ২২ থেকে ২৪ টাকা (মূল্যবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৩৯ ভাগ)। লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকায় (আগের বছর ছিল ২৮ থেকে ৩২ টাকা), মূল্যবৃদ্ধি ২০ ভাগ। পামঅয়েল ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা (আগের বছর ৫৩ থেকে ৫৬ টাকা), মূল্যবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ২৭ ভাগ। রসুনের দাম ছিল ২৪ থেকে ৩৫ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১২৫ টাকায়। মুগডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, এখন ১০০ থেকে ১১৫ টাকায়। আদা ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, এখন ৬০ থেকে ১১০ টাকায় (নয়া দিগন্ত, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের এই ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কি মাননীয় সংসদ সদস্যরা কখনও সংসদে আলোচনা করেছেন? তারা কি এর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেননি এতটুকুও?
দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাবে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। নভেম্বরে (২০০৯) এ হার ছিল ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি আবার দুই অঙ্কের ঘর অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে (কালের কণ্ঠ, ১ মার্চ, ২০১০)। কেননা বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম বাড়ছে। এখন মুদ্রাস্ফীতির বিষয় কিংবা আমাদের করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে কি সংসদে কখনও আলোচনা হয়েছে? অর্থমন্ত্রী বিদেশি রেমিটেন্সের দোহাই আর কত দেবেন? তিন. আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্যতম উত্স হচ্ছে পোশাক শিল্প; কিন্তু বিশ্বমন্দার কারণে তৈরি পোশাক শিল্প আজ আক্রান্ত। পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে, শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে পোশাক তৈরির কারখানাগুলো আজ ধ্বংস করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) নিট পোশাক রফতানি থেকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ কোটি ২৬ লাখ ৮ হাজার ডলার কম আয় হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে নিটওয়্যার রফতানি হয়েছিল ৩২৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। চলতি ২০০৯-১০ সময়সীমায় রফতানির পরিমাণ ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ কমে আয় হয়েছে ৩০০ কোটি ৭৯ লাখ ৫ হাজার ডলার (কালের কণ্ঠ, ৩ মার্চ, ২০১০)। এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা তো আমাদের চিন্তার কারণ। কেননা লাখ লাখ মহিলা এই পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত। নিটওয়্যার রফতানি করা না গেলে বন্ধ হয়ে যাবে আরও অনেক কারখানা। এতে করে সৃষ্টি হবে এক সামাজিক সমস্যার। এ থেকে আমাদের উত্তরণ কীভাবে সম্ভব? আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা কি বিষয়টি নিয়ে ভাবেন? তাদের তো নীতি প্রণয়ন করার কথা। তারা যদি সংসদে ‘কুস্তি করার’ (স্পিকারের ভাষায়) মানসিকতা নিয়ে থাকেন, তাহলে নিটওয়্যার শিল্প নিয়ে ভাবনার সময় কই তাদের? চার. ইদানীং বিদ্যুতের ঘাটতি দেশে এরই মাঝে যে একটি বড় ধরনের সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, তা কি আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা উপলব্ধি করেন? খোদ ঢাকা শহরেই দিনে ও রাতে বিদ্যুত্ থাকে না চার থেকে পাঁচ বার। অথচ গরম এখনও পুরোপুরিভাবে পড়েনি। গ্রীষ্ম শুরুর আগেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় অসহনীয় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির হিসাব অনুযায়ী, ২ মার্চ (২০১০) পিক-আওয়ারে খুলনাসহ ২১ জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৪৪ দশমিক ৯ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল মাত্র ৩৯৩ দশমিক ৩ মেগাওয়াট। লোডশেডিং ছিল ২৫১ দশমিক ৬ মেগাওয়াট (যায়যায়দিন, ৩ মার্চ, ২০১০)। রাজধানীর সঙ্গে বিদ্যুত্প্রাপ্তির প্রশ্নে জেলা শহরগুলোর বৈষম্য বাড়ছে। এই বৈষম্য নিয়ে এক সময় কথা উঠবে। বিদ্যুত্ উত্পাদন বাড়াতে হবে। এটা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই; কিন্তু কীভাবে? গ্যাস আমাদের ফুরিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্রগুলো গ্যাস পাচ্ছে না। উপরন্তু কেন্দ্রগুলো অনেক পুরনো। কয়লা আমাদের আছে। মজুতের পরিমাণ ২৫০ কোটি টন। খনিমুখে বিদ্যুত্ কেন্দ্র তৈরি করা ছাড়া কোনো বিকল্প আছে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু কী অদ্ভুত দেশে আমরা বসবাস করি! আমাদের রিজার্ভ কয়লা রেখে আমরা মূলত ভারত থেকে কয়লা আমদানি করে ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা করা হচ্ছে কার স্বার্থে? কয়লা উত্তোলন নিয়ে একটা সমস্যা আছে সত্য (উন্মুক্ত না ভূগর্ভস্থ পদ্ধতি); কিন্তু জাতীয় স্বার্থে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। গভীর সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলনও আমরা করতে পারছি না। এখানে পিএসসি নিয়ে সমস্যা আছে। একটা সমাধানে তো আমাদের পৌঁছতে হবে। দুঃখ লাগে যখন দেখি আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা এই জ্বালানি সঙ্কট নিয়ে একদিনও সংসদে আলোচনা করলেন না। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে সাহস করে কেউ প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন না—ডিজিটাল বাংলাদেশ কীভাবে হবে, যদি বিদ্যুত্ই না থাকে? সংসদ সদস্যরা ভিআইপি। তাদের এলাকায় বিদ্যুত্ যায় না; কিন্তু আমরা করদাতা ও ভোটার। আমাদের জন্য বিদ্যুত্ থাকে না। বিদ্যুতের প্রাপ্তিকে আমি মানবাধিকারের সঙ্গে তুলনা করতে চাই। চাই জ্বালানির পুরো বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হোক।
সংবাদপত্রে খবর ছাপা হয়েছে একজন প্রভাষ মণ্ডলের স্বীকারোক্তি—‘বাঁধ বেঁধে দেন, নয়তো মেরে রেখে যান’ (কালের কণ্ঠ, ৩ মার্চ, ২০১০)। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে প্রভাষ মণ্ডলের এই উক্তি। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের প্রভাষ মণ্ডলরা ত্রাণ চান না। আইলার আঘাতের পর ৯ মাস পার হয়ে গেছে। কেন বেড়িবাঁধ তৈরি হলো না? কেন এখনও সেখানকার মানুষদের লবণ পানির সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ করতে হয়। মাননীয় সংসদ সদস্যদের মাঝে কেউ কি আছেন, যিনি সাহস করে প্রভাষ মণ্ডলের কথাটাই প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করবেন? পত্রিকায় ছাপা হয়েছে আরও একটি সংবাদ—ত্রিশালে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কেউ কি অবিবেচক বিমানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করবেন—এতে করে কত ধানি জমি নষ্ট হবে? কত কৃষক তার জমি হারাবে? যেখানে প্রতিবছর আমরা কৃষিজমি হারাই ৮২ হাজার হেক্টর করে, সেখানে ত্রিশালে নতুন একটি বিমানবন্দর তৈরি হলে আমরা অনেক কৃষি জমি হারাব। এমনিতেই বাংলাদেশে ৭ কোটি মানুষ সারা বছরই খাদ্য সঙ্কটে থাকেন। এখন কৃষিজমির পরিমাণ কমে গেলে খাদ্য উত্পাদন কমে যাবে। ফলে খাদ্য সঙ্কটও বাড়বে। সুতরাং ত্রিশালে বিমানবন্দর তৈরি করার আদৌ প্রয়োজন নেই। এসব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। এজন্যই সংসদ। কিন্তু সংসদে যা দেখছি, তাতে আস্থা রাখতে পারছি না। আমাদের হতাশা বাড়ছে। স্পিকার একটি বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি প্রয়োজনে পদত্যাগের (?) হুমকিও দিয়েছেন। তাতে কিছুটা ‘কাজ’ বোধহয় হয়েছে। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী দিনগুলোর জন্য। আমাদের সংসদ সদস্যদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, আমরা শুধু এটাই আশা করতে পারি।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল : tsrahmanbd@yahoo.com
No comments