সময়ের প্রতিবিম্ব-সংবিধানের কতখানি সংশোধন হতে পারে by এবিএম মূসা
অতিসম্প্রতি সংবিধান সংস্কার বা সংশোধন, এমনকি আমূল পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক, আলোচনা ও সমঝদারির যে সাম্প্রতিক বিস্তৃতি ঘটেছে, সেসবের অংশীদার হওয়ার পুঁথিগত বিদ্যা আমার যথেষ্ট পরিমাণে নেই। তবে বিশেষজ্ঞ না হয়েও আমজনতার এ নিয়ে চিন্তাভাবনার খোঁজখবর রাখি।
সেই আলোকে এ নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছাটুকু অবদমিত করতে পারছি না। প্রথমেই বলে রাখছি, আমি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলাম। যে গণপরিষদে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণীত হয়, তার রচনাকারীদের একজন ছিলাম না বটে, তবে প্রথম থেকে চতুর্থ সংবিধান সংশোধন-প্রণালি যখন জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়, তখন আমিও হাত তুলে প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুকরণে বলতে বাধ্য হয়েছিলামও বলা যায়। এই বাধ্যতার মূলে ছিল সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে আরও একটুখানি বক্তব্য আমার আজকের আলোচনায় শেষাংশে স্থান পাবে। কারণ, বর্তমানে সংবিধানের পরিবর্তন-প্রত্যাবর্তন নিয়ে যে যতই শোরগোল করুন না কেন, মহামান্য উচ্চতম আদালত পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে যে অভিমতই দিন না কেন, শেষ পর্যন্ত সংসদে সরকারি দলের ‘হ্যাঁ’ হচ্ছে আসল নির্ধারক। তাই পরম বিনয়ের সঙ্গে এ সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের যথা ‘রায়ের পরই সংবিধান সংশোধন হয়ে গেছে’ (প্রথম আলো ২৯ জুলাই) মন্তব্যের সঙ্গে অতিবিনয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। স্থানাভাবে দ্বিমতের কারণ ব্যাখ্যা করা গেল না।
এবার সংবিধান সংশোধন, এমনকি বাহাত্তরের আদিতে ফিরে যাওয়া নিয়ে যে বিতণ্ডা অথবা তর্কবিতর্ক চলছে, সে সম্পর্কেই আলোচনার সূচনা করছি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর নানা অবাঞ্ছিত ও আশঙ্কাজনক ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। সেসবের সূচনা হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহের উত্থানজনিত সংকট দিয়ে। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারসংশ্লিষ্ট সবাই যে অসম-সাহসিকতা, কূটনীতি ও কৌশল, প্রজ্ঞা ও তিতিক্ষার পরিচয় দিয়ে সেই সংকটের মোকাবিলা করেছেন, সে সম্পর্কে সবাই বলেছেন, এখনো বলছেন অনন্য ও অসাধারণ। এই অনন্যতার পরিচয় দিয়েছিলেন বলেই বিপুল ভোটে নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার এখনো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে।
অপরিসীম ও অসাধারণ বিজ্ঞতা ও ধী-শক্তির পরিচয় দিয়ে একটি মারাত্মক জাতীয় সংকট শুরুতেই সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করলেও অভ্যন্তরীণ সমস্যার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীবর্গ সরকার পরিচালনায় বেকায়দায় পড়েছিলেন। এই সকল সমস্যা যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও সর্বোপরি দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া ইত্যাকার সমস্যা যে তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন, তা সাধারণ মানুষ জানে। কিন্তু যা বোধগম্য হয়নি তা হলো, সেসব সমস্যা সমাধানের সত্যিকার আন্তরিক উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। যা-ই হোক, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ধরেবেঁধে এনে বিচারবহির্ভূত হত্যা—এসব বিষয়ে বেশ কয়েক দিন পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ছবিসহ খবর, নানা বিবরণ-বিশ্লেষণ, প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে ছাপা হতে থাকল। অতঃপর সব খবর ছাপিয়ে একাত্তরের গণহত্যার বিচার, অপরাধীদের শনাক্তকরণ ও শাস্তিদানে বৈচারিক আইনি জটিলতা, বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা, নেপথ্য কূটচাল, মানবতাবিরোধী বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার নেপথ্য কার্যাবলি আর একাত্তরের রোমহর্ষক কাহিনিগুলো পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হতে থাকল। সেসব ছাপিয়ে এখন সংবিধান সংশোধন এবং এ নিয়ে সরকারের নতুন উদ্যোগ।
সর্বশেষ খবর হচ্ছে, বস্তুত সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনজ্ঞ, সর্বশেষ মহামান্য আদালতের একটি রায় এখন পত্রিকার শিরোনামের শীর্ষে এসে গেছে। বক্তব্য, বিশ্লেষণ, নানা ধরনের ব্যাখ্যা ও মতামত পত্রিকার পাতা, কলামিস্টদের মন্তব্য, টেলিভিশনের টক শোতে এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। প্রথমে শুনলাম, বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া হবে, একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম। আমার কাছে সংরক্ষিত মূল সংবিধান এবং পরবর্তী স্বৈরতান্ত্রিক কাটাছেঁড়াগুলো, সামরিক শাসকদের আদ্যোপান্ত জটিল ও কূট ও স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপগুলো বারবার পড়তে লাগলাম। ফিরে যাওয়া কথাটির কিছুই বুঝলাম না, বোঝার দরকারও হলো না। কারণ, যাঁরা বলেছিলেন বাহাত্তরের সংবিধানে ‘ফিরে যাব’, তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিলেন আমাদের মহামান্য উচ্চতম আদালত। মহামান্য আদালত পঞ্চম সংশোধনী সংযোজন, পরিবর্তন আর পরিচ্ছন্ন করার কতিপয় নির্দেশনা দিয়ে ‘ফিরে যাওয়া’ বা ‘সংবিধান সংশোধন’ বলতে কী বোঝায় তা অনেকখানি বুঝিয়ে দিলেন। নির্দেশনা বললাম, কারণ শেষ পর্যন্ত যা করার তা করার ক্ষমতা একমাত্র সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ উচ্চারণকারী সাংসদদের আছে। কারণ, আদালত সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাদানকারী সংসদের সৃষ্টি। স্রষ্টাকে সৃষ্টি নির্দেশনা দিতে পারেন না, সৃষ্ট বিষয় সম্পর্কে শুধু মতামতই দিতে পারেন, তাঁদের বিজ্ঞ ও সুবিবেচনাপ্রসূত রায় কার্যকর করতে পারেন না, কারণ এই দায়িত্বটি রাষ্ট্রের অপর দুই শাখা সংসদ ও নির্বাহী বিভাগের। সত্যি কথা বলতে হয়, বিশেষজ্ঞ আলোচকদের বিশ্লেষণসমূহ অনুধাবন করতে না পারলেও। প্রথম আলো গত বৃহস্পতিবার প্রথম পৃষ্ঠায় মিজানুর রহমান খানের যে বিশ্লেষণ ছেপেছে তার সারমর্মটুকু শুধু বোঝার চেষ্টা করেছি। স্নেহভাজন মিজান যদিও সহজ-সরল ভাষায় আমার মতো অজ্ঞদের রায়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তবুও স্বল্প জ্ঞানে বোধগম্য হয়নি। কিন্তু সব বক্তব্যের সারাংশ খুঁজে পেতে একটুখানি অসুবিধা হলেও, বাক্সবন্দী করে সংক্ষিপ্ত যে চুম্বক ছাপা হয়েছিল, তাই মনে হচ্ছে সারবস্তু।
হলুদ পটভূমির ওপর কালো অক্ষরে ছাপা চুম্বক হচ্ছে: ১. সামরিক শাসন বেআইনি, ২. সামরিক শাসনের চিরকালের জন্য বিদায়, ৩. জাতীয়তাবাদ বাঙালি, নাগরিকত্ব বাংলাদেশি, ৪. গণভোট উঠে গেল। প্রথমেই মনে হবে, মহামান্য বিচারপতিরা নতুন কিছু বলেননি, শুধু ‘জাতীয়তাবাদ জাতীয়তার’ সমন্বয় সাধন ও গণভোট-সম্পর্কীয় সিদ্ধান্ত। যদি তা সাংবিধানিক কানুন অনুযায়ী স্বয়ংসিদ্ধ হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই যুগান্তকারী। মিজান এই সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ প্রদানে অনেকগুলো ধারা উল্লেখ করেছেন। আসল ধারাটি হচ্ছে, ১৪২(১-ক) যথা ভবিষ্যতে সংবিধানের কয়েকটি ধারার সংশোধন অথবা বাতিল করতে হলে প্রস্তাবাবলি, ‘রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইলে সাত দিনের মধ্যে তিনি বিলটিতে সম্মতি দান করিবেন কি না এই প্রশ্নটি গণভোটে প্রেরণের ব্যবস্থা করিবেন।’ মহামান্য আদালত বলেছেন, গণভোট-সম্পর্কীয় এই ধারাটি থাকবে না। আদালত সংবিধানের কোনো ধারা শুধু মৌলিক বিধানের বিরোধী হলেই বাতিল করতে পারেন। কিন্তু ১৪২(১-ক) অথবা সংবিধানের ভালো-মন্দ যেকোনো বিধানকে বিচার বিভাগ একটি রায়ের মাধ্যমে বিলুপ্ত করতে পারেন কি? শাহদীন, আসিফ ও মিজান এ বিষয়টি কখনো আলোচনায় এনেছেন বলে মনে পড়ছে না। আমি সরাসরি বলছি, এর জন্য আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। সংসদের ১৪২ ধারার ১-ক অনুসরণ করে সংসদে সংশোধন করে নিলেই এর কার্যকরতা থাকত না। সংসদই সামরিক শাসকের এ ধূর্ত সংযোজনটি বিলুপ্ত করে দিতে পারত।
এবার বাক্সবন্দী অন্যান্য সারাংশ নিয়ে দু-চারটি কথা বলব। ১. সামরিক শাসন বেআইনি। অবশ্যই বেআইনি—এ কথাটি আমরা আইয়ুব খানের আমল থেকে বলে আসছি, প্রতিবাদ করেছি, আন্দোলন-বিক্ষোভ করেছি, ১৩ বছর মুক্তি-সংগ্রাম করেছি এবং সর্বশেষ রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। এ কথাটি শোনার জন্য মহামান্য আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কতিপয় মহামান্য বিচারক তা ‘বৈধ’ করেছিলেন। এই দুঃখজনক স্মৃতি ভুলব কী করে? যা-ই হোক, আমাদের বর্তমান সুবিবেচক বিচারকেরা বিচার বিভাগকে সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন। এবার ২ নম্বর সারাংশটির বক্তব্য, ‘সংবিধানবহির্ভূত কর্মকাণ্ডকে চিরবিদায়।’ আমার মনে হয়, এই রায়ের মাজেজা হচ্ছে, সামরিক ও স্বেচ্ছাচারী শাসকেরা ফরমান জারি করে সংবিধানের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগে প্রজাতন্ত্রের ব্যাখ্যা ও রাষ্ট্র পরিচালনার যে মূল নীতিগুলো বিলোপ, স্বেচ্ছাচারী প্রতিস্থাপন করেছেন, তা সংশোধন করা হলো। ‘বিদায়’ শব্দটির এমন ব্যাখ্যা যদি কেউ করেন, তাঁকে বলব, সংসদই তা করতে পারে (১৪২ অনুচ্ছেদ)। কিন্তু ভবিষ্যতে কোনো বেয়নেটধারী এই ‘বিদায়’ রায়টিকে কতখানি পরোয়া করবেন? তখন যদি কোনো বিচারক ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ কালের এ বিবর্তনে প্রয়োজন বলে রায় দেন তখন কী হবে? তবে এই ‘বিদায়’ নিয়েই এখন দেখা দিয়েছে বিতর্ক ও বাহাত্তরের সংবিধানের মূল আদর্শের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব অথবা সাবধানী পদক্ষেপ। তাঁদের দ্বিধায় ফেলেছে একটি অতি আবেগময় ও স্পর্শকাতর বিষয়। তা হলো ধর্মীয় অনুভূতি, যা ভুল ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজনীতিতে ধর্মীয় ‘বিশ্বাসের অপব্যবহার’। সোজা কথায়, ‘ধর্মে রাজনীতির সুড়সুড়ি’ দেওয়া চলবে না বললেই এ নিয়ে কেউ ঝামেলা বাধাতে পারত না। প্রথম আলো সরাসরি ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি থাকছে না’ মূল শিরোনাম দিয়ে খালাস। অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কয়েক দিন প্রকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ধর্মকে রাজনীতির ঢাল-তলোয়ার করা যাবে না। এমনকি ‘রাষ্ট্রধর্ম’ বলে জেনারেল এরশাদের একটি নিরর্থক সংযোজনের আমাদের রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা নেই। আদালত তাই বোধ হয় এটি উপেক্ষা করেছেন।
অতঃপর বাঙালি-বাংলাদেশি নিয়ে চিরায়ত বিতর্কের মহামান্য আদালত একটি ‘সমঝোতা’ করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আমি একটি ‘অতীতের সমঝোতার’ মজার ব্যাপার উল্লেখ করব। কৌতূহলবশত, বাহাত্তরে আমি একটি আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাই। সেই পাসপোর্টটি খুঁজে বের করে দেখলাম, জাতীয়তা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সিটিজেন অব বাংলাদেশ’; অর্থাৎ বাঙালি অথবা বাংলাদেশি সংজ্ঞায় এমনি সমঝোতা হয়েছিল? মহামান্য আদালত মনে হয় এ বিষয়কে রাজনৈতিক বিতণ্ডা বিবেচনা করে দুই কথায় একটি সমাধানের পথ বাৎলেছেন।
পঞ্চম সংশোধনীর রায় নিয়ে বিজ্ঞজনদের আলোচনার বিশ্লেষণে নতুন কোনো বক্তব্য যোগ করার জ্ঞান আমার নেই, এ কথাটি আগেই বলেছি। আসলে ঝামেলা বাধিয়েছে ‘ধর্ম’। সব সামরিক স্বেচ্ছাচারী শাসক নিজের আসন মজবুত ও কুক্ষিগত ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ধর্মীয় চেতনায় সুড়সুড়ি দেওয়া বিধানগুলোকে আরও মজবুত বা ভিতটি শক্ত করেছিলেন। সে জন্যই জিয়াউর রহমান প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহ’ যোগ করেছেন। বাংলাদেশের মুসলমান এমনিতেই সব কর্মসূচনার আগে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলেন। কিন্তু তার আগে বলেন ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম’। ভবিষ্যতের উচ্চাভিলাষী ক্ষমতা দখলকারীদের আগমন রোধের জন্য সংবিধান সংশোধনের সময়ে প্রস্তাবনায় এই ছবকটি যোগ করলে কেমন হয়? আবার জনরোষের কারণে বিদায় নেওয়ার আগে ক্ষমতায় থাকাকালীন স্বীয় দুষ্কর্মের জন্য ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
শেষ প্রশ্ন, বাহাত্তরের সংবিধান আমাদের যে চারটি মূলমন্ত্র উপহার দিয়েছিল, পঞ্চম সংশোধনী বাতিল বা সংশোধন করলেই কি সব পুনঃস্থাপিত হবে? বিশেষ করে জরুরি অবস্থা জারির শর্তাবলি, বর্ণিত মৌলিক আইন হরণকারী তৃতীয় অনুচ্ছেদ, যে ৭০ অনুচ্ছেদ জনপ্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে, তা কি চার মূলনীতির অন্যতম গণতন্ত্রের সংজ্ঞাবিরোধী নয়? আশা করব, ভবিষ্যতে অন্য কোনো রিট আবেদন নিষ্পত্তিকালে এ সম্পর্কে আদালত বিজ্ঞ মতামত দেবেন।
এবিএম মূসা: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।
No comments