বুয়া ও জন্মদিন by অদ্রিজা প্রিয়ন্তী

আমরা বুয়ার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করি। মামণি বলেছে, ‘বুয়াদের সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করবে না, ওরা গরিব, তাই ওরা অন্যের বাড়িতে কাজ করে।’ একবার বুয়া তিন-চার দিন পর এল। মামণি ভেবেছিল বকবে, কিন্তু আসার পর যখন শুনল, বুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তখন মামণি বুয়াকে আর কিছুই বলেনি।


কদিন পর আমার জন্মদিন, তখন বুয়াকে অনেক কাজ করতে হবে। আমার জন্মদিন উপলক্ষে মামণি অনেক প্রস্তুতি নিচ্ছে। হঠাৎ বুয়া আসা বন্ধ করে দিল। মামণি দুশ্চিন্তায় পড়ল। কারণ বুয়াকে ছাড়া কীভাবে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হবে?
পাঁচ দিন পর বুয়া কাঁদতে কাঁদতে বাসায় এল। মামণি বলল, কী সমস্যা? বুয়ার কান্না থামেই না, শেষে বলল, তিন-চার দিন আগে তার ছেলের চোখে সমস্যা হয়েছিল, তাই তাকে হাসপাতালে নিয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, দুই দিনের মধ্যে অপারেশন না করলে চোখ ভালো হবে না। সব শুনে মা বুয়াকে পরদিন আসতে বলল। রাতে বাবা অফিস থেকে ফিরলে মা বাবাকে বলল। তারপর আমাকে বললো, মামণি বিপদে পড়লে মানুষকে সাহায্য করতে হয়, তুমি যদি রাজি থাক, তবে তোমার জন্মদিনটা পালন না করে বুয়াকে ঐ টাকাটা দেব। প্রথমে শুনে আমার মন খারাপ হল। মা-বাবা আমাকে অনেক বোঝানোর পর আমি বুঝতে পারলাম। সিদ্ধান্ত হলো, পরদিন বুয়া এলে তাকে টাকাটা দিয়ে দেওয়া হবে। বুয়া এল। তাকে টাকাটা দিলে সে কাঁদতে লাগল। সব শুনে আমাকে অনেক দোয়া করল এবং বলল, ‘আম্মা, তুমি অনেক বড় হবে।’
 তৃতীয় শ্রেণী
মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.