পাকিস্তান-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেই শান্তি ও স্থিতি by সুভাষ সাহা
বর্তমান পরিস্থিতিতে সুশাসনভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে স্থায়ী করার পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পাকিস্তান ভয়াবহ দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। এ জন্য ইসলামাবাদকে ভারতবিরোধিতার নীতি থেকে সরে এসে সে দেশের সঙ্গে বল্পুব্দত্ব স্থাপন করতে হবে।
ইসলামাবাদকে বুঝতে হবে যে, আঞ্চলিক কাঠামো এবং দ্বিপক্ষীয়ভাবে ভারত-পাকিস্তান বল্পুব্দত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে পারতে হবে
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা আবার দখল করে নেবে কিনা, এ প্রশ্নটি এখন বেশ জোরের সঙ্গেই আলোচিত হচ্ছে। এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখিও হচ্ছে। অতিসম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস এ ব্যাপারে একটি নাতিদীর্ঘ নিবন্ধও ছেপেছে।
পাকিস্তানে নতুন করে গণতান্ত্রিক শাসনের অধিষ্ঠান হলো বছরতিনেক হলো। এর আগে এক দশক বজ্রমুষ্টিতে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন জেনারেল মোশাররফ। মাত্র তিন বছরের গণতান্ত্রিক শাসন চলার সময় এমনকি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো যে, সেনা কর্মকর্তারা পুনরায় দেশটির শাসনভার নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ার চিন্তা করতে পারে?
এটা ঠিক যে, পাকিস্তানের নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থা, ভঙ্গুর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি, প্রায়ই তালেবান-আল কায়দা হামলায় দেশটি বিদীর্ণ হওয়া ও বেলুচিস্তানসহ বিভিন্ন জাতিসত্তার ভিন্ন ভিন্নরূপে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সহিংসতার মধ্য দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা গোটা রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন সেনা উপস্থিতি ও উপর্যুপরি গোয়েন্দা বিমান হামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশ্য-গোপন তৎপরতা কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এত সমস্যা একসঙ্গে মোকাবেলার মতো অবস্থা পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর রয়েছে কি? এবার চুকচুক করে নগদ ডলার খেয়ে নিজেদের আরও মোটা তাগড়া করার পুরনো কৌশল আঁকড়ে থেকে নিজেদের স্বাধীনতার সোলএজেন্ট প্রতিপন্ন করার কৌশলে পার পাওয়ার জো নেই। কারণ ১৯৭১ সালের পর এবার পাকিস্তান সত্যিকার অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। আর এবারের সংকট বহুমুখী।
কেউ কেউ হয়তো মনে করতে পারেন যে, পারমাণবিক শক্তি পাকিস্তান রাষ্ট্রের অখণ্ডতার নিশ্চয়তা দেবে এবং বিদেশি আগ্রাসন থেকেও দেশকে রক্ষা করবে। এরা ভুলে যান যে, পারমাণবিক শক্তি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৩ খণ্ড হয়ে যাওয়াকে যেমন রোধ করতে পারেনি, তেমনি পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই মারণাস্ত্র শক্তি ভারতের সঙ্গে শক্তি সাম্য প্রতিষ্ঠায় কাজ দিলেও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখা ও দেশের বিখণ্ডিত হওয়া রোধ করার গ্যারান্টি নয়। এ অবস্থায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী আগ বাড়িয়ে দেশের সম্ভাব্য বিলুপ্তির (ঈশ্বর না করুন!) কলঙ্ক তিলক স্বীয় ভালে ধারণ করতে যাবে কেন?
জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তানে রাজনৈতিক, সামরিক, জাতীয় নিরাপত্তা ও ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাবদায়ী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এখানে তিনটি ঘটনা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য তুলে ধরব।
প্রথমেই ধরা যাক, জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ্য দিবালোকে দু'জন পাকিস্তানিকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর অপারেটিভ রেমন্ড ডেভিসকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গটি। হত্যার জন্য রেমন্ডকে দোষী সাব্যস্ত করার পর পাকিস্তান কি শেষ পর্যন্ত তাকে আটকে রাখতে পেরেছিল? অথবা পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় জেনারেলরা তাকে না ছাড়ার ব্যাপারে অনমনীয় মনোভাব প্রদর্শর্নের পরও রেমন্ডের মুক্তি আটকানো গেছে? নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে রেমন্ডকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল ওয়াশিংটন। সিআইএ অপরারেটিভ একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। বলা হয়, তার সঙ্গে পাকিস্তানের তেহরিক-ই তালেবানের সম্পর্ক ছিল। এই ব্যক্তি যে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও আইএসআইর অন্দরে ঢুকে পড়েনি তা কে বলতে পারে! তাই পাকিস্তানিদের জেরার মুখে যদি রেমন্ড গুমর ফাঁক করে দেয় এবং এতে পাকিস্তানে সিআইএর নেটওয়ার্ক বেআব্রু হয়ে পড়ে কিনা সে শঙ্কা ছিল ওয়াশিংটনের। তাই পাকিস্তানের বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করেই তাকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে মে মাসে। এবোটাবাদে সামরিক এলাকার মধ্যেই সামরিক অভিযান চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাদেন হত্যা মিশন কামিয়াব হওয়ার ঘটনা পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের তথাকথিত পবিত্রতার ধারণায় চিড় ধরিয়ে দেয়। স্বাধীনতা আর প্রতিরক্ষা যে সর্বাংশে এক নয় এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সঙ্গে যে কেবল সীমান্ত প্রতিরক্ষা ও সামরিক শক্তিমত্তার প্রশ্নটি একমাত্র জড়িত নেই, এই আধুনিক ধারণাটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গ্রহণ করতে পারবে কবে! পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের জানার বাইরে এবং তাদের প্রকাশ্য বা গোপন অনুমোদন ছাড়া তাদেরই ভূখণ্ডে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তির সামরিক অভিযান পরিচালনা করা এবং সফল অভিযান শেষে ঢাকঢোল পিটিয়ে তা প্রচার করা পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভিতকেই শুধু নাড়িয়ে দেয়নি, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মনে রাষ্ট্রের পরিস্থিতি ও সক্ষমতা সম্পর্কেও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ভারতকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী এতদিন সযত্নে যে ধারণাটি সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিল, তার মূলেই আঘাত হেনেছে এই অভিযান। লাদেন নিধন অভিযানের মধ্য দিয়ে মানুষ দেখেছে, রাষ্ট্রের চিরাচরিত সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ভারত করেনি, বল্পুব্দবেশী যুক্তরাষ্ট্রই এ কাজটি করেছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান চাইলেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভূখণ্ড থেকে সরে যাবে বা সেখান থেকে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে মাঝে মধ্যেই সামরিক অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে, এমনটা হওয়াও নিশ্চিত নয়। পাকিস্তান তার নিজের শর্তে যুক্তরাষ্ট্রকে কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বাধ্য করার ক্ষমতা কি রাখে?
লাদেন এপিসোড সম্পন্ন হওয়ার পর যখন ভিরমি খাওয়ার অবস্থা থেকে পাকিস্তান স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেস্টা করছিল, তখনই ঘটে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি। ২২ মে চার সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালাল মেহরান নৌবিমান ঘাঁটিতে। কমান্ডোরা যদিও অভিযান চালিয়ে চার সন্ত্রাসীকেই হত্যা করেছে, তবুও এতে কিন্তু বেশ কয়েকজন নৌবাহিনীর সদস্য নিহত হওয়া ও দুটি পি-৩সি ওরিয়ন বিমান ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এ ঘটনার পর সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরেই তালেবান ও আল কায়দাসহ ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক থাকার সম্ভাবনার কথা বেশি করে উচ্চারিত হয়। একজন কর্তব্যরত ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জঙ্গি কানেকশনের অভিযোগও আনা হয়েছে। উলি্লখিত তিনটি ঘটনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে দ্রুত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ার অবস্থাকে মূর্ত করেছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা_ আইএসআই জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক, এ ধারণাটা দেশে-বিদেশে বিশ্বাসের পর্যায়ে পেঁৗছেছে। এতে সামরিক বাহিনীর ম্যানুভারিং ক্যাপাসিটি কমে যায়নি?
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কতটা শোচনীয় এ প্রশ্ন না করে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি কবে দেউলিয়ার খাতায় নাম লেখাবে সে প্রশ্ন করাই ভালো। আর এই যখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তখন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের চিন্তা করার মতো সাহস থাকে কি? বরং এখন তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো এবং এর ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করবে সর্বাগ্রে।
উলি্লখিত তিনটি ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে যে, জঙ্গিদের নিজেদের নিরাপত্তা ঢাল ও শত্রুর বূ্যহ ভাঙা ও দুর্বল করার কাজে ব্যবহারে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অনুসৃত নীতি বুমেরাং হয়েছে। সুতরাং পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নিজেদের নীতি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। সংকট সৃষ্টি হলেই বা নিজেরাই গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলের পৌনঃপুনিক তরিকায় ছেদ টানতে হবে স্থায়ীভাবেই। সামরিক বাহিনী প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি দেখবে বলে এতদিনকার প্রচলিত অলিখিত নিয়ম এবার তাদের নিজেদেরই ভাঙতে হবে। বরং এ কাজ রাজনীতিক ও বেসামরিক প্রশাসনের হাতে ছেড়ে দিয়ে তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে বেশি করে।
ভারতকে পহেলা নম্বরের শত্রু ভেবে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের পুরনো নীতি এখন একেবারেই অচল। সামরিক দিক থেকে ভারতের সমকক্ষ হতেই হবে, এমন একটা গোঁ ধরা স্বভাব পাকিস্তানের নীতিনির্ধারকদের ত্যাগ করতেই হবে। পারমাণবিক শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখন পাকিস্তানের উচিত নিজের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেওয়া। আর এ জন্য অহেতুক সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির পথ ত্যাগ করা উচিত হবে। বরং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া সাহায্যকে বেসামরিক উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা উচিত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের মতো কাজে অধিক অর্থ ব্যয় করা উচিত।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক কিয়ানি একজন বিচক্ষণ সেনা কর্মকর্তা। তিনি নিশ্চয়ই সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে বসে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় বাস্তব পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে থাকবেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রাখা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশকে জঙ্গিমুক্ত করার মাধ্যমে একে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই ফাংশন করতে দিতে হবে। তবে রাজনীতিকেও দুর্নীতি ও কলুষমুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী নাগরিক আন্দোলন ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সুতরাং পাকিস্তানে সরকার পরিচালনায় জারদারি গংয়ের ব্যর্থতা বা সীমাবদ্ধতা এবং সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে মার্কিন খবরদারিজাত ক্ষোভকে পুঁজি করে দেশটিতে পুনরায় সেনাশাসন জারির যে কোনো উদ্যোগ হবে বস্তুত পাকিস্তান রাষ্ট্রকে বিলুপ্ত করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে (জেনে হোক আর না জেনে হোক) শামিল হওয়ার সমতুল্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুশাসনভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে স্থায়ী করার পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পাকিস্তান ভয়াবহ দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। এ জন্য ইসলামাবাদকে ভারতবিরোধিতার নীতি থেকে সরে এসে সে দেশের সঙ্গে বল্পুব্দত্ব স্থাপন করতে হবে। যদি এমন হয় যে, মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার পর সেখানে পাকিস্তান ও ভারতের সেনাবাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে, তাহলে কেমন হয়? কাশ্মীর সীমান্তেও কি জঙ্গিবিরোধী যৌথ সাঁড়াশি অভিযান চলতে পারে না? আসলে পাকিস্তানকে নিরাপত্তার সাবেকি ধারণাটি ঝেড়ে ফেলে এর আধুনিক ধারণাটি গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই পাকিস্তানের নীতি পরিবর্তনের যে বাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাকে তারা কাজে লাগাতে পারবে। ইসলামাবাদকে বুঝতে হবে যে, আঞ্চলিক কাঠামো এবং দ্বিপক্ষীয়ভাবে ভারত-পাকিস্তান বল্পুব্দত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে পারতে হবে। তখন মধ্যপ্রাচ্য থেকে মধ্য এশিয়ায় আমাদের প্রভাব অবশ্যম্ভাবী ও অপ্রতিহত হয়ে উঠবে না!
সুভাষ সাহা :সাংবাদিক
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা আবার দখল করে নেবে কিনা, এ প্রশ্নটি এখন বেশ জোরের সঙ্গেই আলোচিত হচ্ছে। এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখিও হচ্ছে। অতিসম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস এ ব্যাপারে একটি নাতিদীর্ঘ নিবন্ধও ছেপেছে।
পাকিস্তানে নতুন করে গণতান্ত্রিক শাসনের অধিষ্ঠান হলো বছরতিনেক হলো। এর আগে এক দশক বজ্রমুষ্টিতে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন জেনারেল মোশাররফ। মাত্র তিন বছরের গণতান্ত্রিক শাসন চলার সময় এমনকি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো যে, সেনা কর্মকর্তারা পুনরায় দেশটির শাসনভার নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ার চিন্তা করতে পারে?
এটা ঠিক যে, পাকিস্তানের নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থা, ভঙ্গুর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি, প্রায়ই তালেবান-আল কায়দা হামলায় দেশটি বিদীর্ণ হওয়া ও বেলুচিস্তানসহ বিভিন্ন জাতিসত্তার ভিন্ন ভিন্নরূপে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সহিংসতার মধ্য দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা গোটা রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন সেনা উপস্থিতি ও উপর্যুপরি গোয়েন্দা বিমান হামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশ্য-গোপন তৎপরতা কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এত সমস্যা একসঙ্গে মোকাবেলার মতো অবস্থা পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর রয়েছে কি? এবার চুকচুক করে নগদ ডলার খেয়ে নিজেদের আরও মোটা তাগড়া করার পুরনো কৌশল আঁকড়ে থেকে নিজেদের স্বাধীনতার সোলএজেন্ট প্রতিপন্ন করার কৌশলে পার পাওয়ার জো নেই। কারণ ১৯৭১ সালের পর এবার পাকিস্তান সত্যিকার অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। আর এবারের সংকট বহুমুখী।
কেউ কেউ হয়তো মনে করতে পারেন যে, পারমাণবিক শক্তি পাকিস্তান রাষ্ট্রের অখণ্ডতার নিশ্চয়তা দেবে এবং বিদেশি আগ্রাসন থেকেও দেশকে রক্ষা করবে। এরা ভুলে যান যে, পারমাণবিক শক্তি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৩ খণ্ড হয়ে যাওয়াকে যেমন রোধ করতে পারেনি, তেমনি পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই মারণাস্ত্র শক্তি ভারতের সঙ্গে শক্তি সাম্য প্রতিষ্ঠায় কাজ দিলেও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখা ও দেশের বিখণ্ডিত হওয়া রোধ করার গ্যারান্টি নয়। এ অবস্থায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী আগ বাড়িয়ে দেশের সম্ভাব্য বিলুপ্তির (ঈশ্বর না করুন!) কলঙ্ক তিলক স্বীয় ভালে ধারণ করতে যাবে কেন?
জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তানে রাজনৈতিক, সামরিক, জাতীয় নিরাপত্তা ও ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাবদায়ী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এখানে তিনটি ঘটনা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য তুলে ধরব।
প্রথমেই ধরা যাক, জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ্য দিবালোকে দু'জন পাকিস্তানিকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর অপারেটিভ রেমন্ড ডেভিসকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গটি। হত্যার জন্য রেমন্ডকে দোষী সাব্যস্ত করার পর পাকিস্তান কি শেষ পর্যন্ত তাকে আটকে রাখতে পেরেছিল? অথবা পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় জেনারেলরা তাকে না ছাড়ার ব্যাপারে অনমনীয় মনোভাব প্রদর্শর্নের পরও রেমন্ডের মুক্তি আটকানো গেছে? নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে রেমন্ডকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল ওয়াশিংটন। সিআইএ অপরারেটিভ একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। বলা হয়, তার সঙ্গে পাকিস্তানের তেহরিক-ই তালেবানের সম্পর্ক ছিল। এই ব্যক্তি যে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও আইএসআইর অন্দরে ঢুকে পড়েনি তা কে বলতে পারে! তাই পাকিস্তানিদের জেরার মুখে যদি রেমন্ড গুমর ফাঁক করে দেয় এবং এতে পাকিস্তানে সিআইএর নেটওয়ার্ক বেআব্রু হয়ে পড়ে কিনা সে শঙ্কা ছিল ওয়াশিংটনের। তাই পাকিস্তানের বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করেই তাকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে মে মাসে। এবোটাবাদে সামরিক এলাকার মধ্যেই সামরিক অভিযান চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাদেন হত্যা মিশন কামিয়াব হওয়ার ঘটনা পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের তথাকথিত পবিত্রতার ধারণায় চিড় ধরিয়ে দেয়। স্বাধীনতা আর প্রতিরক্ষা যে সর্বাংশে এক নয় এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সঙ্গে যে কেবল সীমান্ত প্রতিরক্ষা ও সামরিক শক্তিমত্তার প্রশ্নটি একমাত্র জড়িত নেই, এই আধুনিক ধারণাটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গ্রহণ করতে পারবে কবে! পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের জানার বাইরে এবং তাদের প্রকাশ্য বা গোপন অনুমোদন ছাড়া তাদেরই ভূখণ্ডে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তির সামরিক অভিযান পরিচালনা করা এবং সফল অভিযান শেষে ঢাকঢোল পিটিয়ে তা প্রচার করা পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভিতকেই শুধু নাড়িয়ে দেয়নি, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মনে রাষ্ট্রের পরিস্থিতি ও সক্ষমতা সম্পর্কেও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ভারতকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী এতদিন সযত্নে যে ধারণাটি সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিল, তার মূলেই আঘাত হেনেছে এই অভিযান। লাদেন নিধন অভিযানের মধ্য দিয়ে মানুষ দেখেছে, রাষ্ট্রের চিরাচরিত সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ভারত করেনি, বল্পুব্দবেশী যুক্তরাষ্ট্রই এ কাজটি করেছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান চাইলেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভূখণ্ড থেকে সরে যাবে বা সেখান থেকে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে মাঝে মধ্যেই সামরিক অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে, এমনটা হওয়াও নিশ্চিত নয়। পাকিস্তান তার নিজের শর্তে যুক্তরাষ্ট্রকে কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বাধ্য করার ক্ষমতা কি রাখে?
লাদেন এপিসোড সম্পন্ন হওয়ার পর যখন ভিরমি খাওয়ার অবস্থা থেকে পাকিস্তান স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেস্টা করছিল, তখনই ঘটে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি। ২২ মে চার সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালাল মেহরান নৌবিমান ঘাঁটিতে। কমান্ডোরা যদিও অভিযান চালিয়ে চার সন্ত্রাসীকেই হত্যা করেছে, তবুও এতে কিন্তু বেশ কয়েকজন নৌবাহিনীর সদস্য নিহত হওয়া ও দুটি পি-৩সি ওরিয়ন বিমান ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এ ঘটনার পর সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরেই তালেবান ও আল কায়দাসহ ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক থাকার সম্ভাবনার কথা বেশি করে উচ্চারিত হয়। একজন কর্তব্যরত ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জঙ্গি কানেকশনের অভিযোগও আনা হয়েছে। উলি্লখিত তিনটি ঘটনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে দ্রুত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ার অবস্থাকে মূর্ত করেছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা_ আইএসআই জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক, এ ধারণাটা দেশে-বিদেশে বিশ্বাসের পর্যায়ে পেঁৗছেছে। এতে সামরিক বাহিনীর ম্যানুভারিং ক্যাপাসিটি কমে যায়নি?
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কতটা শোচনীয় এ প্রশ্ন না করে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি কবে দেউলিয়ার খাতায় নাম লেখাবে সে প্রশ্ন করাই ভালো। আর এই যখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তখন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের চিন্তা করার মতো সাহস থাকে কি? বরং এখন তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো এবং এর ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করবে সর্বাগ্রে।
উলি্লখিত তিনটি ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে যে, জঙ্গিদের নিজেদের নিরাপত্তা ঢাল ও শত্রুর বূ্যহ ভাঙা ও দুর্বল করার কাজে ব্যবহারে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অনুসৃত নীতি বুমেরাং হয়েছে। সুতরাং পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নিজেদের নীতি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। সংকট সৃষ্টি হলেই বা নিজেরাই গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলের পৌনঃপুনিক তরিকায় ছেদ টানতে হবে স্থায়ীভাবেই। সামরিক বাহিনী প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি দেখবে বলে এতদিনকার প্রচলিত অলিখিত নিয়ম এবার তাদের নিজেদেরই ভাঙতে হবে। বরং এ কাজ রাজনীতিক ও বেসামরিক প্রশাসনের হাতে ছেড়ে দিয়ে তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে বেশি করে।
ভারতকে পহেলা নম্বরের শত্রু ভেবে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের পুরনো নীতি এখন একেবারেই অচল। সামরিক দিক থেকে ভারতের সমকক্ষ হতেই হবে, এমন একটা গোঁ ধরা স্বভাব পাকিস্তানের নীতিনির্ধারকদের ত্যাগ করতেই হবে। পারমাণবিক শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখন পাকিস্তানের উচিত নিজের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেওয়া। আর এ জন্য অহেতুক সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির পথ ত্যাগ করা উচিত হবে। বরং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া সাহায্যকে বেসামরিক উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা উচিত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের মতো কাজে অধিক অর্থ ব্যয় করা উচিত।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক কিয়ানি একজন বিচক্ষণ সেনা কর্মকর্তা। তিনি নিশ্চয়ই সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে বসে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় বাস্তব পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে থাকবেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রাখা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশকে জঙ্গিমুক্ত করার মাধ্যমে একে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই ফাংশন করতে দিতে হবে। তবে রাজনীতিকেও দুর্নীতি ও কলুষমুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী নাগরিক আন্দোলন ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সুতরাং পাকিস্তানে সরকার পরিচালনায় জারদারি গংয়ের ব্যর্থতা বা সীমাবদ্ধতা এবং সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে মার্কিন খবরদারিজাত ক্ষোভকে পুঁজি করে দেশটিতে পুনরায় সেনাশাসন জারির যে কোনো উদ্যোগ হবে বস্তুত পাকিস্তান রাষ্ট্রকে বিলুপ্ত করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে (জেনে হোক আর না জেনে হোক) শামিল হওয়ার সমতুল্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুশাসনভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে স্থায়ী করার পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পাকিস্তান ভয়াবহ দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। এ জন্য ইসলামাবাদকে ভারতবিরোধিতার নীতি থেকে সরে এসে সে দেশের সঙ্গে বল্পুব্দত্ব স্থাপন করতে হবে। যদি এমন হয় যে, মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার পর সেখানে পাকিস্তান ও ভারতের সেনাবাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে, তাহলে কেমন হয়? কাশ্মীর সীমান্তেও কি জঙ্গিবিরোধী যৌথ সাঁড়াশি অভিযান চলতে পারে না? আসলে পাকিস্তানকে নিরাপত্তার সাবেকি ধারণাটি ঝেড়ে ফেলে এর আধুনিক ধারণাটি গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই পাকিস্তানের নীতি পরিবর্তনের যে বাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাকে তারা কাজে লাগাতে পারবে। ইসলামাবাদকে বুঝতে হবে যে, আঞ্চলিক কাঠামো এবং দ্বিপক্ষীয়ভাবে ভারত-পাকিস্তান বল্পুব্দত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে পারতে হবে। তখন মধ্যপ্রাচ্য থেকে মধ্য এশিয়ায় আমাদের প্রভাব অবশ্যম্ভাবী ও অপ্রতিহত হয়ে উঠবে না!
সুভাষ সাহা :সাংবাদিক
No comments