পাবনার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চাই-সরকার যখন নিজেই আক্রান্ত
পাবনা জেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় সরকারপন্থী ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হামলা, সেখানে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, স্থানীয় সাংসদের মদদপুষ্ট লোকজনের দাপটের কাছে জেলা প্রশাসনের অসহায়ত্ব—এ ধরনের বিভিন্ন বিবরণ কয়েক দিন ধরে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।
নাগরিক সমাজে যথার্থভাবেই এ ঘটনাকে ন্যক্কারজনক বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে হামলার পর সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুটি মামলা করার পর ওই সংগঠন দুটির নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবিতে মিছিল, সভা করেছেন। এমনকি ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসন কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা বরং উল্টো অভিযোগ করেছেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল বলে পরীক্ষার্থীরাই পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘ওই ঘটনা’ ঘটিয়েছেন। জেলা প্রশাসক প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। কারণ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে প্রশ্নপত্র পাবনায় এসেছিল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে।
পুরো ঘটনায় পাবনার পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ছিল হতাশাব্যঞ্জক। এখনো সেখানকার পুলিশ সুপারের আচরণ প্রশ্নবোধক। তিনি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। ঘটনার এক সপ্তাহ পরও মামলার মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে পাবনার সুধীসমাজের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে পুলিশ সুপারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেখানে যোগ দেননি। পাবনার সুধীসমাজের পক্ষ থেকে বক্তারা পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। প্রশাসনের নিরাপত্তা না থাকলে জনসাধারণের নিরাপত্তা কোথায়? ১৭ সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনাটি এতই ন্যক্কারজনক ছিল যে পাবনার জেলা প্রশাসক সুধীসমাজের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। কেঁদে ফেলেন একজন নারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমার ২১ বছরের চাকরিজীবনে এমন নারকীয় ঘটনা দেখিনি। ওরা সেদিন আমাকেও ধাওয়া করে মারধর করে। সরকারের কাজ করতে গিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত হতে হলে এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে!’
আমরা মনে করি, পাবনার এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন, এর অর্থ সরকার নিজেই আক্রান্ত হয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রতি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করছি। রাজনৈতিক ক্ষমতার অবৈধ দাপট প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মসম্পাদনের কার্যকারিতাকে ভণ্ডুল করে দিতে উদ্যত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের প্রধান নির্বাহী দেশের বাইরে আছেন—এই অজুহাতে ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব বা গড়িমসির সুযোগ নেই। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তিনি বাইরে থাকলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন নয়। তাই পাবনার সন্ত্রাসী ঘটনার হোতাদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেবে, সেটাই প্রত্যাশিত। অন্যথায় সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন, তেমনি আইনের শাসনও হবে সূদুরপরাহত।
পরীক্ষাকেন্দ্রে হামলার পর সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুটি মামলা করার পর ওই সংগঠন দুটির নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবিতে মিছিল, সভা করেছেন। এমনকি ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসন কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা বরং উল্টো অভিযোগ করেছেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল বলে পরীক্ষার্থীরাই পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘ওই ঘটনা’ ঘটিয়েছেন। জেলা প্রশাসক প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। কারণ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে প্রশ্নপত্র পাবনায় এসেছিল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে।
পুরো ঘটনায় পাবনার পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ছিল হতাশাব্যঞ্জক। এখনো সেখানকার পুলিশ সুপারের আচরণ প্রশ্নবোধক। তিনি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। ঘটনার এক সপ্তাহ পরও মামলার মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে পাবনার সুধীসমাজের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে পুলিশ সুপারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেখানে যোগ দেননি। পাবনার সুধীসমাজের পক্ষ থেকে বক্তারা পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। প্রশাসনের নিরাপত্তা না থাকলে জনসাধারণের নিরাপত্তা কোথায়? ১৭ সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনাটি এতই ন্যক্কারজনক ছিল যে পাবনার জেলা প্রশাসক সুধীসমাজের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। কেঁদে ফেলেন একজন নারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমার ২১ বছরের চাকরিজীবনে এমন নারকীয় ঘটনা দেখিনি। ওরা সেদিন আমাকেও ধাওয়া করে মারধর করে। সরকারের কাজ করতে গিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত হতে হলে এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে!’
আমরা মনে করি, পাবনার এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন, এর অর্থ সরকার নিজেই আক্রান্ত হয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রতি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করছি। রাজনৈতিক ক্ষমতার অবৈধ দাপট প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মসম্পাদনের কার্যকারিতাকে ভণ্ডুল করে দিতে উদ্যত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের প্রধান নির্বাহী দেশের বাইরে আছেন—এই অজুহাতে ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব বা গড়িমসির সুযোগ নেই। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তিনি বাইরে থাকলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন নয়। তাই পাবনার সন্ত্রাসী ঘটনার হোতাদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেবে, সেটাই প্রত্যাশিত। অন্যথায় সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন, তেমনি আইনের শাসনও হবে সূদুরপরাহত।
No comments