আবার গাড়ি ভাঙচুর

রাস্তায় এবার রিকশা শ্রমিক ও মালিকরা। বেপরোয়া গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে এই গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা। সব সড়কে চলাচলের সুযোগ, পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে রিকশা শ্রমিক-মালিকদের বিক্ষোভ ছিল সোমবার।


সেই বিক্ষোভ চলাকালে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে মৌচাক, মালিবাগ ও মগবাজার মোড় হয়ে রামপুরা এলাকায় চলে এ ভাঙচুর। তবে রিকশা মালিক-শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা ভাঙচুরে জড়িত ছিলেন না। সুযোগসন্ধানী কোনো মহল এ কাজ করে থাকতে পারে।
ইদানীং কথায় কথায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। প্রতিবাদ জানানো যেকোনো নাগরিকের অধিকার। কিন্তু সে অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। রাজধানীর যানজট কমাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তায় এর আগে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রিকশা চলাচল বন্ধ করে দিলে হয়তো রাস্তায় জট কমবে, কিন্তু রিকশানির্ভর বহু শ্রমজীবীর পরিবারে নেমে আসবে চরম দুর্ভোগ। যেকোনো রাস্তায় রিকশা বন্ধ করার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখতে হবে, সেই রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা কী আছে। কাকরাইল থেকে মৌচাক হয়ে মগবাজার ও রামপুরা পর্যন্ত রিকশা বন্ধ করার পর কি অবস্থা হবে? এসব রাস্তায় যে বাস চলাচল করে, ভুক্তভোগীরা জানেন সেসব বাসে উঠতে কেমন যুদ্ধ করতে হয়। এসব রাস্তায় বিআরটিসির বাস চলাচল করে না। যেসব বাস চলাচল করে, সেগুলোতে উঠতে প্রাণান্ত প্রতিযোগিতা করতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই এ রাস্তায় চলাচলের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তারপর রিকশা বন্ধ করলে সেটা সবার জন্যই সুবিধাজনক হতো।
প্রকাশিত একটি খবরে দেখা যায়, এখন ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলকারী রিকশার সংখ্যা ১১ লাখ। এর মধ্যে মাত্র এক লাখ বৈধ। বাকি সব রিকশাই অবৈধ। এত অবৈধ রিকশা চলাচল করলে রাস্তায় যানজট বাড়বেই। আবার প্রতিদিনই ঢাকায় মানুষ বাড়ছে। কিন্তু মানুষের তুলনায় বাড়ছে না রাস্তাঘাটের সুবিধা। কাজেই বাড়তি রিকশার চাপ পড়ছে এ রাস্তায়। সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে মৌচাক-মালিবাগ বা কাকরাইল মোড় এলাকায় প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর হলেও পুলিশের দেখা মেলেনি। পুলিশ নাকি তখন মুক্তাঙ্গনের সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। এ এলাকায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা বুঝতে পারেনি পুলিশ। 'ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা যাওয়ার' মতো পুলিশ আসার আগেই গাড়ি ভাঙচুর হয়ে গেল। কথায় কথায় ভাঙচুর করা হচ্ছে কেন? কেন পুলিশ রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না? রিকশা মালিক-শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা ভাঙচুরে জড়িত ছিলেন না_তাহলে ভাঙচুর করল কারা? তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হোক।

No comments

Powered by Blogger.