কাবিখার চাল-গম-ভালো উদ্যোগের মন্দ ফল

কাজের বিনিময়ে খাদ্য ও টেস্ট রিলিফের মতো সরকারি প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভালো ছিল এবং এখনও আছে। দরিদ্র নারী-পুরুষদের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য এসব কর্মসূচির আওতায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য দেওয়া হয়। এতে সহজশর্তে বিদেশি সহায়তাও মেলে।


গরিবের হকে ভাগ বসানোর লোকের অভাব হয় না আমাদের দেশে। তবে জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মতো জনপ্রতিনিধিরা এ অসাধু প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে গেলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু থাকে না। বুধবার সমকালে 'সিন্ডিকেটের দখলে কাবিখার চাল : এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে টনপ্রতি ২ হাজার টাকা আদায়' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ময়মনসিংহের ভালুকায় সিন্ডিকেট চক্র প্রভাবশালীদের নজরানা দেওয়ার নাম করে প্রতি প্রকল্প থেকে বিপুল ফায়দা লুটে নিচ্ছে। সরকার প্রতি টন চালের দর নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩৪ হাজার ১৯৫ টাকা। কিন্তু এ চক্র প্রকল্প সভাপতিদের কাছে টনপ্রতি মাত্র ৮-১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিচ্ছে। এ খাদ্যশস্য পরে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করা হয়। ঊর্ধ্বতন মহল এ বিষয়টি জানে না, সেটা হতে পারে না। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষেরও বিষয়টি জানার কথা। কিন্তু প্রতিবেদন থেকে ধারণা করা যায় যে, অসাধু চক্রের কাছ থেকে বখরা শুধু জনপ্রতিনিধদের নয়, তার বাইরেও অনেক হাতে পেঁৗছায়। সম্ভবত এটাই সংশ্লিষ্টদের মুখ বন্ধ রাখার কৌশল। আর এভাবেই বঞ্চিত করা হয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে।
সমকালে ভালুকার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, দেশের আরও অনেক উপজেলার চিত্র অভিন্ন। তাহলে এ ধরনের প্রকল্প চালু রাখার অর্থ কী? দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ চাল-গম যদি সচ্ছলদের ভোগে লাগে তাহলে এ কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়াই উত্তম নয় কি? তাতে সরকারের আর্থিক সাশ্রয় হবে। একটি ভালো উদ্যোগ যাদের কারণে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলো তারা কোনো ধরনের শাস্তি পাবে, এমন আশা করতে ভরসা হয় না। কারণ ভূত তো বাসা বেঁধেছে ভূত তাড়ানোর সরিষাতেই। রক্ষকরাই যে এখানে ভক্ষক। কে তাদের রুখবে?
 

No comments

Powered by Blogger.