পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার-দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়
স্বাধীন বাংলাদেশে চার দশক পেরিয়ে এসেও দলীয় বা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহৃত হওয়ার বদনাম ঘুচাতে পারেনি পুলিশ বিভাগ। গণতান্ত্রিক দেশে পুলিশের যে আচরণ প্রত্যাশিত, তা বাংলাদেশের পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই দলের নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করা হয়। পানি যেমন যখন যে পাত্রে রাখা হয়, তখন সেই পাত্রের আকার ধারণ করে, পুলিশও যেন ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের আচরণ পাল্টে ফেলতে পারে। পুলিশের এই রাজনৈতিক ব্যবহারের বিষয়টি যখন কোনো দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার মুখ থেকে উচ্চারিত হয়, বোধ করি তখন এ ব্যাপারে কিছুটা হলেও নিঃসন্দেহ হওয়া যায়।
বাংলাদেশের পুলিশ সম্প্রতি একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মাত্র ১১ দিনে একটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে আদালতে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এই মহৎ কর্মটি সাধন করেছে। এই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশই এখন পর্যন্ত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সুরাহা করতে পারেনি। উচ্চ আদালতে গিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্তাসহ তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে এসেছেন। সেই পুলিশই আবার ১১ দিনের মাথায় হরতালে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিরোধী দলের প্রথম সারির নেতৃবৃন্দসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অথচ যে বিএনপি নেতা গুম হওয়ায় হরতাল করা হয়েছিল, সেই নেতার কোনো সন্ধান তারা দিতে পারেনি। একই দিনে রাজধানীতে একটি গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার বলেছেন, 'পুলিশকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে।' বিষয়টিকে তিনি পুলিশের 'রাজনৈতিক দাসত্ব' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ অনেক পুরনো। অতীতে দেখা গেছে, রাজনৈতিক আন্দোলন জোরদার হলে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ইতিপূর্বে হরতালের আগে গণগ্রেপ্তারের ঘটনাও দেখা গেছে। আবার, এই গণগ্রেপ্তারের পর পুলিশের জামিনবাণিজ্যও আলোচিত হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ পাকিস্তান আমলে হয়েছে, স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়ও হয়েছে, নূর হোসেনসহ অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ হয়নি, পুলিশের আইন বদল হয়নি।
রাজনৈতিক দলের নিজস্ব স্বার্থে তথা বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের জন্য পুলিশকে ব্যবহারের অভিযোগ সব সরকারের আমলেই করা হয়। পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার কমাতে হলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ পরিহার করে পুলিশকে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে, পুলিশের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হতে গিয়ে পুলিশ নিজেদের কাজ তথা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহারের কুফল সব রাজনৈতিক দলই কমবেশি ভোগ করেছে। ইতিহাস বলছে, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হলেও তা দেশের জন্য কোনো মঙ্গল বয়ে আনেনি। কাজেই পুলিশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পুলিশকে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নে ব্যবহার না করে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহার করতে হবে।
বাংলাদেশের পুলিশ সম্প্রতি একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মাত্র ১১ দিনে একটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে আদালতে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এই মহৎ কর্মটি সাধন করেছে। এই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশই এখন পর্যন্ত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সুরাহা করতে পারেনি। উচ্চ আদালতে গিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্তাসহ তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে এসেছেন। সেই পুলিশই আবার ১১ দিনের মাথায় হরতালে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিরোধী দলের প্রথম সারির নেতৃবৃন্দসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অথচ যে বিএনপি নেতা গুম হওয়ায় হরতাল করা হয়েছিল, সেই নেতার কোনো সন্ধান তারা দিতে পারেনি। একই দিনে রাজধানীতে একটি গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার বলেছেন, 'পুলিশকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে।' বিষয়টিকে তিনি পুলিশের 'রাজনৈতিক দাসত্ব' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ অনেক পুরনো। অতীতে দেখা গেছে, রাজনৈতিক আন্দোলন জোরদার হলে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ইতিপূর্বে হরতালের আগে গণগ্রেপ্তারের ঘটনাও দেখা গেছে। আবার, এই গণগ্রেপ্তারের পর পুলিশের জামিনবাণিজ্যও আলোচিত হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ পাকিস্তান আমলে হয়েছে, স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়ও হয়েছে, নূর হোসেনসহ অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ হয়নি, পুলিশের আইন বদল হয়নি।
রাজনৈতিক দলের নিজস্ব স্বার্থে তথা বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের জন্য পুলিশকে ব্যবহারের অভিযোগ সব সরকারের আমলেই করা হয়। পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার কমাতে হলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ পরিহার করে পুলিশকে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে, পুলিশের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হতে গিয়ে পুলিশ নিজেদের কাজ তথা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহারের কুফল সব রাজনৈতিক দলই কমবেশি ভোগ করেছে। ইতিহাস বলছে, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হলেও তা দেশের জন্য কোনো মঙ্গল বয়ে আনেনি। কাজেই পুলিশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পুলিশকে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নে ব্যবহার না করে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহার করতে হবে।
No comments