পবিত্র কোরআনের আলো-মুরতাদ জাতিকে আল্লাহ কিভাবে সঠিক পথ দেখাবেন?
*৮৬. কাইফা ইয়াহ্দিল্লাহু ক্বাওমান কাফারূ বা'দা ঈমা-নিহিম ওয়াশাহিদূ আন্নার্ রাসূলা হাক্বুন ওয়া জা-আহুমুল বায়্যিনাতি; ওয়াল্লাহু লা-ইয়াহ্দিল ক্বাওমায্ যা-লিমীন। *৮৭. উলা-ইকা জাযা-উহুম আন্না আ'লাইহিম লা'নাতাল্লাহি ওয়ালমালা-ইকাতি ওয়ান্না-ছি আজমায়ী'ন।
*৮৮. খা-লিদীনা ফীহা- লা-ইউখাফ্ফিফু আ'নহুমুল আ'যা-বু ওয়ালা-হুম ইউন্যারূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮৬-৮৮]
অনুবাদ
*৮৬. এমন জাতিকে আল্লাহ কিভাবে সঠিক পথ দেখাবেন, যারা ইমানের আলো পাওয়ার পরও কুফরিতে লিপ্ত। অথচ এরাই সাক্ষ্য দিয়েছিল যে আল্লাহর রাসুল সত্যি এবং এদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনরাজি এসেছিল, আল্লাহ তায়ালা কখনোই সীমালঙ্ঘনকারী জাতিকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন না।
*৮৭. এসব লোকের কাজের প্রতিফল হচ্ছে, তাদের ওপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও মানবজাতি সবার সম্মিলিত অভিশাপ।
*৮৮. এই অভিশাপে তারা অনন্তকাল ধরে পড়ে থাকবে। তাদের ওপর শাস্তির মাত্রা কমানো হবে না এবং শাস্তি থেকে তাদের বিরামও দেওয়া হবে না।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে মুরতাদদের ব্যাপারে। মুরতাদ বলতে তাদেরকেই বোঝায়, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে স্বীকার করে সত্য পথে আসার পর পুনরায় তা অস্বীকার করে বিপথে ফিরে যায়। এভাবে যারা ফিরে যায় তারা নিজেরা সত্য পথ ও সঠিক পথে আছে বলেই অনেক সময় দাবি করে। প্রকৃতপক্ষে এরা বিভ্রান্ত হয়ে এটা করে। বিপথগামীরা অনেক সময়ই বুঝতে পারে না যে তারা বিপথগামী, তারা নিজেদের ভ্রান্ত পথকেই সঠিক পথ মনে করে। কারণ তারা নিজেদের অসৎ স্বার্থে বিপথগামী হয়। এ আয়াতে যেসব মুরতাদকে সরাসরি উদ্দেশ্য করা হয়েছে, তারা মূলত মদিনার বিভ্রান্ত ইহুদি সম্প্রদায়। আয়াতের ভাষাও এদেরকে কওম বা জাতি বলা হয়েছে। এরা মূলত ইহুদি জাতি।
রাসুল (সা.) যখন মক্কার কোরাইশদের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে মদিনায় হিজরত করেন তখন মদিনার ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকেই তাঁকে সাদরে বরণ করে নিয়েছিল। এসব ইহুদি তখন প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা না দিলেও এক প্রকারে আল্লাহর নবী ও তাঁর ধর্ম গ্রহণই করেছিল। তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে তাওরাতে যে শেষ নবীর কথা আছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-ই সেই শেষ নবী। কিন্তু পরে তাদের বৈষয়িক হিসাব-নিকাশ, আভিজাত্যের অহমিকা ও কায়েমি স্বার্থ রক্ষার কূটকৌশল তাদেরকে সত্যের পথে এগুতে দেয়নি। তারা শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছে। তারা পিছিয়ে গিয়ে রাসুলের সঙ্গে গোপন শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছে। তারা মক্কার মুশরেক-কোরাইশদের সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করেছে। এ পটভূমিতেই আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে তাদের নজিরবিহীন করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে। সত্যের কাছাকাছি এসেও ফিরে যাওয়া ওই সব ইহুদির পরিণতি কত ভয়াবহ হয়েছিল তা আমরা ইতিহাস লক্ষ করলেই দেখতে পাই।
মুরতাদ জাতির স্বরূপ উল্লেখ করে ৮৭ ও ৮৮ নম্বর আয়াতে তাদের পরিণতির কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে 'এসব লোকের কাজের প্রতিফল হচ্ছে, তাদের ওপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও মানবজাতি সবার সম্মিলিত অভিশাপ। আর এ অভিশাপে তারা অনন্তকাল ধরে পড়ে থাকবে...'
ইতিহাস লক্ষ করলে আমরা দেখি, ইসলাম থেকে মুখ ফেরানো সেসব ইহুদিকে আরব ভূমি থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল তাদের কর্মফল হিসেবেই। এরপর হাজার বছর ধরে তারা বিশ্বের দেশে দেশে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়িয়েছে। এরপর সাম্প্রতিককালে মুসলমানদের অধঃপতনের সুযোগে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বদান্যে মধ্যপ্রাচ্যে তারা আবার ঠিকানা লাভ করেছে। কিন্তু বিশ্ববাসীর অভিশাপ তাদের ওপর রয়েই গেছে। অথচ এই ইহুদিরা ছিল বিশ্বের সর্বাধিক সেরা নবী-রাসুলদের বংশধর।
অনুবাদ
*৮৬. এমন জাতিকে আল্লাহ কিভাবে সঠিক পথ দেখাবেন, যারা ইমানের আলো পাওয়ার পরও কুফরিতে লিপ্ত। অথচ এরাই সাক্ষ্য দিয়েছিল যে আল্লাহর রাসুল সত্যি এবং এদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনরাজি এসেছিল, আল্লাহ তায়ালা কখনোই সীমালঙ্ঘনকারী জাতিকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন না।
*৮৭. এসব লোকের কাজের প্রতিফল হচ্ছে, তাদের ওপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও মানবজাতি সবার সম্মিলিত অভিশাপ।
*৮৮. এই অভিশাপে তারা অনন্তকাল ধরে পড়ে থাকবে। তাদের ওপর শাস্তির মাত্রা কমানো হবে না এবং শাস্তি থেকে তাদের বিরামও দেওয়া হবে না।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে মুরতাদদের ব্যাপারে। মুরতাদ বলতে তাদেরকেই বোঝায়, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে স্বীকার করে সত্য পথে আসার পর পুনরায় তা অস্বীকার করে বিপথে ফিরে যায়। এভাবে যারা ফিরে যায় তারা নিজেরা সত্য পথ ও সঠিক পথে আছে বলেই অনেক সময় দাবি করে। প্রকৃতপক্ষে এরা বিভ্রান্ত হয়ে এটা করে। বিপথগামীরা অনেক সময়ই বুঝতে পারে না যে তারা বিপথগামী, তারা নিজেদের ভ্রান্ত পথকেই সঠিক পথ মনে করে। কারণ তারা নিজেদের অসৎ স্বার্থে বিপথগামী হয়। এ আয়াতে যেসব মুরতাদকে সরাসরি উদ্দেশ্য করা হয়েছে, তারা মূলত মদিনার বিভ্রান্ত ইহুদি সম্প্রদায়। আয়াতের ভাষাও এদেরকে কওম বা জাতি বলা হয়েছে। এরা মূলত ইহুদি জাতি।
রাসুল (সা.) যখন মক্কার কোরাইশদের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে মদিনায় হিজরত করেন তখন মদিনার ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকেই তাঁকে সাদরে বরণ করে নিয়েছিল। এসব ইহুদি তখন প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা না দিলেও এক প্রকারে আল্লাহর নবী ও তাঁর ধর্ম গ্রহণই করেছিল। তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে তাওরাতে যে শেষ নবীর কথা আছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-ই সেই শেষ নবী। কিন্তু পরে তাদের বৈষয়িক হিসাব-নিকাশ, আভিজাত্যের অহমিকা ও কায়েমি স্বার্থ রক্ষার কূটকৌশল তাদেরকে সত্যের পথে এগুতে দেয়নি। তারা শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছে। তারা পিছিয়ে গিয়ে রাসুলের সঙ্গে গোপন শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছে। তারা মক্কার মুশরেক-কোরাইশদের সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করেছে। এ পটভূমিতেই আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে তাদের নজিরবিহীন করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে। সত্যের কাছাকাছি এসেও ফিরে যাওয়া ওই সব ইহুদির পরিণতি কত ভয়াবহ হয়েছিল তা আমরা ইতিহাস লক্ষ করলেই দেখতে পাই।
মুরতাদ জাতির স্বরূপ উল্লেখ করে ৮৭ ও ৮৮ নম্বর আয়াতে তাদের পরিণতির কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে 'এসব লোকের কাজের প্রতিফল হচ্ছে, তাদের ওপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও মানবজাতি সবার সম্মিলিত অভিশাপ। আর এ অভিশাপে তারা অনন্তকাল ধরে পড়ে থাকবে...'
ইতিহাস লক্ষ করলে আমরা দেখি, ইসলাম থেকে মুখ ফেরানো সেসব ইহুদিকে আরব ভূমি থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল তাদের কর্মফল হিসেবেই। এরপর হাজার বছর ধরে তারা বিশ্বের দেশে দেশে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়িয়েছে। এরপর সাম্প্রতিককালে মুসলমানদের অধঃপতনের সুযোগে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বদান্যে মধ্যপ্রাচ্যে তারা আবার ঠিকানা লাভ করেছে। কিন্তু বিশ্ববাসীর অভিশাপ তাদের ওপর রয়েই গেছে। অথচ এই ইহুদিরা ছিল বিশ্বের সর্বাধিক সেরা নবী-রাসুলদের বংশধর।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments