কালের পুরাণ-নারায়ণগঞ্জে আটকে গেল নারীর ক্ষমতায়ন? by সোহরাব হাসান
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পেছনে অন্যান্য কারণের মধ্যে একটি ছিল দলীয় প্রার্থী বাছাই। সে সময় শেখ হাসিনা যাঁদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন, তাঁদের (দু-একজন ব্যতিক্রম বাদে) বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাস্তানি কিংবা বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। যে কারণে প্রার্থী পদ থেকে বাদ পড়েছিলেন ঢাকার মকবুল হোসেন, হাজি সেলিম, নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান, ফেনীর জয়নাল হাজারী।
১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগের সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন নেতাও মনোনয়ন পাননি, যাঁদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম, অধ্যাপক আবু সাইয়ীদ। শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রিসভায় অনেক অনভিজ্ঞ বা দুর্বল ব্যক্তি আছেন, কিন্তু কারও কপালে গডফাদার কিংবা মহাদুর্নীতিবাজের তকমা ছিল না। অবশ্য গত আড়াই বছরে সেই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আর নেই। কোনো কোনো মন্ত্রীর নাম বললেই যে চেহারা জনমনে ভেসে ওঠে, তা মোটেই উজ্জ্বল নয়।
কোনো কোনো মন্ত্রীর কার্যক্রম দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যাপকভাবে সমালোচিত। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বিশ্বব্যাংক সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছে, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে আছে। বিষয়টি সুরাহা না হলে তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো অর্থ দেবে না। (প্রথম আলো, ৭.১০.১১)
মন্ত্রিসভায় রদবদল, পরিবর্তন কিংবা ছাঁটাই-বাছাই যে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সহজ কথাটি মানতে চান না। ঝাড়াই-মোছাই করে মন্ত্রিসভা থেকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিদায় করে বাকি মেয়াদটা সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মনোযোগী হলে আওয়ামী লীগের ফের ক্ষমতায় আসার ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সংসদের বাইরে বা ভেতরে কেউ ব্যর্থ মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি করলেই প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে বলেন, তাতে মনে হয় তিনি দুর্নীতিবাজদেরই রক্ষা করতে চাইছেন। উইকিলিকস এক মারাত্মক তথ্য হাজির করেছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভায় এমন কাউকে নেননি, যিনি বা যাঁরা তাঁর চ্যালেঞ্জ হতে পারেন। যাঁরা মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ খুবই যোগ্য, সততার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ। কিন্তু অধিকাংশের প্রধান যোগ্যতা হলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য।
আড়াই বছরের মাথায় এসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। যে দলটি মাত্র কয়েক ঘণ্টার আলোচনায় সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দিল, সেই দল নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদের প্রার্থী ঠিক করতে পারল না। কী কঠিন বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ! দলের শীর্ষ নেতৃত্বও মনে করে, সাবেক পৌর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়, তিনি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাস বা দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তার পরও তাঁকে সমর্থন দিতে পারছে না দল। কোথায় হাত-পা বাঁধা আছে, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা নেতৃত্বের কাছে স্বভাবতই তা জানতে চাইবেন।
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা এত দিন বলে আসছিলেন, ‘বিএনপিতে সব চোর-বাটপার, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের মনোনয়ন দিয়েছিল বলেই জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগ কখনোই সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেয় না, সমর্থন করে না।’ কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এসেই সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেল!
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রধান প্রার্থী—আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াত আইভী ও শামীম ওসমান এবং বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা ইতিমধ্যে তৈমুর আলম খন্দকারকে সমর্থন দিয়েছেন। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে ডেকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে ফেলারও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীও দুই প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি। এর পেছনে রহস্য কী? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো এতটা দুর্বল নন। তিনি যদি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের কথা শুনতেন, দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মনোভাব জানতে চেষ্টা করতেন, দেখতেন অধিকাংশই সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে। চাইলে তিনি গোয়েন্দা প্রতিবেদনও দেখে নিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী যে গরিব-দুঃখী মানুষের রাজনীতির কথা বলেন, তাঁদের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা কার আছে? অবশ্যই আইভীর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন প্রধানমন্ত্রীকে জেলে পুরেছিল, তখন কারা তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছেন, নারায়ণগঞ্জে তাঁর পক্ষে জনমত গড়ে তুলেছেন? আইভী ও তাঁর অনুসারীরা। তখন শামীম ওসমান, নাসিম ওসমানের খোঁজ ছিল না। নাসিম ওসমান স্বৈরাচারী এরশাদের দলে আর শামীম ওসমান ভারত, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে কানাডা পাড়ি জমিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মী দেশেই ছিলেন, পালিয়ে যাননি। তাঁদের অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। শামীম ওসমান কিন্তু ১/১১-এর মহাপ্রলয়ের পর পালাননি, পালিয়েছিলেন ২০০১ সালের নির্বাচনের ফল প্রকাশের রাতেই। তাঁর আগে তিনি খালেদা জিয়া, মতিউর রহমান নিজামী প্রমুখকে নারায়ণগঞ্জে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। অন্যকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে যে নেতা নিজ এলাকায় সাত বছর নিষিদ্ধ ছিলেন, সেই নেতাকে সমর্থন জানানোর জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এত উদ্গ্রীব! শামীম ওসমান এখন দলের কোনো পদে নেই, সরকারের কোনো পদে নেই। তার পরও নারায়ণগঞ্জের সবকিছু চলে তাঁর কথায়। তাঁর কাছে সাংসদ, ডিসি, এসপি কিছুই না। প্রকাশ্য সভায় স্থানীয় সাংসদ কবরীকে তেড়ে আসার দৃশ্যও দেশবাসী টেলিভিশনের কল্যাণে দেখেছে।
বুধবারের প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ছিল ‘শামীমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলা বেশি, তৈমুরের সব দুর্নীতির মামলা’। এই প্রতিবেদনে বলা হয়: ‘শামীমের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটির কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে অস্ত্র আইনেও মামলা রয়েছে। আছে সন্ত্রাস, দাঙ্গা-হাঙ্গামার মামলা। শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে অতীতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় নয়টি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটিসহ ১২টি মামলা ছিল। এর মধ্যে বর্তমান সরকার তিনটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। একটি হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে। দুর্নীতি ও আয়কর ফাঁকির মামলায় নিম্ন আদালতে শামীম দণ্ডিত হলেও হাইকোর্ট থেকে ছাড়া পান।’ ১৯৯৫, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সদর থানায় তিনটি মামলা থেকেও শামীম এর আগে খালাস পেয়েছেন। ১৯৯৪ সালের সদর থানায় দুটি মামলার আসামি ছিলেন শামীম। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের আমলে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পান।’
তৈমুর আলমের বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতির মামলা আছে। বর্তমানে সচল আছে নয়টি। তিনটিতে নিম্ন আদালতে শাস্তি হলেও হাইকোর্টে স্থগিত আছে। এ ছাড়া অতীতে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনেও মামলা হয়েছিল। সেই মামলা বিএনপি ক্ষমতায় এসে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শামীম ওসমানের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এরাই হলেন আমাদের জনপ্রতিনিধি! মামলার আসামি হওয়াই যেন নেতা, সাংসদ বা মেয়র হওয়ার পূর্বশর্ত।
নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও তৈমুর আলম খন্দকার দুই বৃত্তের দুটি ফুল। একজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগ। আরেকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির। বিআরটিসির চেয়ারম্যান হয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করেছেন। এর পুরস্কার হিসেবে বিএনপি তাঁকে বেছে নিয়েছে, এখন আওয়ামী লীগও কি শামীম ওসমানকে সমর্থন জানিয়ে দলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চায়? তৈমুরের বিরুদ্ধে ১২ মামলা, শামীমের বিরুদ্ধে ১৭টি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় হাইকমান্ড দ্বিধাবিভক্ত। এক পক্ষ শামীম ওসমানের পক্ষে, আরেক পক্ষ বিপক্ষে। শামীমের পক্ষের লোকেরা বলছেন, ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জকে ঠিক রাখতে হলে নাকি শামীম ওসমানের মতো শক্ত লোক দরকার। রাজনীতি কি মল্লযুদ্ধের স্থান? রাজনীতি কি পেশিশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না নীতি ও আদর্শ দ্বারা। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া না হলে ২০০৮ সালের প্রত্যাখ্যাতদের আবার পুনর্বাসন করছে কেন? এই পুনর্বাসন-প্রক্রিয়া লক্ষ্মীপুরেও দেখা গেছে খুনির মৃত্যুদণ্ড মওকুফের মধ্য দিয়ে। যে শামীম ওসমানের জন্য ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জে দলের ভরাডুবি ঘটল, দলকে গডফাদার ও সন্ত্রাসীর দলের বদনাম নিতে হলো, সেই শামীম ওসমানকে সমর্থনের জন্য দলের একাংশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের একটাই যুক্তি, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির আইভী পেরে উঠবেন না তৈমুর আলম খন্দকারের সঙ্গে। তাহলে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ কি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?
শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব কাউকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পত্রিকায় খবর বের হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেউ তা অস্বীকার করেননি। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বরাতে চ্যানেল আইয়ে এ খবর প্রচার হলে শামীম শিবিরে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। কেননা, তিনি প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন আছে। দুই দিন আগে হানিফ সাহেবও নারায়ণগঞ্জে ভূ-রাজনীতি ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ‘সাবেক পৌরসভা ও বর্তমান সিটি নির্বাচন এক নয়।’ অর্থাৎ প্রচ্ছন্নভাবে শামীমকেই সমর্থন করেছিলেন।
কয়েক মাস আগে একটি বিখ্যাত সাময়িকীতে বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী নারীনেত্রীর তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে তাঁর নাম। এটি বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বহির্বিশ্ব যেসব কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশংসা করে, তার অন্যতম হলো নারীর ক্ষমতায়ন। এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী একটি সমাবেশে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর সরকারের সফলতা তুলে ধরেছেন। উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এমন একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, সংসদ নেতা ও উপনেতা নারী। কৃষি, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারী, যে দেশের উচ্চবিচারালয়ে ও জনপ্রশাসনের শীর্ষ পদে নারীরা আছেন। ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার পদেও একজন নারী নেওয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নারীর ক্ষমতায়নের এই ধারা মনে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে এসে আটকে গেছে। দেশে ফেরার পর সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তাঁরা নারী-পুরুষ নন, প্রার্থীর যোগ্যতা ও ক্ষমতা দেখেই সমর্থন জানাবেন।’ সৎ, যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন—সেটাই তো নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের কর্মীদের দাবি ছিল। তৃণমূলের সমর্থন আইভীর পক্ষে, নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের সমর্থন আইভীর পক্ষে। তার পরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। এর পেছনে রহস্য কী?
আইভীর পক্ষে মাস্তান নেই, চাঁদাবাজ নেই, সন্ত্রাসী নেই, পেশিশক্তি নেই। একজন নারী হয়েও আট বছরের বেশি সময় ধরে তিনি অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা পরিচালনা করেছেন, বিপদে-আপদে সব সময় দলের সঙ্গে ছিলেন এবং আছেন—এসবই কি তাঁর অযোগ্যতা?
তাহলে কি আমরা ধরে নেব, নারীর ক্ষমতায়ন নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, বোস্টন, ঢাকা ঘুরে নারায়ণগঞ্জে এসে থমকে আছে! আর এক পা-ও এগোবে না।
সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।
sohrab03@dhaka.net
কোনো কোনো মন্ত্রীর কার্যক্রম দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যাপকভাবে সমালোচিত। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বিশ্বব্যাংক সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছে, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে আছে। বিষয়টি সুরাহা না হলে তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো অর্থ দেবে না। (প্রথম আলো, ৭.১০.১১)
মন্ত্রিসভায় রদবদল, পরিবর্তন কিংবা ছাঁটাই-বাছাই যে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সহজ কথাটি মানতে চান না। ঝাড়াই-মোছাই করে মন্ত্রিসভা থেকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিদায় করে বাকি মেয়াদটা সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মনোযোগী হলে আওয়ামী লীগের ফের ক্ষমতায় আসার ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সংসদের বাইরে বা ভেতরে কেউ ব্যর্থ মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি করলেই প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে বলেন, তাতে মনে হয় তিনি দুর্নীতিবাজদেরই রক্ষা করতে চাইছেন। উইকিলিকস এক মারাত্মক তথ্য হাজির করেছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভায় এমন কাউকে নেননি, যিনি বা যাঁরা তাঁর চ্যালেঞ্জ হতে পারেন। যাঁরা মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ খুবই যোগ্য, সততার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ। কিন্তু অধিকাংশের প্রধান যোগ্যতা হলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য।
আড়াই বছরের মাথায় এসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। যে দলটি মাত্র কয়েক ঘণ্টার আলোচনায় সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দিল, সেই দল নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদের প্রার্থী ঠিক করতে পারল না। কী কঠিন বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ! দলের শীর্ষ নেতৃত্বও মনে করে, সাবেক পৌর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়, তিনি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাস বা দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তার পরও তাঁকে সমর্থন দিতে পারছে না দল। কোথায় হাত-পা বাঁধা আছে, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা নেতৃত্বের কাছে স্বভাবতই তা জানতে চাইবেন।
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা এত দিন বলে আসছিলেন, ‘বিএনপিতে সব চোর-বাটপার, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের মনোনয়ন দিয়েছিল বলেই জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগ কখনোই সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেয় না, সমর্থন করে না।’ কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এসেই সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেল!
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রধান প্রার্থী—আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াত আইভী ও শামীম ওসমান এবং বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা ইতিমধ্যে তৈমুর আলম খন্দকারকে সমর্থন দিয়েছেন। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে ডেকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে ফেলারও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীও দুই প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি। এর পেছনে রহস্য কী? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো এতটা দুর্বল নন। তিনি যদি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের কথা শুনতেন, দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মনোভাব জানতে চেষ্টা করতেন, দেখতেন অধিকাংশই সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে। চাইলে তিনি গোয়েন্দা প্রতিবেদনও দেখে নিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী যে গরিব-দুঃখী মানুষের রাজনীতির কথা বলেন, তাঁদের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা কার আছে? অবশ্যই আইভীর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন প্রধানমন্ত্রীকে জেলে পুরেছিল, তখন কারা তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছেন, নারায়ণগঞ্জে তাঁর পক্ষে জনমত গড়ে তুলেছেন? আইভী ও তাঁর অনুসারীরা। তখন শামীম ওসমান, নাসিম ওসমানের খোঁজ ছিল না। নাসিম ওসমান স্বৈরাচারী এরশাদের দলে আর শামীম ওসমান ভারত, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে কানাডা পাড়ি জমিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মী দেশেই ছিলেন, পালিয়ে যাননি। তাঁদের অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। শামীম ওসমান কিন্তু ১/১১-এর মহাপ্রলয়ের পর পালাননি, পালিয়েছিলেন ২০০১ সালের নির্বাচনের ফল প্রকাশের রাতেই। তাঁর আগে তিনি খালেদা জিয়া, মতিউর রহমান নিজামী প্রমুখকে নারায়ণগঞ্জে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। অন্যকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে যে নেতা নিজ এলাকায় সাত বছর নিষিদ্ধ ছিলেন, সেই নেতাকে সমর্থন জানানোর জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এত উদ্গ্রীব! শামীম ওসমান এখন দলের কোনো পদে নেই, সরকারের কোনো পদে নেই। তার পরও নারায়ণগঞ্জের সবকিছু চলে তাঁর কথায়। তাঁর কাছে সাংসদ, ডিসি, এসপি কিছুই না। প্রকাশ্য সভায় স্থানীয় সাংসদ কবরীকে তেড়ে আসার দৃশ্যও দেশবাসী টেলিভিশনের কল্যাণে দেখেছে।
বুধবারের প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ছিল ‘শামীমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলা বেশি, তৈমুরের সব দুর্নীতির মামলা’। এই প্রতিবেদনে বলা হয়: ‘শামীমের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটির কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে অস্ত্র আইনেও মামলা রয়েছে। আছে সন্ত্রাস, দাঙ্গা-হাঙ্গামার মামলা। শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে অতীতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় নয়টি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটিসহ ১২টি মামলা ছিল। এর মধ্যে বর্তমান সরকার তিনটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। একটি হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে। দুর্নীতি ও আয়কর ফাঁকির মামলায় নিম্ন আদালতে শামীম দণ্ডিত হলেও হাইকোর্ট থেকে ছাড়া পান।’ ১৯৯৫, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সদর থানায় তিনটি মামলা থেকেও শামীম এর আগে খালাস পেয়েছেন। ১৯৯৪ সালের সদর থানায় দুটি মামলার আসামি ছিলেন শামীম। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের আমলে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পান।’
তৈমুর আলমের বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতির মামলা আছে। বর্তমানে সচল আছে নয়টি। তিনটিতে নিম্ন আদালতে শাস্তি হলেও হাইকোর্টে স্থগিত আছে। এ ছাড়া অতীতে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনেও মামলা হয়েছিল। সেই মামলা বিএনপি ক্ষমতায় এসে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শামীম ওসমানের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এরাই হলেন আমাদের জনপ্রতিনিধি! মামলার আসামি হওয়াই যেন নেতা, সাংসদ বা মেয়র হওয়ার পূর্বশর্ত।
নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও তৈমুর আলম খন্দকার দুই বৃত্তের দুটি ফুল। একজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগ। আরেকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির। বিআরটিসির চেয়ারম্যান হয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করেছেন। এর পুরস্কার হিসেবে বিএনপি তাঁকে বেছে নিয়েছে, এখন আওয়ামী লীগও কি শামীম ওসমানকে সমর্থন জানিয়ে দলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চায়? তৈমুরের বিরুদ্ধে ১২ মামলা, শামীমের বিরুদ্ধে ১৭টি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় হাইকমান্ড দ্বিধাবিভক্ত। এক পক্ষ শামীম ওসমানের পক্ষে, আরেক পক্ষ বিপক্ষে। শামীমের পক্ষের লোকেরা বলছেন, ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জকে ঠিক রাখতে হলে নাকি শামীম ওসমানের মতো শক্ত লোক দরকার। রাজনীতি কি মল্লযুদ্ধের স্থান? রাজনীতি কি পেশিশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না নীতি ও আদর্শ দ্বারা। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া না হলে ২০০৮ সালের প্রত্যাখ্যাতদের আবার পুনর্বাসন করছে কেন? এই পুনর্বাসন-প্রক্রিয়া লক্ষ্মীপুরেও দেখা গেছে খুনির মৃত্যুদণ্ড মওকুফের মধ্য দিয়ে। যে শামীম ওসমানের জন্য ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জে দলের ভরাডুবি ঘটল, দলকে গডফাদার ও সন্ত্রাসীর দলের বদনাম নিতে হলো, সেই শামীম ওসমানকে সমর্থনের জন্য দলের একাংশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের একটাই যুক্তি, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির আইভী পেরে উঠবেন না তৈমুর আলম খন্দকারের সঙ্গে। তাহলে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ কি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?
শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব কাউকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পত্রিকায় খবর বের হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেউ তা অস্বীকার করেননি। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বরাতে চ্যানেল আইয়ে এ খবর প্রচার হলে শামীম শিবিরে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। কেননা, তিনি প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন আছে। দুই দিন আগে হানিফ সাহেবও নারায়ণগঞ্জে ভূ-রাজনীতি ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ‘সাবেক পৌরসভা ও বর্তমান সিটি নির্বাচন এক নয়।’ অর্থাৎ প্রচ্ছন্নভাবে শামীমকেই সমর্থন করেছিলেন।
কয়েক মাস আগে একটি বিখ্যাত সাময়িকীতে বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী নারীনেত্রীর তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে তাঁর নাম। এটি বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বহির্বিশ্ব যেসব কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশংসা করে, তার অন্যতম হলো নারীর ক্ষমতায়ন। এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী একটি সমাবেশে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর সরকারের সফলতা তুলে ধরেছেন। উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এমন একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, সংসদ নেতা ও উপনেতা নারী। কৃষি, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারী, যে দেশের উচ্চবিচারালয়ে ও জনপ্রশাসনের শীর্ষ পদে নারীরা আছেন। ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার পদেও একজন নারী নেওয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নারীর ক্ষমতায়নের এই ধারা মনে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে এসে আটকে গেছে। দেশে ফেরার পর সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তাঁরা নারী-পুরুষ নন, প্রার্থীর যোগ্যতা ও ক্ষমতা দেখেই সমর্থন জানাবেন।’ সৎ, যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন—সেটাই তো নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের কর্মীদের দাবি ছিল। তৃণমূলের সমর্থন আইভীর পক্ষে, নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের সমর্থন আইভীর পক্ষে। তার পরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। এর পেছনে রহস্য কী?
আইভীর পক্ষে মাস্তান নেই, চাঁদাবাজ নেই, সন্ত্রাসী নেই, পেশিশক্তি নেই। একজন নারী হয়েও আট বছরের বেশি সময় ধরে তিনি অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা পরিচালনা করেছেন, বিপদে-আপদে সব সময় দলের সঙ্গে ছিলেন এবং আছেন—এসবই কি তাঁর অযোগ্যতা?
তাহলে কি আমরা ধরে নেব, নারীর ক্ষমতায়ন নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, বোস্টন, ঢাকা ঘুরে নারায়ণগঞ্জে এসে থমকে আছে! আর এক পা-ও এগোবে না।
সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।
sohrab03@dhaka.net
No comments