পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ী নৌপথ-স্থায়ী ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দিন
কৃষিপ্রধান উত্তরবঙ্গের বিস্তৃত এলাকায় মালামাল, বিশেষ করে সার ও ডিজেল পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ীতে নাব্যতা সংকটের খবর নতুন নয়। প্রতিবছরই শুকনো মৌসুম ঘিরে মালবাহী জাহাজ আটকে থাকার খবর সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ড্রেজিংয়ের তোড়জোড়ও শুরু হয়।
এ বছরের শুকনো মৌসুমে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তাদের 'বিশেষ সতর্কীকরণ নদ বিজ্ঞপ্তি'। বুধবার সমকালে মুদ্রিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ী নৌপথের নাব্যতাসীমা ও সেটি সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষের তৎপরতার কথা জানানো হয়েছে। আমাদের মনে আছে, এর আগে গত অক্টোবরেও একই ধরনের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হয়েছিল। তাতে সতর্ক করে বলা হয়েছিল যে, সাত ফুটের বেশি ড্রাফটসম্পন্ন (পানির নিচের অংশ) জাহাজ যেন ওই পথে চলাচল না করে। নতুন বিজ্ঞপ্তির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, কতিপয় জাহাজ তা মেনে চলছে না। ফলে নৌরুটে জাহাজ আটকে যেমন অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ড্রেজিং ও বান্ডালিং করে সুরক্ষিত খাড়িও ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তখন সাত ফুট নাব্যতাও অক্ষুণ্ন থাকবে না। নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের এই উদ্বেগ যথার্থ। এও উৎসাহব্যঞ্জক যে তারা আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে সমকালের সম্পাদকীয় কলামে পরামর্শ দিয়েছি যে, কেবল শুকনো মৌসুমে নাব্যতা রক্ষার তোড়জোড় না করে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথটি নিয়ে স্থায়ী চিন্তা-ভাবনা জরুরি। এই বিজ্ঞপ্তি সেদিক থেকে এক ধাপ অগ্রগতি। এর মধ্য দিয়ে নৌপথ সচল রাখতে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাও স্পষ্ট হয়েছে। আমরা মনে করি, নৌচালক ও জাহাজ মালিকদেরও এখন দায়িত্বশীল হওয়ার সময় এসেছে। সবাই যদি সতর্ক হয়, তাহলে বিপত্তি এড়ানো সহজ। একই সঙ্গে স্থায়ী ব্যবস্থার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যমুনা নদী ইতিমধ্যেই এত বিস্তৃত হয়েছে যে কেবল ড্রেজিং করে পরিস্থিতির উন্নয়ন কঠিন। অথচ নদীটি দিয়ে যে পরিমাণ পানি উজান থেকে আসে, তা একটি চ্যানেলে প্রবাহিত করতে পারলে নাব্যতা রক্ষা কঠিন নয়। সংশ্লিষ্টরা সেদিকেও মনোযোগ দেবেন বলে প্রত্যাশা।
No comments