শ্রদ্ধাঞ্জলি-স্টিভ জবস, এক ঝরে পড়া তরুণের বিদায়! by জহিরুল আলম
নিজের মুখে জীবনের গল্প বলেছিলেন স্টিভ জবস। কদিন আগেও শুনছিলাম তাঁর সেই গল্প; অ্যাপল থেকে তাঁর বিদায়ের পর মনটা খারাপ হয়েছিল অনেকের মতো আমারও। গোটা বিশ্বের জন্য স্টিভ যা করে গেছেন, যেভাবে বদলে দিয়েছেন মানুষের জীবন, সেটা ভাবলে ওর প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে।
২০০৫ সালে বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় স্ট্যানফোর্ড স্টিভ জবসকে আমন্ত্রণ জানায় তাদের সমাবর্তনে মূল ভাষণ দেওয়ার জন্য। সেই ভাষণ আমি ইউটিউব থেকে শুনছিলাম আবারও। জীবন, নিয়তি আর কর্মে বিশ্বাস করার কথা বলেছিলেন স্টিভ।
প্যানক্রিয়াস ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই ছিল তাঁর। কীভাবে স্টিভ গড়েছেন তাঁর অ্যাপল সাম্রাজ্য, জীবনের বাঁকে-বাঁকে কীভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রিয়তমা স্ত্রী লরেন্স সেসব দিনের কথা, আর জীবনকে দেখার এক অনন্য বর্ণনা শুনি স্টিভের ভাষণে। অনেকেই বলছেন, গোটা বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন জবস। কিন্তু তাঁর নিজের কী মূল্যায়ন? অবিবাহিত এক মায়ের গর্ভে আসা স্টিভ, জন্মের পর দত্তক হয়ে গেলেন খেটে খাওয়া নিম্নবিত্ত এক দম্পতির কোলে। গর্ভধারিণীর শর্ত ছিল কেবল বড় হলে এই ছেলেকে কলেজে পড়াতে হবে। কলেজে স্টিভ গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু গতানুগতিক সেই জীবন আর শ্রেণীকক্ষের পড়াশোনা তাঁর ভালো লাগেনি। কলেজ থেকে ঝরে পড়া স্টিভ পরবর্তী জীবনে হন বিশ্বখ্যাত কোম্পানি অ্যাপলের সিইও। তবে সে এক দীর্ঘ পথ।
স্টিভ জবসের সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনে অবাক না হয়ে পারা যায় না। একজন মানুষকে মৃত্যুর আগে কী করে বাঁচতে হয়—সেই কথাই স্টিভ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বলার চেষ্টা করেছেন বারবার। শিক্ষাজীবনে আনুষ্ঠানিক স্নাতক ডিগ্রি নেওয়া হয়নি তাঁর। ছয় মাসের মতো যুক্তরাষ্ট্রের রিড কলেজে পড়ার পর বেরিয়ে আসেন স্বেচ্ছায়; তাই নিজের বিবেচনায় তিনি সব সময় একজন ড্রপ-আউট। কলেজ হোস্টেলে নিজের রুম না থাকায় বন্ধুদের রুমের মেঝেতে ঘুমাতেন স্টিভ। কোকের বোতল ফেরত দিয়ে পাওয়া পাঁচ সেন্ট দিয়ে ফের খাবার কেনার অভিজ্ঞতা ছিল প্রায় দিনের। এক বেলা ভালো খাবারের জন্য সপ্তাহে প্রতি রোববার সাত মাইল হেঁটে হরিকৃষ্ণের মন্দিরে যেতেন তিনি।
কিন্তু এসবই ছিল জীবনের মূল্যবান সঞ্চয়। ড্রপ-আউট হলেও রিড কলেজের নিয়মিত কোর্স ছেড়ে স্টিভ বেছে নেন ক্যালিগ্রাফির ক্লাস, সেখানে টাইপোগ্রাফিকে কী করে আরও অসাধারণ করে তোলা যায়, সেই ক্লাসগুলো স্টিভের কাছে আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে। সেই জ্ঞানই তার ১০ বছর পরে কাজে লেগে যায় ম্যাকিন্টোশ কম্পিউটার ডিজাইনে। স্টিভ জবসের ভাষায়, সেটাই ছিল ম্যাক কম্পিউটারে প্রথম অসাধারণ টাইপোগ্রাফির সূচনা। আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে আগামী দিনের যোগসূত্র রচনা কঠিন। কিন্তু আজকের অবস্থানে থেকে ১০ বছর অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র রচনা খুব কঠিন কাজ নয়। তিনি এই গল্পের নাম দিলেন কানেকটিং ডটস।
মাত্র ২০ বছর বয়সে, এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে, বাড়ির গ্যারেজে বসে যে ম্যাক কম্পিউটারের ডিজাইন করেন স্টিভ, তার ১০ বছরের মাথায় সেই উদ্যোগই পরিণত হয় দুই বিলিয়ন ডলারের অ্যাপল কোম্পানি আর চার হাজার কর্মীর জীবিকার ক্ষেত্র। ৩০ বছর বয়সে স্টিভ বাজারে ছাড়েন তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি ম্যাকিন্টোশ। সেই বছরই অ্যাপল থেকে স্টিভকে বের করে দেওয়া হয়। যে কোম্পানি তিনি নিজের হাতে গড়েন, সেখান থেকে তাঁকেই বের করে দেওয়া, কেবল বিপর্যয়ই নয়, স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়া আরেক গল্পের সূচনা।
স্টিভ যখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, তখন তাঁর মনে হলো, উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনায় যে প্রজন্ম তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল সামনে এগিয়ে চলার ব্যাটন, তাদের হতাশ করে ব্যাটনটি তিনি মাটিতে ফেলে দিয়েছেন। কাজটি ঠিক নয় বুঝতে পেরে আবারও এগিয়ে চলেন স্টিভ জবস। তাঁর মনে হলো অ্যাপল থেকে তাঁর বিদায় জীবনের বড় বাঁক পরিবর্তন। তিনি আবার নতুন করে শুরু করার মন্ত্র পেলেন। পরের পাঁচ বছরে স্টিভ নেক্সট এবং পিক্সার নামের দুটি নতুন কোম্পানি গড়লেন; ঠিক এই সময়ে প্রেমে পড়লেন লরেন্স নামের এক অসাধারণ নারীর। বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার অ্যানিমেটেড ফিচার চলচ্চিত্র ‘টয় স্টোরি’ তৈরি করল পিক্সার। আর ঠিক এই সময়ে অ্যাপল কিনে নিল নেক্সট—স্টিভ নাটকীয়ভাবে আবারও ফিরে এলেন অ্যাপলে। নেক্সটে যে প্রযুক্তি স্টিভ ও তাঁর টিম উদ্ভাবন করেন, সেটিই পরবর্তী সময়ে চলে আসে অ্যাপলের প্রাণকেন্দ্রে, যাকে তাঁরা বলছেন অ্যাপল রেনেসাঁ। স্টিভ জীবনের এই বাঁকগুলোকে অনিবার্য মনে করে এগিয়ে চলেন নিজের গন্তব্যে। তিনি মনে করেছিলেন, অ্যাপল থেকে তাঁকে সেদিন জোর করে বের করে না দিলে হয়তো আজকের ‘এই তিনি’ কোনো দিনই হয়ে উঠতে পারতেন না।
স্টিভের শেষ গল্পটি ছিল মৃত্যু নিয়ে। জীবনের প্রতিটি দিনকে যদি শেষ দিন মনে করা হয়, তবে একদিন না একদিন সেটি সত্যি হয়ে আসবেই। ১৭ বছর বয়স থেকে পরবর্তী প্রায় ৪০ বছর ধরে স্টিভ সেই প্রশ্নের মুখোমুখি করেছেন নিজেকে। প্রতিটি দিন ভোরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে স্টিভ নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আজকের দিনটিই যদি জীবনের শেষ দিন হয়, তাহলে আমি আজ যেটি করছি, সেই কাজটিই কি সেদিনও করতে চাইতাম? ঠিক যখনই এর উত্তর আসে “না” তখনই আমি বুঝতে পারি আমার কোথাও না কোথাও পরিবর্তন দরকার।’
২০০৪ সালে স্টিভ জবস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন। প্যানক্রিয়াস ক্যানসার সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাঁর। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়ে দেন, সর্বোচ্চ ছয় মাস তাঁর আয়ু। সবকিছু গুছিয়ে নিতে হবে এবং মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে তাঁকে। সেদিনই চিকিৎসকেরা দ্বিতীয়বারের মতো স্টিভের বায়োপসি এবং এন্ডোসকপি করে দেখেন তাঁর টিউমারে এমন কিছু বিরল সেল আছে, যা সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব এবং হলোও তাই। ২০০৫ সালে স্টিভ বলেছিলেন: তিনি ভালো আছেন। আরও কয়েক দশকজুড়ে, তাঁর আশা ছিল, তিনি মানুষের সেবা দিতে পারবেন। সে আর হলো না।
স্টিভের মতে, জীবনের সবচেয়ে বড় এবং একক উদ্ভাবন হলো মৃত্যু। মৃত্যু পুরোনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে স্বাগত জানায়। নিজের কথারই বারবার প্রমাণ দিয়ে গেলেন অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। গুডবাই স্টিভ।
জহিরুল আলম: সাংবাদিক।
প্যানক্রিয়াস ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই ছিল তাঁর। কীভাবে স্টিভ গড়েছেন তাঁর অ্যাপল সাম্রাজ্য, জীবনের বাঁকে-বাঁকে কীভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রিয়তমা স্ত্রী লরেন্স সেসব দিনের কথা, আর জীবনকে দেখার এক অনন্য বর্ণনা শুনি স্টিভের ভাষণে। অনেকেই বলছেন, গোটা বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন জবস। কিন্তু তাঁর নিজের কী মূল্যায়ন? অবিবাহিত এক মায়ের গর্ভে আসা স্টিভ, জন্মের পর দত্তক হয়ে গেলেন খেটে খাওয়া নিম্নবিত্ত এক দম্পতির কোলে। গর্ভধারিণীর শর্ত ছিল কেবল বড় হলে এই ছেলেকে কলেজে পড়াতে হবে। কলেজে স্টিভ গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু গতানুগতিক সেই জীবন আর শ্রেণীকক্ষের পড়াশোনা তাঁর ভালো লাগেনি। কলেজ থেকে ঝরে পড়া স্টিভ পরবর্তী জীবনে হন বিশ্বখ্যাত কোম্পানি অ্যাপলের সিইও। তবে সে এক দীর্ঘ পথ।
স্টিভ জবসের সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনে অবাক না হয়ে পারা যায় না। একজন মানুষকে মৃত্যুর আগে কী করে বাঁচতে হয়—সেই কথাই স্টিভ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বলার চেষ্টা করেছেন বারবার। শিক্ষাজীবনে আনুষ্ঠানিক স্নাতক ডিগ্রি নেওয়া হয়নি তাঁর। ছয় মাসের মতো যুক্তরাষ্ট্রের রিড কলেজে পড়ার পর বেরিয়ে আসেন স্বেচ্ছায়; তাই নিজের বিবেচনায় তিনি সব সময় একজন ড্রপ-আউট। কলেজ হোস্টেলে নিজের রুম না থাকায় বন্ধুদের রুমের মেঝেতে ঘুমাতেন স্টিভ। কোকের বোতল ফেরত দিয়ে পাওয়া পাঁচ সেন্ট দিয়ে ফের খাবার কেনার অভিজ্ঞতা ছিল প্রায় দিনের। এক বেলা ভালো খাবারের জন্য সপ্তাহে প্রতি রোববার সাত মাইল হেঁটে হরিকৃষ্ণের মন্দিরে যেতেন তিনি।
কিন্তু এসবই ছিল জীবনের মূল্যবান সঞ্চয়। ড্রপ-আউট হলেও রিড কলেজের নিয়মিত কোর্স ছেড়ে স্টিভ বেছে নেন ক্যালিগ্রাফির ক্লাস, সেখানে টাইপোগ্রাফিকে কী করে আরও অসাধারণ করে তোলা যায়, সেই ক্লাসগুলো স্টিভের কাছে আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে। সেই জ্ঞানই তার ১০ বছর পরে কাজে লেগে যায় ম্যাকিন্টোশ কম্পিউটার ডিজাইনে। স্টিভ জবসের ভাষায়, সেটাই ছিল ম্যাক কম্পিউটারে প্রথম অসাধারণ টাইপোগ্রাফির সূচনা। আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে আগামী দিনের যোগসূত্র রচনা কঠিন। কিন্তু আজকের অবস্থানে থেকে ১০ বছর অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র রচনা খুব কঠিন কাজ নয়। তিনি এই গল্পের নাম দিলেন কানেকটিং ডটস।
মাত্র ২০ বছর বয়সে, এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে, বাড়ির গ্যারেজে বসে যে ম্যাক কম্পিউটারের ডিজাইন করেন স্টিভ, তার ১০ বছরের মাথায় সেই উদ্যোগই পরিণত হয় দুই বিলিয়ন ডলারের অ্যাপল কোম্পানি আর চার হাজার কর্মীর জীবিকার ক্ষেত্র। ৩০ বছর বয়সে স্টিভ বাজারে ছাড়েন তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি ম্যাকিন্টোশ। সেই বছরই অ্যাপল থেকে স্টিভকে বের করে দেওয়া হয়। যে কোম্পানি তিনি নিজের হাতে গড়েন, সেখান থেকে তাঁকেই বের করে দেওয়া, কেবল বিপর্যয়ই নয়, স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়া আরেক গল্পের সূচনা।
স্টিভ যখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, তখন তাঁর মনে হলো, উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনায় যে প্রজন্ম তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল সামনে এগিয়ে চলার ব্যাটন, তাদের হতাশ করে ব্যাটনটি তিনি মাটিতে ফেলে দিয়েছেন। কাজটি ঠিক নয় বুঝতে পেরে আবারও এগিয়ে চলেন স্টিভ জবস। তাঁর মনে হলো অ্যাপল থেকে তাঁর বিদায় জীবনের বড় বাঁক পরিবর্তন। তিনি আবার নতুন করে শুরু করার মন্ত্র পেলেন। পরের পাঁচ বছরে স্টিভ নেক্সট এবং পিক্সার নামের দুটি নতুন কোম্পানি গড়লেন; ঠিক এই সময়ে প্রেমে পড়লেন লরেন্স নামের এক অসাধারণ নারীর। বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার অ্যানিমেটেড ফিচার চলচ্চিত্র ‘টয় স্টোরি’ তৈরি করল পিক্সার। আর ঠিক এই সময়ে অ্যাপল কিনে নিল নেক্সট—স্টিভ নাটকীয়ভাবে আবারও ফিরে এলেন অ্যাপলে। নেক্সটে যে প্রযুক্তি স্টিভ ও তাঁর টিম উদ্ভাবন করেন, সেটিই পরবর্তী সময়ে চলে আসে অ্যাপলের প্রাণকেন্দ্রে, যাকে তাঁরা বলছেন অ্যাপল রেনেসাঁ। স্টিভ জীবনের এই বাঁকগুলোকে অনিবার্য মনে করে এগিয়ে চলেন নিজের গন্তব্যে। তিনি মনে করেছিলেন, অ্যাপল থেকে তাঁকে সেদিন জোর করে বের করে না দিলে হয়তো আজকের ‘এই তিনি’ কোনো দিনই হয়ে উঠতে পারতেন না।
স্টিভের শেষ গল্পটি ছিল মৃত্যু নিয়ে। জীবনের প্রতিটি দিনকে যদি শেষ দিন মনে করা হয়, তবে একদিন না একদিন সেটি সত্যি হয়ে আসবেই। ১৭ বছর বয়স থেকে পরবর্তী প্রায় ৪০ বছর ধরে স্টিভ সেই প্রশ্নের মুখোমুখি করেছেন নিজেকে। প্রতিটি দিন ভোরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে স্টিভ নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আজকের দিনটিই যদি জীবনের শেষ দিন হয়, তাহলে আমি আজ যেটি করছি, সেই কাজটিই কি সেদিনও করতে চাইতাম? ঠিক যখনই এর উত্তর আসে “না” তখনই আমি বুঝতে পারি আমার কোথাও না কোথাও পরিবর্তন দরকার।’
২০০৪ সালে স্টিভ জবস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন। প্যানক্রিয়াস ক্যানসার সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাঁর। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়ে দেন, সর্বোচ্চ ছয় মাস তাঁর আয়ু। সবকিছু গুছিয়ে নিতে হবে এবং মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে তাঁকে। সেদিনই চিকিৎসকেরা দ্বিতীয়বারের মতো স্টিভের বায়োপসি এবং এন্ডোসকপি করে দেখেন তাঁর টিউমারে এমন কিছু বিরল সেল আছে, যা সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব এবং হলোও তাই। ২০০৫ সালে স্টিভ বলেছিলেন: তিনি ভালো আছেন। আরও কয়েক দশকজুড়ে, তাঁর আশা ছিল, তিনি মানুষের সেবা দিতে পারবেন। সে আর হলো না।
স্টিভের মতে, জীবনের সবচেয়ে বড় এবং একক উদ্ভাবন হলো মৃত্যু। মৃত্যু পুরোনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে স্বাগত জানায়। নিজের কথারই বারবার প্রমাণ দিয়ে গেলেন অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। গুডবাই স্টিভ।
জহিরুল আলম: সাংবাদিক।
No comments