পবিত্র কোরআনের আলো-কাবা ঘর মানব জাতির সম্মানের সুদৃঢ় ভিত্তি
৯৬. উহিল্লা লাকুম্ সাইদুল বাহরি ওয়া ত্বাআ'-মুহূ মাতা-আ'ন লাকুম ওয়া লিচ্ছাইয়্যা-রাতি ওয়া হুর্রিমা আ'লাইকুম সাইদুল বার্রি মা-দুমতুম হুরুমান; ওয়াত্তাক্বুল্লা-হাল্লাযী ইলাইহি তুহ্শারূন। ৯৭. জাআ'লাল্লা-হুল কা'বাতাল বাইতাল হারা-মা কি্বইয়া-মান লিন্না-ছি ওয়াশ্ শাহ্রাল হারা-মা, ওয়ালহাদইয়া ওয়ালক্বালা-য়িদা; যা-লিকা লিতা'লামূ আন্নাল্লা-হা ইয়া'লামু মা ফিচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্বি ওয়া আন্নাল্লা-হা বিকুলি্ল শাইয়িন আ'লীম।
৯৮. ই'লামূ আন্নাল্লা-হা শাদীদুল ই'ক্বা-বি ওয়াআন্নাল্লাহা গাফূরুর্ রাহীম।
৯৯. মা আ'লার্ রাসূলি ইল্লাল বালা-গ; ওয়াল্লা-হু ইয়া'লামু মা-তুবদূনা ওয়া মা তাকতুমূন।
১০০. ক্বুল্ লা-ইয়াছতাওয়ীল খাবীছু ওয়াত্ত্বাইয়্যিবু ওয়ালাও আ'জাবাকা কাছরাতুল খাবীছ; ফাত্তাক্বুল্লা-হা ইয়া-উলিল আলবা-বি লাআ'ল্লাকুম তুফলিহূন।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৯৬-১০০]
অনুবাদ : ৯৬. তোমাদের জন্য জলচর শিকার ধরা এবং খাওয়া হালাল করা হয়েছে। এটি তোমাদের জন্য ও পরিভ্রমণকারীদের জন্য সম্পদ। তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে এহরাম অবস্থায় স্থলচর শিকার ধরা। তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, যার কাছে তোমাদের সবাইকে জড়ো হতে হবে।
৯৭. আল্লাহ তায়ালা সম্মানিত কাবা ঘরকে মানব জাতির জন্য সুদৃঢ় ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। একইভাবে তিনি সম্মানিত করেছেন পবিত্র মাসকে, কোরবানির পশুকে এবং একই উদ্দেশ্যে বিশেষ পট্টি বাঁধা জন্তুগুলোকে। এটা এ জন্য, যাতে তোমরা জানতে পারো যে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর যেখানে যা কিছু আছে, আল্লাহ সবই জানেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
৯৮. জেনে রেখো, আল্লাহ তায়ালা শাস্তি বিধানে কঠোর, আবার সেই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
৯৯. রাসুলের দায়িত্ব কেবল বার্তা পেঁৗছে দেওয়া। তোমরা যা প্রকাশ করো এবং যা গোপন করো আল্লাহ তায়ালা তা সবই জানেন।
১০০. (হে রাসুল!), আপনি বলুন, পবিত্র বস্তু এবং অপবিত্র বস্তু কখনো এক রকম হতে পারে না, অপবিত্র জিনিসের প্রাচুর্য যতই তোমাদের চমৎকৃত করুক না কেন। অতঃপর হে জ্ঞানবান মানুষরা! তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, হয়তো তোমরাই সফলকাম হবে।
ব্যাখ্যা : ৯৬. নম্বর আয়াতের মাধ্যমে এহরাম অবস্থায় জলচর প্রাণী অর্থাৎ মাছ শিকার করা বৈধ করা হয়েছে এবং স্থলচর প্রাণী শিকার করা অবৈধ করা হয়েছে। জলচর প্রাণী এবং স্থলচর প্রাণীর মধ্যে একটা মাত্রাগত পার্থক্য আছে। জলচর প্রাণী স্থলচর প্রাণীর চেয়ে নিম্নমানের। যেমন_জলচর প্রাণী জবাই করে খেতে হয় না এবং কোরবানি হিসেবে গৃহীত হয় না। সুতরাং এহরাম অবস্থায় জলচর প্রাণী বা মাছ শিকার করা হালাল এবং স্থলচর প্রাণী শিকার করা হারাম করা হয়েছে। এই আয়াতের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এটা আল্লাহর একটা বিধান এবং এই বিধানের মধ্য দিয়ে আল্লাহ মানুষের দায়িত্বনিষ্ঠতা যাচাই করেন।
৯৭ নম্বর আয়াতে পবিত্র কাবা ঘর, হারাম মাস এবং হারাম শরিফকে ঘিরে কোরবানি_এসব বিষয়ের তাৎপর্যের ব্যাপারে মানব জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আরব সমাজ প্রাচীন সভ্য সমাজ। তবে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার চেয়ে আরব সমাজের মৌলিক ভিন্নতা ছিল। আরব সমাজে কোনো কেন্দ্রীয় শাসন বা রাজার শাসন ছিল না। গোত্রের শাসন ছিল এবং গোত্রগুলো ছিল স্বাধীন। গোত্রে গোত্রে মারামারি আর যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকত। তবে পবিত্র কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল যে আরব সমাজ, সেখানে উলি্লখিত বিষয়গুলোর অবলম্বন করে গড়ে উঠেছিল শান্তি ও সংহতির মূল্যবোধ। সেখানে কিছু অভিন্ন নীতি-নৈতিকতাও গড়ে উঠেছিল পবিত্র কাবা, হারাম শরিফ, হারাম মাস এবং কোরবানি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে। কাবা ঘর তখনো আরব জাতির সম্মানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। হারাম শরিফের আঙিনায় এবং হারাম মাসগুলোতে হত্যা, শিকার বা যুদ্ধ নিষিদ্ধ ছিল। এভাবেই যুদ্ধ-বিগ্রহকবলিত আরব সমাজে শান্তি বজায় থাকত। ১০০ নম্বর আয়াতের আগের বর্ণিত আয়াতগুলোরই উপসংহার টানা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৯৯. মা আ'লার্ রাসূলি ইল্লাল বালা-গ; ওয়াল্লা-হু ইয়া'লামু মা-তুবদূনা ওয়া মা তাকতুমূন।
১০০. ক্বুল্ লা-ইয়াছতাওয়ীল খাবীছু ওয়াত্ত্বাইয়্যিবু ওয়ালাও আ'জাবাকা কাছরাতুল খাবীছ; ফাত্তাক্বুল্লা-হা ইয়া-উলিল আলবা-বি লাআ'ল্লাকুম তুফলিহূন।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৯৬-১০০]
অনুবাদ : ৯৬. তোমাদের জন্য জলচর শিকার ধরা এবং খাওয়া হালাল করা হয়েছে। এটি তোমাদের জন্য ও পরিভ্রমণকারীদের জন্য সম্পদ। তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে এহরাম অবস্থায় স্থলচর শিকার ধরা। তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, যার কাছে তোমাদের সবাইকে জড়ো হতে হবে।
৯৭. আল্লাহ তায়ালা সম্মানিত কাবা ঘরকে মানব জাতির জন্য সুদৃঢ় ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। একইভাবে তিনি সম্মানিত করেছেন পবিত্র মাসকে, কোরবানির পশুকে এবং একই উদ্দেশ্যে বিশেষ পট্টি বাঁধা জন্তুগুলোকে। এটা এ জন্য, যাতে তোমরা জানতে পারো যে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর যেখানে যা কিছু আছে, আল্লাহ সবই জানেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
৯৮. জেনে রেখো, আল্লাহ তায়ালা শাস্তি বিধানে কঠোর, আবার সেই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
৯৯. রাসুলের দায়িত্ব কেবল বার্তা পেঁৗছে দেওয়া। তোমরা যা প্রকাশ করো এবং যা গোপন করো আল্লাহ তায়ালা তা সবই জানেন।
১০০. (হে রাসুল!), আপনি বলুন, পবিত্র বস্তু এবং অপবিত্র বস্তু কখনো এক রকম হতে পারে না, অপবিত্র জিনিসের প্রাচুর্য যতই তোমাদের চমৎকৃত করুক না কেন। অতঃপর হে জ্ঞানবান মানুষরা! তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, হয়তো তোমরাই সফলকাম হবে।
ব্যাখ্যা : ৯৬. নম্বর আয়াতের মাধ্যমে এহরাম অবস্থায় জলচর প্রাণী অর্থাৎ মাছ শিকার করা বৈধ করা হয়েছে এবং স্থলচর প্রাণী শিকার করা অবৈধ করা হয়েছে। জলচর প্রাণী এবং স্থলচর প্রাণীর মধ্যে একটা মাত্রাগত পার্থক্য আছে। জলচর প্রাণী স্থলচর প্রাণীর চেয়ে নিম্নমানের। যেমন_জলচর প্রাণী জবাই করে খেতে হয় না এবং কোরবানি হিসেবে গৃহীত হয় না। সুতরাং এহরাম অবস্থায় জলচর প্রাণী বা মাছ শিকার করা হালাল এবং স্থলচর প্রাণী শিকার করা হারাম করা হয়েছে। এই আয়াতের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এটা আল্লাহর একটা বিধান এবং এই বিধানের মধ্য দিয়ে আল্লাহ মানুষের দায়িত্বনিষ্ঠতা যাচাই করেন।
৯৭ নম্বর আয়াতে পবিত্র কাবা ঘর, হারাম মাস এবং হারাম শরিফকে ঘিরে কোরবানি_এসব বিষয়ের তাৎপর্যের ব্যাপারে মানব জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আরব সমাজ প্রাচীন সভ্য সমাজ। তবে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার চেয়ে আরব সমাজের মৌলিক ভিন্নতা ছিল। আরব সমাজে কোনো কেন্দ্রীয় শাসন বা রাজার শাসন ছিল না। গোত্রের শাসন ছিল এবং গোত্রগুলো ছিল স্বাধীন। গোত্রে গোত্রে মারামারি আর যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকত। তবে পবিত্র কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল যে আরব সমাজ, সেখানে উলি্লখিত বিষয়গুলোর অবলম্বন করে গড়ে উঠেছিল শান্তি ও সংহতির মূল্যবোধ। সেখানে কিছু অভিন্ন নীতি-নৈতিকতাও গড়ে উঠেছিল পবিত্র কাবা, হারাম শরিফ, হারাম মাস এবং কোরবানি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে। কাবা ঘর তখনো আরব জাতির সম্মানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। হারাম শরিফের আঙিনায় এবং হারাম মাসগুলোতে হত্যা, শিকার বা যুদ্ধ নিষিদ্ধ ছিল। এভাবেই যুদ্ধ-বিগ্রহকবলিত আরব সমাজে শান্তি বজায় থাকত। ১০০ নম্বর আয়াতের আগের বর্ণিত আয়াতগুলোরই উপসংহার টানা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments