হলিউড-সেরা পাঁচ রোমান্টিক জুটি

জাহাজ প্রায় ছাড়ে ছাড়ে। বেশ কবার সাইরেন বেজেও উঠেছে। কিন্তু তখনো বন্দরের পাশের এক পানশালায় চলছে জুয়া। আর সেই জুয়ায় জিতে জ্যাক পেয়ে গেল দুখানা টিকিট। টাইটানিকের টিকিট! সেই টিকিট নিয়ে ছুটল পড়িমড়ি। জ্যাক তখনো জানতই না, হাতে আসলে টাইটানিক নয়, ভাগ্যের টিকিট নিয়েই ছুটছে সে।


সেই টিকিটই হতদরিদ্র কিন্তু প্রতিভাবান-সুদর্শন আঁকিয়ে জ্যাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে ধনাঢ্য পরিবারের রোজের। হবে প্রেম। যে প্রেমের শেষ পরিণতি টাইটানিকের সঙ্গে জ্যাকেরও সলিল সমাধি। কিন্তু প্রেম তো ডোবে না। প্রেমের মৃত্যুও নেই। রোজ আর অনাগত সন্তানের মধ্যে বেঁচে থাকে জ্যাক, জ্যাকের ভালোবাসা।
১৯৯৭ সালে এমনই এক মহাকাব্যিক প্রেমের গল্প দেখিয়েছিলেন পরিচালক জেমস ক্যামেরন। পরিচালকের কল্পনাশক্তি, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও আর কেট উইন্সলেট জুটির দুর্দান্ত রসায়ন জমেছিল দারুণ। রেকর্ড ১৪টি বিভাগের মনোনয়ন পেয়ে অস্কার জিতেছিল ১১টি! শুধু তা-ই নয়, গত বছর হলিউডের ছবি নিয়ে বিভিন্ন বিভাগে একটি জরিপ করেছিল এসিবি নিউজ এবং পিপল সাময়িকী। সেই জরিপে হলিউডের সর্বকালের সেরা রোমান্টিক জুটি নির্বাচিত হয়েছিল জ্যাক-রোজের যুগলবন্দী। ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল ডিক্যাপ্রিও-উইন্সলেটের এই জুটি।
সেরা রোমান্টিক জুটির তালিকায় এর পরেই আছে ১৯৩৯ সালে নির্মিত ক্ল্যাসিক ছবি গন উইথ দ্য উইন্ড-এর ক্লার্ক গ্যাবল আর ভিভিয়েন লি জুটি। ছবিটি প্রায় পৌনে শতাব্দী আগে নির্মিত। তার পরও মানুষের স্মৃতিতে এখনো জ্বলজ্বল করছে স্কারলেট ও’হারা এবং রেথ বাটলার চরিত্র দুটি। মনের মধ্যে গেঁথে আছে জ্বলন্ত আটলান্টাকে পেছনে রেখে, টকটকে লাল আকাশকে দর্শক বানিয়ে তাঁদের উন্মত্ত সেই চুম্বন! এই জুটি জরিপে পেয়েছে ১৫ শতাংশ ভোট।
আরেক পাগলপারা প্রেমের গল্প নিয়ে বানানো ছবি প্রিটি ওম্যান। নিজের ব্যবসা ছাড়া কিসসু বোঝে না এডওয়ার্ড লুইস। নিজের ব্যবসার কাজে এক সপ্তাহের জন্য এসেছেন লস অ্যাঞ্জেলেসে। উঠেছেন পরিচিত এক হোটেলে। নিঃসঙ্গ অনুভব করছিলেন বলেই ভাড়া করে স্রেফ সঙ্গ দেওয়ার জন্য ডেকে আনেন ভিভিয়ান ওয়ার্ড নামের এক দেহপসারিণীকে। ঝানু, বড্ড হিসেবে এক ব্যবসায়ী কখনো এক চালচুলোহীন পতিতার প্রেমে পড়বেন? অসম্ভব! কিন্তু প্রেম অসম্ভব সমীকরণকেই মিলিয়ে দেয়! রিচার্ড গের আর জুলিয়া রবার্টসের এই জুটি জরিপে স্থান পেয়েছে তৃতীয় স্থানে। ভোট পেয়েছে ১৪ শতাংশ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে ১৯৪২ সালে পরিচালক মাইকেল কার্টিজ বানিয়েছিলেন আরেকটি ক্ল্যাসিক রোমান্টিক ড্রামা ছবি কাসাব্ল্যাঙ্কা। এ ছবিতেই প্রথম সেই দর্শন উঠে এল—মহৎ প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়। বলা হলো সেই দর্শনের কথাও, ‘তোমার প্রেমকে মুক্ত করে দাও। সে যদি তোমার থাকে, তবে অবশ্যই তা আবার তোমার কাছেই ফিরে আসবে। আর যদি ফিরে না আসে, জানবে, সে তোমার কখনোই ছিল না।’
রিক ব্লেইন আর আইলা লুন্ড চরিত্র দুটিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে সেরা রোমান্টিক জুটির তালিকায় চারে স্থান করে নিয়েছেন হামফ্রে বোগার্ট ও ইনগ্রিড বার্গম্যান। ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছে এই জুটি।
জুটির তালিকায় পাঁচে আছে স্পেনসার ট্রেসি ও ক্যাথারিন হেপবার্ন। ১৯৪২ সালে ওম্যান অব দ্য ইয়ার ছবির সেটে পরিচয় হয়েছিল দুজনার। এরপর এই জুটির রসায়নে হলিউড বিমুগ্ধ দর্শক হয়ে ছিল এক দশকের বেশি সময়। এ সময়টায় এই জুটি উপহার দিয়েছে উইদাউট লাভ, অ্যাডামস রিব-এর মতো দুর্দান্ত নয়টি রোমান্টিক ছবি।
 রাজীব হাসান, তথ্য: এবিসি নিউজ

No comments

Powered by Blogger.