চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন-বড় বাজেটের কাজ হচ্ছে সমঝোতার মাধ্যমে! by হামিদ উল্লাহ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বড় বাজেটের উন্নয়নকাজগুলো সমঝোতার মাধ্যমে চড়া দামে কয়েকজন ঠিকাদার নিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত চার মাসে প্রায় ২৯ কোটি টাকার চারটি কাজে সমঝোতা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত বুধবারও এ ধরনের একটি কাজের সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে নগরের বাটালি পাহাড়ের কাছে নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য ৭০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। গত বুধবার এই কাজ পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মঞ্জুরুল আলম। তাঁর প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ টাকার কাজটির জন্য পাঁচ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় দরপত্র জমা দেয়। গত অক্টোবরেও তিনি ছয় কোটি টাকার একটি কাজ সমঝোতার মাধ্যমে পান প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৫ শতাংশ বেশিতে।
গণ খাতে ক্রয়বিধি অনুযায়ী, প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে কম কিংবা বেশিতে দরপত্র জমা দেওয়া যায়। তবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এ ধরনের কাজ হলে সরকারি অর্থের সাশ্রয় হয়। সিটি করপোরেশনে তিন মাসের চারটি কাজ সমঝোতার মাধ্যমে দেওয়ার কারণে অন্তত ছয় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন একাধিক ঠিকাদার। অথচ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেসব দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কম টাকায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুই কোটি ১৭ লাখ টাকার তুলাতলী সেতুর কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ১৫ শতাংশ কমে। কর্ণফুলী সেতুর পাশে মোহনা সেতুর প্রাক্কলিত বাজেট ছয় কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এটিও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদার পেয়েছেন ১৪ শতাংশ কম দরে। এর আগে বাকলিয়ার মাস্টারপুল ও কালামিয়া বাজার এলাকায় আরও দুটি সেতুও প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৫ শতাংশ কম দরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এগুলোও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পান ঠিকাদারেরা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব মো. সামসুদ্দোহা প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের সমঝোতা নৈতিকতাবিরোধী। আমরা যত দূর জানি, প্রকৌশলীরা ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত লাভ রেখেই প্রাক্কলিত ব্যয়ের হিসাব তৈরি করেন। তার চেয়ে বেশি দরে কিছুতেই দরপত্র দেওয়া উচিত নয়।
জানা যায়, সর্বশেষ কাজটির জন্য ৫৭টি দরপত্র কেনা হলেও জমা পড়ে মাত্র চারটি। সমঝোতার কারণে অন্য দরপত্রগুলো আর জমা পড়েনি। তবে মেসার্স মঞ্জুরুল ইসলাম চৌধুরী ছাড়া আর যে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে, সেগুলোতে নিরাপত্তা জামানতসহ অনেক প্রয়োজনীয় কাগজই জমা দেওয়া হয়নি।
ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিন রাতে এই নিয়ে ওই ঠিকাদারেরা বৈঠক করেন। এরপর লোক দেখানো দরপত্র জমা দেওয়া হয়। মঞ্জুরুল আলমের দরপত্রের পাশাপাশি অন্য দরপত্রগুলোতে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে আরও বেশি মূল্য দেখানো হয়।
সমঝোতার মাধ্যমে কাজ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মঞ্জুরুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদারেরা সবাই পরিচিত মানুষ। তাঁদের কাছে আবদার করেছি। তাঁরাও রাজি হয়েছেন। এর সঙ্গে ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিনসহ আরও কিছু ঠিকাদার জড়িত ছিলেন। জানা গেছে, প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে যে অর্থ বেশি দেওয়া হয়েছে, তা থেকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ পাবেন দরপত্র কেনা ঠিকাদারেরা। এ অর্থের পরিমাণ ৩১ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের বড় কাজ সাধারণত প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ১০-১২ শতাংশে কাজ হয়। সিটি করপোরেশনে বর্তমানে চারটি সেতু নির্মিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলকভাবে দরপত্র জমা দেওয়ার কারণে প্রতিটি কাজই প্রাক্কলিত বাজেটের চেয়ে কম টাকায় দরপত্র জমা পড়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কিছু ঠিকাদার অনেকটা জোর করে এসব কাজে অন্য ঠিকাদারদের সমঝোতায় আসতে বাধ্য করছেন। ফলে বড় কাজে অভিজ্ঞ ও পেশাদার ঠিকাদারেরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারছেন না। প্রশাসনও বিষয়টি জেনে না জানার ভান করছে।
জানা গেছে, সরকারের কাছ থেকে থোক বরাদ্দ অর্ধেক কমে যাওয়া এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পৌরকর আদায় না হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বর্তমানে মারাত্মক অর্থকষ্টের মধ্যে রয়েছে। গত অর্থবছরে সরকার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে থোক বরাদ্দ দিয়েছিল ১৭ কোটি টাকা। এবার দিচ্ছে মাত্র সাত কোটি টাকা। এর মধ্যে পাওয়া গেছে মাত্র এক কোটি টাকা। ফলে নিজস্ব তহবিল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের পর খুব অল্প টাকারই উন্নয়নকাজ করতে পারছে প্রতিষ্ঠানটি।
গণ খাতে ক্রয়বিধি অনুযায়ী, প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে কম কিংবা বেশিতে দরপত্র জমা দেওয়া যায়। তবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এ ধরনের কাজ হলে সরকারি অর্থের সাশ্রয় হয়। সিটি করপোরেশনে তিন মাসের চারটি কাজ সমঝোতার মাধ্যমে দেওয়ার কারণে অন্তত ছয় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন একাধিক ঠিকাদার। অথচ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেসব দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কম টাকায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুই কোটি ১৭ লাখ টাকার তুলাতলী সেতুর কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ১৫ শতাংশ কমে। কর্ণফুলী সেতুর পাশে মোহনা সেতুর প্রাক্কলিত বাজেট ছয় কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এটিও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদার পেয়েছেন ১৪ শতাংশ কম দরে। এর আগে বাকলিয়ার মাস্টারপুল ও কালামিয়া বাজার এলাকায় আরও দুটি সেতুও প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৫ শতাংশ কম দরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এগুলোও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পান ঠিকাদারেরা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব মো. সামসুদ্দোহা প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের সমঝোতা নৈতিকতাবিরোধী। আমরা যত দূর জানি, প্রকৌশলীরা ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত লাভ রেখেই প্রাক্কলিত ব্যয়ের হিসাব তৈরি করেন। তার চেয়ে বেশি দরে কিছুতেই দরপত্র দেওয়া উচিত নয়।
জানা যায়, সর্বশেষ কাজটির জন্য ৫৭টি দরপত্র কেনা হলেও জমা পড়ে মাত্র চারটি। সমঝোতার কারণে অন্য দরপত্রগুলো আর জমা পড়েনি। তবে মেসার্স মঞ্জুরুল ইসলাম চৌধুরী ছাড়া আর যে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে, সেগুলোতে নিরাপত্তা জামানতসহ অনেক প্রয়োজনীয় কাগজই জমা দেওয়া হয়নি।
ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিন রাতে এই নিয়ে ওই ঠিকাদারেরা বৈঠক করেন। এরপর লোক দেখানো দরপত্র জমা দেওয়া হয়। মঞ্জুরুল আলমের দরপত্রের পাশাপাশি অন্য দরপত্রগুলোতে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে আরও বেশি মূল্য দেখানো হয়।
সমঝোতার মাধ্যমে কাজ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মঞ্জুরুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদারেরা সবাই পরিচিত মানুষ। তাঁদের কাছে আবদার করেছি। তাঁরাও রাজি হয়েছেন। এর সঙ্গে ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিনসহ আরও কিছু ঠিকাদার জড়িত ছিলেন। জানা গেছে, প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে যে অর্থ বেশি দেওয়া হয়েছে, তা থেকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ পাবেন দরপত্র কেনা ঠিকাদারেরা। এ অর্থের পরিমাণ ৩১ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের বড় কাজ সাধারণত প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ১০-১২ শতাংশে কাজ হয়। সিটি করপোরেশনে বর্তমানে চারটি সেতু নির্মিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলকভাবে দরপত্র জমা দেওয়ার কারণে প্রতিটি কাজই প্রাক্কলিত বাজেটের চেয়ে কম টাকায় দরপত্র জমা পড়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কিছু ঠিকাদার অনেকটা জোর করে এসব কাজে অন্য ঠিকাদারদের সমঝোতায় আসতে বাধ্য করছেন। ফলে বড় কাজে অভিজ্ঞ ও পেশাদার ঠিকাদারেরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারছেন না। প্রশাসনও বিষয়টি জেনে না জানার ভান করছে।
জানা গেছে, সরকারের কাছ থেকে থোক বরাদ্দ অর্ধেক কমে যাওয়া এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পৌরকর আদায় না হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বর্তমানে মারাত্মক অর্থকষ্টের মধ্যে রয়েছে। গত অর্থবছরে সরকার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে থোক বরাদ্দ দিয়েছিল ১৭ কোটি টাকা। এবার দিচ্ছে মাত্র সাত কোটি টাকা। এর মধ্যে পাওয়া গেছে মাত্র এক কোটি টাকা। ফলে নিজস্ব তহবিল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের পর খুব অল্প টাকারই উন্নয়নকাজ করতে পারছে প্রতিষ্ঠানটি।
No comments