ছাত্র সংসদ-ছোটদের আছে বড়দের নেই

আজ শনিবার দেশের সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছোট্ট শিশুরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। এ কাউন্সিল গঠনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ঝরে পড়া রোধে সহযোগিতা,


অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শিখন ও শেখানো কার্যক্রমে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা সম্পর্কে অভিভাবক ও অন্যদের অবহিত ও উদ্বুদ্ধকরণ, শিশুকাল থেকে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এর আগে নির্বাচিত কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর ফল সন্তোষজনক। এ বছর পরিসর আরও বাড়ল এবং তা সংশ্লিষ্ট সবার উৎসাহব্যঞ্জক ফল নিয়ে আসবে বলেই আশা থাকবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী যেমন আছে, তেমনি রয়েছেন শিক্ষক এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা। শিক্ষার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন আরও অনেকে। শিশুরা অনুকরণপ্রিয় হয়ে থাকে। তারা বড়দের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শেখে। স্টুডেন্টস কাউন্সিলের মাধ্যমে কোমলমতি শিশুরা সুবার্তা পেলে জীবনের পরবর্তী ধাপগুলোতে তা অনেক কাজে আসবে। শিশুরা যখন দেখবে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরা ভালো ভালো কাজ করছেন, তখন তারাও পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত ও বহির্ভূর্ত কাজগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করায় প্রেরণা পাবে। বাড়িতেও তার প্রভাব পড়বে। স্কুল ব্যবস্থাপনা যদি আদর্শস্থানীয় হয়, শিক্ষকরা যদি পাঠদানে আন্তরিক থাকেন শিশুদের জন্য এর চেয়ে কাঙ্ক্ষিত কিছু নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের এ চর্চা সফল হলেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অদূর ভবিষ্যতে এর প্রভাব পড়বে, এমন আশা করা বৃথা। উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেরও পাট একরকম চুকে গেছে, সেটা নিদ্বর্িধায় বলা যায়। যখন যে দল ক্ষমতায় তাদের ছাত্র সংগঠনের একচ্ছত্র আধিপত্যে বিরোধীরা থাকে কোণঠাসা। অনেক প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রবেশাধিকারও থাকে না। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে
কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে শক্তির দাপট। শিশুরা তাদের জন্য সুবার্তা নিয়ে আসবে, এমন আশা কেউ করে
না। হায় গণতন্ত্র!

No comments

Powered by Blogger.