পাট বাঁচাও, পাটচাষি বাঁচাও-বিশ্ববাজারে মন্দা
গত কয়েক বছরে বিশ্ববাজারে পাটের দাম বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ ছিল। ধারণা করা গিয়েছিল, একদা সোনালি আঁশ খ্যাত এই অর্থকরী ফসলটি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। সরকারের পক্ষ থেকেও নানা আশার বাণী শোনানো হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর না যেতেই সেই সম্ভাবনা দুর্ভাবনায় পরিণত হয়েছে।
এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উৎপাদনকারী বা পাটচাষিরা। গত বছর প্রতি মণ পাটের দাম ছিল এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা। এ বছর তা ৭০০ টাকায় নেমে এসেছে, যা উৎপাদন খরচেরও অনেক কম। আবার বিক্রি না হওয়ায় অনেক কৃষক পাট পুড়িয়ে ফেলতে কিংবা পানিতে ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে জানা যায়।
এ খবরটি কেবল দুঃসংবাদ নয়, উদ্বেগজনকও। কেবল কৃষকই নন, পাট কিনে বিপাকে পড়েছেন বেসরকারি পাট ব্যবসায়ী এবং সরকারি সংস্থা বিজেএমসিও। গত কয়েক বছরে বহির্বিশ্বে পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশের অনেক বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকল চালু করা সম্ভব হয়েছিল। শ্রমিকেরা কাজে ফিরে এসেছিলেন। পাটের বাজার মন্দা হওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ফের অনিশ্চয়তা দিয়েছে।
অস্থিতিশীল বিশ্ব অর্থনীতিতে যেকোনো পণ্যের বাজার ওঠানামা করতে পারে। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগাম প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু পাট মন্ত্রণালয় কিংবা বিজেএমসির ভাবসাব দেখে মনে হয়, তারাও কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তা ছাড়া কেবল বিদেশি বাজারের ওপর নির্ভর করে যে পাট খাতকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না, সে বিষয়টি তাদের মাথায় আছে বলে মনে হয় না। ২০১০ সালে পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে আইন করা হলেও তার প্রয়োগ বা কার্যকারিতা নেই। প্রতিবেশী ভারত যেখানে উৎপাদিত পাটের ৯০ শতাংশ ব্যবহার নিশ্চিত করেছে, সেখানে বাংলাদেশে ব্যবহূত হচ্ছে মাত্র ৫ শতাংশ। এর জন্য যে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা দরকার, তার কিছুই নেওয়া হয়নি। কেবল চটের বস্তা ও থলি তৈরি করে মুমূর্ষু পাটশিল্পকে রক্ষা করা যাবে না।
বছর দশেক আগে পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলেও তা আবার সগৌরবে ফিরে এসেছে। মাঝখানে পাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও কম হয়নি। পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট পাট উৎপাদনকারী দেশ হলেও আমরা এর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারিনি। বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে অশান্ত পরিস্থিতি ও কয়েকটি দেশে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পাটের চাহিদা কমে গেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও ব্যবহার বাড়াতে সরকারি পরিপত্র জারির বেশি কিছু কি সরকার করেছে? নতুন বাজার অনুসন্ধানের চেষ্টাও নেননি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। পরিবেশ সচেতনতার কারণে সারা বিশ্বেই পাটের ব্যবহার বাড়ার কথা। সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে না পারলে প্রতিবেশী ভারত বা অন্য দেশ যে নেবে, তাতে সন্দেহ নেই। এখনো সময় আছে, পাটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন বাজার সৃষ্টির দিকেই সরকারের মনোযোগ বাড়াতে হবে। সোনালি আঁশ তার অতীত গৌরব ফিরে পাক। পাট বাঁচুক, পাটচাষি বাঁচুক, বাঁচুক পাটশিল্প।
এ খবরটি কেবল দুঃসংবাদ নয়, উদ্বেগজনকও। কেবল কৃষকই নন, পাট কিনে বিপাকে পড়েছেন বেসরকারি পাট ব্যবসায়ী এবং সরকারি সংস্থা বিজেএমসিও। গত কয়েক বছরে বহির্বিশ্বে পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশের অনেক বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকল চালু করা সম্ভব হয়েছিল। শ্রমিকেরা কাজে ফিরে এসেছিলেন। পাটের বাজার মন্দা হওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ফের অনিশ্চয়তা দিয়েছে।
অস্থিতিশীল বিশ্ব অর্থনীতিতে যেকোনো পণ্যের বাজার ওঠানামা করতে পারে। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগাম প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু পাট মন্ত্রণালয় কিংবা বিজেএমসির ভাবসাব দেখে মনে হয়, তারাও কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তা ছাড়া কেবল বিদেশি বাজারের ওপর নির্ভর করে যে পাট খাতকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না, সে বিষয়টি তাদের মাথায় আছে বলে মনে হয় না। ২০১০ সালে পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে আইন করা হলেও তার প্রয়োগ বা কার্যকারিতা নেই। প্রতিবেশী ভারত যেখানে উৎপাদিত পাটের ৯০ শতাংশ ব্যবহার নিশ্চিত করেছে, সেখানে বাংলাদেশে ব্যবহূত হচ্ছে মাত্র ৫ শতাংশ। এর জন্য যে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা দরকার, তার কিছুই নেওয়া হয়নি। কেবল চটের বস্তা ও থলি তৈরি করে মুমূর্ষু পাটশিল্পকে রক্ষা করা যাবে না।
বছর দশেক আগে পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলেও তা আবার সগৌরবে ফিরে এসেছে। মাঝখানে পাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও কম হয়নি। পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট পাট উৎপাদনকারী দেশ হলেও আমরা এর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারিনি। বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে অশান্ত পরিস্থিতি ও কয়েকটি দেশে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পাটের চাহিদা কমে গেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও ব্যবহার বাড়াতে সরকারি পরিপত্র জারির বেশি কিছু কি সরকার করেছে? নতুন বাজার অনুসন্ধানের চেষ্টাও নেননি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। পরিবেশ সচেতনতার কারণে সারা বিশ্বেই পাটের ব্যবহার বাড়ার কথা। সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে না পারলে প্রতিবেশী ভারত বা অন্য দেশ যে নেবে, তাতে সন্দেহ নেই। এখনো সময় আছে, পাটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন বাজার সৃষ্টির দিকেই সরকারের মনোযোগ বাড়াতে হবে। সোনালি আঁশ তার অতীত গৌরব ফিরে পাক। পাট বাঁচুক, পাটচাষি বাঁচুক, বাঁচুক পাটশিল্প।
No comments