কালের যাত্রা by পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়
কালের কণ্ঠে একটি এক কলাম খবরের শিরোনাম ছিল 'নিন্দা আমার প্রেম উপহার।' খবরের নায়ক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। সর্বস্তরের মানুষের ক্ষোভ, অভিযোগ, অপ্রিয় সত্যকথন, দলীয় নেতা-কর্মীর তিরস্কার, প্রধানমন্ত্রীর ধমক_সব কিছুকেই তিনি সামান্য সমালোচনা হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং বলেছেন, 'সমালোচনার মাধ্যমে উপকার হয়।' শুনেছি দুই কান কাটা গেলে লজ্জাশরমের বালাই থাকে না।
কথাটা বারবার মনে পড়ছে। নাকি অন্য রকম কিছু ভাবব। খুঁটির জোরে কোনো কিছুকেই হয়তো তোয়াক্কা করছেন না তিনি। গণমাধ্যম, রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বগল বাজিয়ে সদাহাস্য মন্ত্রীবাহাদুর হয়তো গান করছেন, 'আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার।' মোক্তার-ব্যারিস্টারদের নাম নিয়ে শহরে কানাঘুষা হচ্ছে। এটি ভালো লক্ষণ নয়। গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত অর্থাৎ বছরজুড়ে 'টাই পরি দেশ গড়ি' মার্কা চেহারার এই মন্ত্রীর উত্থান যে জিয়া-এরশাদ আমলের দুর্র্বৃত্তায়নের কালে, সেটা আমার বলতে হবে না, সবাই জানে। সেই উত্থানের সঙ্গে রাজনৈতিক চর্চার কোনোই সম্পর্ক নেই। থাকলে ভালো হতো। তবে দেশ, মানুষ, দল, নেতা-কর্মী_সবার প্রতি কিছুটা হলেও সম্ভ্রম দেখানোর মনোবৃত্তি থাকত। ১৯৯৬ সরকারের প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় গোপন পাসপোর্টে বিদেশে গিয়ে চাকরি খোয়ানোর লজ্জায় পড়তে হতো না।
সারা দেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কথা কালের কণ্ঠ লাল কালির শিরোনামে ছাপা সংবাদে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কগুলো যে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে, তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানে, পত্রিকা পড়ার দরকার হয় না। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় বাস মালিকরা বিভিন্ন রুটে তাঁদের বাস চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছেন। এর পেছনে যাঁরা বিরোধী দলের কূটচালের গন্ধ খুঁজছেন, তাঁদের আশঙ্কা মিথ্যা নাও হতে পারে। কিন্তু চলাচলের অযোগ্য রাস্তার কারণে মালিকদের বাস চালানো বন্ধ করার বিষয়টি অর্থবহ তো বটেই। আগে কখনো এ রকম ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। দাবি আদায় অথবা দেনদরবারের কারণে বাস চলাচল বন্ধ হতে দেখেছি। কিন্তু অনুপযোগী রাস্তার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘটনা আমার জ্ঞানমতে বিরল এবং প্রতিবাদের ধরনটি আমার ভালোও লেগেছে। পদ্মা সেতু, ফোর লেন, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে ইত্যাদি বিষয়ে কথার ফুলঝুরি ছোটানো যোগাযোগমন্ত্রী যে গত ৩২ মাসেও কাজের কাজ কিছু করেননি, সে কথা তো সংসদে তাঁর অগ্রজ নেতারাই জোর গলায় বলেছেন। অন্য সংসদ সদস্যরা তাতে সায়ও দিয়েছেন। তা ছাড়া বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ী এই মন্ত্রী যে ছোটখাটো কাজে অমনোযোগী হয়েছেন, সে কথা তো আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। 'মারি তো গণ্ডার লুটি তো ভাণ্ডার' ফর্মুলায় ব্যবসা করে নিজের আখের গোছানো হয়তো সম্ভব, কিন্তু জনপ্রিতিনিধি কিংবা দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে জনগণের বন্ধু হওয়া যায় না। তাতে সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মন্ত্রীদের অপকর্ম (যা সাধারণ মানুষের ধিক্কার কুড়ায়), এর দায় তো সরকারপ্রধানকেও স্পর্শ করে।
আর যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বর্তমান সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী, তাঁরা লজ্জায় মাথা নিচু করেন, জোর গলায় কথা বলতে বিব্রত হন। ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হলো, টাঙ্গাইল রুটেও তা-ই, অথচ যোগাযোগমন্ত্রীর টনক নড়ে না। প্রধানমন্ত্রী যখন জনদুর্ভোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কঠিন ধমক দিলেন, অমনি তিনি টাই পরে ছুটলেন পরিস্থিতি দেখতে। জলময় সড়কে তিনি গাড়ি থেকে নামতেই পারলেন না, অথচ হাসিমুখে (যা দুর্ভোগগ্রস্ত মানুষের প্রতি তাচ্ছিল্যের শামিল) একগাদা মিথ্যা বললেন। বললেন অতীত সরকারের ব্যর্থতা এবং স্থানীয়দের দায়িত্বহীনতার কথা। সাহায্যপ্রত্যাশী হয়ে হাত বাড়ালেন নিজ দল ও নিজ এলাকার সহকর্মী এক মন্ত্রীর দিকে, যিনি আবার সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রের একজন ডাকসাইটে নেতা। তিনি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। যোগাযোগ ও নৌপরিবহনের ভেতর আন্তমন্ত্রণালয় সম্পর্ক থাকাটা খুবই স্বাভাবিক এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই মন্ত্রীর একযোগে কাজ করাটাও অযৌক্তিক বা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু নৌপরিবহনমন্ত্রী গাড়িচালকদের লাইসেন্স প্রদান প্রসঙ্গে উদ্ভট কথা বলে বাধালেন নতুন ঝঞ্ঝাট। ঝঞ্ঝাট সামাল দিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে সত্য-মিথ্যা কথা বলে হলেন সংবাদের শিরোনাম। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দেশের দুই বরেণ্য ও গুণী শিল্পস্রষ্টার শোকগ্রস্ত পরিবার ও স্বজনদের কাছে সমবেদনা জানাতে গিয়ে যা তিনি বলেছেন, তা স্বাভাবিক সৌজন্যবোধের অভাব হিসেবে দেখছেন বিদগ্ধজনরা।
মন্ত্রীদের সমন্বয়হীন অতিকথন ও অবান্তর বক্তব্যের ব্যাপারে দলীয় সংসদ সদস্যদের জমে থাকা ক্ষোভের উচ্চকিত প্রকাশ ঘটেছে সংসদের দশম অধিবেশনে। বিরোধী দলবিহীন সংসদে দশম অধিবেশনের প্রথম দিন বেশির ভাগ সদস্যই সেদিন নিয়েছিলেন বিরোধী দলের ভূমিকা। গণতন্ত্রচর্চার জন্য হয়তো এটা ভালো লক্ষণ, কিন্তু তাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা মন্ত্রীরা কি শুদ্ধ হবেন! সংসদের ভেতরে কিংবা বাইরে তাঁদের উদ্ভট বোলচালে তো তা মনে হয় না। সতীর্থ সংসদ সদস্যদের তুলাধুনার উত্তরে 'টাই পরি দেশ গড়ি' যোগাযোগমন্ত্রী যেভাবে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে জোর গলায় কথা বললেন, তা প্রাচীন গ্রামীণ প্রবাদকেই মনে করিয়ে দেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাৎক্ষণিক বরাদ্দ পাওয়া প্রায় শত শত কোটি টাকাকে তিনি অপ্রতুল বলেছেন। আবার তিনিই বলেছেন, ঈদের আগেই রাস্তাঘাট সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করে ফেলবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা অসম্ভব ব্যাপার। কেউ কেউ আরেকটু এগিয়ে বলছেন, হরিলুট হবে। জলজট এবং খানাখন্দ মেরামত করে ঈদের আগে হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিনে যে সড়ক মেরামত করা সম্ভব নয়, এটা সাধারণ মানুষমাত্রই জানে। স্পট টেন্ডারের মাধ্যমে ইট-বালু দিয়ে হয়তো দায়সারা কাজটি হবে, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হবে না। মন্ত্রী বলেছেন, অতিবৃষ্টির ফলে এই দুরবস্থার সৃষ্টি। কিন্তু দেশজুড়ে সড়কব্যবস্থার অবনতির কথা তো গণমাধ্যমে অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। আসলে আবারও কালের কণ্ঠের ভাষায় বলি, 'তিনি ব্যস্ত বড় কাজে'। সারাক্ষণ 'লুটি তো ভাণ্ডার' দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য তো বিড়ম্বিত হবেই। গণমাধ্যম প্রদত্ত সূত্র অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের আমলেই দেশজুড়ে ১৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়ক যে নাজুক হয়ে পড়েছে, এ কথা কি মন্ত্রী সাহেব একেবারেই জানতেন না!
লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
সারা দেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কথা কালের কণ্ঠ লাল কালির শিরোনামে ছাপা সংবাদে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কগুলো যে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে, তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানে, পত্রিকা পড়ার দরকার হয় না। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় বাস মালিকরা বিভিন্ন রুটে তাঁদের বাস চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছেন। এর পেছনে যাঁরা বিরোধী দলের কূটচালের গন্ধ খুঁজছেন, তাঁদের আশঙ্কা মিথ্যা নাও হতে পারে। কিন্তু চলাচলের অযোগ্য রাস্তার কারণে মালিকদের বাস চালানো বন্ধ করার বিষয়টি অর্থবহ তো বটেই। আগে কখনো এ রকম ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। দাবি আদায় অথবা দেনদরবারের কারণে বাস চলাচল বন্ধ হতে দেখেছি। কিন্তু অনুপযোগী রাস্তার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘটনা আমার জ্ঞানমতে বিরল এবং প্রতিবাদের ধরনটি আমার ভালোও লেগেছে। পদ্মা সেতু, ফোর লেন, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে ইত্যাদি বিষয়ে কথার ফুলঝুরি ছোটানো যোগাযোগমন্ত্রী যে গত ৩২ মাসেও কাজের কাজ কিছু করেননি, সে কথা তো সংসদে তাঁর অগ্রজ নেতারাই জোর গলায় বলেছেন। অন্য সংসদ সদস্যরা তাতে সায়ও দিয়েছেন। তা ছাড়া বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ী এই মন্ত্রী যে ছোটখাটো কাজে অমনোযোগী হয়েছেন, সে কথা তো আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। 'মারি তো গণ্ডার লুটি তো ভাণ্ডার' ফর্মুলায় ব্যবসা করে নিজের আখের গোছানো হয়তো সম্ভব, কিন্তু জনপ্রিতিনিধি কিংবা দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে জনগণের বন্ধু হওয়া যায় না। তাতে সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মন্ত্রীদের অপকর্ম (যা সাধারণ মানুষের ধিক্কার কুড়ায়), এর দায় তো সরকারপ্রধানকেও স্পর্শ করে।
আর যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বর্তমান সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী, তাঁরা লজ্জায় মাথা নিচু করেন, জোর গলায় কথা বলতে বিব্রত হন। ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হলো, টাঙ্গাইল রুটেও তা-ই, অথচ যোগাযোগমন্ত্রীর টনক নড়ে না। প্রধানমন্ত্রী যখন জনদুর্ভোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কঠিন ধমক দিলেন, অমনি তিনি টাই পরে ছুটলেন পরিস্থিতি দেখতে। জলময় সড়কে তিনি গাড়ি থেকে নামতেই পারলেন না, অথচ হাসিমুখে (যা দুর্ভোগগ্রস্ত মানুষের প্রতি তাচ্ছিল্যের শামিল) একগাদা মিথ্যা বললেন। বললেন অতীত সরকারের ব্যর্থতা এবং স্থানীয়দের দায়িত্বহীনতার কথা। সাহায্যপ্রত্যাশী হয়ে হাত বাড়ালেন নিজ দল ও নিজ এলাকার সহকর্মী এক মন্ত্রীর দিকে, যিনি আবার সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রের একজন ডাকসাইটে নেতা। তিনি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। যোগাযোগ ও নৌপরিবহনের ভেতর আন্তমন্ত্রণালয় সম্পর্ক থাকাটা খুবই স্বাভাবিক এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই মন্ত্রীর একযোগে কাজ করাটাও অযৌক্তিক বা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু নৌপরিবহনমন্ত্রী গাড়িচালকদের লাইসেন্স প্রদান প্রসঙ্গে উদ্ভট কথা বলে বাধালেন নতুন ঝঞ্ঝাট। ঝঞ্ঝাট সামাল দিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে সত্য-মিথ্যা কথা বলে হলেন সংবাদের শিরোনাম। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দেশের দুই বরেণ্য ও গুণী শিল্পস্রষ্টার শোকগ্রস্ত পরিবার ও স্বজনদের কাছে সমবেদনা জানাতে গিয়ে যা তিনি বলেছেন, তা স্বাভাবিক সৌজন্যবোধের অভাব হিসেবে দেখছেন বিদগ্ধজনরা।
মন্ত্রীদের সমন্বয়হীন অতিকথন ও অবান্তর বক্তব্যের ব্যাপারে দলীয় সংসদ সদস্যদের জমে থাকা ক্ষোভের উচ্চকিত প্রকাশ ঘটেছে সংসদের দশম অধিবেশনে। বিরোধী দলবিহীন সংসদে দশম অধিবেশনের প্রথম দিন বেশির ভাগ সদস্যই সেদিন নিয়েছিলেন বিরোধী দলের ভূমিকা। গণতন্ত্রচর্চার জন্য হয়তো এটা ভালো লক্ষণ, কিন্তু তাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা মন্ত্রীরা কি শুদ্ধ হবেন! সংসদের ভেতরে কিংবা বাইরে তাঁদের উদ্ভট বোলচালে তো তা মনে হয় না। সতীর্থ সংসদ সদস্যদের তুলাধুনার উত্তরে 'টাই পরি দেশ গড়ি' যোগাযোগমন্ত্রী যেভাবে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে জোর গলায় কথা বললেন, তা প্রাচীন গ্রামীণ প্রবাদকেই মনে করিয়ে দেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাৎক্ষণিক বরাদ্দ পাওয়া প্রায় শত শত কোটি টাকাকে তিনি অপ্রতুল বলেছেন। আবার তিনিই বলেছেন, ঈদের আগেই রাস্তাঘাট সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করে ফেলবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা অসম্ভব ব্যাপার। কেউ কেউ আরেকটু এগিয়ে বলছেন, হরিলুট হবে। জলজট এবং খানাখন্দ মেরামত করে ঈদের আগে হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিনে যে সড়ক মেরামত করা সম্ভব নয়, এটা সাধারণ মানুষমাত্রই জানে। স্পট টেন্ডারের মাধ্যমে ইট-বালু দিয়ে হয়তো দায়সারা কাজটি হবে, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হবে না। মন্ত্রী বলেছেন, অতিবৃষ্টির ফলে এই দুরবস্থার সৃষ্টি। কিন্তু দেশজুড়ে সড়কব্যবস্থার অবনতির কথা তো গণমাধ্যমে অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। আসলে আবারও কালের কণ্ঠের ভাষায় বলি, 'তিনি ব্যস্ত বড় কাজে'। সারাক্ষণ 'লুটি তো ভাণ্ডার' দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য তো বিড়ম্বিত হবেই। গণমাধ্যম প্রদত্ত সূত্র অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের আমলেই দেশজুড়ে ১৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়ক যে নাজুক হয়ে পড়েছে, এ কথা কি মন্ত্রী সাহেব একেবারেই জানতেন না!
লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
No comments