আমি বনাম আমার প্রেমিকার গরু by আলিম আল রাজি
গরুটা সুন্দর। এত সুন্দর গরু সাধারণত দেখা যায় না। আমি গরুর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। কী সুন্দর শিং, কী সুন্দর চোখ! খেয়াল করে দেখলাম, গরুও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ঈদের দিনটা আমি একটু আয়েশ করে কাটাতে চাই সব সময়। কিন্তু শেষমেশ দেখা যায়, কোনো একটা প্যাঁচ লেগে যায়। এবারও লেগে গেল। নামাজ পড়ে এসে আয়েশ করে বিছানায় পিঠ লাগালাম। এমন সময় ফোন দিল মিতু।
—এই! গরু কোরবানি দিতে পারো? —এককালে মুরগি জবাই দিয়েছিলাম। ওটা যখন পেরেছি, গরুকেও পারার কথা। কিন্তু কেন?
—বাবার শরীর খারাপ, আর ভাইয়া একটু বাইরে গেছে। আর কাউকে পাওয়াও যাচ্ছে না। একটু এসে গরুটা কোরবানি দিয়ে যাও না!
এভাবে বিপদে পড়ে যাব বুঝিনি। আমি তৎক্ষণাৎ গলার স্বরে পরিবর্তন আনলাম।
—ইয়ে মানে মিতু... আমার না গরুর মাংসে অ্যালার্জি আছে। তাই গরুর কাছে যাইটাই না। বুঝেছ?
—আমাকে অ্যালার্জি শেখাও? গরু কাটলে অ্যালার্জি হয় কে বলেছে? তুমি তো আর গরু খাচ্ছ না। জাস্ট জবাই করে দিয়েই চলে যাবা।
—ইয়ে মানে...।
মিতুর কণ্ঠে হঠাৎ রোমান্টিক ভাব এসে গেল।
—এমন করো কেন জানু পাখি! আসো না আমার লক্ষ্মী ময়না, গরু কাটা খুব মামুলি ব্যাপার। আমার জন্য এই কাজটাও তুমি করবা না? তুমি না আমার জন্য মঙ্গল গ্রহেও পাড়ি দিতে রাজি আছ! আর এটা তো গরু মাত্র।
মিতুর কথা শুনে গলে গেলাম। মেয়েরা এমনই। লুতুপুতু কথা বলে কাজ আদায় করে নিতে পারে ভালো। আমি জীবনে গরু কোরবানি দেখিওনি। রক্তটক্ত দেখলে আমি ভীষণ ভয় পাই। কিন্তু আজ প্রেমিকার আবদার শুনতে হবে। নিজেকে সাহস দিলাম, গরু কাটা কোনো ব্যাপারই না। মুরগি কাটার মতোই মামুলি ব্যাপার। দুরু দুরু বুকে মিতুর বাসার দিকে রওনা দিলাম। আজ গরুর খবর আছে।
গরুটা সুন্দর। এত সুন্দর গরু সাধারণত দেখা যায় না। আমি গরুর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। কী সুন্দর শিং, কী সুন্দর চোখ! খেয়াল করে দেখলাম, গরুও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
মিতু ধমক দিল,
—কী ব্যাপার? তাড়াতাড়ি করো।
আমি আশপাশে তাকালাম। বেশ কজন ছেলেপেলে ঘুরঘুর করছে। এরা সবাই মিতুর কাজিন। আমি সবাইকে নিয়ে এলাম। সবাই ধরাধরি করে গরুটাকে শুইয়ে ফেললাম। এবার আমার কাজ। গরুর গলা বরাবর ছুরি চালাতে হবে। আমি কাঁপা কাঁপা হাতে গরুর গলায় ছুরি বসালাম। আল্লাহুআকবার বলে দিলাম এক পোঁচ। কিন্তু এ কী! গলা তো কাটে না।
পাশ থেকে মিতু বলল,
—গাধা... ছুরি উলটা ধরেছ।
তাই তো! আমি তৎক্ষণাৎ ছুরি ঠিক করলাম। আবার দিলাম পোঁচ।
এবার ঘটে গেল মারাত্মক ঘটনা। গরু প্রচণ্ড জোরে হাত-পা নাড়াতে লাগল। যারা গরুকে ধরে ছিল, তারা ছিটকে পড়ল। গরু সোজা হয়ে উঠে দাঁড়াল। সঙ্গে সঙ্গে আমিও উলটে পড়ে গেলাম। ব্যাপার হলো, কোনো এক ফাঁকে আমার পাঞ্জাবি গরুর শিংয়ে আটকে গিয়েছিল। আমি তখন গরুর শিংয়ে উলটা হয়ে ঝুলছি। মাথা বারবার মাটিতে বাড়ি খাচ্ছে। আমি উপায় না দেখে গরুর পিঠ জড়িয়ে ধরলাম। গরু তখন ছোটা শুরু করল। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য। ঈদের দিন খোলা রাস্তায় একটা গরু ছুটছে। সেই গরুর পিঠে শুয়ে আছি আমি। মানুষ বিপদে পড়লে জান হাতে নিয়ে দৌড়ায়, আর আমি দৌড়াচ্ছি জান গরুর পিঠে নিয়ে। আমি বুঝতে পারলাম যে জ্ঞান হারাচ্ছি। জ্ঞান হারানোর আগে দেখলাম, গরুর পেছন পেছন মিতু দৌড়াচ্ছে। আহা! বড় ভালো মেয়ে মিতু।
মাথায় তিনটা ব্যান্ডেজ। হাতও মনে হয় ভেঙে গেছে। এক বাটি স্যুপ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে আছে মিতু। তার পাশে মিতুর বাবা। মিতুর বাবা মিতুকে বললেন,
—আহা! ছেলেটা নিজ হাতে খেতে পারবে না। দে না, ওকে মুখে তুলে খাইয়ে দে না!
দেখলাম, মিতু চামচ এগিয়ে আনছে। আস্তে করে মিতু বলল,
—তুমি এমন গাধা জানলে জীবনেও তোমাকে কোরবানি দিতে বলতাম না।
—বাবার শরীর খারাপ, আর ভাইয়া একটু বাইরে গেছে। আর কাউকে পাওয়াও যাচ্ছে না। একটু এসে গরুটা কোরবানি দিয়ে যাও না!
এভাবে বিপদে পড়ে যাব বুঝিনি। আমি তৎক্ষণাৎ গলার স্বরে পরিবর্তন আনলাম।
—ইয়ে মানে মিতু... আমার না গরুর মাংসে অ্যালার্জি আছে। তাই গরুর কাছে যাইটাই না। বুঝেছ?
—আমাকে অ্যালার্জি শেখাও? গরু কাটলে অ্যালার্জি হয় কে বলেছে? তুমি তো আর গরু খাচ্ছ না। জাস্ট জবাই করে দিয়েই চলে যাবা।
—ইয়ে মানে...।
মিতুর কণ্ঠে হঠাৎ রোমান্টিক ভাব এসে গেল।
—এমন করো কেন জানু পাখি! আসো না আমার লক্ষ্মী ময়না, গরু কাটা খুব মামুলি ব্যাপার। আমার জন্য এই কাজটাও তুমি করবা না? তুমি না আমার জন্য মঙ্গল গ্রহেও পাড়ি দিতে রাজি আছ! আর এটা তো গরু মাত্র।
মিতুর কথা শুনে গলে গেলাম। মেয়েরা এমনই। লুতুপুতু কথা বলে কাজ আদায় করে নিতে পারে ভালো। আমি জীবনে গরু কোরবানি দেখিওনি। রক্তটক্ত দেখলে আমি ভীষণ ভয় পাই। কিন্তু আজ প্রেমিকার আবদার শুনতে হবে। নিজেকে সাহস দিলাম, গরু কাটা কোনো ব্যাপারই না। মুরগি কাটার মতোই মামুলি ব্যাপার। দুরু দুরু বুকে মিতুর বাসার দিকে রওনা দিলাম। আজ গরুর খবর আছে।
গরুটা সুন্দর। এত সুন্দর গরু সাধারণত দেখা যায় না। আমি গরুর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। কী সুন্দর শিং, কী সুন্দর চোখ! খেয়াল করে দেখলাম, গরুও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
মিতু ধমক দিল,
—কী ব্যাপার? তাড়াতাড়ি করো।
আমি আশপাশে তাকালাম। বেশ কজন ছেলেপেলে ঘুরঘুর করছে। এরা সবাই মিতুর কাজিন। আমি সবাইকে নিয়ে এলাম। সবাই ধরাধরি করে গরুটাকে শুইয়ে ফেললাম। এবার আমার কাজ। গরুর গলা বরাবর ছুরি চালাতে হবে। আমি কাঁপা কাঁপা হাতে গরুর গলায় ছুরি বসালাম। আল্লাহুআকবার বলে দিলাম এক পোঁচ। কিন্তু এ কী! গলা তো কাটে না।
পাশ থেকে মিতু বলল,
—গাধা... ছুরি উলটা ধরেছ।
তাই তো! আমি তৎক্ষণাৎ ছুরি ঠিক করলাম। আবার দিলাম পোঁচ।
এবার ঘটে গেল মারাত্মক ঘটনা। গরু প্রচণ্ড জোরে হাত-পা নাড়াতে লাগল। যারা গরুকে ধরে ছিল, তারা ছিটকে পড়ল। গরু সোজা হয়ে উঠে দাঁড়াল। সঙ্গে সঙ্গে আমিও উলটে পড়ে গেলাম। ব্যাপার হলো, কোনো এক ফাঁকে আমার পাঞ্জাবি গরুর শিংয়ে আটকে গিয়েছিল। আমি তখন গরুর শিংয়ে উলটা হয়ে ঝুলছি। মাথা বারবার মাটিতে বাড়ি খাচ্ছে। আমি উপায় না দেখে গরুর পিঠ জড়িয়ে ধরলাম। গরু তখন ছোটা শুরু করল। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য। ঈদের দিন খোলা রাস্তায় একটা গরু ছুটছে। সেই গরুর পিঠে শুয়ে আছি আমি। মানুষ বিপদে পড়লে জান হাতে নিয়ে দৌড়ায়, আর আমি দৌড়াচ্ছি জান গরুর পিঠে নিয়ে। আমি বুঝতে পারলাম যে জ্ঞান হারাচ্ছি। জ্ঞান হারানোর আগে দেখলাম, গরুর পেছন পেছন মিতু দৌড়াচ্ছে। আহা! বড় ভালো মেয়ে মিতু।
মাথায় তিনটা ব্যান্ডেজ। হাতও মনে হয় ভেঙে গেছে। এক বাটি স্যুপ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে আছে মিতু। তার পাশে মিতুর বাবা। মিতুর বাবা মিতুকে বললেন,
—আহা! ছেলেটা নিজ হাতে খেতে পারবে না। দে না, ওকে মুখে তুলে খাইয়ে দে না!
দেখলাম, মিতু চামচ এগিয়ে আনছে। আস্তে করে মিতু বলল,
—তুমি এমন গাধা জানলে জীবনেও তোমাকে কোরবানি দিতে বলতাম না।
No comments