ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড by মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
ছাত্রলীগের তিন বছরের কর্মকাণ্ডে সব ছাত্রসমাজ আজ কলঙ্কিত। কিছুদিন আগে ছাত্রলীগের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধিক্কার দিয়েছিলেন এবং গত বছরের ৪ এপ্রিল সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
এক সময় ছাত্ররাজনীতি ছিল স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধান এবং দেশের কঠিন পরিস্থিতির সময় সহযোগিতা করার জন্য। '৬৯, '৭১ এবং সর্বশেষ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রসমাজের অবদান কেউ কখনও ভুলতে পারবে না। আজকের ছাত্ররাজনীতি হচ্ছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই ও ধর্ষণ।
নতুন বছরের শুরু থেকেই সংগঠনটির একশ্রেণীর নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শাখায় একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। লজ্জার বিষয় হচ্ছে, তারা এসব অপকর্মের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে। সম্প্রতি ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক কাজের জন্য ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিবাণিজ্য তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের জিম্মি করে চলেছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সরকারি দলের এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে, যার ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা দিনের পর দিন অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে গড়ে ওঠা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভর্তিবাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ থেকে চাঁদা আদায়, নিয়োগ বাণিজ্য, নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, হলের উন্নত মানের খাবার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণসহ নানা অঘটন ঘটাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময়ের শেষ দিক হওয়ায় কিছু নেতাকর্মী অর্থের লিপ্সায় নেমে পড়েছে। ওই সব নেতাকর্মীই রাজধানী থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। গত কয়েকদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ওপর দুটি হামলার ঘটনা ঘটায় ছাত্রলীগ। অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ছাত্রলীগের ছাত্রদের পাশাপাশি কিছু ছাত্রীও নানাবিধ অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি বরিশাল বিএম কলেজের বনমালী ছাত্রী হোস্টেলে মিছিলে না যাওয়ায় এক সাধারণ ছাত্রীকে হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
অমর একুশে হলে বার্ষিক ভোজে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। সেখানকার বার্ষিক ভোজে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করে ছাত্রলীগ। কর্তৃপক্ষের ওই কর্মসূচি হওয়া সত্ত্বেও অর্থ লোপাটের ধান্ধায় কয়েকজন নেতা ওই খাবার সরবরাহ করে। সাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদ করলেই ঘটে হামলার ঘটনা। হামলাকারীরা হলের গেট আটকে চাপাতি, রামদা, হাতুড়ি, শিকল ও বাঁশ নিয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে পরের দিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এলে ফের সংঘর্ষ ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নাটোরে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা আদায়কালে হাতেনাতে আটক হয়েছে ছাত্রলীগ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুজ্জামান আশরাফি ও কর্মী প্রিন্স। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একইভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কানে পানি যায়নি। বরং টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, ছাত্রী উত্ত্যক্ত, প্রশাসন জিম্মি করে অন্যায় সুবিধা আদায় চলছে বিরামহীভাবে। আমরা এর সমাধান দেখতে চাই।
soyeb4@gmail.com
নতুন বছরের শুরু থেকেই সংগঠনটির একশ্রেণীর নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শাখায় একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। লজ্জার বিষয় হচ্ছে, তারা এসব অপকর্মের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে। সম্প্রতি ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক কাজের জন্য ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিবাণিজ্য তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের জিম্মি করে চলেছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সরকারি দলের এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে, যার ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা দিনের পর দিন অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে গড়ে ওঠা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভর্তিবাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ থেকে চাঁদা আদায়, নিয়োগ বাণিজ্য, নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, হলের উন্নত মানের খাবার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণসহ নানা অঘটন ঘটাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময়ের শেষ দিক হওয়ায় কিছু নেতাকর্মী অর্থের লিপ্সায় নেমে পড়েছে। ওই সব নেতাকর্মীই রাজধানী থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। গত কয়েকদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ওপর দুটি হামলার ঘটনা ঘটায় ছাত্রলীগ। অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ছাত্রলীগের ছাত্রদের পাশাপাশি কিছু ছাত্রীও নানাবিধ অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি বরিশাল বিএম কলেজের বনমালী ছাত্রী হোস্টেলে মিছিলে না যাওয়ায় এক সাধারণ ছাত্রীকে হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
অমর একুশে হলে বার্ষিক ভোজে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। সেখানকার বার্ষিক ভোজে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করে ছাত্রলীগ। কর্তৃপক্ষের ওই কর্মসূচি হওয়া সত্ত্বেও অর্থ লোপাটের ধান্ধায় কয়েকজন নেতা ওই খাবার সরবরাহ করে। সাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদ করলেই ঘটে হামলার ঘটনা। হামলাকারীরা হলের গেট আটকে চাপাতি, রামদা, হাতুড়ি, শিকল ও বাঁশ নিয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে পরের দিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এলে ফের সংঘর্ষ ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নাটোরে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা আদায়কালে হাতেনাতে আটক হয়েছে ছাত্রলীগ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুজ্জামান আশরাফি ও কর্মী প্রিন্স। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একইভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কানে পানি যায়নি। বরং টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, ছাত্রী উত্ত্যক্ত, প্রশাসন জিম্মি করে অন্যায় সুবিধা আদায় চলছে বিরামহীভাবে। আমরা এর সমাধান দেখতে চাই।
soyeb4@gmail.com
No comments