অবিক্রীত পশুদের দুর্ভোগ-কর্তৃপক্ষ ভাবছে কি?
সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি, সবার ঈদ এবং ঈদের পশু উভয়ই ভালোভাবে কেটেছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, শেয়ারের দাম নিম্নমুখী হলেও কোরবানির পশুর দাম ছিল আকাশচুম্বী। দামের কারণে অনেকেই পছন্দমতো গরু-ছাগল কিনতে পারেননি। এমনকি এক হাট থেকে কিনে আরেক হাটে বেচতে পারেন এমন মানুষও পছন্দের কোরবানির গরু-ছাগল কিনতে ব্যর্থ হয়েছেন। দাম কমবে ভেবে অনেকেই ঈদের দিন সকালেও গিয়েছিলেন পশুর হাটে।
কিন্তু বিক্রেতারা তাঁদের কথা ভাবেননি। তাঁরা ‘পশুর দাম কখনো কমে না, বাড়ে বহুদূর’ এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে দাম আরও বাড়িয়েছেন। আকাশছোঁয়া দামের কারণে তরুণ-উদীয়মান গরু-ছাগল কিনেই খুশি থেকেছেন ক্রেতারা। ফলে বড় বড় অনেক গরু-ছাগল অবিক্রীত থেকে গেছে। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটি খুব স্বাভাবিক মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে এক করুণ গল্প। অবিক্রীত এই পশুগুলো দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকায় এসেছিল। চেয়েছিল আপন নৈপুণ্য ও শক্তিমত্তায় শহরবাসীকে মুগ্ধ করে কারও কোরবানির পশু হতে। কিন্তু বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় পশুগুলোর সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে। তাদের আবার ফিরে যেতে হয়েছে খামারে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ঘাসে মিশে যাওয়ায় প্রচণ্ড মানসিক চাপে আছে এই পশুগুলো। নিজ এলাকার জুনিয়র গরু-ছাগলের কাছে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছে না তারা। জুনিয়র গরু-ছাগলগুলো ভাবছে, অযোগ্যতার কারণেই অবিক্রীত রয়ে গেছে তারা। জুনিয়রদের কটু কথা সহ্য করতে না পারায় অনেকের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা জেগে উঠেছে—যা পশু সমাজের জন্য রীতিমতো ভয়ংকর এবং আশঙ্কাজনক। বিক্রি না হওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এই পশুগুলোর পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে সমগ্র পশুসমাজ হুমকির মুখে পড়বে। অথচ কর্তৃপক্ষ এই অসহায় পশুগুলো নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা না করে নিশ্চিন্তে বসে বসে হাড্ডি চিবাচ্ছে। অতএব, অবিলম্বে এই অসহায় পশুগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
No comments