ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ-রেলওয়েকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই
বেলা ২টায় রেলওয়ের টিকিট কাউন্টারে টাঙিয়ে দেওয়া হলো ছোট সাইনবোর্ড_'টিকিট নাই'। অথচ দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমাণ অসংখ্য মানুষ সেহরির সময় থেকে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের সড়ক যোগাযোগ যখন প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত, তখন ঈদে ঘরমুখো মানুষ ছুটে গিয়েছিল রেলওয়ে স্টেশনে। কিন্তু সেখানেও তাদের হতাশ হতে হয়েছে।
জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশি জেনেও অনেকে গিয়েছিল বাসের টিকিট কাটতে। সেখানেও একই চিত্র। লঞ্চের চিত্রও ভিন্ন নয়, সেগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে যাত্রী কয়েক গুণ বেশি। আবার পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে অচল নৌযানগুলো রং মাখিয়ে এবং জোড়াতালি দিয়ে সচল করা হচ্ছে। ফলে নৌপথে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে গেছে।
রেলওয়ের বেহাল বা বিপর্যস্ত অবস্থা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। সংস্কারহীন রেললাইনগুলোতে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালানো যায় না, লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনাও অনেক, ইঞ্জিনগুলোর অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ, অধিকাংশ সময় সেগুলো ওয়ার্কশপেই রাখতে হয় এবং বগির সংখ্যাও খুব কম। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইলেই যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের সংখ্যা খুব বাড়িয়ে দেবে_তা সম্ভব নয়। এদিকে দেশের নৌপথও ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। যেটুকু নৌপথ আছে, সেখানেও চলছে নৈরাজ্যকর অবস্থা।
পত্রপত্রিকায় রেলওয়ের বেহাল অবস্থা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কিছু রেল রুট স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্ধ না হলেও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে আরো কিছু রেলপথ। বাড়ছে দুর্ঘটনা। কেবল গত এক বছরে পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলপথে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে দেড় শতাধিক বার। সেখানে বৈধ লেভেল ক্রসিং আছে ৭৫৭টি, আর অবৈধগুলো নিয়ে সেই সংখ্যা হাজারের ওপর, অথচ গেটকিপার আছে মাত্র ২২১টিতে। কর্মচারীর অভাবে একের পর এক স্টেশন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। কেবল পশ্চিমাঞ্চলেই ১৫ হাজার একরের বেশি রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। যে সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে স্বাধীনতার আগেও বছরে দুই শতাধিক বগি তৈরি হতো, গত তিন যুগেও সেখানে কোনো বগি তৈরি হয়নি। জানা যায়, বর্তমান সরকার রেলওয়ের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু সেগুলোর সুফল এখনো দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
পরিবেশবান্ধব হওয়ায় আধুনিক বিশ্বে রেলওয়ের গুরুত্ব নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতা-পূর্বকালে তো বটেই, স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে রেলওয়ে ছিল প্রধানতম জনপরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু সত্তরের দশকের শেষদিক থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারই ধারাবাহিকতায় একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে রেলপথ। অনেক জায়গায় লাইনই তুলে ফেলা হয়েছে। কারখানাগুলোকেও গলা টিপে হত্যা করার মতো অন্তিম দশায় নিয়ে আসা হয়েছে। ট্রেনে মাল পরিবহনের খরচ অনেক কম হলেও সরকারি খাদ্যগুদাম ও শিল্প-কারখানার সঙ্গে থাকা রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে, বাস-ট্রাক মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যই তা করা হয়েছে। অপরদিকে, রেলওয়েকে অলাভজনক খাতে পরিণত করার জন্য শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এই মাথাভারী প্রশাসনের অব্যাহত দুর্নীতিও এ খাতটিকে অনেক দুর্বল করেছে। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এসব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ রেলওয়েকে তার পূর্বের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হবে। তা না হলে শুধু ঈদে কেন, সারা বছরই এ দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাবে।
রেলওয়ের বেহাল বা বিপর্যস্ত অবস্থা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। সংস্কারহীন রেললাইনগুলোতে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালানো যায় না, লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনাও অনেক, ইঞ্জিনগুলোর অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ, অধিকাংশ সময় সেগুলো ওয়ার্কশপেই রাখতে হয় এবং বগির সংখ্যাও খুব কম। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইলেই যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের সংখ্যা খুব বাড়িয়ে দেবে_তা সম্ভব নয়। এদিকে দেশের নৌপথও ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। যেটুকু নৌপথ আছে, সেখানেও চলছে নৈরাজ্যকর অবস্থা।
পত্রপত্রিকায় রেলওয়ের বেহাল অবস্থা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কিছু রেল রুট স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্ধ না হলেও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে আরো কিছু রেলপথ। বাড়ছে দুর্ঘটনা। কেবল গত এক বছরে পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলপথে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে দেড় শতাধিক বার। সেখানে বৈধ লেভেল ক্রসিং আছে ৭৫৭টি, আর অবৈধগুলো নিয়ে সেই সংখ্যা হাজারের ওপর, অথচ গেটকিপার আছে মাত্র ২২১টিতে। কর্মচারীর অভাবে একের পর এক স্টেশন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। কেবল পশ্চিমাঞ্চলেই ১৫ হাজার একরের বেশি রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। যে সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে স্বাধীনতার আগেও বছরে দুই শতাধিক বগি তৈরি হতো, গত তিন যুগেও সেখানে কোনো বগি তৈরি হয়নি। জানা যায়, বর্তমান সরকার রেলওয়ের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু সেগুলোর সুফল এখনো দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
পরিবেশবান্ধব হওয়ায় আধুনিক বিশ্বে রেলওয়ের গুরুত্ব নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতা-পূর্বকালে তো বটেই, স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে রেলওয়ে ছিল প্রধানতম জনপরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু সত্তরের দশকের শেষদিক থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারই ধারাবাহিকতায় একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে রেলপথ। অনেক জায়গায় লাইনই তুলে ফেলা হয়েছে। কারখানাগুলোকেও গলা টিপে হত্যা করার মতো অন্তিম দশায় নিয়ে আসা হয়েছে। ট্রেনে মাল পরিবহনের খরচ অনেক কম হলেও সরকারি খাদ্যগুদাম ও শিল্প-কারখানার সঙ্গে থাকা রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে, বাস-ট্রাক মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যই তা করা হয়েছে। অপরদিকে, রেলওয়েকে অলাভজনক খাতে পরিণত করার জন্য শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এই মাথাভারী প্রশাসনের অব্যাহত দুর্নীতিও এ খাতটিকে অনেক দুর্বল করেছে। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এসব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ রেলওয়েকে তার পূর্বের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হবে। তা না হলে শুধু ঈদে কেন, সারা বছরই এ দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাবে।
No comments