সিরিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়ীর মন্তব্য-অবরোধে পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছে সিরিয়ার অর্থনীতি
সিরিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছে। তবে বিরোধীদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। সিরিয়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ফয়সাল আল কুদসি এ রকমই দাবি করেছেন।
সিরিয়ার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে কুদসির। দেশটির অর্থনৈতিক উদারীকরণেও রয়েছে তাঁর ভূমিকা। এ ছাড়া তাঁর পরিবারেরও দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তাই কুদসি যখন বলেন অর্থনীতি পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছে—তা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।
কুদসি বিবিসির এক অনুষ্ঠানে বলেন, পশ্চিমা অবরোধের কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছে। ইরান অবশ্য অর্থ পাঠাচ্ছে, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
কুদসি বলেন, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে সহিংসতার কারণে সিরিয়ার পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। অবরোধের কারণে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি বন্ধ হওয়ার কারণে দেশের জিডিপি নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।
কুদসি বলেন, সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক-পরিস্থিতি এমন খারাপ হয়ে গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুই হাজার ২০০ কোটি ডলার থেকে এক হাজার কোটি ডলারে নেমে গেছে।
সিরিয়ার এই ব্যবসায়ী বলেন, সরকার আর বড়জোর ছয় মাস সেনাবাহিনীকে দমনপীড়ন চালানোর কাজে ব্যবহার করতে পারবে। কারণ, সেনাবাহিনীও সহিংসতা বন্ধে আলোচনায় বসতে চায়। তারা অন্তত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে চায়। আর হত্যাকাণ্ড বন্ধ হলে লাখ লাখ মানুষ সরকারের বিপক্ষে রাস্তায় নেমে আসবে।
কুদসি এখন লন্ডনভিত্তিক ব্যাংকিং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ধীরে ধীরে বিভক্তি বাড়ছে। হোমস, ইদলিব ও দেরায় শহরে এখন কোনো আইন-আদালত নেই। এসব এলাকায় পুলিশও কোনো দমন-নিপীড়নে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে। এসব বিষয় সরকারের ওপর প্রভার ফেলছে।
সরকারবিরোধীদের ওপর হামলা: সহিংসতা বন্ধে সিরিয়ার প্রতি চীনের প্রতিনিধিদের আহ্বান সত্ত্বেও গত শনিবারও সরকারবিরোধীদের ওপর হামলা চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
গতকাল রোববারও হোমসের বাবা আমর এলাকায় অভিযান চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। শনিবার রাজধানী দামেস্কে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে তিনজন নিহত হয়। তাদের দাফন অনুষ্ঠানের পর সেখানেও গুলি চালানো হয়েছে।
এদিকে মিসর গতকাল সিরিয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করার কোনো কারণ দর্শায়নি কায়রো। এর আগে আরব ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ সিরিয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
সিরিয়ায় গত মার্চ থেকে প্রেসিডেন্ট বাশারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। বিবিসি, রয়টার্স।
No comments