পবিত্র কোরআনের আলো-বেহেশতপ্রাপ্তি খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়, বরং দায়িত্ব পালনের বিষয়
১২৩. লাইছা বিআমানিয়্যিকুম্ ওয়ালা আমানিয়্যি আহ্লিল্ কিতাবি; মান ইয়্যা'মাল ছূআ ইঁয়্যুয্জা বিহী ওয়ালা-ইয়াজিদ্ লাহূ মিন দূনিল্লাহি ওয়ালিয়্যাওঁ ওয়ালা নাসীরা। ১২৪. ওয়ামান ইয়্যা'মাল মিনাস্ সালিহাতি মিন যাকারিন আও উনছা ওয়া হুয়া মু'মিনুন ফাউলায়িকা ইয়াদ্খুলূনাল জান্নাতা ওয়া লা-ইউয্লামূনা নাক্বীরা।
১২৫. ওয়া মান আহ্ছানু দীনাম্ মিম্মান আছলামা ওয়াজহাহূ লিল্লাহি ওয়া হুয়া মুহ্ছিনুন ওয়্যাত্তাবাআ' মিল্লাতা ইব্রাহীমা হানীফা; ওয়াত্তাখাযাল্লাহু ইব্রাহীমা খালীলা।
১২৬. ওয়া লিল্লাহি মা ফিচ্ছামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি; ওয়া কানাল্লাহু বিকুলি্ল শাইয়িম্ মুহীত্বা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১২৩-১২৬]
অনুবাদ : ১২৩. বিষয়টা যেমন তোমাদের খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়, তেমনি আহলে কিতাবদেরও খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়। যে ব্যক্তি কোনো গুনাহর কাজ করবে, তাকে তার প্রতিফল দেওয়া হবে। আর জেনে রেখো, সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেই নিজের অভিভাবক বা সাহায্যকারী হিসেবে পাবে না।
১২৪. যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী; সে যদি ইমানদার অবস্থায় তা সম্পন্ন করে, তবে সে নিজে এবং তার মতো সব লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রতিদানের ব্যাপারে তাদের ওপর বিন্দুমাত্রও অবিচার করা হবে না।
১২৫. তার চেয়ে উত্তম ধর্ম আর কার হতে পারে যে আল্লাহর জন্য মাথানত করে। সেই হচ্ছে নিষ্ঠাবান ব্যক্তি যে ইব্রাহিমের আদর্শ অনুসরণ করে। আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছিলেন।
১২৬. আকাশমণ্ডল এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুই পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
ব্যাখ্যা : ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বলে বেড়াত যে আমরা পরকালে বেহেশতে যাব, বেহেশত আমাদের জন্যই। অপরদিকে মুসলমানদের কেউ কেউও এ ধরনের কথা বলত। তারাও বেহেশত নিজেদের বলে দাবি করত। তারা বলত, আমরা মুসলমান হয়েছি, সুতরাং বেহেশতে প্রবেশ করার অধিকার আমরা অবশ্যই পাব। এই সম্বন্ধেই এ আয়াতটি নাজিল হয়। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন, বেহেশত শুধু খেয়াল-খুশি বা আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে পাওয়ার বিষয় নয়। এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা করে যারা বসে আছে, তারা ইহুদি-খ্রিস্টান হোক বা মুসলমান হোক_তারা ভ্রান্ত ধারণা নিয়েই বসে আছে। বেহেশত লাভ করার মানে হলো, আল্লাহর কাছে মর্যাদা লাভ করা। তাঁর নৈকট্য লাভ করা। এ মর্যাদা ও নৈকট্যের মূল অবলম্বন হলো, আল্লাহর আনুগত্য করা। যারা আল্লাহর আনুগত্য করবে অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের পথে চলবে, তারাই পাবে সে মর্যাদার স্থান। কোনো ব্যক্তি ইহুদি হোক, খ্রিস্টান হোক বা মুসলমান হোক_যে ধর্মের অনুসারীই সে হোক না কেন, যখন সে কোনো পাপ কাজ করবে তখন এর প্রতিফল তাকে নিতেই হবে। শেষ বিচারের দিনে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ কোনো অভিভাবক বা সাহায্যকারী হিসেবে থাকবে না।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ করবে, নারী বা পুুরুষ যেই হোক, সে যদি ইমানদার অবস্থায় তা সম্পন্ন করে, তবে সেই ব্যক্তি এবং তার মতো অনুরূপ সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। ইমানদার বলতে এখানে কাফির নয়, এমন সব ধর্মাবলম্বীদেরই বোঝানো হয়েছে। রোজ হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে কারো প্রতি বিন্দুমাত্রও অবিচার করবেন না।
১২৫ নম্বর আয়াতে দ্বীনে ইব্রাহীমের প্রসঙ্গ এসেছে। আরবে আইয়্যামে জাহিলিয়াত যুগেও দ্বীনে ইব্রাহীমের প্রকৃত অনুসারী কিছু কিছু লোক ছিলেন। দ্বীনে ইব্রাহীমের অনুসারীরা সত্যিকার অর্থেই আল্লাহর একত্ববাদের অনুসারী এবং মহৎ ধার্মিক লোক। আর সেই উত্তম ধর্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এক প্রভু বা এক আল্লাহর প্রতি মাথানত করা। দ্বীনে ইব্রাহীম সত্য ধর্মের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। হজরত ইব্রাহীম (আ.)-কে আল্লাহ তায়ালা নিজের খলিল বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এই আয়াতে হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের মহানত্ব এবং দ্বীনে ইব্রাহীমের বিশেষত্ব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১২৬. ওয়া লিল্লাহি মা ফিচ্ছামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি; ওয়া কানাল্লাহু বিকুলি্ল শাইয়িম্ মুহীত্বা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১২৩-১২৬]
অনুবাদ : ১২৩. বিষয়টা যেমন তোমাদের খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়, তেমনি আহলে কিতাবদেরও খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়। যে ব্যক্তি কোনো গুনাহর কাজ করবে, তাকে তার প্রতিফল দেওয়া হবে। আর জেনে রেখো, সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেই নিজের অভিভাবক বা সাহায্যকারী হিসেবে পাবে না।
১২৪. যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী; সে যদি ইমানদার অবস্থায় তা সম্পন্ন করে, তবে সে নিজে এবং তার মতো সব লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রতিদানের ব্যাপারে তাদের ওপর বিন্দুমাত্রও অবিচার করা হবে না।
১২৫. তার চেয়ে উত্তম ধর্ম আর কার হতে পারে যে আল্লাহর জন্য মাথানত করে। সেই হচ্ছে নিষ্ঠাবান ব্যক্তি যে ইব্রাহিমের আদর্শ অনুসরণ করে। আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছিলেন।
১২৬. আকাশমণ্ডল এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুই পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
ব্যাখ্যা : ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বলে বেড়াত যে আমরা পরকালে বেহেশতে যাব, বেহেশত আমাদের জন্যই। অপরদিকে মুসলমানদের কেউ কেউও এ ধরনের কথা বলত। তারাও বেহেশত নিজেদের বলে দাবি করত। তারা বলত, আমরা মুসলমান হয়েছি, সুতরাং বেহেশতে প্রবেশ করার অধিকার আমরা অবশ্যই পাব। এই সম্বন্ধেই এ আয়াতটি নাজিল হয়। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন, বেহেশত শুধু খেয়াল-খুশি বা আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে পাওয়ার বিষয় নয়। এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা করে যারা বসে আছে, তারা ইহুদি-খ্রিস্টান হোক বা মুসলমান হোক_তারা ভ্রান্ত ধারণা নিয়েই বসে আছে। বেহেশত লাভ করার মানে হলো, আল্লাহর কাছে মর্যাদা লাভ করা। তাঁর নৈকট্য লাভ করা। এ মর্যাদা ও নৈকট্যের মূল অবলম্বন হলো, আল্লাহর আনুগত্য করা। যারা আল্লাহর আনুগত্য করবে অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের পথে চলবে, তারাই পাবে সে মর্যাদার স্থান। কোনো ব্যক্তি ইহুদি হোক, খ্রিস্টান হোক বা মুসলমান হোক_যে ধর্মের অনুসারীই সে হোক না কেন, যখন সে কোনো পাপ কাজ করবে তখন এর প্রতিফল তাকে নিতেই হবে। শেষ বিচারের দিনে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ কোনো অভিভাবক বা সাহায্যকারী হিসেবে থাকবে না।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ করবে, নারী বা পুুরুষ যেই হোক, সে যদি ইমানদার অবস্থায় তা সম্পন্ন করে, তবে সেই ব্যক্তি এবং তার মতো অনুরূপ সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। ইমানদার বলতে এখানে কাফির নয়, এমন সব ধর্মাবলম্বীদেরই বোঝানো হয়েছে। রোজ হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে কারো প্রতি বিন্দুমাত্রও অবিচার করবেন না।
১২৫ নম্বর আয়াতে দ্বীনে ইব্রাহীমের প্রসঙ্গ এসেছে। আরবে আইয়্যামে জাহিলিয়াত যুগেও দ্বীনে ইব্রাহীমের প্রকৃত অনুসারী কিছু কিছু লোক ছিলেন। দ্বীনে ইব্রাহীমের অনুসারীরা সত্যিকার অর্থেই আল্লাহর একত্ববাদের অনুসারী এবং মহৎ ধার্মিক লোক। আর সেই উত্তম ধর্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এক প্রভু বা এক আল্লাহর প্রতি মাথানত করা। দ্বীনে ইব্রাহীম সত্য ধর্মের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। হজরত ইব্রাহীম (আ.)-কে আল্লাহ তায়ালা নিজের খলিল বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এই আয়াতে হজরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের মহানত্ব এবং দ্বীনে ইব্রাহীমের বিশেষত্ব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments