বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষনিধন-শুধু রোপণ নয়, রক্ষাও করতে হবে
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশ আজ চরম হুমকির মুখে। একদিকে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডোসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে; বাড়ছে ভূমিক্ষয় ও নদীভাঙন। অন্যদিকে বাড়ছে খরা ও অনাবৃষ্টিজনিত কারণে শস্যহানি। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ ও বন রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং আইলার সময় সুন্দরবনের বৃক্ষরাজি হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করেছে_তার প্রমাণ আমরা দেখেছি। শুধু সিডরেই সুন্দরবনের ২৫ শতাংশ গাছ নষ্ট হয়েছিল। তবু নিজের বুকে আঘাত নিয়ে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়েছে। এমন সুন্দরবন যদি পুরো উপকূল বরাবর থাকত, তাহলে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমে যেত। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা আমরা করতে পারিনি। এ ছাড়া উষ্ণায়নের প্রধান কারণ বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অঙ্াইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। গাছ যত কমবে, কার্বন ডাই-অঙ্াইড তত বাড়বে এবং বায়ুমণ্ডল তত বেশি উষ্ণ ও দূষিত হবে। ফলে জলবায়ু ক্রমেই অস্বাভাবিক হবে। বাংলাদেশে ঠিক তাই হচ্ছে। সত্তরের দশকেও দেশে যে পরিমাণ বনভূমি ছিল, বর্তমানে আছে তার অর্ধেকেরও কম। এভাবে চলতে থাকলে দুই-তিন দশক পর বাংলাদেশ বনশূন্য হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অস্তিত্ব আরো বেশি হুমকির মুখে পড়বে।
গত ১ জুন থেকে শুরু হয়েছে তিন মাসব্যাপী 'জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলা ২০১১'। কিন্তু এই আয়োজন শুধু কেতাবি আয়োজন হলে তিন মাসব্যাপী কেন, বছরব্যাপী হলেও কোনো লাভ হবে না। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে বেশি করে গাছ লাগানোর জন্য। সরকারি মালিকানাধীন বনভূমিগুলোতে বৃক্ষের ঘন আচ্ছাদন তৈরি করতে হবে। প্রতিবছরই চলে এই কর্মসূচি। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ে না। বরং অধোগতি আমাদের ব্যথিত করে। এখনো সংরক্ষিত বনভূমিগুলোতে গেলে দেখা যায়, বিশাল পতিত জায়গা, সুন্দরবনসহ বনভূমিগুলোতে চলে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন। আর সেখানে রক্ষকরাই প্রধান ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে। বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল বসানো অবৈধ হলেও গত আড়াই বছরে শুধু কালিয়াকৈর উপজেলায় বনের পাশে গড়ে উঠেছে অর্ধশত করাতকল। পত্রিকায় এ ব্যাপারে খবর প্রকাশের পরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
আর মানুষ যে কত বড় অমানুষ হতে পারে, কত বড় নিষ্ঠুর হতে পারে_তার প্রমাণ পাওয়া যাবে বাংলাদেশে। শত্রুতা মেটাতে গিয়ে হাজার হাজার চারাগাছ কেটে ফেলার নজির পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া যাবে। গত মাসে খাগড়াছড়ির রামগড়ে কথিত সন্ত্রাসীরা এক রাতে ফলদ বাগানের প্রায় ১২ হাজার আম-লিচুর গাছ কেটে ফেলেছিল। এ রকম আত্মঘাতী ব্যাপার কিভাবে নির্বিবাদে ঘটতে পারে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রায়ই পত্রিকায় এ ধরনের সচিত্র খবর পরিবেশিত হয়। বাগানের মালিকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হলেও হয়তো সে ক্ষতি তারা বহন করতে পারবে। কিন্তু ১২ হাজার গাছের মৃত্যু সত্যিই এক অপূরণীয় ক্ষতি। আর এ নিষ্ঠুরতার মাত্রাও অকল্পনীয়। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সত্য হচ্ছে, এদের তেমন কোনো শাস্তিই হয় না, রামগড়েও হয়নি। যে কারণে এই অমানুষরা আরো উৎসাহী হয়। রামগড়ে এর পরও গাছ কাটার আরো দুটি ঘটনায় দুই হাজারের বেশি গাছ কাটা হয়েছে। অন্যদিকে এসবের দরুন ব্যক্তিমালিকানায় যারা বাগান সৃজনে আগ্রহী ছিল, তারাও আগ্রহ হারাচ্ছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে সারা পৃথিবী আজ সোচ্চার। আমরাও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বেশ সোচ্চার। পৃথিবীতে আজ বনায়নের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। আমাদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতেও কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। অথচ আমাদের দেশের ঐতিহ্য হচ্ছে, সরকারি দলের লোকজন রাস্তার পাশে থাকা শত শত গাছ কেটে নিয়ে যায়। বৃক্ষরোপণের অর্থ চলে যায় ক্যাডার ও দুর্বৃত্তদের পকেটে। তাই আমরা চাই, বর্তমান সরকারের তিন মাসব্যাপী কর্মসূচিতে যেমন বৃক্ষরোপণে আন্তরিকতার পরিচয় দেওয়া হবে, তেমনি সরকারি হোক আর বেসরকারিই হোক_বৃক্ষ রক্ষা করার ক্ষেত্রেও সমান আন্তরিকতার পরিচয় দেওয়া হবে।
গত ১ জুন থেকে শুরু হয়েছে তিন মাসব্যাপী 'জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলা ২০১১'। কিন্তু এই আয়োজন শুধু কেতাবি আয়োজন হলে তিন মাসব্যাপী কেন, বছরব্যাপী হলেও কোনো লাভ হবে না। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে বেশি করে গাছ লাগানোর জন্য। সরকারি মালিকানাধীন বনভূমিগুলোতে বৃক্ষের ঘন আচ্ছাদন তৈরি করতে হবে। প্রতিবছরই চলে এই কর্মসূচি। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ে না। বরং অধোগতি আমাদের ব্যথিত করে। এখনো সংরক্ষিত বনভূমিগুলোতে গেলে দেখা যায়, বিশাল পতিত জায়গা, সুন্দরবনসহ বনভূমিগুলোতে চলে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন। আর সেখানে রক্ষকরাই প্রধান ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে। বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল বসানো অবৈধ হলেও গত আড়াই বছরে শুধু কালিয়াকৈর উপজেলায় বনের পাশে গড়ে উঠেছে অর্ধশত করাতকল। পত্রিকায় এ ব্যাপারে খবর প্রকাশের পরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
আর মানুষ যে কত বড় অমানুষ হতে পারে, কত বড় নিষ্ঠুর হতে পারে_তার প্রমাণ পাওয়া যাবে বাংলাদেশে। শত্রুতা মেটাতে গিয়ে হাজার হাজার চারাগাছ কেটে ফেলার নজির পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া যাবে। গত মাসে খাগড়াছড়ির রামগড়ে কথিত সন্ত্রাসীরা এক রাতে ফলদ বাগানের প্রায় ১২ হাজার আম-লিচুর গাছ কেটে ফেলেছিল। এ রকম আত্মঘাতী ব্যাপার কিভাবে নির্বিবাদে ঘটতে পারে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রায়ই পত্রিকায় এ ধরনের সচিত্র খবর পরিবেশিত হয়। বাগানের মালিকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হলেও হয়তো সে ক্ষতি তারা বহন করতে পারবে। কিন্তু ১২ হাজার গাছের মৃত্যু সত্যিই এক অপূরণীয় ক্ষতি। আর এ নিষ্ঠুরতার মাত্রাও অকল্পনীয়। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সত্য হচ্ছে, এদের তেমন কোনো শাস্তিই হয় না, রামগড়েও হয়নি। যে কারণে এই অমানুষরা আরো উৎসাহী হয়। রামগড়ে এর পরও গাছ কাটার আরো দুটি ঘটনায় দুই হাজারের বেশি গাছ কাটা হয়েছে। অন্যদিকে এসবের দরুন ব্যক্তিমালিকানায় যারা বাগান সৃজনে আগ্রহী ছিল, তারাও আগ্রহ হারাচ্ছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে সারা পৃথিবী আজ সোচ্চার। আমরাও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বেশ সোচ্চার। পৃথিবীতে আজ বনায়নের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। আমাদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতেও কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। অথচ আমাদের দেশের ঐতিহ্য হচ্ছে, সরকারি দলের লোকজন রাস্তার পাশে থাকা শত শত গাছ কেটে নিয়ে যায়। বৃক্ষরোপণের অর্থ চলে যায় ক্যাডার ও দুর্বৃত্তদের পকেটে। তাই আমরা চাই, বর্তমান সরকারের তিন মাসব্যাপী কর্মসূচিতে যেমন বৃক্ষরোপণে আন্তরিকতার পরিচয় দেওয়া হবে, তেমনি সরকারি হোক আর বেসরকারিই হোক_বৃক্ষ রক্ষা করার ক্ষেত্রেও সমান আন্তরিকতার পরিচয় দেওয়া হবে।
No comments