প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুঃখগাথা by ড. তুহিন ওয়াদুদ
বাংলাদেশে সরকারি, বেসরকারি, নিবন্ধিত, এবতেদায়ি বিভিন্ন পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ভালো অবস্থা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। সেই ভালো যে কত খারাপ থাকার নাম তা ভেবে দেখলে অবশিষ্টদের করুণ অবস্থা সহজে বোঝা যায়। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা এবং শিক্ষকদের নিয়ে পত্রিকায় হরহামেশাই লেখা চোখে পড়ে।
এত লেখালেখির পর আবার নতুন করে লেখাটা চর্বিতচর্বণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তবুও লিখছি এ কারণে যে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাগ্যাকাশ থেকে দুর্যোগের ঘনঘটা কাটেনি। এখনো তাঁরা বঞ্চিত এবং অবহেলিত। একজন শিক্ষকের প্রতি অবহেলা করলে গোটা জাতিকেই যেন অবহেলা করা হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুঃখের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ, অনেক বেদনার। প্রথমে তাঁদের শ্রমদানের কথা বলি। এ ক্ষেত্রে সরকার যাঁদের কাছ থেকে শ্রম আদায় করে তাঁদের মধ্যে দুটি ভাগ আছে। এক হচ্ছে পুরুষ শিক্ষক, যাঁরা নূ্যনতম স্নাতক শ্রেণী পাস, আর অন্যরা মহিলা শিক্ষক, যাঁদের নূ্যনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাস। দুই রকম পাসের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরিতে যোগদান করেন এবং এক রকম বেতন উত্তোলন করেন। আমরা জানি, সাধারণত একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে ১০ জন দোষী ব্যক্তি যদি বেঁচে যায়, রায় সেদিকেই দেওয়া হয়। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় এর বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়। কারণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দেখে বোঝা যায়, সেখানে মাধ্যমিক পাস শিক্ষকরা আছেন বলে তাঁদের শ্রমের মূল্য এত কম। তাঁরা শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আছেন কি না সেই বিবেচনা একবারের জন্যও করা হয় না। একজন মাধ্যমিক শ্রেণী পাস করা চাকরিজীবীর সঙ্গে যেরূপ আচরণ করা হয় সেই আচরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চলে কোনো অফিস সহকারী কিংবা পিয়ন ছাড়া। ঝাড়ুদার থাকার কথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কিছুতেই চিন্তা করতে পারেন না। অথচ এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ছয় থেকে ১০ বছরের শিশুরা লেখাপড়া করে। একটি শিশুকে অনেক সময় একজন মা সামলাতে পারেন না। সেখানে স্কুলজুড়ে শিশুদের সামলাতে হয় তিন থেকে সাতজন শিক্ষককে। প্রায় প্রতিদিনই ছোট শিশুদের পায়জামার ফিতা কিংবা প্যান্টের বোতাম খুলে দিতে হয় শিক্ষকদের। খুলতে একটু দেরি হলে অনেক ছোট শিশু পোশাক নষ্ট করে। শিশুরা যখন বিদ্যালয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করে তখন কে সেসব পরিষ্কার করবেন? সেই দায়িত্ব নিতে হয় একজন শিক্ষককেই। সরকার মনে করে, সামান্য লেখাপড়ায় চাকরি। সুতরাং অফিস সহকারীর কাজ কিংবা পিয়নের কাজ সব কিছুই করতে হবে তাঁদের। প্রতিদিন স্কুলের দরজা খুলে শিক্ষকদের প্রথমেই ঝাড়ু নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হয়। এ দৃশ্যটি খুবই পীড়াদায়ক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরুষ শিক্ষকরা স্নাতক শ্রেণী পাস করার পর শিক্ষক হন, তারপর এক বছরের একটি প্রশিক্ষণ নেন। স্নাতক পাসের পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই যোগ্যতার বিচারে চাকরি করেন আট হাজার টাকা মূল বেতনে আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করেন চার হাজার ৭০০ টাকা মূল বেতনে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট লাভ করেন। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সে সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। বিদ্যমান বাস্তবতা বলে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগ্যতার মাপকাঠি হচ্ছে মাধ্যমিক শ্রেণী পাস এবং মাধ্যমিক সমমান পুরুষদের জন্য স্নাতক শ্রেণী পাস। অথচ হতে পারত পুরুষ স্নাতক পাসকৃতদের সমমান মহিলা শিক্ষকদের মাধ্যমিক পাস। প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় এখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে অনেক মেধাবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মেধাবী অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সহকারী থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুটি পদে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ নেওয়ার কথা থাকে সেই কথা ভেবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে আর নতুন করে চাকরির জন্য পড়ার মতো মানসিক অবস্থা থাকে না। সরকার যদি তাঁদের জন্য নির্ধারিত পদের বিপরীতে শুধু তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে পদগুলো পূরণ করত, তাহলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারা সেই পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হতো। কিন্তু তা না করে পরীক্ষা পদ্ধতি উন্মুক্ত করে দেওয়ার কারণে এবং শিক্ষকদের কোটা পূরণ না হলে সাধারণদের থেকে সেই পদ পূরণ করা হয়, ফলে মেধাবীরা যে স্বপ্ন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতে আসেন সে সুযোগ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হন।
একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়। পাশাপাশি কোনো শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় খারাপ করলে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠক, স্কুলে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার কাজও করতে হয়। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পাসের শর্তটি তুলে দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে স্নাতক পাস নারীর সংখ্যা পর্যাপ্ত। শুধু মাধ্যমিক পাস মেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়ায় নারী শিক্ষকদের সংখ্যা হয়তো বাড়ছে; কিন্তু সেসব মেয়ের উচ্চশিক্ষার সম্ভাবনাও নষ্ট হচ্ছে। কেননা যাঁরা মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে আসেন তাঁরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতে না এলে অনায়াসে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতেন এবং তুলনামূলক সম্মানজনক চাকরি করতেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির পর লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেহাত নগণ্য নয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শ্রেণীর নিয়োগ বন্ধ করে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্নাতক পাসের জন্য যে বেতন-ভাতা পাওয়া যায় সেই বেতন-ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। যদি মাধ্যমিক পাস বলবৎ থাকে, তাহলে যে শিক্ষক স্নাতক পাস করেছেন তাঁদের অন্তত স্নাতক পর্যায়ের বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সব শিক্ষকের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা হোক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাদের সবার শিক্ষক। তাঁদের সম্মান দিতে না পারাটা আমাদের জাতীয় কলঙ্ক।
লেখক : শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
wadudtuhin@gmail.com
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুঃখের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ, অনেক বেদনার। প্রথমে তাঁদের শ্রমদানের কথা বলি। এ ক্ষেত্রে সরকার যাঁদের কাছ থেকে শ্রম আদায় করে তাঁদের মধ্যে দুটি ভাগ আছে। এক হচ্ছে পুরুষ শিক্ষক, যাঁরা নূ্যনতম স্নাতক শ্রেণী পাস, আর অন্যরা মহিলা শিক্ষক, যাঁদের নূ্যনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাস। দুই রকম পাসের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরিতে যোগদান করেন এবং এক রকম বেতন উত্তোলন করেন। আমরা জানি, সাধারণত একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে ১০ জন দোষী ব্যক্তি যদি বেঁচে যায়, রায় সেদিকেই দেওয়া হয়। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় এর বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়। কারণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দেখে বোঝা যায়, সেখানে মাধ্যমিক পাস শিক্ষকরা আছেন বলে তাঁদের শ্রমের মূল্য এত কম। তাঁরা শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আছেন কি না সেই বিবেচনা একবারের জন্যও করা হয় না। একজন মাধ্যমিক শ্রেণী পাস করা চাকরিজীবীর সঙ্গে যেরূপ আচরণ করা হয় সেই আচরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চলে কোনো অফিস সহকারী কিংবা পিয়ন ছাড়া। ঝাড়ুদার থাকার কথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কিছুতেই চিন্তা করতে পারেন না। অথচ এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ছয় থেকে ১০ বছরের শিশুরা লেখাপড়া করে। একটি শিশুকে অনেক সময় একজন মা সামলাতে পারেন না। সেখানে স্কুলজুড়ে শিশুদের সামলাতে হয় তিন থেকে সাতজন শিক্ষককে। প্রায় প্রতিদিনই ছোট শিশুদের পায়জামার ফিতা কিংবা প্যান্টের বোতাম খুলে দিতে হয় শিক্ষকদের। খুলতে একটু দেরি হলে অনেক ছোট শিশু পোশাক নষ্ট করে। শিশুরা যখন বিদ্যালয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করে তখন কে সেসব পরিষ্কার করবেন? সেই দায়িত্ব নিতে হয় একজন শিক্ষককেই। সরকার মনে করে, সামান্য লেখাপড়ায় চাকরি। সুতরাং অফিস সহকারীর কাজ কিংবা পিয়নের কাজ সব কিছুই করতে হবে তাঁদের। প্রতিদিন স্কুলের দরজা খুলে শিক্ষকদের প্রথমেই ঝাড়ু নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হয়। এ দৃশ্যটি খুবই পীড়াদায়ক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরুষ শিক্ষকরা স্নাতক শ্রেণী পাস করার পর শিক্ষক হন, তারপর এক বছরের একটি প্রশিক্ষণ নেন। স্নাতক পাসের পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই যোগ্যতার বিচারে চাকরি করেন আট হাজার টাকা মূল বেতনে আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করেন চার হাজার ৭০০ টাকা মূল বেতনে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট লাভ করেন। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সে সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। বিদ্যমান বাস্তবতা বলে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগ্যতার মাপকাঠি হচ্ছে মাধ্যমিক শ্রেণী পাস এবং মাধ্যমিক সমমান পুরুষদের জন্য স্নাতক শ্রেণী পাস। অথচ হতে পারত পুরুষ স্নাতক পাসকৃতদের সমমান মহিলা শিক্ষকদের মাধ্যমিক পাস। প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় এখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে অনেক মেধাবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মেধাবী অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সহকারী থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুটি পদে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ নেওয়ার কথা থাকে সেই কথা ভেবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে আর নতুন করে চাকরির জন্য পড়ার মতো মানসিক অবস্থা থাকে না। সরকার যদি তাঁদের জন্য নির্ধারিত পদের বিপরীতে শুধু তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে পদগুলো পূরণ করত, তাহলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারা সেই পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হতো। কিন্তু তা না করে পরীক্ষা পদ্ধতি উন্মুক্ত করে দেওয়ার কারণে এবং শিক্ষকদের কোটা পূরণ না হলে সাধারণদের থেকে সেই পদ পূরণ করা হয়, ফলে মেধাবীরা যে স্বপ্ন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতে আসেন সে সুযোগ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হন।
একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়। পাশাপাশি কোনো শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় খারাপ করলে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠক, স্কুলে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার কাজও করতে হয়। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পাসের শর্তটি তুলে দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে স্নাতক পাস নারীর সংখ্যা পর্যাপ্ত। শুধু মাধ্যমিক পাস মেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়ায় নারী শিক্ষকদের সংখ্যা হয়তো বাড়ছে; কিন্তু সেসব মেয়ের উচ্চশিক্ষার সম্ভাবনাও নষ্ট হচ্ছে। কেননা যাঁরা মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে আসেন তাঁরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতে না এলে অনায়াসে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতেন এবং তুলনামূলক সম্মানজনক চাকরি করতেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির পর লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেহাত নগণ্য নয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শ্রেণীর নিয়োগ বন্ধ করে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্নাতক পাসের জন্য যে বেতন-ভাতা পাওয়া যায় সেই বেতন-ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। যদি মাধ্যমিক পাস বলবৎ থাকে, তাহলে যে শিক্ষক স্নাতক পাস করেছেন তাঁদের অন্তত স্নাতক পর্যায়ের বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সব শিক্ষকের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা হোক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাদের সবার শিক্ষক। তাঁদের সম্মান দিতে না পারাটা আমাদের জাতীয় কলঙ্ক।
লেখক : শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
wadudtuhin@gmail.com
No comments